এলো আদরের সন্তান। বাড়ির বয়োজৈষ্ঠ গুরুজন হতে শুরু করে একেবারে শিশুটি পর্যন্ত পরম আনন্দিত সে নবজাতকের স্বর্গীয় হাসিটি দেখে। মায়ের কাছে সে তো সাত রাজার ধন এক মানিক। তার চিন্তা-ভাবনা, কাজ-কর্ম, চলাফেরার প্রতিটি মুহুর্তের সাথেই জড়িয়ে আছে একটি শিশু। তাকে ছাড়া যেন মায়ের জগৎশূন্য। তবুও কিসের এক আকুল বিষন্নতায় কেঁপে ওঠে তার মন। অকারণে কান্না আসে। হু হু বুক ভেঙ্গে যায়। অপ্রতিরোধ্য সে কান্নার আবেগ সামলাতে পারেনা সে। দরজা বন্ধ করে একাকী কাঁদে, কখনও যে কারো সামনেই দুচোখ বেয়ে নেমে আসে কান্নার ঢল। চারিদিকে এত মানুষ তবুও কিসের এ নিসঙ্গতা, কষ্টবোধ নিজেই তার হদিস পায়না খুঁজে। পরিবারের লোকজনও বিস্মিত হন! কি হয়েছে তার কেউ বুঝতে পারেনা?
ঠিক এমনি বিষন্নতায় আক্রান্ত হন কিছু মায়েরা প্রসব পরবর্তীকালীন সময়ে। কিছুদিন আগে এক মাকে নিয়ে একটি স্টিকি পোস্ট ছিলো সামুর পাতায় যেখানে এক মা তার প্রিয় পাঁচ সন্তানকে নিজ হাতে খুন করেছেন। একমাত্র তার স্বামী ছাড়া প্রথমে তিনি কারো স্বীকৃতি পাননি যে তিনি মানষিকভাবে অসুস্থ্য। এ ব্যাপারে বা এসব মানষিক বৈকল্য বা গর্ভকালীন এবং প্রসব পরবর্তীকালীন মানষিক সমস্যাগুলি নিয়ে তাই পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
দেখা যাক চিকিৎসা বিজ্ঞান এই বিষন্নতা সম্পর্কে কি বলে?সন্তান প্রসবের দিন থেকে ১ বছরের মধ্যে বিষন্নতায় আক্রান্ত হলে তাকে প্রসব পরবর্তী বিষন্নতা বলা হয় ৷ প্রসব পরবর্তী বিষন্নতার কারণ হিসাবে গবেষকগণ প্রধানত মেয়েদের হরমোনের তারতম্যের কথা বিবেচনা করেন৷
গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব পরবর্তী সময়ে ঠিক কতজন মহিলা বিষন্নতায় ভোগেন তা আমাদের দেশে জানা না গেলেও গবেষকরা মনে করেন এই গর্ভকালীণ এবং প্রসব পরবর্তী বিষন্নতা একটি অন্যতম প্রধান শারীরিক জটিলতার কারণ হিসেবে কাজ করে কেননা এই সময় স্বাভাবিকভাবেই মহিলাদের ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা, মানসিক বিক্ষিপ্ততা এবং মেজাজের তারতম্য দেখা যায় যেটা বিষন্নতাকে চিহ্নিত করতে আড়াল করতে পারে৷
গর্ভকালীন সময়ে যেসব কারণে বিষন্নতা হতে পারে তা হলোঃ
১। অতীতে মানসিক বিষন্নতার ইতিহাস থাকলে
২। পরিবারে আর কারো মানসিক রোগ এর ইতিহাস থাকলে
৩। পরিবার, বন্ধুমহল থেকে সহযোগিতা না থাকলে
৪। গর্ভের বাচ্চা সর্ম্পকে উদ্বিগ্নতা
৫। পূর্ববর্তী গর্ভসঞ্চারে কোন জটিলতা থাকলে
৬। বিবাহিত জীবনে কোন সমস্যা থাকলে আর্থিক সমস্যা থাকলে
৭। মায়ের অল্প বয়স
উপরে উল্লেখিত স্টিকি পোস্টটি ছাড়াও বর্তমানে ব্লগার মানবীর আপার যে পোস্টটি স্টিকি রয়েছে তাতে কমেন্টের ঘরে দেখলাম শ্রদ্ধেয় জানা আপা ও শ্রদ্ধেয় মানবী আপার মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্য । সেখানে জানা আপা উল্লেখ করেছেন যে, প্রসব পরবর্তীকালীন মন খারাপে আক্রাক্ত হয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনাটি জেনে মনে পড়ে গেলো নিজে অভিজ্ঞতাটিও।
হঠাৎ সন্ধ্যাবেলায় ভেতরে এক হাহাকার। হুহু ধুধু অনুভুতি। অবিরল ধারায় বুক ফেটে কান্না আসা। আমার আচরণে বিব্রত সবাই। কিন্তু কি হয়েছে আমি তো নিজেও জানিনা। সে সময় আমেরিকা প্রবাসী এক খালা পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক উনি ফোনে জানালেন, প্রসব পরবর্তীকালীন এই বিষন্নতার কথা। নতুবা বাড়ির গুরুজনেরা এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার হিসেবে ধরে নিয়ে আমলে নিচ্ছিলেন না।
