বর্তমান সময়ে দেখা যায়, কবি নজরুল চরম অসাম্প্রদায়িক কবি হয়েও চরম সাম্প্রদায়িক লোকের কাছে তিনি অতি প্রিয়। অনেক ওয়াজ মাহফিলেও হুজুর, পীর বুজুর্গরা কবি নজরুলের ইসলামী কবিতাগুলা পড়ে শোনান, আর তাঁকে ইসালামের কান্ডারী হিসেবে তুলে ধরেন। তার আদর্শকে সম্মান প্রদর্শন করে বয়ান করে। কিন্তু আমি মনে করি এরা কেউই কবি নজরুলের সাহিত্য চর্চার ধারের কাছেও নেই। এরা কবি নজরুলকে কখনো চিনতে পারেনি। কখনো চেনার চেষ্টাও করেনি।
কবি নজরুলের অসাম্প্রদায়ীক সাহিত্য সাধনা বিষয়ে সামুতে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি পোষ্ট এসেছিল।
...ইহাই যৌবন, এই ধর্ম যাহাদেরÑতাহারাই তরুণ। আমাদের দেশ নাই, জাতি নাই, অন্য ধর্ম নাই। দেশ-কাল-জাতি-ধর্মের সীমার ঊর্ধ্বে ইহাদের সেনানিবাস। আজ আমরা মুসলিম তরুণেরা যেন অকুণ্ঠিতচিত্তে মুক্তকণ্ঠে বলিতে পারি : ধর্ম আমাদের ইসলাম কিন্তু প্রাণের ধর্ম আমাদের তারুণ্য, যৌবন। আমরা সকল দেশের, সকল জাতির, সকল ধর্মের, সকল কালের। আমরা মুরিদ যৌবনের। এই জাতি-ধর্ম-কালকে অতিক্রম করিতে পারিয়াছে যাহাদের যৌবন, তাঁহারাই আজ মহামানব, মহাত্মা, মহাবীর। তাঁহাদিগকে সকল দেশের, সকল ধর্মের সকল লোক সমান শ্রদ্ধা করে।
পথ-পার্শ্বের যে অট্টালিকা আজ পড় পড় হইয়াছে, তাহাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া দেওয়াই আমাদের ধর্ম; এই জীর্ণ অট্টালিকা চাপা পড়িয়া বহু মানবের মৃত্যুর কারণ হইতে পারে।
যে ঘর আমাদের আশ্রয় দান করিয়াছে তাহা যদি সংস্কারাতীত হইয়া আমাদেরই মাথায় পড়িবার উপক্রম করে, তাহাকে ভাঙ্গিয়া নতুন করিয়া গড়িবার দুঃসাহস আছে একা তরুণেরই। দোর দেওয়া এই পৃথিবীর নিয়ামত হইতে যে নিজেকে বঞ্চিত রাখিল, সে যত মুনাজাতই করুক, খোদা তাহা কবুল করিবেন না। খোদা হাত দিয়েছেন বেহেশত ও বেহেশ্তি চীজ অর্জন করিয়া লইবার জন্য, ভিখারির মত হাত তুলিয়া ভিক্ষা করিবার জন্য নয়। আমাদের পৃথিবী আমরা আমাদের মনের মত করিয়া গড়িয়া লইব, ইহাই হউক তরুণের সাধনা।
