শুরুতেই “ইলেক্ট্রনিক্সের খুঁটিনাটি” নামক,
সামু ব্লগের এই অন্যতম অখাদ্য সিরিজখানার যারা নিয়মিত পাঠক ছিলেন, সেইসব ভাই বেরাদরদের (এই সিরিজে কুথাও কুনো ভইন এর উপস্থিতি আইজ পর্যন্ত চউক্ষে পরে নাই, বেরাট আফসুস) কাছে আন্তরিক ও সুবিনীত পন্থায় ক্ষমা চাইতাছি।
কেননা উনাদের আশাভঙ্গ কইরা এই অধম সুদীর্ঘ ৩ সপ্তাহ যাবত শীত থুক্কু গ্রীষ্মনিদ্রা যাইতেছিলাম। আমারই বা কি দোষ। রুয়েটের শিক্ষক মহাশয় নামক এলিয়েন প্রাণীদের ঠ্যাঙ্গানির মুখে পইরা নিজের বংশ পরিচয় প্রায় ভুইল্লা গেছিলাম। শেষতক বাঁচাইল সামার ভেকেশন। অতএব চান্স পাইয়া এই অধম আবার ব্লগে।
আগের পোস্ট; কারেন্ট ডিভাইডার আর ভোল্টেজ ডিভাইডার এর পর ইলেক্ট্রিসিটি নিয়া গ্যাঞ্জাইম্যা আলোচনা আরো আগানোর আগে কার্শফ মামুর কারেন্ট ল আর ভল্টেজ ল শিখা রীতিমত ফরজ কাজ।
না হইলে নোডাল আর মেশ এনালাইসিস করতে গিয়া আন্ধারে হাতড়াইতে হইব।
সুতরাং, পোলাপাইন, সক্কলে কার্শফ মামুর বাড়ি দাওয়াত খাইতে আস। লগে, খাতা পেন্সিল নিয়া আইতে ভুলবানা। দাওয়াতে আইজকার আইটেম কারেন্ট ল।
দাওয়াত খাওনের আগে নোড, ব্রাঞ্চ আর মেশ(বা লুপ) কি জিনিস তা আরেকবার মনে করায় দেই। এত্তদিনে ত সব খাইয়া দাইয়া হজম হইয়া গেছে। নোড হইল সার্কিটের কোন পয়েন্ট যেইখানে কয়েকটা এলিমেন্টের মাথা জোড়া লাগে বা মিলিত হয়। ব্রাঞ্চ হইল ২ নোডের ভিতরের এক বা একাধিক এলিমেন্টের সিরিজ কম্বিনেশন। আর মেশ হইল কয়েকখান এলিমেন্ট জোড়া দিয়া বানানো একখান বদ্ধ লুপ।
কার্শফ মামুর কারেন্ট লঃ
এইখানে মামু কইতেছেন যে, কোন নোড কিম্বা বদ্ধ এলাকা (ক্লোজড এরিয়া) থেকে বাইর হওয়া যতই ব্রাঞ্চ থাকুক না কেন, সেইগুলার মাধ্যমে ওই নোড বা এরিয়াতে যতগুলা ভিন্ন ভিন্ন কারেন্ট চলাচল করতেছে, সবগুলার বীজগাণিতিক সমষ্টি হইল শুন্য মানে ফকফকা।
কি ভাই বুইচ্ছেন? আপনারে আর কি কমু, আমি তো নিজেই বুঝি নাই। চলেন একলগে বুঝি।
বীজগাণিতিক সমষ্টি মানে হইল যে আপনাকে অবশ্যই দিক লইয়া চিন্তা করতে হইব। মানে হইল নোডের দিকে কারেন্ট আইতেছে নাকি নোড থিকা বাইর হইয়া যাইতেছে।
যেইগুলা নোডের দিকে আইতেছে সেইগুলা পজিটিভ হইলে যেইগুলা বাইরে যাইতেছে ওইগুলা নেগেটিভ। উল্টাটাও ধরতে পারেন। ঠিক এইভাবেঃ