এরপর এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হলেন এবং আমি নিজেও ইন্টারনেট ও প্রসবকালীন এ সমস্যা সম্পর্কে পড়ে নিজের অবস্থার কারণ জেনেছি। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান আধুনিক সমাজে প্রতিটা বাড়িতে প্রতিটা মানুষের এসব ব্যাপার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। যাতে শিশু জন্মদানের ক্রান্তিলগ্নের সময়টুকু শুধু নয় বরং পরবর্তী এই সময়গুলোতেও পরিবারের সদস্যরা মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারেন ও সহযোগীতার হাত বাড়াতে পারেন।
গর্ভকালীন সময় মেয়েদের হরমোন ইষ্ট্রোজেন, প্রজেসটারোন উচ্চমাত্রায় থাকে, সন্তান প্রসবের পর ২৪ ঘণ্টায় এই ইষ্ট্রোজেন, প্রজেসটোরেন হঠাৎ করে কমে যায় এবং আগের অবস্থায় ফিরে যায়, এই দ্রুত হরমোনের পরিমাণ পরিবর্তীত হওয়ার জন্য বিষন্নতা হয় বলে মনে করা হয় কেননা মহিলাদের মাসিক ঋতুচক্রের সময় ও হরমোনের পরিমাণের সামান্য তারতম্যের কারণে মহিলাদের মেজাজের পরিবর্তন হয়৷মাঝে মাঝে থাইরয়েড হরমোন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে কমে যায় যেটা বিষন্নতার লক্ষণসমূহ যেমন খিটখিটে মেজাজ, দুর্বলতা, মনোযোগহীনতা, ঘুমের সমস্যা এবং ওজন বেড়ে যাওয়া৷ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই হরমোনের তারতম্য বোঝা যায়৷ সেজন্য ডাক্তারের পরামর্শে থাইরয়েড হরমোন নেয়া যেতে পারে৷
আরো যেসব কারণে প্রসব পরবর্তী বিষন্নতা হতে পারে
*প্রসবের পর ক্লান্তি, ঘুমের ব্যাঘাত এবং বিশ্রামহীনতা ।
*নবজাতককে সঙ্গে নিয়ে সম্পূর্ণ একটা নতুন পরিবেশে নবজাতকের যত্ন নেয়া এবং ঠিকমতো নবজাতককে যত্ন করা সর্ম্পকে সন্দেহ ।
*বাচ্চার কারণে ঘরে বাইরের দৈনন্দিন কাজের সময়সূচির পরিবর্তনের কারণে জটিলতা।
*দীর্ঘক্ষণ ঘরে অবস্থান করে বাচ্চাকে সময় দিতে গিয়ে স্বামীকে বা পরিবারের জন্য কাউকে সময় দিতে না পারা।
*নিজস্ব পরিচয় হারানোর ভয় (প্রসব পূর্ববর্তী পরিচয়।
*বাচ্চাকে যত্ন করতে গিয়ে ব্যথা দেয়ার ভয় ।
এ সমস্যা মানে নারীদের মন খারাপের অনুভূতির ঘটনা পৃথিবীর কোনো বিরল ঘটনা নয়। বরং গবেষকরা বলেন, প্রসবের চার থেকে ছয় সপ্তাহের ভেতর প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রসূতি আবেগজনিত সমস্যার মুখোমুখি হন। নতুন মা অস্থিরতা বোধ করেন, অকারণেই মন খারাপ হয়ে যায়, বিহ্বলতা জাগে, সবকিছু যেন বিশৃঙ্খল-এলোমেলো মনে হয়, কান্না পায় প্রায়শই, আবার হঠাৎ করেই খানিকটা সময়ের জন্য উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে, প্রসবের তিন থেকে পাঁচ দিনের ভেতরেই এসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী সময়ে নারীদেহে হরমোনের তারতম্য, প্রসবজনিত মানসিক চাপ, মাতৃত্বের দায়িত্ববোধের উপলব্ধি সব মিলিয়েই নারীর এই বিশেষ মানসিক অবস্থাটির সৃষ্টি হতে পারে। স্বস্তির সংবাদ হচ্ছে, এর অধিকাংশই হয়ে থাকে ক্ষণস্থায়ী। কয়েক দিন থেকে সপ্তাহ পর্যন্ত এই লক্ষণগুলো স্থায়ী হতে পারে। প্রসব-পরবর্তী সাময়িক এই মানসিক অবস্থাটির চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একটি পোষাকী নাম আছে- ‘বেবি ব্লু’। এ সময় নতুন মায়ের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত সমর্থন, সহমর্মিতা আর শিক্ষা। পরিবারের, বিশেষ করে স্বামীর বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে এ সময় স্ত্রীর পাশে থাকার, তাকে সাহস জোগানোর। নতুন মায়েরও উচিত মনের এই দুঃখবোধ চাপা না রেখে স্বামী বা প্রিয় কারো সঙ্গে তা শেয়ার করা, সহযোগিতা কামনা করা।
