পিয়ালের গলা ভেঙ্গে গিয়েছে।সারারাত শ্লোগান দিয়েছে সে।রায় জানার পর ওরা স্তম্ভিত হয়ে যায়।স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর পরও ন্যায্য বিচার পাওয়া যাবেনা?ফাঁসি না হয়ে যাবজ্জিবন!ওরা একে ওপরের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করে।ঠিক করে ছেড়ে দেওয়া যাবেনা।প্রতিবাদ করতে হবে।রাতেই ওরা কয়েকজন জড় হয় শাহবাগের মোড়ে।সারারাত শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত রাখে শাহবাগ।
পরদিন সকালে অফিসগামী মানুষ লক্ষ্য করে একটি তরুণী শ্লোগান দিচ্ছে আর অন্য তরুনেরা তার সাথে গর্জে উঠছে।
“ক” তে কাদের মোল্লা ।তুই রাজাকার।তুই রাজাকার।
ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই।কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই।
কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেলো বাংলাদেশের রাজনীতি।বাংলাদেশের মানুষ,পৃথিবীর মানুষ জানলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে শুধু মনেই রাখেনি,তারা তাদের হৃদয়ের গভীরে মুক্তিযুদ্ধকে লালন করে।বাংলাদেশ ব্লগার এসোসিয়েশানের ব্যানারে মাত্র দশ পনেরো জন তরুণ-তরুণীর বিক্ষোভ ক্রমে বড় হতে থাকে।বিক্ষোভে এসে একে একে যোগ দিতে থাকে পাশের বাড়ির শান্ত গৃহবধু আর তার বৃদ্ধ শ্বশুর।যারা কিনা জীবনের কোনদিনই কোন মিছিলে বা বিক্ষোভে যোগ দেয়নি আজকের আগে।যোগ দেয় ছাত্র,কৃষক,শ্রমিক, কিশোর-কিশোরী,বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।দাবানলের মতো সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে, প্রতিটি কোনায়।বিক্ষোভ কিন্ত তার ছিল অদ্ভুদ শান্ত সৌম্য রুপ। যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাত ক্রমে কোনঠাসা হয়ে পড়তে থাকে।কোনঠাসা হয়ে পড়তে থাকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো।আর এর প্রতিক্রিয়ায় তারা ধারণ করে তাদের অতীতের হিংস্ররুপ।
বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে,বোঝে –সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে আই সিটি আইনের এক বিশাল ফাঁক রেখে।মানুষের ক্ষোভ আরও তীব্র হতে থাকে ।সরকার বাধ্য হয় আই সিটি আইনে পরিবর্তন আনতে।সরকার আপিল করে।পরিশেষে কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়ে যায়।এরপর বাংলাদেশের রাজনীতি বাঁক নিতে শুরু করে।রাজনৈতিক দলগুলো নিজের নিজের মত করে সাধারণ মানুষের এই স্বতস্ফুর্ত আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে উঠে পড়ে লাগে। টাকা উড়তে শুরু করে গণজাগরণ মঞ্চকে কেন্দ্র করে। শাহবাগে আসতে শুরু করে রাজনীতিবিদ,সুশীল,বাটপার সুশীল,অতি চেতনাধারী,অতি বামপন্থী।শাহবাগকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে বাংলাদেশের রাজনীতি।
শাহজানপুর,বগুড়া।একটি ছাত্র সংগঠনের গোপন মিটিং চলছে।জামাতের রোকন সেখানে উপস্থিত আছেন।সবার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে কার কোন মহল্লার দায়িত্ব নিতে হবে।একজন সাথি মোবাইলে বাঁশের কেল্লার একটা পেজ অপেন করে।আর সবাইকে একটি ছবি দেখিয়ে বলে, ছেলেমেয়েদের মাঝে কেমন ঢলাঢলি চলছে শাহবাগে।প্রত্যেককে একটি করে মোবাইল সাথে রাখতে হবে আর বাঁশের কেল্লার এই ছবি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। শেষে রোকন বলা শুরু করেন।
-তোমরা কেউ মুক্তিযুদ্ধ দেখ নাই।তোমরা জানওনা মুক্তিযুদ্ধে কি ঘটেছিল।আসলে ওটা ছিল পাকিস্থান ভাঙ্গার এক ভারতীয় ষড়যন্ত্র।যেন মুসলমানেরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।আর এখন শাহবাগে যা ঘটছে তা গভীর ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।এবং তরুণ তরুণীর বেলেল্লাপনা ছাড়া আর কিছুই না।এই জালেম সরকার ইসলামী আন্দোলনকে ধ্বংস করার জন্য যুদ্ধাপরাধী ইস্যুকে সামনে আনছে।আগামীবার আর নির্বাচনে জিততে পারবেনা তাই কতিপয় নাস্তিক,ধর্মবিদ্বেষী ব্লগারদের রাস্তায় নামিয়েছে।তোমাদের কাজ হচ্ছে মানুষকে বোঝানো-আসল ঘটনা কি ঘটছে শাহবাগে।রাত জেগে নষ্ট তরুণ-তরুণীরা ওখানে অশ্লীলতায় লিপ্ত তা জানাও সাধারণ মানুষকে।ওখানে যে ব্যবহৃত কনডম পড়ে থাকে রাস্তায় এসব কথা বেশী বেশী করে মানুষদের জানাও।রাতে গাঁজার উৎকট গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যায় ,তাও বলবে।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