somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গলি চেনাবে রাজপথ....

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





আমরা এসেছি ভেড়ামারা ফেসবুক পরিবার থেকে। আমরা এসেছি প্রানের শহরের তাগিদে। যে পিঠে স্কুল ব্যাগ ঝুলিয়ে হেটে গিয়েছি স্মৃতির শহরের পথ ধরে, আজ সে পিঠেই তুলে নিয়েছি ময়লার ঝোলা...... প্রানের শহরের পরিচ্ছন্নতার মিছিলে। আমরা ছুটেছি সেই স্বপ্নের খোঁজে, যা ভাবতে শেখাবে আমাদের শহর কে নিয়ে। আমাদের দ্বায়িত্ববোধ আর সচেতনতা পৌঁছে দেবে রুপকথার শহরের খুব কাছাকাছি, যেই শহরের নাম দিয়েছি আমরা 'স্বপ্নের ভেড়ামারা'।
হ্যাঁ...... আমরা এসেছি স্বপ্নের ভেড়ামারা গড়তে...

“দেশ আমাদের মা, তবে শহর আমাদের মায়ের হৃদয় ছাড়া আর কি?” এই স্লোগান নিয়ে শুরু হয় ভেড়ামারা শহরের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রানের শহরের এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান প্রথম শুরু হয় স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেইসবুকের একটি গ্রুপের মাধ্যমে। ফেইসবুকের “ভেড়ামারা” শিরোনামের এই গ্রুপটি বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা কমিউনিটি। ক্রমবর্ধমান গ্রুপটিকে এই গ্রুপের একঝাঁক তরুন-তরুনী একটি পরিবার বলে মনে করে। আর এই পরিবারের উদ্যেগে প্রানের শহরের সৌন্দর্য বর্ধনে এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে গ্রহন করা হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। এই পরিবার মনে প্রানে বিশ্বাস করে সকলের সহযোগীতা ও সচেতনতা আগামীতে জন্ম দেবে ঠিক রুপকথার মত এক সুন্দর শহরের, যার নাম “স্বপ্নের ভেড়ামারা”।


“প্রানের শহরের পরিচ্ছন্নতা” শিরোনামে প্রথম পর্যায়ে বিগত ২৮ অক্টোবর ২০১২ এ ভেড়ামারা শহরের একশ জন তরুন তরুনী প্রতিকী ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সফল অভিযান চালায়। সকল শ্রেনীর মানুষের মাঝে এই অভিযানের গ্রহনযোগ্যতায় অনুপ্রানিত হয়ে পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং অভিযানকে আন্দোলনে রুপ দিয়ে বৃহৎ পরিসরে দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষ্য স্থির করা হয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সবার মাঝে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে বেছে নেয়া হয় বিজয়ের দিন ১৬ই ডিসেম্বর ২০১২ কে। বিজয়ের এই দিনে লাল-সবুজ টিশার্ট পড়ে দুইশজন তরুন তরুনী রুপকথার শহর তৈরীর শপৎ নিয়ে নেমে আসে রাস্তায়, শুরু করে রাস্তা ঝাড়– দেয়া ও উচ্ছিষ্ট ময়লা আবর্জনা নির্মুলের উৎসব। এই দিনে ভেড়ামারা শহরের চৈতন্য মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন পর্যন্ত ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা, শোভাযাত্রা, সচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরন এবং সর্বোপরি শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থানে ডাষ্টবিন স্থাপন করা হয়। ইতিমধ্যে বাজার কমিটি ও সচেতন নাগরিকদের অংশগ্রহনে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে যত্রতত্র ময়লা ফেলার বদলে ঝুড়ি ব্যবহারে অনুপ্রানিত করা হয়। এখন বাজারের বেশীরভাগ দোকানে ময়লা ফেলা ঝুড়ি দেখা যায়। সেই সাথে রেলস্টেশনের সৌন্দর্য বর্ধনে ফুলের বাগান তৈরী করা হয় তিন দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে।

