পাপ কিন্তু বাপেরেও ছাড়ে না!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
(ছবি: ২০১২ সালের ২১ মার্চ সরকারের দায়িত্বশীল মহলকে হাইকোর্ট থেকে রুল জারি করার অর্ডার কপি)
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ধর্ম নিয়ে অশ্লীল ভাষায় অবমাননাকর লেখা অনেক আগ থেকেই ফেসবুক ও ব্লগে হয়ে আসছে। তবে যে সকল কুলাঙ্গাররা এ হীন তৎপরতা চালিয়ে আসছে এদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২১মার্চ হাইকোর্ট থেকে রুল জারি করে এসব ব্লগ ও ফেসবুক পেজ বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওই ব্লগগুলো ও ফেসবুক পেজ এখন পর্যন্ত বন্ধ করা হয়নি।
মহান আল্লাহ পাক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুমগণ, হযরত আউলিয়াই কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতসহ পবিত্র ইসলামের বিভিন্ন বিধিবিধানকে কটাক্ষ করে কুৎসিত ও উগ্র মন্তব্যকারী ব্লগারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশ আমলে নেয়নি সরকার।
দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর চরমভাবে আঘাত প্রদানকারী নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য কুখ্যাত ব্লগারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রায় দুই বছর আগেই সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। পাশাপাশি ওইসব ব্লগারের ব্যবহার করা ব্লগ ও ফেসবুক স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি লেখে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)।
গেচীপ খ্যাত আসিফ মহিউদ্দীন ধর্ম, রাষ্ট্র ও সরকারের সমালোচনা করে সামহোয়ার ইন ব্লগসহ অন্যান্য ব্লগে অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করাসহ সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করায় গোয়েন্দা পুলিশ ২০১১ সালের ১ অক্টোবর আসিফ মহিউদ্দিনকে ডিবি আটক করে। ব্লগে লেখার বিষয়ে মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ভবিষ্যতে সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের উসকানিমূলক স্টেটাস ও মন্তব্য না লেখার জন্য পুলিশ তাকে শাসিয়ে দেয়।
প্রসঙ্গত, ফেসবুক ও ব্লগ ব্যবহার করে মহান আল্লাহ পাক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, পবিত্র কুরআন শরীফ, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের বিভিন্ন বিধিবিধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, কুরুচিপূর্ণ বিষোদ্গারমূলক প্রপাগান্ডা চালায় স্বঘোষিত কিছু নাস্তিক ব্লগার। চিহ্নিত এ ব্লগারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ব্লগগুলো বন্ধ করে দেয়ার জন্য দু’জন বিশিষ্ট নাগরিকের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২০১২সালের ২১ মার্চ হাইকোর্ট সরকারের প্রতি রুল জারি করে। সেইসঙ্গে ব্লগারদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ব্লগগুলো বন্ধ করে দেয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। হাইকোর্টের এ নির্দেশনার আলোকে বিটিআরসি, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা স্বঘোষিত নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন ও সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত ‘থাবা বাবা’ নামের ব্লগার রাজীব হায়দারসহ বেশ কয়েকজন ব্লগারের আপত্তিকর লেখাগুলো চিহ্নিত করে। সেইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। ‘থাবা বাবা’ নাম ব্যবহার করে আহমেদ রাজীব ‘আমার ব্লগ’সহ বিভিন্ন ব্লগে নিয়মিত লিখত। ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলি স্টার ও গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদেও এটি উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অনুসন্ধান : আদালতের নির্দেশনার আলোকে গত বছর ২০ মে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে এআইজি (সিকিউরিটি সেল) ও আইন কর্মকর্তা মো. আলমগীর আলম স্বাক্ষরিত একটি র্যাব হেডকোয়ার্টার্স, এসবি, সিআইডিসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের দায়েরকৃত রিট পিটিশন নং ৮৮৬/২০১২ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি প্রেরণ করা হলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পত্রের বরাতে ওই রিট পিটিশনের নির্দেশ মোতাবেক বর্ণিত বিষয়ে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রেরণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ব্যাপক অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে গত ২০১২সালের ২৩ মে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। স্পেশাল ব্রাঞ্চের এডিশনাল আইজির পক্ষে বিশেষ পুলিশ সুপার (টিএফআই) এসএন মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের সামহোয়ার ইন ব্লগে লিখিত ‘কুফুরী কিতাব-হজরত-মহাউম্মাদ ও কোরান-হাদিস রঙ্গ’ এবং ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে একই ব্যক্তির লেখা ‘ধার্মিকতা একটি মানসিক ব্যাধি, আসুন আমরা একে প্রতিরোধ করি’ শীর্ষক লেখাগুলোসহ ছয়টি মন্তব্যের বিষয় উল্লেখ করা হয়।