আমাদের বাঙ্গালি মুসলিমদের মধ্যে যে গোঁড়ামি, যে কুসংস্কার, তাহা পৃথিবীর আর কোন দেশে, কোন মুসলমানের মধ্যে নাই বলিলে বোধ হয় অত্যুক্তি হইবে না। আমাদের সমাজের কল্যাণকামী যে সব মৌলানা সাহেবান খাল কাটিয়া বেনোজল আনিয়াছিলেন, তাঁহারা যদি ভবিষ্যৎদর্শী হইতেন, তাহা হইলে দেখিতে পাইতেন বেনোজলের সাথে সাথে ঘরের পুকুরের জলও সব বাহির হইয়া গিয়াছে। উপরন্তু সেই খাল বাহিয়া কুসংস্কারের অজস্র কুমির আসিয়া ভিড় করিয়াছে। মৌলানা মৌলবী সাহেবকে সওয়া যায়, মোল্লা ও চক্ষুকর্ণ বুজিয়া সহিতে পারি, কিন্তু কাঠমোল্লার অত্যাচার অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে। ইসলামের কল্যাণের নামে ইহারা যে কওমের জাতির ধর্মের কি অনিষ্ট করিতেছেন তাহা বুঝিবার মতো জ্ঞান নাই বলিয়া ইহদের ক্ষমা করা যায়। ইহারা প্রায়ই প্রত্যেকেই ‘মনে মনে শাহ ফরীদ, বগল-মে ইট।’ ইহাদের নীতি ‘মুর্দা দোজখ-মে যায় য়্যা বেহেশ্ত-মে যায়, মেরা হালুয়া রুটি-সে কাম।’
‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল।’ নীতি অনুসরণ না করিলে সভ্য জগতের কাছে আমাদের ধর্ম, জাতি আরো লাঞ্ছিত ও হাস্যাস্পদ হইবে। ইহাদের ফতুয়া-ভরা ফতোয়া। বিবি তালাক ও কুফরির ফতোয়া তো ইহাদের জাম্বিল হাতড়াইলে দুই দশ গ-া পাওয়া যাইবে। এই ফতুয়াধারী ফতোয়াবাজদের হাত হইতে গরীবদের বাঁচাইতে যদি কেহ পারে তো সে তরুণ। ইহাদের হাতের ‘আষা’ বা ষষ্টি মাঝে মাঝে আজদাহা রূপ পরিগ্রহ করিয়া তরুণ মুসলিমদের গ্রাস করিতে আসিবে সত্য, কিন্তু এই ‘আষা’ দেখিয়া নিরাশ হইয়া ফিরিলে চলিবে না। এই ঘরো যুদ্ধÑ ভাই-র সহিত আত্মীয়ের সহিত যুদ্ধইÑ সর্বাপেক্ষা বেদনাদায়ক। তবু উপায় নাই। যত বড় আত্মীয়ই হোক, তাহার যক্ষ্মা বা কুষ্ঠ হইলে তাহাকে অন্যত্র না সরাইয়া উপায় নাই। যে হাত বাঘে চিবাইয়া খাইয়াছে তাহাকে কাটিয়া ফেলিয়া দেওয়া ছাড়া প্রাণ রক্ষার উপায় নাই। অন্তরে অত্যন্ত পীড়া অনুভব করিয়াই এসব কথা বলিতেছি। চোগা-চাপকান দাড়ি-টুপি দিয়া মুসলমান মাপিবার দিন চলিয়া গিয়াছে। পৃথিবীর আর সব দেশের মুসলমানদের কাছে আজ আমরা অন্তত পাঁচ শতাব্দি পেছনে পড়িয়া রহিয়াছি। যাহারা বলেন, ‘দিন ত চলিয়া যাইতেছে, পথ তো চলিতেছি,’ তাহাদের বলি ট্রেন-মোটর-এরোপ্লেনের যুগে গরুর গাড়িতে শুইয়া দুই ঘণ্টায় এক মাইল হিসাবে গদাই-লস্করি চালে চলিবার দিন আর নাই। যাহারা আগে চলিয়া গিয়াছে তাহাদের সঙ্গ লইবার জন্য আমাদের একটু অতিমাত্রায় দৌড়াইতে হয় এবং তাহার জন্য পায়জামা হাঁটুর কাছে তুলিতে হয়, তাই না হয় তুলিলাম। ঐ টুকুতেই কি আমার ঈমান বরবাদ হইয়া গেল? ইসলামই যদি গেল, মুসলিম যদি গেল, তবে ঈমান থাকিবে কাহাকে আশ্রয় করিয়া? যাক আর শত্রু বৃদ্ধি করিয়া লাভ নাই। তবে ভরসা এই যে, বিবি তালাকের ফতোয়া শুনিয়াও কাহারও বিবি অন্তত বাপের বাড়িও চলিয়া যায় নাই এবং কুফরি ফতোয়া সত্ত্বেও কেহ ‘শুদ্ধি’ হইয়া যান নাই।