এই কর্মকান্ডকে উদ্বোধন ও অনুপ্রানিত করতে আন্দোলনে অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোঃ রাজিবুল ইসলাম, পৌরসভা মেয়র হাজী শামিমুল ইসলাম ছানা এবং ভেড়ামারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জনাব রুহুল ইসলাম সর্বদা সকল রকমের সাহায্য সহযোগীতা করে অনুপ্রানিত করে থাকেন। পরিচ্ছন্নতা আন্দোলনের বর্তমান কার্যক্রমের মধ্যে সর্বসাধারনকে ময়লা আবর্জনা সম্পর্কে প্ররোচিত করা, পরিবেশ দুষনের ক্ষতিকর দিক অবহিত করা, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলা, যত্রতত্র পোস্টার না লাগানো, দেয়াল লিখন থেকে বিরত থাকা, বাড়ীতে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ময়লার ঝুড়ি ব্যবহার, ড্রেনে ময়লা না ফেলা এবং আবর্জনা ফেলার জন্য ডাস্টবিন ব্যবহার করার জন্য সকলকে উৎসাহিত করা হয়। সর্বস্তরের মানুষের সুচিন্তত মতামত গ্রহনের জন্য মুল্যায়ন ফরমের মাধ্যমে মতামত গ্রহন করা হয়। “অপরিচ্ছন্ন শহর মানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, আমাদের একটু চেষ্টায় গড়তে পারে সুস্থ-সুন্দর পরিবেশ। আসুন শামিল হই প্রানের শহরের তাগিদে...পরিচ্ছন্নতার মিছিলে...” স্লোগানকে সামনে রেখে ভেড়ামারা উপজেলার এই সকল তরুর-তরুনীদের মত প্রতিটি উপজেলায় অনুরুপ উদ্দ্যেগ গড়ে তুলতে পারে এক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ। একটি ছোট্ট শহর হতে গৃহীত এই ছোট্ট উদ্দ্যেগ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য পরিচ্ছন্নতার রোল মডেল।

প্রানের শহরের পরিচ্ছন্নতা এর প্রথম ইভেন্ট সফল ভাবে শেষ করার পর আমরা বলেছিলাম...

না... এখানেই থেমে যাচ্ছি না !
"এখান থেকেই আবার শুরু... জনসচেতনতায় আবার ঝাপিয়ে পড়বো, আবার ফেসবুক থেকে রাস্তায় নামবো প্রানের শহরের জন্য, আবার অনেক কিছু হবে! হ্যাঁ আমরা আবার শুরু করছি মহান দিনে মহান ব্রত নিয়ে... আমরা করবো জয়ের প্রত্যয়ে !

মহান বিজয় দিবস অমর হোক বললেই বিজয় দিবস অমর হয়ে যায় না। কাজের মাধ্যমে অমর করতে হয়। মহান বিজয় দিবস সফল হোক বলে সেমিনার, মিছিল, মিটিং করলেই সফল হয় না। সফল করতে হয়। আসুন এই বিজয় দিবসে, বিজয়কে সফল করি পরিচ্ছন্নতার মিছিলে যোগ দিয়ে। অমর করি আমাদের বিজয়কে। ভেড়ামারাবাসী গর্জে ওঠো আর একবার, বার বার। আমরা করবো জয়..."


মহান বিজয় দিবস, আমাদের সাথে আছে লাল টকটকে অনুপ্রেরণা, আর ভেড়ামারাবাসীর প্রত্যাশা!! ভয় কি? আমরা চাই ভেড়ামারাতে নতুন আশার সুচনা হোক, প্রাণের শহরের পরিচ্ছন্নতায় আবার একসাথে... ছড়িয়ে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, শহর থেকে শহরে... বুকে প্রত্যয়...


প্রথমবারের কিছু অনুভূতি আমাদের সাহস যোগালো... আগুন উস্কে না দিলে দাবানল হয় না। আমরা আগুনটাকে দাবানল বানাবো। শহরের প্রতি ভালোবাসার আগুনটা আমরা আবার উস্কে দিলাম... টিএনও স্যার ঝাটা ধরলেন, পৌর মেয়র দ্বিধা করলেন না, হেডস্যার বরাবরের মতই পিছু ছাড়লেন না!আমাদের মোটিভেশন টিম ভেড়ামারা পুরো ভেড়ামারারা বাজার ঘুরে জোগার করে আনলো ৫৫০টা মুল্যায়ন ফরম, ৫৫০ জন আশা দিলো... এগিয়ে যাও বাছারা, সাথেই আছি... সাথেই আছি!


আমরা স্বপ্ন দেখি... আমাদের পরিশ্রম আমাদের সচেতনতা, আমাদের দ্বায়িত্ববোধ একদিন আমাদের কে পৌছে দেবে স্বপ্নের সেই শহরের খুব কাছাকাছি। সে শহর একদিন সুবাতাস ছড়াবে, প্রজন্ম পৌছে দেবে প্রজন্মে, শহর থেকে শহরে.... জানি, চিঠি একদিন পৌছবেই। আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগ একদিন গলি হয়ে রাজপথ চেনাবে...

জাতীয় দৈনিক নিউ নেশনে আমাদের ইভেন্টের প্রতিবেদন





সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:১৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×