যেসব নারীরা প্রোপারলি পর্দা করেন, সমাজের অনেক মানুষ তাদেরকে ওঁচা চোখে দেখতে ভালবাসেন!
প্রোপারলি হিজাব করলে খ্যাত লাগে, ঢিলেঢালা বোরকা পড়লে আন্টি- আন্টি লাগে, গোপনে ডাকা হয় "আলখাইল্যা খালা"!
আর নিকাব করলে তো শ্যাষ! গেল রে গেল, মেয়েটা জঙ্গি হইয়া গেল রে!
জামাই তো এবার ISIS থেকে ধইরা আনতে হবে!
নাহ, এ সমস্ত বাঙালি নারীকুল এর জন্য নারীমুক্তি অসম্ভব!
সমাজটা আবার বর্বর যুগে ফেরত যাইতেছে!
ধিকঃ, ধিকঃ!
আপনারা/আপনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা হতে দুরে থেকে নিজের কিছু কথা লিখছি:
"আমিও একজন সাধারণ মানুষ;এলিয়েন নই।
আমারো অনুভূতি আছে।
আমিও একজন আবেগপ্রবণ বাঙালি।
পুরোনো আড্ডাতে, সরপড়া কড়ড়া দুধ-চা কখনো কফি খেতে ভালবাসি।
বান্ধুবিদের সাথে বসে ফুচকা, চটপটি নয়ত মামার দোকানের সিঙারা খেতে ভালবাসি।
এক প্যাকেট চিপস কিনি।এরপর হই হই করে ৫/৬ জন মিলে গ্যাসভর্তি চিপস এর প্যাকেট টা খালি করে ফেলতে ভালবাসি।
অই যে আংকেল টা ঝালমুড়ি বিক্রি করেন, সেটা দিয়ে ছোটখাটো "ঝালমুড়ি পার্টি" করতে ভালবাসি।
প্রচন্ড গরমে ঝাল ঝাল কাচা আমের ভর্তা খেতে ভালবাসি।
আম্মু যাতে না দেখে, তাই লুকিয়ে লুকিয়ে বই পড়তে ভালবাসি।
"জোছনা ও জননীর গল্প", "মা", "একাত্তর এর ডায়েরী " সহ বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ে কতবার যে চোখের নোনা-জল বইকে ঝাপসা করে দিয়েছে তার ইয়ত্তা নেই।
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া করতে ভালবাসি: "হে আল্লাহ, তুমি সব মুক্তিযোদ্ধাদের জান্নাতবাসী করো।আমিন।"
ভাই-বোনদের সাথে খুনসুটি করতে ভালবাসি।
গলে যাওয়া আইসক্রিম নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে ভালবাসি।
আম্মুর সাথে দুষ্টুমি করতে ভালবাসি।মাকে মিষ্টি করে জ্বালা তে ভালবাসি।
বাবার কাছে ছোট্ট খুকিটি থাকতে,বায়না ধরতে ভালবাসি।
আপনজনদের উপর অভিমান করতে,মুখ ফুলিয়ে রাখতে ভালবাসি।
প্রচন্ড দুঃখে বুক ভাসিয়ে কান্না করতে ভালবাসি।
গোধূলিলগ্নে আনমনা হয়ে বসে থাকতে ভালবাসি।
ঝুম বর্ষণে আকাশের দুঃখ ছুঁয়ে দিতে ভালবাসি।
যে রাতে শুভ্র জোছনা গলে গলে পড়ে, সে রাতে অবাক আমি ভাবুক হয়ে কবিতা লিখতে ভালবাসি:
"যে প্রভুর সৃষ্টি এত সুন্দর,না জানি তিনি কত সুন্দর! "
পুনশ্চ: আমরা আল্লাহকে ভালবেসে পর্দা করেছি,
কাপড় দিয়ে আমাদের
মাথা ঢেকেছি,
মেধা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৮