জিলাপি আমাকে খুব টানে। বাড়িতে থাকতে প্রায় প্রতিদিনই খেতাম। ১টা ২টা না ৭/৮টা । গরম গরম জিলাপি। কামড় দিতেই রস গড়িয়ে পড়তো। সাথে নিতাম গরম গরম ডালপুরি। অসাধারণ লাগতো খেতে। জিলাপির সাথে ডালপুরি সচরাচর কেউ খায়না। ছোটবেলা কলকাতা গিয়েছিলাম। সকাল ১১ টার দিকে জিলাপি আর ডালপুরি দিয়ে যেত নিচের দোকান থেকে। সেই থেকেই স্বাদটা পেয়েছি।
তবে ঢাকার বেশিরভাগ ডালপুরি খেতে ভালো না । চামড়া মোটা , শক্ত , ঠিকমত ফোলেও না। মানুষ না পেরে এগুলাই খায় কি করবে। খেতে খেতে নিশ্চয় নিজের এলাকার কথা মনে পড়ে।
একবার বাজিতে দেড় কেজি জিলাপি খেয়েছিলাম। খাওয়ার কথা ছিল ২ কেজি। পারিনি। প্রতিদিন ৭/৮টা খাওয়া আর একবারে ২ কেজি খাওয়া এক না । তবে এখন ৫ টার বেশি খেতে পারবোনা।
গুড়ের জিলাপি সব সময় পাওয়া যেত না। মেলা কিংবা বিশেষ উপলক্ষ ছাড়া গুড়ের জিলাপির দেখা মিলতো না। আমার খুব মজা লাগতো। গ্রামের ভিতরের কিছু দোকানে খুঁজলে পাওয়া যেত।
ঢাকায় বেড়াতে এলে খেতাম শাহী জিলাপি। গাউছিয়া মার্কেটের একটা দোকানে খুব শাহী জিলাপি বানাতো। আমার খেতাম নিউমার্কেট ওভারব্রিজের নিচের একটা দোকান থেকে। ওই ওভারব্রিজটা এখন আর নেই। ভেঙে ফেলা হয়েছে। ওই দোকানে এখনো জিলাপি বানায় তবে শাহী জিলাপি রোজা ছাড়া বানায় না। ওই দোকানে একবার দুইকেজি শাহী জিলাপির অর্ডার দিয়েছিলাম আমি আর আমার চাচাতো ভাই।
দোকানি পার্শেল ভেবে প্যাকেট করতে । দিলো। আমরা বললাম , আরে ভাই প্যাকেট রাখেন। এখানেই খাবো। আমার এখানেই খাবো শুনে বেশ অবাক হয়েছিল।
আগে এলাকাতে মিলাদ মানেই জিলাপি। এখন মিলাদ কম। মিলাদ শেষে নিজ স্থানে বসে এক প্যাকেট জিলাপির জন্য অপেক্ষা করা খুব কষ্টকর ছিল। তবে আমি নিতান্তই নরম ছিলাম বলে গরম গরম জিলাপি লোভ উপেক্ষা করতে পারতাম। সেই সুবাদে মাঝে মধ্যে দুই প্যাকেটো পেতাম।
অনেকে জিলাপি দিতো কাগজে মুড়িয়ে। সেই দিনের কথা মনে পড়লো হঠাৎ। সবচেয়ে বেশি জিলাপি পেতাম হাইস্কুলের ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে। যখন আমি স্কুলে পড়তাম না , আব্বার সাথে মিলাদে যেতাম হাত ধরে। হেডস্যারের ছেলে হিসেবে একপ্যাকেট বেশি পেতাম। কেউ কেউ নিজারটাও দিয়ে দিতো আদর করে।
ইদানিং ঢাকা শহরে ভালো জিলাপি খুব খুঁজি। নীলক্ষেতের ফটোকপির গলিতে বেশ ভালো জিলাপি বানাতো। এখন আর তেমন পাইনা। এখন আবার জিলাপিতে তিল ছিটিয়ে দেয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছে। গাউছিয়ার স্ন্যাকস কর্ণার- ফুলুরি , কলিজার সিঙ্গারা আর জিলাপির জন্য বিখ্যাত। সেখানে কত খেয়েছি তার হিসেবে নাই। টিনের প্লেটে ফুলুরি আর জিলাপি দিতো। এখনো দেয়। আগের স্বাদ নাই।
ফুলুরি হয়ে গেছে পাকোড়া আর জিলাপি হয়ে গেছে জালেবি !
