somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন সকল মুসলমান দেশসমূহ তৃতীয় বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত? (১)

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর এ যাবৎকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত খনিজ সম্পদের প্রায় ৭০ ভাগ হচ্ছে মুসলমান অধ্যুষিত দেশসমূহে। তথাপিও কোন মুসলমান দেশ বর্তমানকালে প্রথম বিশ্বে স্থান করে নিতে পারেনি। মধ্যপ্রাচ্যের ২/১টি দেশকে যদি প্রথম বিশ্ব ধরা হয়, তবে তা হবে উপলব্ধিগত বিভ্রান্তি। তেল বিক্রয়ের টাকা দিয়ে বড় বড় বিল্ডিং করলেই ‘প্রথম বিশ্ব’ হওয়া যায় না। প্রয়োজন অর্থনৈতিক অবকাঠামো, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রযুক্তি। কিছুই নেই অঢেল পেট্রো ডলারের অধিকারী মুসলমান দেশসমূহে। তেলসম্পদ শেষ হলে কিংবা তেলের বিকল্প বের হলে ওইসব দেশসমূহের অর্থনীতিতে ধস নামতে বাধ্য।

বর্তমান সময়ের মুসলমান দেশসমূহের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ব্যাপক দুর্নীতি। যে দুর্নীতি একটি সমাজকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়, সেই ধরনের দুর্নীতি মুসলমান দেশসমূহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করানো হয়েছে।
মুসলমানদের এহেন অধঃপতনের অনেক কারণসমূহের মধ্যে মূল কারণটি হচ্ছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়া। যেহেতু খিলাফত সম্বন্ধে বর্তমান মুসলমানদের কোনো ধারণাই নেই, তারা শাসনব্যবস্থা বলতে সউদী আরবের রাজতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্র/সমাজতন্ত্র এসবই বুঝে। তন্ত্র-মন্ত্র যাই হোক প্রায় প্রতিটি মুসলমান দেশের ক্ষমতাসীনদের আচরণ এক এবং অভিন্ন, স্বৈরশাসকের মতো। পবিত্র ঈমানী শক্তি না থাকার কারণে তারা পবিত্র দ্বীন ইসলামের শত্রুদের শক্তিকে ভয় করে এবং তাদের পরামর্শে নিজ দেশের জনগণের উপর চালায় কঠিন নির্যাতন।

এ যুগের গন্ডমূর্খ মুসলমানেরা বুঝে না যেই আমেরিকা আমাদের দেশে গণতন্ত্র, গণতন্ত্র বলে মুখে ফেনা তুলছে সেই আমেরিকা আবার সউদী রাজতন্ত্রের বেলায় একেবারে নিশ্চুপ। বরং পর্দার আড়ালে তাদের মধ্যে বিরাজমান অকৃত্রিম বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা।
তবে বিষয়টা কী দাঁড়ালো? তন্ত্র-মন্ত্র সব হচ্ছে ভাঁওতাবাজি। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দ্বীন ইসলামের বাতিকে চিরতরে নিভিয়ে দেয়া; যদিও তারা তা কখনোই পারবে না। বর্তমান মুসলমান দেশসমূহের শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরাসরি মহান পাক উনার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। নাঊযুবিল্লাহ! যেখানে খলীফা হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন যে, “ফোরাত নদীর তীরে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তবে এর জন্য আমাকে ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।” এই ছিল পবিত্র দ্বীন ইসলামের স্বর্ণযুগে মুসলমান নেতৃত্বের মনোমানসিকতা।

অথচ বর্তমান সময়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিদ্বেষপরায়ণ মুসলমান নেতারা নিজ জনগণ এমনকি নিজ সেনাবাহিনীর উপর রক্তের বন্যা বইয়ে দেয় নির্বিকার চিত্তে। এখানে রাজতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্র কোনো বিষয় না, ক্ষমতায় টিকে থাকাটাই হচ্ছে মূল্য লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য। এই যদি হয় নেতাদের আচরণ তখন ওই দেশসমূহ কি করে প্রথম বিশ্ব হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে?

মুসলমান দেশের নেতাদের দেখা যায় শত্রু দেশের সেনাবাহিনী কিংবা শত্রু দেশের গোয়েন্দা বাহিনীর সার্বক্ষণিক সহযোগিতার উপর নির্ভরশীল। নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনীকে ওদের গোলাম বানিয়ে রাখা হয়। সবকিছুই ওই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। মুখে জনগণের কথা বলে ফেনা তুলবে কিন্তু বিশ্বাস এবং আস্থা শত্রু দেশের সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা বাহিনীর উপর।

দেশ গোল্লায় যাক, জাতীয় চরিত্র ধ্বংস হয়ে যাক সমস্যা নেই। পবিত্র কুরআন শরীফ- মুসলমানদের শত্রু হিসেবে যাদেরকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন তাদের সাথেই আমাদের নেতৃত্বের অকৃত্রিম বন্ধুত্ব ও আস্থা। এ কারণেই পবিত্র কুরআন শরীফের ভাষায় এদেরকে বলা হয়, ‘জালুমান জাহুলা’ অর্থাৎ ‘আত্মধ্বংসকারী গন্ডমূর্খ’। এরা পবিত্র কুরআন শরীফ মানে, তবে ওই পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ মানে না। আর এ কারণেই বর্তমান সময়ে কোনো মুসলমান দেশের পক্ষে তৃতীয় বিশ্বের গন্ডি পেরিয়ে প্রথম বিশ্বে উন্নত হওয়া নিশ্চিতভাবেই অসম্ভব।

১০/২০টি ট্রেনের বগিকে টেনে নিয়ে যেতে, স্টীম, ডিজেল কিংবা ইলেকট্রিক ট্রেন ইঞ্জিন প্রয়োজন, কতগুলো গরু, গাধা দিয়ে ট্রেনকে চালানো যায় না। মুসলমান জাতিকে এগিয়ে নিতে ওই রকম নেতাই প্রয়োজন। মিশরের হোসনি মোবারক দিয়েও হবে না কিংবা ওহাবী চেতনার আফগানিস্তানের মোল্লা ওমর দিয়েও হবে না। আমাদের প্রয়োজন ওই নেতার যিনি সার্বক্ষণিক সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহান আল্লাহ পাক উনাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। তৃতীয় বিশ্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে হলে বর্তমান যামানার মুসলমানদের প্রয়োজন ওই রকম নেতৃত্ব খুঁজে বের করা এবং উনার নেতৃত্বের পতাকাতলে সংঘবদ্ধ হওয়া। যত দ্রুত মুসলমানরা এই বিষয়টা উপলব্ধি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে ততই দ্রুত হবে ইহকাল এবং পরকালের মুক্তির ব্যবস্থা। প্রথম বিশ্ব হওয়াটা তখন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে ছহীহ দ্বীন ইসলামকে বুঝার এবং তা মেনে চলার তাওফীক এনায়েত করুন। (আমীন)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×