উপসর্গগুলো যদি থেকে যায় দুসপ্তাহের বেশি, তাহলে প্রয়োজন পড়তে পারে বিশেষজ্ঞ সহায়তার। নারী আক্রান্ত হতে পারেন ‘বিষণ্নতা’ নামের মানসিক অসুখে।গবেষকরা বলেন, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসূতি আক্রান্ত হন ‘পোস্ট-পারটাম ডিপ্রেশন’ বা প্রসব-পরবর্তী বিষন্নতায়। ‘বেবি ব্লু’র মতো ক্ষণস্থায়ী হয় না এ রোগ, উপসর্গগুলোও হয় তীব্রতর। প্রায় সার্বক্ষণিক মন খারাপ ভাব, হতাশা, অতিরিক্ত উদ্বেগ, অনিদ্রায় ভোগেন নতুন মা। দৈনন্দিন কাজকর্মে উৎসাহ হারান, মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন না কোনো কিছুতে। এমনকি নিজের শখের বা পছন্দের কাজগুলো করতেও আর ভালো লাগে না। অল্প পরিশ্রম বা বিনা পরিশ্রমেই ক্লান্তি বোধ করেন। খাদ্যাভ্যাসে আসে পরিবর্তন। বেশিরভাগেরই খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়। স্বল্পাহার বা অনাহারে থাকার ফলে কিছুদিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ওজন কমে যায়। কেউ কেউ আবার বেশি বেশি খেতে শুরু করেন। ফলে তাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে অস্বাভাবিক হারে। অনেকেই অকারণে অপরাধবোধে ভোগেন, বিগত দিনের তুচ্ছ-প্রায় ঘটনাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার ফলে নিজেকে দোষী ভাবতে শুরু করেন। সবার মাঝে থেকেও নারী একাকীত্মে ভোগেন, নিজেকে অসহায় লাগে, ধীরে ধীরে পরিবারের সকলের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে খোলসবন্দী হয়ে পড়েন। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় সামাজিক, পারিবারিক, ব্যক্তিজীবন। নারী তার নিজের জীবন সম্পর্কেই এক সময় উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন, হয়ে ওঠেন আত্মহত্যাপ্রবণ।
যাদের বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব ইতিহাস আছে অথবা যাদের পরিবারে কারো বিষন্নতা আছে বা ছিল, তাদের ক্ষেত্রে প্রসব-পরবর্তী বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যথাযথ চিকিৎসা না নিলে মাস থেকে বছরব্যাপী এ রোগ স্থায়ী হতে পারে। এদের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে গুরুতর বিষন্নতায় পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিষন্নতা আক্রান্ত নারী তার সন্তানের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। মায়ের বিষন্নতার কারণে সন্তান বঞ্চিত হয় উপযুক্ত মাতৃস্নেহ ও সেবা থেকে। বিষন্ন নারী যেমন নিজের যত্ন নেন না, তেমনি সন্তানের যত্নেও উদাসীন থাকতে পারেন।
তাই সন্তান-জন্মের আনন্দ উৎসবের মাঝে লক্ষ রাখুন সদ্য মা হওয়া নারীটির মানসিক অবস্থার দিকেও। উপযুক্ত সমর্থন ও সহযোগিতা দিন নতুন মাকে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রসব পরবর্তী ৬-৮ সপ্তাহ সময় একজন মায়ের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়ের সঠিক পরিচর্যা একদিকে মাকে যেমন গর্ভ ও প্রসব সংক্রান্ত বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনের পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করে, তেমনি মাকে এ সময়ের বিভিন্ন জটিলতা থেকে রক্ষা করে। সঠিক ভাবে বাচ্চার যত্ন নিতে ও বুকের দুধ খাওয়াতে সাহায্য করে। কিন্তু অজ্ঞতা অথবা অনিহার কারণে আমাদের দেশে মায়েদের প্রসব পরবর্তী সেবার জন্য চিকিত্সকের পরামর্শ নেবার হার অনেক কম।
প্রসব পরবর্তী মায়ের পরিচর্যার পদক্ষেপসমূহ:
মায়ের বিশ্বাম, ঘুম ও চলাফেরা স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে প্রসবকালিন ধকল কেটে ওঠার পর মায়ের ৮-১০ ঘন্টা সম্পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন। এরপর থেকে মাকে স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু করতে হবে। আজকাল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলাফেরা শুরু করতে বলেন ডাক্তারগণ। কারণ এর উপকারিতা অনেক। যেমন: স্বাভাবিক চলাফেরা মাকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে, প্রস্রাব-পায়খানার জটিলতা থেকে মুক্ত করে, জরায়ুর ভেতরে জমে থাকা রক্ত বের হয়ে যেতে সাহায্য করে এবং রক্ত জমাট বাধা রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করে। তবে স্বাভাবিক চলাফেরা মানে এই নয় যে, মা তার দৈনন্দিন সাংসারিক অথবা চাকুরীস্থলের কাজকর্ম শুরু করবে। প্রসব পরবর্তী ৬-৮ সপ্তাহ সকল পরিশ্রমের এবং ভারী কাজ থেকে মাকে বিরত থাকতে হবে। কারণ মায়ের এসময় মানসিক এবং শারীরিক বিশ্রাম প্রয়োজন। দুপুরে খাবার পর কমপক্ষে ২ ঘন্টা বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। প্রতিদিন বিশ্রামের সময় কিছুক্ষণ উপুড় হয়ে শোয়া ভাল, যা জরায়ুর অবস্থান স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের ফলে মা নিজে সুস্থ থেকে বাচ্চাকে সঠিকভাবে যত্ন নিতে ও বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন।
মায়ের খাবার:
প্রসব পরবর্তীতে মায়ের স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ৫০০ ক্যালরি খাবার বেশি খাওয়া দরকার। এই অতিরিক্ত ক্যালরি বুকের দুধ তৈরীর জন্য প্রয়োজন হয়। তাই এ সময় মাকে সঠিকমাত্রায় সুষম খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর শাক সবজি ও ফলমূল খেতে হবে। এ সময় মায়ের দেহে পানির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় ও ঘন ঘন পিপাসা পায়। মাকে সব সময় পিপাসা পেলেই প্রচুর পানি পান করতে হবে। পানি পানের উপকারিতা অনেক। যেমন: এই পানি বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চার পানির প্রয়োজনীয়তা মেটায়। বাচ্চাকে আলাদাকরে পানি খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় না। পানি মায়ের শরীরের বিভিন্ন পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে, প্রস্রাবের প্রদাহ, কোষ্টকাঠিন্য এবং রক্ত জমাট বাধা রোগ হবার ঝুঁকি কমায়। সুষম খাবার ছাড়াও মাকে এসময় চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রণ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন খেতে হবে।
এ ছাড়াও প্রসব পরবর্তীকালীন মেডিকেল চেক আপ প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, মা ও বাচ্চার সুস্থতার জন্য সকল মায়ের প্রয়োজন প্রসব পরবর্তী সেবা। চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত মাকে এই সেবা নেবার ব্যাপারে উদ্ধুদ্ধ করা এবং পরিবারের সহযোগিতা তো অবশ্য প্রয়োজন!
শহর কিংবা গ্রাম অথবা প্রত্যন্ত অঞ্চলেও যেন প্রতিটা মা ভালো থাকেন, আনন্দে থাকেন এ ব্যাপারে আমাদের সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।
পৃথিবীর সকল মায়ের জন্য ভালোবাসা।
তথ্যসূত্র
http://mom.windmillinfotech.com/?page=menu&content=8593
http://www.helpguide.org/articles/depression/postpartum-depression-and-the-baby-blues.htm
The Baby Care Book by Jeremy Friedman