আমাদের পথে মোল্লারা যদি হন বিন্ধ্যাচল, তাহা হইলে অবরোধ প্রথা হইতেছে হিমাচল। আমাদের দুয়ারের সামনের এই ছেঁড়া চট যে কবে উঠিবে খোদা জানেন। আমাদের বাংলাদেশের স্বল্পশিক্ষিত মুসলমানদের যে অবরোধ, তাহাকে অবরোধ বলিলে অন্যায় হইবে, তাহাকে একেবারে শ্বাসরোধ বলা যাইতে পারে। এই জুজুবুড়ির বালাই শুধু পুরুষদের নয়, মেয়েদেরও যেভাবে পাইয়া বসিয়াছে, তাহাতে ইহাকে তাড়াইতে বহু সরিষা-পোড়া ও ধোঁয়ার দরকার হইবে। আমাদের অধিকাংশ শিক্ষিত বা অর্ধ-শিক্ষিত লোকই চাকুরে, কাজেই খরচের সঙ্গে জমার তাল সামলাইয়া চলিতে পারে না। অথচ ইহাদের পর্দার ফখর সর্বাপেক্ষা বেশি। আর ইহাদের বাড়িতে শতকরা আশিজন মেয়ে যক্ষ্মায় ভুগিয়া মরিতেছে। আলো-বায়ুর অভাবে। এই সব যক্ষ্মা রোগগ্রস্ত জননীর পেটে স্বাস্থ্য-সুন্দর প্রতিভাদীপ্ত বীর সন্তান জন্মগ্রহণ করিবে কেমন করিয়া! ফাঁসির কয়েদিরও এইসব হতভাগিনীদের অপেক্ষা অধিক স্বাধীনতা আছে। আমরা ইসলামী সেই অনুশাসনগুলির প্রতিই জোর দিয়া থাকি, যাহাতে পয়সা খরচ হইবার ভয় নাই।
কন্যাকে পুত্রের মতই শিক্ষা দেওয়া যে আমাদের ধর্মের আদেশ তাহা মনেও করিতে পারি না। আমাদের কন্যা-জায়া-জননীদের শুধু অবরোধের অন্ধকারে রাখিয়াই ক্ষান্ত হই নাই, অশিক্ষার গভীরতর কূপে ফেলিয়া হতভাগিনীদের চির-বন্দিনী করিয়া রাখিয়াছি। আমাদের শত শত বর্ষের এই অত্যাচারে ইহাদের দেহ-মন এমনি পঙ্গু হইয়া গিয়াছে যে, ছাড়িয়া দিলে ইহারাই সর্বপ্রথম বাহিরে আসিতে আপত্তি করিবে। ইহাদের কি দুঃখ কিসের যে অভাব তাহা চিন্তা করিবার শক্তি পর্যন্ত ইহাদের উঠিয়া গিয়াছে। আমরা মুসলমান বলিয়া ফখর করি, অথচ জানি নাÑ সর্বপ্রথম মুসলমান নর নহে-নারী।
...বিধি-নিষেধের বাধা আমরা মানিব না। গান গাওয়াই যাহার স্বভাব, সেই গানের পাখিকে কোন অধিকারে গলা টিপিয়া মারিতে যাইবে? সুন্দরের সৃষ্টির শক্তি লইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছে যে, কে তাহার সৃষ্টি হেরিয়া কুফরির ফতোয়া দিবে?
