একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করলেই তাকওয়ার অধিকারী হওয়া যাবে নতুবা নয়। যাদের কর্মকাণ্ডে শির্ক রয়েছে, তারা যত পরহেযগার বা যত আমলই করুক না কেন তারা কখনো মুত্তাকী হতে পারবে না। তাই জীবনের যাবতীয় ইবাদাতকে একমাত্র আল্লাহর জন্য খালেসভাবে করতে হবে।
আল্লাহ্ বলেন , ➡ ১. হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। -সূরা বাকারা: ২১
ইবাদাতের ভিত্তি তিনটি রুকনের উপর স্থাপিত।
➡ এক. আল্লাহ্ তা'আলার জন্য পরিপূর্ণ ভালবাসা পোষণ করা। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে [সূরা আল-বাকারাহঃ ১৬৫]
➡দুই. পরিপূর্ণ আশা পোষণ করা। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “এবং তারা তার দয়া প্রত্যাশা করে”। [সূরা আলইসরাঃ ৫৭]
➡তিন. আল্লাহকে পরিপূর্ণভাবে ভয় করা। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “এবং তারা তার শাস্তিকে ভয় করে”। [সূরা আল-ইসরাঃ ৫৭]
➡ ২. হে মানুষ! জমিনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট শত্রু। -সূরা বাকারা: ১৬৮
➡ ৩. হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী।
➡নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর পর্যবেক্ষক হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফ্স থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক।। -সূরা নিসা: ১
➡ ৪. হে মানুষ! অবশ্যই তোমাদের নিকট রাসূল এসেছে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য নিয়ে। সুতরাং তোমরা ঈমান আনো, তা তোমাদের জন্য উত্তম হবে। আর যদি কুফরি করো, তবে নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। -সূরা নিসা: ১৭০
➡ ৫. হে মানুষ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের নিকট স্পষ্ট আলো নাজিল করেছি। -সূরা নিসা: ১৭৪
➡তোমাদের কাছে আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তথা এক প্রকৃষ্ট কিতাব অর্থাৎ আল-কুরআন এসেছে। সূরা আল-মায়েদার আয়াত ১৫
➡ ৬. বলো, হে মানুষ! আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যার রয়েছে আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব। তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন ও তার প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তার বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখে। আর তোমরা তার অনুসরণ করো, আশা করা যায়- তোমরা হেদায়েত লাভ করবে। -সূরা আরাফ: ১৫৮
➡ ৭. হে মানুষ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং অন্তরসমূহে যা থাকে তার শিফা, আর মুমিনদের জন্য হেদায়েত ও রহমত। -সূরা ইউনুস: ৫৭
➡ ৮. বলো, হে মানুষ! তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহে থাকো, তবে আল্লাহ ছাড়া তোমরা যার ইবাদত করো আমি তার ইবাদত করি না, বরং আমি ইবাদত করি আল্লাহর, যিনি তোমাদের মৃত্যু দেন। আর আমি আদিষ্ট হয়েছি মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার। -সূরা ইউনুস: ১০৪
➡ ৯. বলো, হে মানুষ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে। সুতরাং যে হেদায়েত গ্রহণ করবে, সে নিজের জন্যই হেদায়েত গ্রহণ করবে। আর যে পথভ্রষ্ট হবে, সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট হবে। আর আমি তোমাদের অভিভাবক নই। -সূরা ইউনুস: ১০৮
➡ ১০. হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। নিশ্চয়ই কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা দেখবে সেদিন প্রত্যেক স্তন্য দানকারিনী আপন দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক গর্ভধারিণী তার গর্ভপাত করে ফেলবে, তুমি দেখবে মানুষকে মাতাল সদৃশ, অথচ তারা মাতাল নয়। তবে আল্লাহর আজাবই কঠিন। -সূরা হজ: ১-২
➡ ১১. হে মানুষ! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দেহে থাকো তবে নিশ্চয়ই জেনে রেখো, আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, তারপর শুক্র থেকে, তারপর আলাকা থেকে, তারপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট অথবা অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট গোশত থেকে। তোমাদের নিকট বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করার নিমিত্তে। আর আমি যা ইচ্ছা করি তা একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত মাতৃগর্ভে অবস্থিত রাখি। অতঃপর আমি তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করি, পরে যাতে তোমরা যৌবনে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কারও কারও মৃত্যু দেওয়া হয় এ বয়সেই, আবার কাউকে কাউকে ফিরিয়ে নেওয়া হয় হীনতম বয়সে, যাতে সে জ্ঞান লাভের পরও কিছু না জানে। তুমি জমিনকে দেখতে পাও শুষ্কাবস্থায়, অতঃপর যখনই আমি তাতে পানি বর্ষণ করি, তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সকল প্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ। -সূরা হজ: ৫
➡ ১২. আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করে দেয়ার চেষ্টা করে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। -সূরা হজ আয়াত ৫১
➡ ১৩. হে মানুষ! একটি উপমা পেশ করা হলো- মনোযোগ দিয়ে তা শোনো, তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো তারা কখনও একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না। যদিও তারা এ উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়। আর যদি মাছি তাদের কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নেয়, তারা তার কাছ থেকে তাও উদ্ধার করতে পারবে না। অন্বেষণকারী ও যার কাছে অন্বেষণ করা হয় উভয়েই দুর্বল। -সূরা হজ: ৭৩
➡ ১৪. "হে মানব জাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর এবং ভয় কর এমন এক দিবসকে, যখন পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না এবং পুত্রও তার পিতার কোন উপকার করতে পারবে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ওয়াদা সত্য। অতএব, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে ধোঁকা না দেয় এবং আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারক শয়তানও যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে।" (সুরা লোকমান আয়াত 33)
➡ ১৫. হে মানুষ! তোমাদের ওপর আল্লাহর নিয়ামতকে তোমরা স্মরণ করো। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো স্রষ্টা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও জমিন থেকে রিজিক দেবে? তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। অতএব তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে? –সূরা ফাতির: ৩
➡ ১৬. হে মানুষ! নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা সত্য; অতএব দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে; আর বড় প্রতারক (শয়তান) যেন তোমাদেরকে আল্লাহর ব্যাপারে প্রতারণা না করে। -সূরা ফাতির: ৫
➡ ১৭. হে মানুষ! তোমরা আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী আর আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও প্রশংসিত। -সূরা ফাতির: ১৫
➡ ১৮. হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। -সূরা হুজুরাত: ১৩
➡ ১৯. হে মানুষ! কিসে তোমাকে তোমার মহান রব সম্পর্কে ধোঁকা দিয়েছে? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তোমাকে সুষম করেছেন, তারপর তোমাকে সুসামঞ্জস্য করেছেন। যে আকৃতিতে তিনি চেয়েছেন তোমাকে গঠন করেছেন। -সূরা ইনফিতার: ৬-৮
➡ ২০. হে মানুষ! তোমার রব পর্যন্ত (পৌঁছতে) অবশ্যই তোমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। অতঃপর তুমি তার সাক্ষাৎ পাবে। -সূরা ইনশিকাক: ৬
দেখুন আল্লাহ্ আপনাকে কত ভাবে, কত সহজ , করে কত রকমের উধাহরন দিয়ে বুঝাচ্ছে এর পরেও যদি আপনি না বুঝেন তাহলে আপনাকে আর কে আছে বুঝানোর তাই এতেও যদি বুঝ না আসে তাহলে দুর্ভোগ আপনার জন্য ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:২০