রাসেল ব্যাপার টাকে মোটেও সিরিয়াস ভাবে নেয় নাই। তার বক্তব্য চারটা মিসকল দিয়ে তৃপ্তি ভাবী একটা ম্যাসেজ দেয়ার চেষ্টা করছেন আনিস ভাইকে। তৃপ্তি ভাবী মুসলিম, ইসলামে চারটা বিয়ে সুন্নাত। অর্থাৎ তৃপ্তি ভাবী সম্ভবত আবার বিয়ে করতে যাচ্ছেন। কথাটা তখন সবাই হেসেই উড়িয়ে দিলেও,
আজ দুপুরের দিকে বনানীতে তৃপ্তিদের বাসার ডেকোরেশন দেখে এসে মিথুন জানে কথা টা সত্য।
এই ম্যাসে মিথুন রা আছে গত প্রায় চার বছর ধরে। রমজান মাস কদিক দিয়ে ভালো, আবার কদিক দিয়ে খারাপ ওদের জন্য। ওরা বলতে তারা তিনজন। মিথুন, আনিস ভাই, আর গত কয়েক মাস ধরে রাসেল। রাসেলের কথা আপনাদের মনে থাকার কথা, ডিশ ব্যাবসায়ী রাসেল? বাসা ছেরে এখানে এসে উঠার কারন তার বাসায় গ্রাম থেকে চিকিৎসা করার নামে যে আত্বীয়রা রা এসে উঠেছেন, তারা যাচ্ছেন না, বা রাসেলের মা তাদের যেতে দিচ্ছেন না, কারন টা সম্ভবত আত্বীয়াদের আর্থিক কোন ব্যাপার স্যাপার।
তো যা বলছিলাম, পুরো রমজান মাস জুরেই ম্যাস মালিক আফজাল সাহেব ভোররাতে এসে দরজায় নক করে তাদের ডেকে দেন। ঐ মিথুন ভাই,আনিস ভাই, উঠেন সেহরী করেন। ঘুম জড়ানো কন্ঠে তাদের কেউ একজন জানায় উঠছি ভাই, আফজাল সাহেব মহা সোয়াবের কাজ করেছেন ভেবে খুশী মনে ফিরে যান। মিথুন রা আবার ঘুমায়। কোন কোন দিন আফজাল সাহেব ইফতারের সময় তাদের মধ্যে কাউকে পেলে একরকম ধরেই নিচে বাসায় নিয়ে যান, একসাথে ইফতার করান। প্রায় প্রতিদিন এই সময় মিথুন ম্যাসে থাকে না, রাসেল তার ব্যাবসায়ীক কাজে বাইরে, খাওয়া হয় আনিস ভাই এর।
আজকের দিনটাও সেইম ছিলো, আনিস ভাই বিকেল থেকেই অপেক্ষায় আছেন মাগরীবের আজানের। তিনি বেশ ক্ষুধার্থ, গতকাল থেকে কিছুই খান নাই। না খাবার পিছনের কারন পড়শু রাতে তৃপ্তি ভাবী তাকে চারটা মিসকল দিয়েছেন। ফোন তার হাতেই ছিলো, এবং সেগুলো মিসকল ই ছিলো এ ব্যাপারে আনিস ভাই নিশ্চিত। এবং ব্যাপার টা তিনি মিথুন কে জানিয়েছেন।
একটা বা তিনটা না হয়ে চারটাই কেনো মিসকল সেটা একটা চিন্তার বিষয়। তৃপ্তি ভাবী সম্ভান্ত পরিবারের মেয়ে, তার ফোনে ব্যালেন্স নেই এমন টা হবার কোন কারন নাই। মিথুন কয়েকটা সহজ লজিক দিয়েছে আনিস ভাইকে। যেমন চার টা দেবার পর আর দেবার ইচ্ছা হয় নি, বা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আনিস ভাই আজ সেটা মেনে নিয়েছেন, এবং ইফতারের অপেক্ষা করছিলেন।
এইদিকে রাসেল ব্যাপার টাকে মোটেও সিরিয়াস ভাবে নেয় নাই। তার বক্তব্য চারটা মিসকল দিয়ে তৃপ্তি ভাবী একটা ম্যাসেজ দেয়ার চেষ্টা করছেন আনিস ভাইকে। তৃপ্তি ভাবী মুসলিম, ইসলামে চারটা বিয়ে সুন্নাত। অর্থাৎ তৃপ্তি ভাবী সম্ভবত আবার বিয়ে করতে যাচ্ছেন। কথাটা তখন সবাই হেসেই উড়িয়ে দিলেও,
আজ দুপুরের দিকে বনানীতে তৃপ্তিদের বাসার ডেকোরেশন দেখে এসে মিথুন জানে কথা টা সত্য।
এই মুহুর্তে মিথুন একটা টং দোকানে বসে আছে, দোকান টা নাবিলার বাসার সামনেই।
আনিস ভাই কে তথ্য টা জানানো উচিত হবে কিনা, তার থেকেও বড় চিন্তার ব্যাপার রাসেল। সেই রাসেল, যে ডিশ লাইনের ব্যাবসা আর কণার বাবাকে কিভাবে রাজি করানো যায় তা বাদ দিয়া অন্য কিছু নিয়ে মাথা ঘামাইতে অক্ষম, তার মাথায় এই ধারনাটার জন্ম কিভাবে হইলো। মিথুন নিজেই জানে, জাস্ট মাথায় আসছে দেখে বলে দিছে বলবে রাসেল, এবং রাসেল মিথ্যা বলে না। চিন্তা টা মাথায় গিট্টু পাকিয়ে দিচ্ছে, প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করলেও মিথুন রহস্য পছন্দ করে না। সে অন্য চিন্তা করতে পারে।
নাবিলা সম্পর্কে চিন্তা করা যায়। শর্মী পৃথিবীতে সবথেকে বেশী ঘৃনা করে এমন কোন মানুষ থেকে থাকলে নাবিলা একজন।যদিও তারা একে অন্যের সাথে ফেসবুকে কানেক্টেড, তবে নাবিলার কবিতায় মিথুনের প্রতিটা কমেন্ট নিয়ে শর্মী প্রায় ই চেষ্টা করে মিথুন এর সাথে ঝগরা করতে। এই কদিন আগেই,নাবিলার এক কবিতায় মিথুন লিখেছিলো "তবে কেনো মেঘ ডেকেও বৃষ্টি এলো না?" । বিনিময়ে শর্মী প্রথমে মিথুনের কাছে কিছু গালি শিখতে চায়, মিথুন তারে "বাংলা গালী সমগ্র" এর পিডিএফ লিংক ধরিয়ে দিলে পরের ম্যাসেজে লেখে "ইতর, লুইচ্ছা, মগা"। ইতর লুইচ্ছা এগুলোর মানে জানলেও মগা মানে মিথুন জানতো না। আনিস ভাই বুঝিয়ে বলেছেন, মগা হচ্ছে মাগী শব্দটার মেল ভার্শন।
নাবিলা একজন কবি এবং তাকে নিয়ে শর্মীর সমস্যা কোথায় তা বুঝতে মিথুন অক্ষম। এই মুহুর্তে নাবিলাকে চারটা মিসকল দেয়া যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৯ ভোর ৫:০৩