এই খোদার উপর খোদকারী আর যারা করুক, আমরা করিব না।
পৃথিবীর অন্যান্য মুসলমান প্রধান দেশের কথা না হয় ছাড়িয়াই দিলাম, এই ভারতেরই সকল প্রদেশের আজও সর্বশ্রেষ্ঠ হল কি কণ্ঠসঙ্গীতে কি যন্ত্রসঙ্গীতে তাহাদের প্রায় সকলেই মুসলমান।
অথচ সে দেশের মৌলভী মৌলানা সাহেবান আমাদের দেশের মৌলভী সাহেবানদের অপেক্ষাও জবরদস্ত। তাহারা ঐসব গুণীদের অপমান বা সমাজচ্যুত করিয়াছেন বলিয়া জানি না। বরং তাহাদের যথেষ্ট সম্মান করেন বলিয়াও জানি। সঙ্গীত শিল্পের বিরুদ্ধে মোল্লাদের সৃষ্ট এই লোকমতকে বদলাইতে তরুণদের আপ্রাণ চেষ্টা করিতে হইবে। তাহাদিগকে শিখাইতে হইবে যাহা সুন্দর তাহাতে পাপ নাই সকল বিধিনিষেধের উপর মানুষের প্রাণের ধর্ম বড়।
আজ বাঙ্গালি মুসলমানদের মধ্যে একজনও চিত্র-শিল্পী নাই, ভাস্কর নাই, সঙ্গীতজ্ঞ নাই, বৈজ্ঞানিক নাই, ইহা অপেক্ষা লজ্জার আর কি আছে? এই সবে যাহারা জন্মগত প্রেরণা লইয়া আসিয়াছিল, আমাদের গোঁড়া সমাজ তাহাদের টুটি টিপিয়া মারিয়া ফেলিয়াছে ও ফেলিতেছে। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের সমস্ত শক্তি লইয়া বুঝিতে হইবে। নতুবা আর্টে বাঙ্গালি মুসলমানদের দান বলিয়া কোনো কিছু থাকিবে না। পশুর মত সংখ্যাগরিষ্ঠ হইয়া বাঁচিয়া আমাদের লাভ কি, যদি আমাদের গৌরব করিবার কিছুই না থাকে। ভিতরের দিকে আমরা যত মরিতেছি, বাহিরের দিকে তত সংখ্যায় বাড়িয়া চলিতেছি। এক মাঠ আগাছা অপেক্ষা একটি মহীরুহ অনেক বড়Ñশ্রেষ্ঠ।
প্রবন্ধঃ হিন্দু-মুসলমান
-------
......যে প্রশ্ন করছিলাম, এই যে ভেতরের ন্যাজ, এর উদ্ভব কোথায়? আমার মনে হয় টিকিতে ও দাড়িতে। টিকিপুর ও দাড়িস্তান ই বুঝি এর আদি জন্মভূমি। পশু সাজবার মানুষের একি 'আদিম' দুরন্ত ইচ্ছা!- ন্যাজ গজাল না বলে তারা টিকি দাড়ি জন্মিয়ে যেন সান্তনা পেল।
......হিন্দুত্ব মুসলমানত্ব দুই সওয়া যায়, কিন্তু তাদের টিকিত্ব দাড়িত্ব অসহ্য, কেননা ঐ দুটোই মারামারি বাধায়। টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা হয়ত পন্ডিত্ব। তেমনি দাড়িও ইসলামত্ব নয়, ওটা মোল্লাত্ব। এই দুই "ত্ব" মার্কা চুলের গোছা নিয়েই আজ যত চুলাচুলি!............।
.........নদীর পাশ দিয়ে চলতে চলতে যখন দেখি, একটা লোক ডুবে মরছে, মনের চিরন্তন মানুষটি তখন এ-প্রশ্ন করার অবসর দেয় না যে, লোকটা হিন্দু না মুসলমান। একজন মানুষ ডুবছে, এইটেই হয়ে ওঠে তার কাছে সবচেয়ে বড়, সে ঝাপিয়ে পড়ে নদীতে। হিন্দু যদি উদ্ধার করে দেখে লোকটা মুসলমান, বা মুসলমান যদি দেখে লোকটা হিন্দু- তার জন্য ত তার আত্মপ্রসাদ এতটুকু ক্ষুণ্ণ হয় না। তার মন বলে,"আমি একজন মানুষকে বাঁচিয়েছি,- আমারই মত একজন মানুষ।"
