somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

অর্থনৈতিক যুদ্ধ

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবী জুড়েই অস্থিরতা চলছে বিশ সাল থেকে। ছিমছাম শান্ত অবস্থা একটা ভয়ানক অস্থিরতার মধ্যে পড়ে গেছে পৃথিবীর মানুষ।
কোভিটের মরনদশা কাটিয়ে না উঠতেই রাশিয়ার, ইউক্রেন আক্রমণ। বিশাল প্রভাব পরল সব দেশের বাজার জুড়ে।
পৃথিবীর অর্থনীতিতে বিশাল চাপ ফেলল। এরমধ্যেই ইউরোপের সাথে বৃটেনের ব্রেক্সিট ছড়াছড়ি হয়ে গেল।
হামাস, ইসরাইলের মানুষ হাইজ্যাক করে অকারণ ক্ষেপিয়ে তুলল। এক হাজার মানুষকে আটকে রেখে, নির্যাতন করে, নিজেদের পঁচিশ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হলো।
যুদ্ধ না থামালে ট্রাম্প তাদের গুঁড়িয়ে দিবে এমন হুমকির পরে সুরসুর করে সব যুদ্ধ বন্ধ করে জিম্মিদের ফিরিয়ে দিল। এদের কথা শুনাতে পেরে ট্রাম্পের নিজের উপর আস্তা ভয়াবহ ভাবে বেড়ে গেলো।
পানামা, গ্রীনল্যান্ড দখল থেকে। ম্যাক্সিকো, কানাডার উপর পঁচিশ পারসেন্ট ট্যারিফ আরপের ঘোষনা দিয়ে দিল। ভেবেছে সারা পৃথিবী নিজের মতন সে বাণিজ্যে দখল করে নিবে।
উত্তর দক্ষিণ দেশগুলোতে বিশাল আকারের শুল্ক বসিয়ে নিজেরাই শুধু আয় করবে। অন্য দেশ পাল্টা কর বাড়ানোর সাহস রাখবে, সেটা হয়তো ভাবেনি।
অধিকার ফলানোর জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে এদেশ সেদেশকে। আগে ছিল চীনের উপর ক্ষ্যাপা এখন অন্যদেশে দখলে নজর দিয়েছে। ছোট ভাইর মতন থাকা কানাডার নির্বাচিত প্রধান মন্ত্রীর উপর নিজের দলের অনাস্থা, তার পদ ছেড়ে দেয়ার খবরে কানাডাকে একান্নতম স্টেইট বানানো খুব সহজ ভেবেছে। অথচ দেখা যাচ্ছে নিজেদের মধ্যে যতই বিরোধ থাকুক কানাডার সব দল এবং সব প্রভিন্সের প্রিমিয়াম মিলে এক সাথে যুথবদ্ধ, ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে।
ছোট ভাইর মতন আমেরিকার পাশে থাকা কানাডা, সব সময় সমান তালে তাল মিলিয়েছে আমেরিকার কথায়। কিন্তু এবার মনে হয় ভিন্ন চিত্র সত্যি সামনে এসেছে। যেখানে আমেরিকার জন্য নয় নিজেদের জন্য, নিজের দেশের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ।
বুদ্ধি বলিহারি মানুষের, ক্ষমতা এবং অর্থলিপ্সু ভয়াবহ দানবকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, নির্বচন করে আমেরিকার মানুষ।
আমেরিকার নানা বিষেশজ্ঞর পোষ্ট দেখছি, যারা কানাডার উপর এই কর আরোপে বিরক্ত। তাদের দেশের মানুষ এই সাইকোকে দেশের প্রধান করেছে বলে নিজেরাই লজ্জিত হচ্ছে।
মাত্র উনত্রিশ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে আর বেশির ভাগ মানুষই ভোট দেয়নি। মানুষের ভোট দেয়া না দেয়ার ফলাফল এখন মানুষ ঘরে বসে উপভোগ করবে। এমনিতেই জিনিস পত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া হয়েছে পৃথিবীর সব দেশে। এই ট্যারিফের ভাড়ে সব জিনিসের দাম এখন আরো অনেক বাড়বে। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। দরিদ্র সংখ্যা বাড়বে। হয়তো ট্রাম্পের কোষাদক্ষে ডলারের পাহাড় জমবে।
কানাডার প্রধামমন্ত্রী, আমেরিকার জিনিস না কেনার আহ্বান করেছেন। এর ফলে ক্ষতি হবে আমেরিকার ব্যবসাযীদের। আর ভয়াবহ দামের কারণে মানুষের জীবন হবে দূভোর্গে পরিপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা নিজেদের চেষ্টায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে আর এই সব রাজনীতিবিদরা তার মাখন খাওয়ার জন্য নানা রকম নিয়ম করে। এখন একমাত্র উপায় মনে হয় আমেরিকার ব্যবসায়ীদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য করে ট্রাম্পরে কথা না শোনা। আগের মতনই ব্যবসা বানিজ্য করা। এটা কঠিন তবে তাদেরই উদ্যোগ নিয়ে ঠিক করতে হবে অদ্ভুত নিয়ম না মানার জন্য। কারণ দিন শেষে তারাই হবে ভুক্তভুগি। আর সাধারন মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাবে অনেক জিনিসের দাম। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কানাডার দোকান থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে আমেরিকার পণ্য।