বাম থিকা ডাইনে কারেন্ট গেলে সেইটা যদি হয় I1 তাইলে ব্যাপারটারে কওন যায় যে ডাইন থিকা বামে -I1 কারেন্ট যাইতেছে। এককেরে ভেক্টরের মতন। মনে হয় বুঝাইতে পারছি।
তাইলে নোডের দিকে যাইতেছে বা নোড থিকা বাইরে যাইতেছে এমন কারেন্ট সবগুলার যোগফল জিরো। নিচের ছবি দেখেনঃ
খিয়াল কইরা দেখেন যে, I1 , I3 , I4 নোডে ঢুকতেছে আর I2 , I5 নোড থিকা বাইরে যাইতেছে ।
তাইলে, উপরের ২ টা ছবি নিয়া চিন্তাভাবনা কইরা আমরা অবশ্যই কইতে পারি,
I1 + I3 + I4 - I2 - I5 = 0 অথবা,
I2 + I5 - I1 - I3 - I4 = 0 অথবা,
I1 + I3 + I4 = I2 +I5
সোজা কথায় কোন নোডে আগত কারেন্ট = নির্গত কারেন্ট অর্থাৎ নোডে কোন কারেন্ট জমা হইয়া থাকেনা।
আইচ্ছা অখন কথা হইল এই সূত্র নোড ছাড়াও কোন বদ্ধ এলাকাতেও প্রয়োগ করা যায়।
নিচের চিত্রখানা মনোযোগ সহকারে খিয়াল কইরাঃ
কার্শফ মামুর ফরমুলা অনুসারে এইখানেও I1 + I3 + I4 = I2 +I5
কি ভাই কিলিয়ার হইল?
যদি খটকা থাকে, তাইলে এরিয়ার ভিতর যেই ৩ টা নোড আছে ওইগুলাতেও কার্শফ মামুর ফরমুলা কামে লাগান, ভিতরের কারেন্ট ৩ টার ৩ টা নাম দিয়া ।
দেখবেন উত্তর পাইয়া গেছেন।
এইবার একটা অংক করেন। খালি খালি দাওয়াত খাইবেন তা তো হইবনা, উপহার সাথে না নিয়া আসলে ক্যাম্নে হইব?
নিচের ছবিতে I5 এর মান বাইর করেন দেখি। এক্কেরে কইলাম পানির মতন। এইটা না পারনের কোনই কারন নাই।
যাউক গা, আইজকা আর লেকচার দিমুনা, মেলা দিছি।
একদিনে বেশি পড়াইলে মাথা টাল খাইয়া যাইব, যা গরম। সামনের দিন ইনশাআল্লাহ কার্শফ মামুর ভোল্টেজ ল গলাধঃকরন করিবেন। আইজকার মতন আল্লাহ হাফিয।
আগের পর্ব গুলাঃ
ইলেকট্রনিক্স এর খুঁটিনাটি - পর্ব ১(সূচনা সাথে ভোল্টেজ ও কারেন্ট এর ধারনা। )
Click This Link
ইলেকট্রনিক্স এর খুঁটিনাটি পর্ব ২( ভোল্টেজ -কারেন্ট শেষ পর্ব + রেজিস্টর নিয়ে আলোচনা )
Click This Link
ইলেকট্রনিক্স এর খুঁটিনাটি পর্ব ৩( রেজিস্টর কালার কোড + আপেক্ষিক রোধ)
Click This Link
ইলেক্ট্রনিকসের খুঁটিনাটি - পর্ব ৪ (সিরিজ - প্যারালাল আলোচনা)
Click This Link
ইলেক্ট্রনিক্সের খুঁটিনাটি -পর্ব ৫(ভোল্টেজ ডিভাইডার + কারেন্ট ডিভাইডার)
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১২ রাত ২:২৭