আমরা জিলাপি খাওয়া পাবলিক। জিলাপি খেতে খেতে জামার হাতায় রস লাগানো পাবলিক। উত্তরাতে অফিস। অফিস থেকে কিছুটা হেঁটে গেলেই ননীর মিষ্টির দোকানের সাথে জিলাপি ঘর নাম একটা দোকান আছে। অনেক ভিড়।
তবে ওদের জিলাপি আমার ভালো লাগে না। জিলাপির গুলো কেমন চ্যাপ্টা চ্যাপ্টা। আমার পছন্দ জিলাপিরই প্যাঁচ হবে পরিপুষ্ট গোলাকার , একটু কড়া ভাজা। রসে টইটুম্বুর।
ব্লগে অনেকের জিলাপি প্রীতি আছে।
আহমেদ জী এস বলেছেন:
আমারও গরম গরম, কামড় দিলেই যার রসে মাখামাখি হয়ে যায় হাত; তেমন জিলিপিই পছন্দের। ঠান্ডা জিলাপি দু'চোখে দেখতেই পারিনে। রোজার দিনের শাহী জিলাপির তুলনা নেই।
ফারহানা শারমিন বলেছেন:
আহারে! জিভে জল আসছে। এখন আমি জিলাপির দোকান কই পাই?
ফুয়াদের বাপ বলেছেন:
আহ! কি কথা স্বরন করলেন ভাই। জিভে জল চলে আসছে। চিকন প্যাঁচের মচমচে গুড়ের জিলেপি একটার পর একটা খেতেই থাকতাম। আহা! কী সেই স্বাদ-সুঘ্রান!
মিরোরডডল বলেছেন:
ইভানকে মাইর দিতে হবে এমন মুখরোচক খাবারের ছবি দিয়ে পোষ্ট করে কেনো (
গরম জিলাপি সত্যি মজাদার ।
জিলাপিও অনেক মিষ্টি বলে কম খাওয়া হয়, খুব বেশি হলে বছরে একবার ।
কিন্তু যদি খাই তাহলে শুধুই চিকন ছোট হালকা, ওটা ভালোলাগে গরম আর মুচমুচে ।
শাহ আজিজ বলেছেন:
আমি পিচ্চি জিলাপি খাই মিরপুর সাড়ে ১১ তে একটা দোকান আছে । জিলাপি বরাবরই প্রিয় জিনিস । পিচ্চি জিলাপি রসে পূর্ণ আর মুচমুচে । এই মুচমুচ ভাব না হলে আমার আবার হয় না ।
অপু তানভীর বলেছেন:
আরে আপনি ঠিক ওভার ব্রিজের যে দোকানের কথা বলছেন ঠিক একই স্থান থেকে আমিও শাহী জিলাপী খেতাম । তবে নীলক্ষেতে আরও একটা দোকান আছে । সেখান থেকেও খাওয়া হত । ওখানে সিঙ্গাড়া আর পাকুড়া পাওয়া যেত ।
আমার নিজের জিলাপী খুব পছন্দ তবে আমি বড় জিলাপি একবারে সর্বোচ্চ দুইটা খেতে পারি । বেশি খেলে পেট খারাপ করে ।
নেওয়াজ আলি বলেছেন:
আমার ছোট মেয়েটা জিলাপী খুব খুব পছন্দ করে।
রাজীব নুর বলেছেন:
জিলাপী আমি দুটার বেশি খেতে পারি না। তাও গরম গরম হতে হবে।
ঢাকা শহরে কিছু কিছু এলাকায় সারা বছর জিলাপী পাওয়া যায়। আর রমজান মাসে প্রায় সব জাগাতেই পাওয়া যায়। আমাদের এলাকাতে পাওয়া যায় সারা বছর। কেজি ২৮০ টাকা। আর এক পিছ ১৫ টাকা। খারাপ না।
