তখন ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছি, টিভি দেখার জন্য বাসায় রেগুলার বকা খেতাম, বিটিভি ছাড়া আর কোন বাংলা চ্যানেল ছিলনা, এত ছোট বয়সে হিন্দি বুঝতাম না বলে সব আকর্ষণের মূল ছিল বাংলা সিনেমা, কিন্তু তখন সপ্তাহে একটা করে সিনেমা হত, সেই সিনেমা আর সাপ্তাহিক ছায়াছন্দ দেখার জন্য সারা সপ্তাহ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। একদিন স্কুল থেকে এসে শুনি সালমান শাহ মারা গেছে। আমি তো যারপরনাই ক্ষুব্ধ। সবাই এভাবে মিথ্যা কথা না বললেও তো হয়, তাইনা? না হয় আমি একটু সিনেমা দেখিই, তাই বলে আমাকে এভাবে উল্টাপাল্টা বলবে?
আমার সন্দেহ সত্যি প্রমাণ করে টিভিতে সারাক্ষণ সালমান শাহের সিনেমা দিতে লাগলো। আমি তো মহা খুশি, সালমান শাহ মরে যেয়ে খারাপ তো কিছু হয়নি, বরং ভালই হয়েছে। ইতিমধ্যে পেপার খুলে দেখি সেখানেও প্রতিদিন সালমানের মৃত্যু নিয়ে লিখছে। সেগুলো দেখে আমার বিশেষ কোন প্রতিক্রিয়া হলনা, কেউ মরে গেলে সমস্যা কি? যদি তাকে সবসময় সিনেমায় দেখা যায় তাহলেই তো হল।
বালিকা মন তখনও জানে না মৃত্যুর তাৎপর্য কি... জানতে বেশ কিছুদিন সময় লেগেছে, ততদিনে আমি বাংলা সিনেমা দেখা ছেড়ে দিয়েছি, একই সিনেমা বারবার দেখায়, ভাল্লাগেনা। হিন্দি শিখে গেছি, সুতরাং অক্ষয় কুমার, আমির খান আর শাহরুখ খানের সিনেমা দেখতে আর বেগ পেতে হয়না।
আজ ১৬ বছর পর মনে হচ্ছে, কে জানে, যদি সালমান শাহ সেসময় মারা না যেতেন, বাংলা চলচ্চিত্র তার এক খুদে দর্শককে আরও কিছুদিন ধরে রাখতে পারত...।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২৭