আমার আত্মীয়টি বললেন,এবার মালয়েশিয়া লোক পাঠাতে আগের বারের চেয়ে বেশী টাকা লাগবে।আমি অবাক হলাম,কেন?BMET (The Bureau of Manpower Employment and Training) না সব দেখাশোনা করবে এবার?মিডলম্যানরা এবার টাকা বাগাতে পারবেনা,সরকার বললো না সরাসরি G to G বেসিস-এ কাজ হবে?।
উনি হেসে বললেন,অলরেডী আমার এলাকার এমপির সাথে দর কষাকষি চলছে,আমার ট্রাভেল এজেন্সীর কাস্টমার উনি পাঠাবেন।তা তিনি বেশী চান,আমরা এক লাখ বিশ বলেছিলাম..
একটা দীর্ঘশ্বাস পড়লো আমার।সরকার বলছে যেখানে ৩০-৪০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়া যাবে এবার লোক,গতবারের মতো ৮৪,০০০-এর জায়গায় ২,০০,০০০/- টাকা লাগবেনা,সেখানে বাস্তবতা হলো এই।মনে পড়লো,টিআইবির রিপোর্ট বলেছিলো ৯৭% সংসদ সদস্য (মানে হলো ৯ জন বাদে বাকি ২৯১ জন!)নাকি দূর্নীতিগ্রস্ত।উপরের ঘটনা জানার পর রিপোর্টটা বিশ্বাস করবো নাকি সরকারের তরফ থেকে রিপোর্টের সরব বিরোধিতা বিশ্বাস করবো সেই dilemma-য় আবার পড়লাম।
যা হবে তার এখন মোটামুটি রুপরেখা দাঁড় করানো যায়।লোক পাঠাতে মিডল ম্যান এবং সরকারী লোক দুই দল-ই টাকা খসাবে বেকার/সেমি-বেকার দরিদ্র/নিম্ন-মধ্যবিত্ত/মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকগুলোর।দুই দলকে টাকা দিতে জেরবার হবেন করিম-রহিমরা।হয়তো জেলা কোটায় রেজিস্ট্রেশনের পর পাঠাবার লিস্টে সব মিডলম্যানের আনা লোকই দিবেন মহামান্য এমপিরা/সরকার দলীয় লোকেরা!তবে কিছু সোনার ছেলে-ও সেই লিস্টে জায়গা পাবেন আশা করি,তারা টাকা দিবেন অথবা দিবেন না এমপির সাথে দহরম-মহরমের ভিত্তিতে।
তা,এ আর এমন কি!সবাইকে তো খেয়ে পরে বাঁচতে হবে,নাকি?রহিম মিয়াকেও বৈদেশী মুদ্রা উপার্জন করে বাপ-মার পেট ভরতে হবে,বোনের বিয়ে দিতে হবে,ভাইকে পড়াতে হবে,নিজে বিয়ে করতে হবে।মিডলম্যান করিম মিয়ার ও এক অবস্হা।সোনার ছেলেদের কিছু রিওয়ার্ড দরকার বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে।আবার এমপি সাহেবের সুইস ব্যাংকে টাকা রাখার ব্যবস্হা হওয়া দরকার,জায়গা-জমি বাড়া দরকার,আরো বাড়ি-গাড়ি দরকার,ছেলে-মেয়ের দেশের বাইরে পড়া দরকার,বেগম সাহেবের দেশের বাইরে কেনা-কাটা দরকার...সবাইকেই বাঁচতে হবে।তাই মিলেমিশে করি কাজ ভিত্তিতে বিদেশে লোক যাবে,সমস্যা কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৫