কি চমৎকার তারা।কি শক্তিশালী তাদের কৌশল।অন্য গাছের উপর জন্মে।সেখানেই বেড়ে উঠে।শুধু আশ্রয়দাতা গাছের ক্ষতি করে।ঘৃণা করে?আশ্রয়দাতা গাছকে অযোগ্য মনে করে?কিম্বা তারা নিজেরাই অধিকতর যোগ্য?
না কোন উদ্ভিদের কথা বলতে আমি আসিনি।আমি তাদের কথা বলছি যারা তাদের নিজ জন্মভূমিকে অযোগ্য মনে করে।যে মাটিতে তাদের জন্ম,যে মাটিতে তাদের বেড়ে উঠা,হাঁটতে শেখার পর সেই মাটি থেকে তারা দূরে সরে যায়।জন্মভূমির ধুলো,জন্মভুমির শ্রীবৃদ্ধি এ সবই তখন তাদের কাছে উপহাসের বিষয়।
ওই যে পরগাছার কথা বলছিলাম।যারা কিনা পোষক গাছের রস চুষে খায় শুধু নিজেদের শ্রীবৃদ্ধির জন্যে।তারা কি গড়তে জানে?না তারা গড়তে জানেনা।তারা শুধু গড়া জিনিসের উপর বাঁচতে শিখে।
এই যে মেধাবী একদল মানুষ(?) যারা অনবরত বলছে,-ধূর বাংলাদেশও দেশ আর এদেশেরও মানুষ।কিম্বা বাংলাদেশের রাস্তাঘাট যখন বদলে যাচ্ছে তখন সেটি নিয়েও উপহাস করে।তখন খুব জানতে ইচ্ছে করে,এদের মানসিকতা।জানতে ইচ্ছা করে এদের সৃষ্টিশীলতার।জানতে ইচ্ছা করেএদের শিকড়ের কথা।জানতে ইচ্ছা করে এরা কিভাবে কোন পরিবেশে বেড়ে উঠে।
আমি অবশ্য এমন কয়েকজন পরগাছামন চিনি।জানি তার জন্মস্থান।জানি তাদের পিতামাতাকে। ওই যে ক্ষেতের কৃষাণ।সামর্থ্যবান।পড়াশুনা করিয়ে উচ্চ বেতনভূক চাকর বানিয়েছে তার সন্তানকে।কিম্বা ডাক্তার। কিম্বা শহুরে সামর্থ্যবান। তার সেই সন্তান একদিন বেমালুম ভুলে গেলো তার গেঁয়ো বাবামাকে।বেমালুম বলাটা ভুল হবে।সেই সন্তান বড় হয় তার পিতামাতাকে বোঝা মনে করা শুরু করে।যেমনটি পশ্চিমা দেশগুলিতে হয়ে থাকে।সেই সন্তানেরও একদিন সন্তান হয়।অভাব বলে কোন কিছু আসেনা সেই তৃতীয় প্রজন্মের কাছে।এই তৃতীয় প্রজন্ম পায়না দাদা-দাদীর সৃষ্টিশীলতার স্বাদ।এই তৃতীয় প্রজন্ম জানেইনা কিভাবে গড়তে হয় তার চারপাশটাকে।তারা শুধু দেখে প্রাচুর্য।আধুনা মাতার আহ্লাদের প্রাচুর্য।শিক্ষার প্রাচুর্য।উচ্চ শ্রেণীর চাকর হওয়ার জ্ঞানের প্রাচুর্য।পশ্চিমা বিশ্বের ঝা চকচকে নাগরিক জীবনের প্রাচুর্য।এই যে শিকড় কেটে যাওয়া তৃতীয় প্রজন্ম এরাই তার জন্মভূমিকে বলে-ধুস এটি আবার দেশ।এ দেশেরও মানুষ।
পরগাছা মন আমার
পরগাছা শরীর।
নাটোর
০১/১২/২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