বেনাপোল বর্ডারে পেৌছে যখন একজন পুলিশ সদস্য হয়রানী করছিলেন তখন তার উপর ক্ষিপ্ত হতে হতে মনে পড়ছিলো একটি বইয়ের নাম । সীমান্তে সংঘাত। আমার স্কুল জীবনে একটি দারুন এডভেঞ্চার বই ছিলো শাহরিয়ার কবিরের লেখা 'সীমান্তে সংঘাত'। সম্ভবত সেবা প্রকাশনীর। ভারত যাত্রার সরাসরি বাস 'সেৌহার্দ' ভোর পাচটায় সীমান্তে এসে পেৌছলো। বাসটি ভারতীয়। বাসে চড়ে এমনিতেই মেজাজ খারাপ হয়েছিলো। বাসটির এক সিট থেকে আরেক সিটের গ্যাপ খুবই কম। ঝাকি এসে শরিরে বেশ লাগে। বেশ নিম্নমানের বাস। তাই এমনিতেই মেজাজ খারপ হয়েছিলো। তার উপরে সীমান্তে ক্লিয়ারেন্সের জন্য বাঙলাদেশের অফিসে নামতেই এক পুলিশ কন্সটেবল এগিয়ে এলেন। আমরা ছয়জন। তিনি প্রস্তাব দিলেন ছয়টি পাসপোর্টের জন্য তিনশ টাকা দিতে। তাহলে তিনি ক্লিয়ারেন্স করিয়ে দেবেন। কোন চেক হবেনা। তখন অফিসিয়ালি ক্লিয়ারেন্সের অফিস খোলেনি। কিন্তু ভেতরে কাজ চলছে। যারা টাকা দিচ্ছেন তাদের কাজ চলছে। আমি টাকা দিতে রাজি হলাম না। পুলিশ কন্সটেবল বললেন, অন্যদের কাছ থেকে পাসপোর্ট প্রতি একশ টাকা নিচ্ছি। আপনাকে ছাড় দিচ্ছি। তা-ও এরকম করছেন। যখন অফিসিয়ালি ক্লিয়ারেন্স অফিস খুললো তখন ভেতরে কাউন্টারে বসা পুলিশ কর্মকর্তাকে ( তার র্যাঙ্ক খোলা, সম্ভবত তিনিও কন্সটেবল ) বলে দিলেন আমি টাকা দেইনি। কাউন্টারে বসা লোকটি আমাকে বললো, আপনি বেসরকারি চাকরি করেন। সুতরাং আপনার অফিস থেকে যে ছুটি নিয়েছেন তার ছাড়পত্র লাগবে। আমি বললাম, ভাই সীমান্তে এসে একথা বললে তো হবেনা। ভিসার সময় একথা বললে দিতাম। তিনি বললেন, কিছু করার নেই। সেৌহার্দ বাসের একজন কর্মচারিকে দেখিয়ে বললেন, ওনার সাথে কথা বলেন। নইলে যেতে পারবেন না। ঐ লোকটি আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন, ভাই এক হাজার টাকা দেন। আমি বললাম দিচ্ছি। ফোন দিলাম আমার বন্ধু একজন এডিশনাল এসপিকে। সে ফোনে কথা বললো সেখানে দায়িত্বে থাকা একজন এস আই এর সাথে। এরপর চিত্র পুরো উল্টে গেলো। এস আই সাহেব আমাকে চা খাওয়ার জন্য বেশ জোরাজুরি করলেন। যে কন্সটেবল এতক্ষন টাকা চাইছিলো সে আমার সাথে থাকা ব্যাগ টেনে বাসে তুলে দিলো।
আমার সাথের আরেক যাত্রী-ও আমার মতো প্রথমে পঞ্চাশ টাকা ঘুষ দিতে অস্বিকার করেছিলেন। পরে আমার মতোই তাকে হয়রানী করে দুশ টাকা আদায় করলো।
বলতে খুব খারাপ লাগে নিজের দেশের কাস্টমস এন্ড ক্লিয়ারেন্স অফিসটিতে এমন হয়রানী হলেোও ভারতীয় অফিসটিতে এ হয়রানী হতে হয়নি। তারা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করলো।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১২