somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রীধি, তুমি আমায় না বুঝিলে, বুঝবে কে বলে যাও ...

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হাত থেকে প্লেট টা পড়েই ভেংগে গেল। রিমা এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলো কেউ দেখেছে কি-না, না কেউ দেখে নি ভেবে তার আত্মায় যেন প্রাণ ফিরে পেলো।
-রিমা তুই একটু দেখেশুনে কাজ করতে পারিস না , তোকে আর কতবার বলব বলতো।.
~রিমা কিছুটা আতকে উঠে বলল, হাত ফসকে পড়ে গেছে খালাম্মা ।
-ঠিকে আছে ;যা এখন সামায়ন কে চা-টা দিয়ে আয় ; সকাল সাতটা বেজে গেছে কিন্তু ।

"" সেই প্রথম দেখাতে রীধি কে বিয়ে ...বিয়ের রাতেই অনেকটা অভিমান...আস্তে আস্তে একটু একটু ভাল লাগা .... ওর সাথে আধো আধো কথা ... এখন হয়তো দুজন দুজন কে পছন্দ করলেও মুখ ফুটে কিছু না বলা...শুয়ে শুয়ে ওকে নিয়ে এসব ভাবতেই বেশ ভাল লাগছে....গতরাতে আধো আধো ঘুমের মাঝে রীধি কে নিয়ে আধো আধো স্বপ্ন দেখার ঘোর যেন কাটেই নি এখনো ...
ঘোর কাটলো রিমার কন্ঠ শুনে ... মেয়েটা কিছুদিন ধরে কাজ করছে তবুও ওর শিশুসুলভ আচরন দ্বারা বাড়ির সকলের মন জয় করে নিয়েছে ; যদিও এর মধ্যেই কয়েকটা প্লেট ভেংগেছে.।
দরজা খুলতেই রিমা বলল ভাইজান আপনার চা নেন ....

ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে যেতে আট টা বেজে গেল ... তাড়াতাড়ি করে নাস্তা করছি হঠাৎ মা বলল, সামায়ন বৌ'মা কে আনতে যেতে হবে না ,কবে যাবি কিছু ভেবেছিস ; আজ সাতদিন হয়ে গেল মেয়েটা বাপের বাড়ি আছে।
মা'র কথা শুনে খাবার যেন গলায় আটকে গেল কোন কথা বের হচ্ছেনা মুখ দিয়ে... কিছুটা সময় নিয়ে বললাম, যাবো মা ,কালকেই যাবো রীধি কে আনতে।
....
আজ অফিসের কোন কাজেই ঠিকমত মনোযোগ দিতে পারছি না । রীধি কে আনতে যাবো সেই উত্তেজনায় যেন সময়ই পার হচ্ছেনা । থেকে থেকে ওর কন্ঠের গানটা মনে পড়ছে, মাঝে মাঝে তো নিজেই গাওয়ার চেষ্টা করছি.। যদিও ভাল গাইতে পারি না তবু ওর সাথে সুর মিলিয়ে দুজনে একসাথে গাইতে ইচ্ছে করছে খুব , জানি না পারবো কিনা ওর মতো করে গাইতে।
হঠাৎ ফোনের শব্দে একটু আতকে উঠলাম, আর মনে মনে ভাবলাম পাগল হয়ে গেলাম নাকি, কি সব ভাবছি আজকাল। প্রেমে পড়লে মানুষ মনে হয় এই টাইপের পাগল হয়।

ফোনটা বেজেই যাচ্ছে, খুব বিরক্ত লাগছে ওর শব্দটা। রিসীভ করে হ্যালো বলার পরও কোন উত্তর না পেয়ে আবার বললাম হ্যালোওও.. কে বলছেন। এইবারও কোন উত্তর নেই, কিন্তু বুঝতে আর বাকি রইলো না যে রীধি ফোন করেছে ; ও কোন কথা বলছে না কিন্তু কাদছে। হ্যালো কে, রীধি, কি হয়েছে তুমি কাদছো কেন । ভীষণ কষ্ট লাগছে ও কাদছে ভেবে।

ভারী কন্ঠে কিছুটা উত্তেজিত স্বরে রীধি বলল, আপনি কি আমাকে সত্যি সত্যিই ভুলে গেলেন....জানি আমি আপনার বউ হওয়ার যোগ্য নই, আপনি কখনই স্ত্রীর মর্যাদা দেবেন না আমাকে কিন্তু তাই বলে একটা মেয়ের জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার অধিকার আপনার নেই ...ও আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কাদতে কাদতে দ্রুত ফোনটা কেটে দিলো ...

