যেসব জায়গায় আমি অধম ছোটবেলা থেকে বাস করে এসেছি সে জায়গাগুলোর উপর ওয়াজের কারনে আমি ত্যাক্ত-বিরক্ত,নির্যাতিত,নিপীড়িত,লান্চিত..সরি,লান্চিত না,বন্চিত;শান্তির ঘুম থেকে বন্চিত হয়েছি বহুবার,বহুরাত।জিজ্ঞেস করুন কিভাবে,বলছি।
ছোটবেলা ছিলাম ছোট জায়গায়,মফস্বল শহরে।শীতকাল আসলেই বাড়ি থেকে একটু দূরে ধানের জমি খালি থাকতো,সেখানে রাতের বেলা দশদিগন্তকে শোনানোর ব্যবস্হা করে ওয়াজ শুরু হতো।শীত ছাড়াও হতো, যেকোনো দিন বিকাল বেলায় ঘোষণা দেয়া হতো "আজ রাতে আমাদের মাঝে উপস্হিত হবেন উপমহাদেশের নয়নমনি,জগদ্বিখ্যাত,বিশিষ্ট ওলামা অমুক...
"ব্যস,রাতের ঘুম শেষ বিশিষ্ট ওলামা অমুকের গলার সুমধুর সুরেলা কন্ঠের ঝংকারে।সবচে' খারাপ যা তা হলো,আপনি যে জেগে থেকে উনাদের বিতরণকৃত জ্ঞান আহরণ করে ধন্য হবেন..নৈব নৈব চ!কারন কিছু দূর থেকেই বক্তব্য আর কিছু বোঝা যায়না,খালি দূর্বোধ্য কান ফাটানো গগন বিদারী চিৎকার ছাড়া কিছুই আপনি বুঝবেন না। তাহলে কেন এই শাস্তি দেয়া বলুন?দেশের কোন আইনে??

ধর্ম আরো বলে, Narrated Anas bin Malik (رضي الله عنه) :
The Prophet (صلى الله عليه وسلم) said, “Facilitate things to people (concerning religious matters), and do not make it hard for them and give them good tidings and do not make them run away (from Islam).”
[Sahih Bukhari, Volume 1, The Book of Knowledge, No. 69]
তো আমরা মুসলিমরা যদি এভাবে চিল চিৎকার করে মানুষের রাতের ঘুম হারাম করতে থাকি, তবে মানুষ ধর্মের কাছে আসবে না উল্টা হবে?একজন অমুসলিম যদি ঠিক ওয়াজের মাঠের পাশে বাস করেন,তার কি প্রতিক্রিয়া হবে??
এরপর এলাম সিলেট শহরে।সেখানে দরগাহর মাঠে সাঈদী সাহেব এবং প্রখ্যাত আলেমদের প্রায়শ: গগনবিদারী সুরেলা ওয়াজ..আবার ঘুম হারাম!


এখানে আবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো মাঝেমাঝে হিন্দুদের ভজন আর কোথায় কিসের যেন গান বাজনাও শুরু হয়ে যায় রাতব্যাপী..হাহ্!অভাগা যেদিকে চায়,সাগর শুকায় যায়(আমার বেলায় চায় না,যায় হবে)

বি:দ্র: কাল রাতেও মাঝরাত পর্যন্ত ওয়াজ ছিলো আর তারপর শুনলাম বিজয় দিবসের গান..সারারাত গান না বাজালে দিবসটির প্রতি শ্রদ্ধা কমে যাবে কি?জাতির কাছে আর দেশের শব্দদূষণ আইনের(আছে কী!)কাছে প্রশ্ন রইলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১২