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এসব ওয়েবসাইট বন্ধ করা উচিত। আর এটা করার একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে বিটিআরসির। সেইসঙ্গে এসব ওয়েবসাইট মনিটরিং করার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করা যেতে পারে। পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এ প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে পাঠায়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ মো.আল-আমীন সরকার স্বরাষ্ট্র সচিবের পাঠানো এ প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।
র্যাবের অনুসন্ধান : ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণসংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে র্যাব সদর দফতরও উদ্যোগ নেয়। গত ২০১২সালে ৩১ মে র্যাবের সব অধিনায়কের কাছে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনামাও পাঠানো হয়। স্কোয়াড্রন লিডার ও উপ-পরিচালক (এমআইএস) মোসাম্মত আরজুমান বানু স্বাক্ষরিত অধিনায়কদের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং ৮৮৬/২০১২-এর আদেশ মোতাবেক আক্রমণাত্মক এবং ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত সংশ্লিষ্ট তথ্য সংবলিত ইন্টারনেট সাইটগুলো ব্লক করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’
পরে র্যাবের গৃহীত পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে র্যাব সদর দফতর থেকে একটি প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়েও পাঠানো হয়। এ প্রতিবেদনটিও গ্রহণ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ মো. আল-আমিন সরকার। ধর্মের অবমাননাকারী চিহ্নিত ব্লগারদের ধরতে র্যাবের ভূমিকা সম্পর্কে র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানায়, এ বিষয়ে তাত্ক্ষণিকভাবেই সরকারের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।
বিটিআরসির ভূমিকা : উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে বিটিআরসি গত ২০১২সালের ৩ জুন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে একটি প্রতিবেদন পেশ করে। এতে আদালতে উপস্থাপিত ৬টি ওয়েবসাইটের মধ্যে ৪টি ওয়েবসাইট বন্ধ করার কথা বলা হয়। সামহোয়ার ইন বাংলা ব্লগে আসিফ মহিউদ্দিনের লেখা ‘কুফুরী কিতাব-হজরত-মহাউম্মাদ ও কোরান-হাদিস রঙ্গ’ এবং ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে একই ব্যক্তির লেখা ‘ধার্মিকতা একটি মানসিক ব্যাধি, আসুন আমরা একে প্রতিরোধ করি’ শীর্ষক ব্লগ দুটি বন্ধের বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে বলা হয়েছে যে, এই দুটি ওয়েবসাইট আমাদের এসআইজি ইকুইপমেন্ট সুবিধা ইনস্টল না থাকায় ব্লগ করা যাচ্ছে না। বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. মাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ প্রতিবেদনটি বিটিআরসির আইন উপদেষ্টার মাধ্যমে আদালতে পেশ করা হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে এ সংস্থাগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে এ ধরনের সুপারিশ করলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা উল্টো সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্লগ ও ফেসবুকে 'আপত্তিকর' লেখালেখির অভিযোগে চার ব্লগারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুই মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
বিস্তারিত পরুন এখানে
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন
দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?
দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখস্তান.....
শেখস্তান.....
বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের বিয়ের খাওয়া
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন