বাঙালী বুদ্ধিজীবি
হে মহা জ্ঞানী বঙ্গবাসী!
ক্ষুদ্র-সুখ মায়ায় বসি বসি,
বন্ধ করে মনের যত দুয়ার
রুখবে কিসে "জাতীয় সম্পদ" নামি জোয়ার?
আজও যদি চুপটি করে বসে,
একটু কিছু হারাবার ভয়ে-ত্রাসে
না পায় পাশে আজ সর্বহারা!
তবে কিসে তোমার এত গর্ব করা?!
এত মিছিল, নাটক-যাত্রা, সুস্থ-চিন্তা!
আন্দোলনের গান, ঝাণ্ডা, স্লোগান-নামতা!
বহু দূর দেশে ন্যায়-লঙ্ঘন তরে--
কণ্ঠে তব বিরোধ ঝরে পড়ে!
অন্য কোথা কোন্ দূর জনপদে--
আর্তের লাগি মন সদা তব কাঁদে?!
এদিকে পাশেই কাঁদে লাঞ্ছিত যারা,
অনাহারে মৃত, মরে যারা গৃহ হারা!
তাঁদের দুঃখে দেখি সদা চুপ থাক!
শেখানো বুলি পথে পথে ঘুরে হাঁকো!
কোক-পেপসিতে ভিজিয়ে গলা খানি,
দাও "সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক" ধ্বনি!
রাজার নেক-নজরে সদা রহি,
বিবেকেরে কর কেমনে জবাবদিহি?!
শাসকের "মত" এ শুধু মাথা নেড়ে নেড়ে,
শিরদাঁড়াখানি বুঝি আজ বেঁকে পড়ে!
নষ্ট কবি মিলন বলে ভাবি
এ কি হলে, ভাই বাঙালী বুদ্ধিজীবি?!
এ যাবত্ যাহা করেছ তাহা ভুলি
ঝেড়ে ফেলে যত মলিনতা-ধুলা-বালি,
বুদ্ধির কর সুপ্রয়োগ, হে জ্ঞানি---
ফুলবাড়ির পথে চলহে সবারে টানি।