গান শোনা ও গান নিয়ে আদ্যোপান্ত ঘাটাঘাটি করা আমার প্রিয় কাজগুলোর মধ্যে একটা।সময় পেলেই ইউটিউবে পছন্দের যেকোন গানের মিউজিক ভিডিও ও লাইভ কনসার্ট পারফরম্যান্স দেখতে বসে যাই। কখনও গানের লিরিক দেখতে দেখতে গান শুনি বিশেষ করে জার্মান বা ফিনিশ ব্যান্ডগুলোর বেলায়।
যাইহোক , গতকাল রাতে আমার প্রিয় ব্যান্ডগুলোর ভিতর অন্যতম বিশ্বখ্যাত ফোক মেটাল ব্যান্ড "এলুভেইটি"র জনপ্রিয় ইন্সট্রুমেন্টাল ট্র্যাক "Isara" এর লাইভ কোন ভিডিও খুজছিলাম। পেলামও অনেকগুলো , কিন্তু সেগুলো কোন দর্শক নিজের ক্যামেরা দিয়ে করেছে বলে খুব একটা ভালো কোয়ালিটির না। যাহোক এবার ভাবলাম দেখি অন্য কারো করা ভালো কোন কাভার পাওয়া যায় কিনা। খোঁজাখুজির আগে বরং আসলটা শুনে নিই আমরা , না হলে পরে যা শুনবো তাতে আসলটা মনে নাও থাকতে পারে
খুঁজতে গিয়ে একটা খুব চমৎকার একটা কাভার পেয়ে গেলাম অখ্যাত একজন সখের গিটারিস্টের। এটা আবার উনি নিজের বন্ধুর বিয়েতে গিফট করবেন বলে করেছেন ও বিয়ের অনুষ্ঠানে সকলের সামনে বাজিয়েছেন।বন্ধুর কাছ থেকে এমন ব্যতিক্রম ও চমৎকার গিফট পেতে মনে হয় কারো খারাপ লাগার কথা নয়।
যাইহোক , এরকমই আরেকটা ভিডিওতে আর্টিস্টকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দেওয়া মন্তব্যগুলো পড়তে গিয়ে একটা কমেন্টে গিয়ে চোখ আটকে গেল। সেটার বাংলা করলে মোটামুটি এরকম দাড়ায় , "ব্যাটা চান্দু , তুমি আর কি বাজাইছো , আমার বাংলাদেশি দোস্তের বাজানো কাভারটা দেইখ্যা আসো , নিজেরটাই ভুইল্যা যাইবা "।
এরপর যা দেখলাম তাতে আমার কয়েক ঘন্টা কিভাবে পার হয়ে গেল বুঝলাম না। আসলেই কথা সত্য। আরটিভিতে এয়ারটেল মিউজিক স্টারস অনুষ্ঠানে ইফতেখার , মোহন , নাহিদ ও রিয়ন নামের বাংলাদেশি ৪ তরুন জনপ্রিয় ফোক ও মেলোডিক ডেথ মেটাল ব্যান্ড এলুভেইটির "ইসারা" ট্র্যাকটার এত চমৎকার একটা কাভার করেছেন যেটা না দেখলে ও না শুনলে ঠিক অনুভব করা যাবে না।
শুধু বাঁশি ও অ্যাকুইস্টিক গিটার দিয়ে এত চমৎকার কাভার সত্যিই অসাধারন।বাঁশির কাজটা তো এককথায় হৃদয় ছুয়ে যাওয়ার মত , অন্ত:ত আমার অনুভুতি সেরকমই। এলুভেইটির ভক্ত না হলেও এটা বলতাম।
যাহোক , চমকের শেষ এখনও হয়নি। সবচেয়ে দারুন খবরটা কিন্তু বলিনি এখনও। সেটা হল , এলুভেইটি তাদের ফেসবুকের অফিসিয়াল পেইজে আমাদের বাংলাদেশি এই চার তরুন তুর্কির অসাধারন কাভারটি প্রশংসাসহ শেয়ার করেছে যেখানে তাদের অন্য কোন গানেরও কারো করা কাভার শেয়ার করার ঘটনা মোটামুটি দুর্লভ ব্যাপার।
এটা এত বিরাট কোন ঘটনা কিনা জানিনা তবে বাংলাদেশের নামটা সেখানে গর্বের সাথে উচ্চারিত হয়েছে সেখানে। সুদূর সুইজারল্যান্ডে বসে তারা নিজেরা বাংলাদেশের নামও হয়ত জানতো না , আমাদের এই তরুন তুর্কিদের কাজের জন্য শুধু তারা নয় , অনেকেই কিন্তু জানলো , পৃথিবীর মানচিত্রে একটি সম্ভাবনাময় দেশের কথা , যে দেশে প্রতিভা আছে এবং সুযোগ পেলে সেখান থেকেও আরেকটা এলুভেইটি , পোয়েটস অফ দ্য ফল কিংবা কোন জিমি হেনরিক্স উঠে আসতে পারে।
সেই দিনের প্রত্যাশায়........
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১২:৩১