শেরাটন হোটেলে রমজান মাসে একবার জিলাপী কিনেছিলাম। দুই হাজার টাকা কেজি। জিজ্ঞেস করলাম এত টাকা কেন? বলল আমরা ঘি দিয়ে ভাজি। খেয়ে দেখেছি দশে চারের বেশি দেওয়া যায় না।
ইসিয়াক বলেছেন:
কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম টিউশনি শেষে বাড়ি ফেরার পথে জিলাপির দোকানে যাই। আমাদের এখানে দড়াটানা আর কাঠের পুলে ভালো জিলাপি পাওয়া যায়। কিন্তু ফেরার সময় এমন আলসেমি লাগে।অল্প পথ তবু যেতে ইচ্ছে করে না। যদিও এখন তেমন টিউশনির চাপ নেই তবু শীতের মধ্যে বেশিদুর হাঁটতে ইচ্ছে করে না।
আপনার জিলাপির ছবিটা সত্যি লোভনীয়। বেশ মুচমুচে মনে হচ্ছে। জিলাপি নরম হলে খেয়ে আরাম নাই।
সোহানী বলেছেন:
আমি জিলেপি খুব একটা পছন্দ করি না। তবে ছোট ছোট ঘিয়ে ভাজা জিলেপি আমার পছন্দ। ঢাকার অল্প কিছু দোকানে খেয়েছিলাম। আর কানাডায়তো বলতে যা পাওয়া যায় তা একবার খেলে আর খাবেন না বলেই আমি মনে করি।
তবে গত সাপ্তাহে অফিসিয়াল পার্টি ছিল এক ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে। বুফে সিস্টেমে প্রায় ৮০টা আইটেম ছিল। সেখানের জিলেপি খেয়ে ঢাকার সে জিলেপির কথা মনে হলো, বেশ ভালো ছিল তা।
কামাল১৮ বলেছেন:
জিলাপি বানানো কঠিন কিছু না।খেতে ইচ্ছা করলে বাসায় বানিয়ে খাই।
ইমরান আশফাক বলেছেন:
খুলনায় ফেরিঘাটের মোড়ে বিহারীদের গলির মুখে বেশ ভাল জিলাপি পাওয়া যায়। ওখানের ঈষৎ লাল, মুচমুচে, খাস্তা ও গরম গরম জিলাপির স্বাদই আলাদা। আমি প্রায়ই ওখান থেকে জিলাপী নিয়ে যাই বাসায় (আধা কেজি করে), বাসায় পৌছানোর আগে পোয়া খানেক জিলাপী হাওয়া হয়ে যায় ।
জুল ভার্ন বলেছেন:
ঢাকা শহরের অলিগলি সর্বত্রই জিলাপী পাওয়া যায়- যার কোয়ালিটি ১৯/২০ হয়।
জিলাপি পোষ্ট শেষ হলো। বেশি মিষ্টি খাওয়া ঠিক না। ব্লগার কলাবাগান সাবধান করছেন।
কলাবাগান১ বলেছেন:
সাধে কি ডায়াবেটিক হাসপাতালে সিট পাওয়া যায় না বাংলাদেশে ।
আর চাঁদগাজী এইসব ম্যাঁওপ্যাও পোস্ট পছন্দ করেন না।
সোনাগাজী বলেছেন:
কি পড়লেন, কি করছেন!
আর আপনারা যারা পোস্টে এসেই যখন পড়েছেন তখন খালি মুখে যাবেন কেন ?
ছবি: অনলাইন থেকে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৩১