কিন্তু আজ দেখছি কি? ছোরা খেয়ে যখন খায়রু মিয়া পড়ল, আর তাকে যখন তুলতে গেল হালিম, তখন ভদ্র সম্প্রদায় হিন্দুরাই ছুটে আসলেন,"মশাই করেন কি? মোচলমানকে তুলচেন? মরুক ব্যাটা।" তারা 'অজাতশ্মশ্রু' হালিমকে দেখে চিনতে পারেনি যে সে মুসলমান। খায়রু মিয়ার দাড়ি ছিল। ছোরা খেয়ে যখন ভুজালি সিং পড়ল পথের উপর, তাকে তুলতে গিয়ে তুর্কি-ছাট শশধরবাবুরও ঐ অবস্থা।
মানুষ আজ পশুতে পরিণত হয়েছে, তাদের চিরন্তন আত্মীয়তা ভুলেছে। পশুর ন্যাজ গজিয়েছে ওদের মাথার ওপর, ওদের সারা মুখে। ওরা মারছে লুংগিকে, মারছে নেংগোটিকে; মারছে টিকিকে, দাড়িকে! বাইরের চিহ্ন নিয়ে এই মূর্খদের মারামারির কি অবসান নেই! .............।
প্রবন্ধ: আমার ধর্ম
------. কিসের জন্য আমাদের ধর্মকে আশ্রয় করতে হবে? ওরে শুদ্র, তুই এবার ওঠ। উঠে বল,"আমি ব্রাহ্মন নই যে ধর্মের ব্যাখ্যা নিয়ে পড়ে থাকব। আমি আর অমার মুখের দিকে চেয়ে থাকব না। আমায় বাঁচতে হবে- যেমন করে হোক আমি বাচব।" ওরে পতিত, ওরে চিরলাঞ্ছিত, তুই দেখ সারা বিশ্ব তোকে ধ্বংস করতে উদ্যত। আচার তার জগদ্দল পাথর তোর বুকে বসে দিয়েছে- সমাজ তোর কন্ঠরোধ করে ফেলেছে। ধনীর অট্যহাস্য তোর প্রাণের করুণ কাঁদুনি ঢেকেছে।
কিসের ধর্ম? আমার বাঁচাই আমার ধর্ম.....।
আমার আবার ধর্ম কি? যার ঘরে বসে কথা কইবার অধিকার নেই, দুপুর রাতে দুঃস্বপ্নে যার ঘুম ভেংগে যায়, অত্যাচারকে চোখ রাংগাবার যার শক্তি নেই, তার আবার ধর্ম কি? যাকে নিজের ঘরে এসে অবহেলায় পশুর মত মেরে ফেলতে পারে, যার ভাই-বোন বাপ-মাকে মেরে ফেললেও বাক্যস্ফুট করবার আশা নেই, তার আবার ধর্ম কি? দু'বেলা দুটো খাবার জন্যই যার বাঁচা, একটু আরাম করে কাল কাটিয়ে দেবার জন্যই যার থাকা, তার আবার ধর্ম কি?
......। ওগো তরুন, আজ কি ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকবে- তুমি কি বাঁচবার কথা ভাববে না? ওরে অধীন, ওরে ভন্ড, তোর আবার ধর্ম কি? যারা তোকে ধর্ম শিখিয়েছে, তারা শত্রু এলে বেদ নিয়ে পড়ে থাকতো? তারা কি দুশমন এলে কোরআন পড়তে ব্যাস্ত থাকতো? তাদের রণ কোলাহলে বেদমন্ত্র ডুবে যেত, দুশমনের খুনে তাদের মসজিদের ধাপ লাল হয়ে যেত। তারা আগে বাঁচতো।
অনেক আগে ব্লগার নাস্তিকের ধর্মকথা এ বিষয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিল ।
আমার ব্যক্তিগত মাতামত--
কবি নজরুল বাংলা সাহিত্যের এক নতুন দিগন্ত উম্মোচন করেছিলেন। তার সাধনার ফসল আজকের সমৃদ্ধ বাংলা সাহিত্য। তার রচনা আমাদের নতুন করে বাচতে শেখায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সদাপ্রতিবাদী আমাদের জাতীয় কবি নজরুল। তিনি তার রচনা/ সাধনায় অসাম্প্রদায়িক সামাজ গঠনে জোর দিয়েছিলেন। তাই শুধু মাত্র ধর্মীয় পরিচয়ে আমরা কবিকে আর আবদ্ধ করে না রাখি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:২৬