ট্রাম্প তার আগের পাঁচ বছর সময়ে কোন যুদ্ধ করিনি । এটা অনেকের, ট্রাম্পকে সাপোর্ট দেওয়ার একটা ভালো চিন্তা ছিল। সে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল। এখনো সে সেই চিন্তাই করছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য সে, কানাডা, গ্রিনল্যান্ড, পানামা সবটাই আমেরিকা বানিয়ে নিজের দখলে নিয়ে নিতে চায়। বন্দুক দিয়ে যুদ্ধ নয়, অর্থনৈতিক ভাবে নানা রকম চাপ দিয়ে অর্থনৈতিক ফায়দা আদায় করতে চায়।
প্রতিটি দেশ নিজস্ব সার্বভৌমত্ব স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তারা অন্য দেশের স্বার্থের অঙ্গরাজ্য হতে চায় না। নিজের স্বকীয়তায় বাঁচতে চায়।
কানাডার রাজনীতিবিদদের মধ্যে নানা রকম মতবিরোধ থাকলেও দেশের সার্বভৌমত্ব স্বকীয়তা রক্ষা করার জন্য সকল রাজনীতিবিদ সকল চিন্তাবিদ এক। তারা কেউ কানাডাকে আমেরিকার অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখতে চায় না। একই কথা বলছে গ্রীনল্যান্ড এবং পানামা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে ট্রাম্প সবসময়ই অদ্ভুত ধারণা নিয়ে অকারণ কথাবার্তা তৈরি করছে, ক্ষমতাসীন, সর্বেসর্বা ভাবছে নিজেকে।
ছোট হলেও অন্য দেশগুলো নিজস্ব শক্তিতে নিজস্ব স্বাধীনতায় বাঁচতে চায়,কারো অঙ্গরাজ্য হতে চায় না। ট্রাম্পের এই সমস্ত কথাবার্তা পৃথিবীতে একটা অস্থিরতা তৈরি করা ছাড়া আর কিছু না।
কানাডা কিছু জিনিস আমদানি করে আমেরিকা থেকে সেগুলো বন্ধ করে দিলে কেমন হবে। কানাডা আমদানি করতে পারে নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্য মেক্সিকো সাউথ আমেরিকা আফ্রিকা এশিয়া থেকে। কম দামে পেতে পারে আরো আমেরিকার থেকে । মোট অটোমোবাইলস, পার্টস আমেরিকা থেকে না এনে সরাসরি জাপান থেকে নিতে পারে। সাথে নিজের শক্তি বাড়ানো দরকার উৎপাদনে। কানাডার সব সময় আমেরিকার সাথে ছোট ভাইয়ের মতো থাকার সুযোগ আজ ট্রাম্প নিচ্ছে। আগেরবারও চীনের সাথে ঝামেলা হয়েছে কানাডার আমেরিকার জন্য।
দেশদেশ মিলে মিশে বিশ্বায়নের এক সুন্দর সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সব কিছু ভেঙ্গে যাচ্ছে যেন। কোভিট এসে বলে গেছে মানুষকে, নিজেদের মতন বাঁচো। কিন্তু মানুষ কিছুদিন একা, বিচ্ছিন্ন থেকে আবার মানুষের সাথে মিলে মিশে থাকার জন্য সহজ জীবনে চলছিল। কিন্তু ট্রাম্প আবার বৈষম্য তৈরি করার পায়তারায় মেতেছে। অর্থনৈতিক যুদ্ধ যেন শুরু হয়ে গেছে।
কোভিটের সময় যেমন অনেক কিছু পাওয়া যাচ্ছিল না শুরু হয়েছিল ফেসমাক্স দিয়ে। হ্যান্ড সেনেটাইজার দিয়ে। সব দেশ নিজেদের জন্য তৈরি শুরু করেছিল। এখন মনে হচ্ছে নিজেদের সম্পদে স্বয়ং সম্পূন্ন হওয়া খুব জরুরী প্রতিটি দেশের মানুষের।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৫২
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার ১৮ নম্বর বাসা পর্ব: ৭ (ভূতুরে ঘটনা)

লিখেছেন অপলক , ২৯ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৭

২০১৪ সালের ২৪ তারিখ আমার মেয়ে জন্ম নেয়। ওর জন্মে সময় আমার মা বাবা ছিল। তারা চলে যাবার দিনে শাশুড়ি, শালা আর এক শালি আমার বাসায় আসে। সবকিছু ঠিক ঠাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গঃ ডক্টর ইউনুস স্যারের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:০৪

প্রসঙ্গঃ ডক্টর ইউনুস স্যারের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য...

জাপান সফরে ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস স্যার উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন- "দেশের একটামাত্র দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়"।


কথাটা আংশিক সত্য।
কারণঃ
★ দেশে রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কৃমির হাজার বছরের ঘুম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:০৬




রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার পারমাফ্রস্টে ৩০০টি প্রাগৈতিহাসিক কৃমি আবিষ্কার করেছেন, যার মধ্যে দুটিকে সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হয়েছে। এই কৃমিগুলি হাজার হাজার বছর ধরে বরফে আটকা পড়ে ছিল, তবুও গলানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বাচন চাইলে নির্বাচন কমিশনের কাছেই চাইতে হবে, ড. ইউনুসের কাছে নয়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ৩০ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:১৯


বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে আসছে—বিএনপি আসলে নির্বাচন চায় কার কাছে? সম্প্রতি নানা বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, দলটি যেন নির্বাচন চাচ্ছে ড. ইউনুসের (অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টার) কাছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

"বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি".....


বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হতে হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। হতে হবে সকল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের এই দর্শনের নিহিত রয়েছে আত্মসামাজিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×