চোখের পানি ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে খুব, ওর কথাগুলো বার বার হৃদয়ে আঘাত করছে। নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছে, জানি না কি করা উচিৎ এখন। কিন্তু ওকে শুধু একটা কথাই বলতে ইচ্ছা করছে, আর যেই হোক অন্তত তুমি আমাকে ভুল বুঝো না রীধি ।

হাজার চেষ্টা করেও ওর ফোনে কল ঢুকাতে পারলাম না । ওর সাথে একটু কথা বলার জন্য আমার মন ছটফট করছে। এই প্রথম অনুভব করতে পারছি যে আমি রীধিকে কতটা ভালবাসে ফেলেছি।

অফিস থেকে বাসায় এসে আরো একা লাগছে নিজেকে । এক অনকাংখিত কষ্ট যেন আমাকে ঘিরে রেখেছে এক অচেনা মায়াজালে। রীধির টেনশনে কিছুই ভাল লাগছেনা । ভালবাসার যন্ত্রনা যেন ঠিকঠাক অনুভব করতে পারছি।

বাইরে অনেক বাতাস বইছে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎও চমকাচ্ছে বৃষ্টি নামবে বোধহয়। বারান্দায় এতো বাতাস যে, দাড়িয়ে থাকা যাচ্ছেনা কিন্তু তারপরও বেশ গরম লাগছে। হঠাৎ বাতাস বন্ধ হয়ে বৃষ্টি শুরু হলো । গ্রীল ধরে দাড়িয়ে চোখটা বন্ধ করে মুখটা বাড়িয়ে দিতেই বৃষ্টির পানি মুখটা ভিজিয়ে দিলো , বৃষ্টির পানির মাঝেই রীধিকে অনুভব করতে পারছি তাই চোখ বন্ধ করে থাকতেই ভাল লাগছে... আর মনে মনে রীধিকে প্রশ্ন করছি, রীধি, তুমি আমায় না বুঝিলে, বুঝবে কে বলতে পারো???

উৎসর্গ : আমার প্রিয় ব্লগার জুন আপু আর মনিরা আপুকে ।
[আপু তাড়াতাড়ি লিখেছি তাই লেখাতে আবেগ সেরকম দিতে পারিনি... ডোন্ট মাইন্ড ]

বাকী পর্বগুলো এখানে : ১ম , ২য় , ৩য় , ৪র্থ
২৪টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের মার্চেন্ট নেভি: সম্ভাবনার সমুদ্রপথ ও চ্যালেঞ্জের ঢেউ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:২২



বাংলাদেশের সামুদ্রিক শিল্প এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তার নৌ-বাণিজ্য এবং মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। অথচ, এই খাতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। লোভের তাড়না জেগে উঠেছে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭




শুধু একজন ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হবেন না, এটি আইন করে রোধ করাই কি শুধু সংস্কার? এ প্রশ্ন তুলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, শুধু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শহীদের রক্তের ওপড় দাঁড়িয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইফতার পার্টি!!!!!!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৩৭



মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রথমবারের মতো ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, আলেম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন করেছে নতুন এই দলটি। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী... ...বাকিটুকু পড়ুন

কামাল আতাতুর্ক: ইতিহাসের মহান সংস্কারক, যার মতো নেতা আজ বাংলাদেশে দরকার !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১২ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৩৪


কিছু মানুষ থাকেন, যারা কেবল ইতিহাসের অংশ নন—বরং ইতিহাস গড়ে দেন। কামাল আতাতুর্ক তেমনই একজন নেতা, যিনি শুধু তুরস্ককে নয়, গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কীভাবে একটি পশ্চাৎপদ, ধর্মান্ধ রাষ্ট্রকে আধুনিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমা করো মা'মনি

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:২৩

এখন অনেক রাত। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আইপ্যাডে নিউজ পড়ছিলাম আর সেহরির অপেক্ষা করছি। মাগুরার ছোট্ট শিশুটির হাসপাতালে জীবন-মরন যুদ্ধের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় দেখছিলাম। মন থেকে চাইছিলাম মেয়েটি সুস্থ হয়ে যাক।

আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×