ভবঘুরে জীবনের শুরুটা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ’র একলা চল রে গান কে অনুপ্রেরনা মেনে।অনেক টা পথ মাড়িয়ে এসেছি কারও কাছে উড়ন চণ্ডী কারও কাছ থেকে পাগলা টাইপ উপাধি মাথা পেতে নিয়ে।

আমার চির চেনা একলা চল নীতি থেকে বেড়িয়ে এবার ভাবলাম গল্পটা অন্যরকম হোক।ফেইসবুকের কল্যানে পরিচয় হল এরকম কিছু মানুষের সাথে।মনের সাথে মন মিলে গেলে কোনও চ্যালেঞ্জ কে’ই আর কঠিন মনে হয়না।কিছু স্বপ্ন ছোঁয়ার পথে তাই এক রাতে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম অজানার উদ্দেশ্যে।এক এক জন ঢাকার এক একেক প্রান্ত থেকে এসে জড়ো হলাম কমলাপুর ষ্টেশনে।মজার ব্যাপার হল তার আগে পর্যন্ত আমরা একে অপরকে চিনতাম না কিন্তু জানতাম এক অদ্ভুত সম্পর্কের টানে। কমলাপুর ষ্টেশন এ এসে আমরা প্রথম একে অপরকে দেখি।কিন্তু মনে হল যেন অনেক কালের চেনা।
যাত্রা হল শুরু........
ট্রেন ছাড়ল রাত ১১ টায়।গন্তব্য সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই এর কিছু অসাধারন ট্রেইল।ট্রেন ছাড়তেই টের পাচ্ছিলাম চাঁপা উত্তেজনার ঢেউ।কোথায় ঘুমাব সবার চোখে এক অদ্ভুত দৃষ্টি।স্বপ্ন কে ছোঁয়ার,কাছে টানার এক সম্মোহনী টানে যেন দুলছি ট্রেনের সাথে।লাকসাম পাড় হতেই এক জন অতি উৎসাহে চেক ইন দিয়ে দিল ফেসবুকে।

দু'চোখ আটকে যায় মাঝে মাঝেই এমন সবুজ প্রান্তরে
যাত্রাপথে..
অবশেষে কাঙ্খিত সীতাকুণ্ডের দেখা পেলাম।ট্রেন এসে থামল সকাল ৮টায়।এসেই পেয়ে গেলাম নাকি সাথে নিয়ে আসলাম প্রিয়তমা বৃষ্টি কে(বৃষ্টি নামের কেউ থাকলে মাইন্ড খাইয়েন না,মনে মনে বুঝে নিয়েন


সাগড়ের স্বচ্ছ জলরাশি .।
ঘড়িতে স্টপ ওয়াচ চালু করে শুরু করে দিলাম ঊর্ধ্ব মুখে এক দুরন্ত ট্রেক।প্রতিদিনের বৃষ্টি তে পাহাড়ি পথ টা আমাদের জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিল।পিচ্ছিল পথে পাহাড় বাইতে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে।তবে আমাদের কে ঠাণ্ডা হাওয়ার পরশ বিছিয়ে মাঝে মাঝেই স্বাগত জানিয়েছে ছোট বড় বেশ কিছু ঝরনা।পাহারি ঝরনায় গা ভেজাতেই আবার ফিরে পেলাম সতেজতা,দুর্বার গতি ফিরে এল আমাদের মাঝে।এগিয়ে চললাম সবুজের আল বেয়ে এঁকেবেঁকে সাপের মত। যখন প্রথম মন্দির পর্যন্ত পৌঁছলাম ততক্ষনে আমরা আর আমাদের মাঝে নেই।এক খণ্ড পাথরের বুকে তখন সঁপে দিলাম,চোখ বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে শুষে নিলাম সবটুকো সবুজের ঘ্রান।
প্রথম মন্দিরে পৌঁছার পর
এদিকে ঘড়ির কাটা এগিয়ে চলছে।আমাদের টাইমার বলছে দৌড়াও।আর একটুখানি পথ।আমাদের গন্তব্যের শেষ চূড়া আমাদের ডাকছে।এবার পেয়ে গেলাম পেয়ারা বাগান।দু’পাশে ঘন বাগানে দুলছে কতো শত কাঁচা পাকা পেয়ারা।কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে অবিচল


হঠাৎ মেঘের আক্রমন
চন্দ্রনাথ মন্দিরের পেছনের ভিউ..
সবুজ পাহাড়ের ঢেউ
অবশেষে......হ্যাঁ...আমরা ছুঁয়ে দিলাম আমাদের আকাংক্ষিত শ্রীঙ্গ...সর্বোচ্চ চূড়ায় দাঁড়িয়ে বাড়িয়ে দিলাম দু’হাত শূন্যে।অনুভবে তখন আকাশ ছোঁয়ার দম্ব।চারপাশে ঘন সবুজের ঢেউ,যেন আগুন লেগেছে ছুটন্ত বাতাসে।ওদিকে দখিনের দিগন্তের সাথে যেন মিশে আছে সমুদ্রের ফনা,নিরন্তর বয়ে চলা সাগর কন্যার সেকি আকুল আহ্বান।স্টপ ওয়াচ বলছে এই অভিযানে আমাদের সময় লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট।পশ্চিম আকাশে ততোক্ষণে সূর্য মামা বিদায় নিতে যাচ্ছে।সে এক অদ্ভুত দৃশ্য।আমরা একটুও সময় নষ্ট না করে নেমে গেলাম ক্যামেরার শাটার টেপাড় প্রতিযোগিতায় ...
চলবে...