যুদ্ধক্ষেত্রে দুই যুদ্ধরত দল যখন প্রতিরক্ষায় অবস্থান নেয়, তখন প্রতিপক্ষ আক্রমনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা তা বুঝা যায় তার আচার-আচরনের মাধ্যমে। যাকে বলা হয় কন্বেট ইন্ডিকেসন অর্থাৎ রনকৌশলগত ইঙ্গিত বা সিমটম। একজন সেনাকর্মকর্তা বুদ্ধিমান ও চৌকষ হলে সহজেই বুঝতে পারে যে শত্রুপক্ষ আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন সম্ভাব্য আক্রমনের স্থান/কাল ও দিক যত সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারা যায় ঐ আক্রমন ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা ততই বেশি থাকে। প্রতিরক্ষায় রত সেনাদলের কর্মকর্তা যদি ঘুমিয়ে থাকে এবং শত্রুর আক্রমনের লক্ষণ বিচার-বিশ্লেষণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে শত্রুর পরিকল্পিত আক্রমনে সে ও তার দল নিশ্চিহ্ন হতে বাধ্য।
একটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সেনাবাহিনী হচ্ছে প্রথম স্তরের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে দেশের আপামর জনসাধারণ হচ্ছে সেই প্রতিরক্ষার মূল চালিকা শক্তি। সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল চালিকা শক্তি জনগণ যদি শত্রুকে মিত্র হিসাবে ভাবতে শুরু করে তখন সেনাবাহিনী একটি ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে রূপ লাভ করে। দীর্ঘমেয়াদী ও পরিকল্পিত মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে আমাদের জনগণকে বুঝানো হয়েছে যে, ভারত প্রতিনিয়ত সীমান্তে ৪/৫ জন বাংলাদেশী মুসলমানদের শহীদ করলেও ওরা আমাদের বন্ধুপ্রতীম। বন্ধুপ্রতীম দেশকে এশিয়া কাপ ক্রিকেটে বিজয়ী করার জন্য বিনা কারণে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিবকে আমরা খুব সূক্ষ্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে তিনটি আন্তর্জাতিক খেলা থেকে বিরত রেখা হয়। যাতে ভারতের সাথে খেলার সময় ও অনুপস্থিত থাকে। অপরদিকে ভারতে গুন্ডে ছবির মাধ্যমে ঐ দেশের জনসাধারণকে বুঝানো হচ্ছে যে, এ দেশকে ভারতই স্বাধীন করে দিয়েছে। এদেশের জনসাধারণদের কোন প্রকার স্বার্থ ত্যাগ ছিলো না।
আমাদের দেশে পরিকল্পিত হিন্দু/মুসলমান রায়ট বাধানো হচ্ছে। কারণ হচ্ছে নিজ দেশে (ভারতে) জনমত তৈরি করা বাংলাদেশ দখলের জন্য। পর্যায়ক্রমে এদেশের সেনাবাহিনীকে হত্যা এবং চাকুরিচ্যুতির আতঙ্কের মধ্যে রেখে এক মেরুদ-হীন বাঘে পরিণত করা হচ্ছে, অপরদিকে হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক গোপালগঞ্জের ঠিকানায় পুলিশে ভর্তি করা হচ্ছে। সেই ১৯৭১ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ এত ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেনি যা বর্তমান সরকারের আমলে ধারণ করেছে। আসলে এরাই হচ্ছে ভারতীয় এবং বাংলাদেশ বিদ্বেষী স্থানীয় কিছু হিন্দুরা। এদেশকে যে বর্তমান সরকারের চলমান মেয়াদেই সিকিমের মত দখলে নেয়া হবে তা যাচাই করতে ক্লিক করুন এখানে
পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদরা দেশকে ভারতে হস্তান্তর করছে তবে আমাদের দেশের পেশাজীবীরা কি করছে? তাদের মানসিকতা কি? ‘ভাই চাকুরি করছি পেটের ধান্দায় দেশ নিয়ে চিন্তা করার সময় ও মানসিকতা কিছুই নেই।’ ‘ভাই আমি হচ্ছি হুকুমের গোলাম, গোলামের কি দেশ নিয়ে চিন্তা করার অধিকার আছে?’ ‘আরে ভাই কি বলেন, ১৭ কোটি মুসলমানের দেশকে ভারত দখল করবে?’ ‘হু, বুঝতে পারছি দেশটি আস্তে আস্তে ভারতের পেটে ঢুকছে তবে ভাই আমার কি করার আছে বলুন?’
সচিব পর্যায়ের এক পেশাজীবী বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোন দেশ পাওয়া যাবে না, যেখানে এতো খোলামেলা ঘুষ খাওয়া যায়, শুধু দরকার নিজেকে আওয়ামী চেতনার একজন বলে প্রমাণ করা। ‘দেশের কিছু হলে মালয়েশিয়া ও কানাডা দু’দেশেই ব্যবস্থা করেছি পরিবারসহ স্থায়ীভাবে থাকার, আমার সমস্য কোথায়?’
পুলিশের একজন সদস্য (কনস্টেবল) বলেন, ‘ভাই বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি নিয়ে মাসে প্রায় ১৯ হাজার টাকা পাই। অতীতের কোন সরকার আমাদের এত সুবিধা দেয়নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো হরতাল/মিছিলে যত খুশি বিরোধী দলের লোক গুলি করে মার, সমস্যা নেই। এই সুবিধা পৃথিবীর কোন দেশের পুলিশের নাই। আমি কেন সরকারকে সাপোর্ট করবো না, বলুন?’
এহেন আরো অনেক বিভ্রান্তিকর জবাব। ভারতীয় মগজধোলাই বিশেষজ্ঞ কর্তৃক এদেশের মানুষদেরকে পরিকল্পিতভাবে উপলব্ধিগত বিভ্রান্তিতে নিক্ষেপ করাই হচ্ছে এর মূল কারণ। আর এইক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ভারতকে আপ্রাণ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে, প্রাক্তন সিকিম সরকার যেভাবে ভারতীয়দের সহায়তা করেছিলো পরাধীনতা পূর্ব দিনগুলোতে। এ যেন উপমহাদেশের ইতিহাসের করুণ পুনরাবৃত্তি। সিকিমের পরাধীনতার সাথে ব্যাপক গণহত্যা ও গণধর্ষণ জড়িত ছিলো না, কিন্তু তা এখানে হবে নিশ্চিতভাবে। কারণ সিকিমবাসীরা হচ্ছে হিন্দু এবং বৌদ্ধ আর আমরা হচ্ছি মুসলমান। পৃথিবীর সকল ধর্ম এবং নাস্তিকরা একমাত্র ইসলাম ধর্মকেই তাদের শত্রু হিসেবে মনে করে তাই আমাদের ক্ষেত্রে গণহত্যা আর গণধর্ষণই হচ্ছে তাদের একমাত্র চাহিদা এবং আমাদের নিশ্চিত ভবিতব্য। এহেন করুণ পরিণতি থেকে বাঁচতে হলে পেশাজীবীদের একমাত্র কর্তব্য হচ্ছে পরাধীনতা সহায়ক সরকারি যে কোনো পদক্ষেপ সর্বসাধারণকে গোপনে জানিয়ে দেয়া। নিজেদের মা, বোন ও কন্যার স্বার্থেই কাজটি করতে হবে। দেশ, জাতি ও ধর্মের স্বার্থে কোন কাজ কখনই অন্যায় হতে পারে না। মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন।