সম্প্রতি বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সুখের সংবাদ কিন্তু কিছু দুষ্কৃতিকারী এই অর্জন কে খাট করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। যদিও এই তালিকাতে মরক্কো, কেনিয়া, ঘানা, জাম্বিয়া, হন্ডুরাসের মত দেশ গুলো ও রয়েছে এর পরেও এটা অনেক বড় এক অর্জন। নিন্দুকদের কথা আর কি বলব এরা সকল অর্জন নিয়েই নিন্দা করতে ব্যাস্ত। দেশ কে নিন্ম মধ্যম না বলে মধ্যম আয়ের দেশ বললে আসলে যুক্তিযুক্ত হত কিন্তু নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ বলেই এরা মানতে নারাজ। এক বিকালে আড়ং এ ১ কোটি টাকার পোশাক যে দেশে বিক্রয় হয় সেই দেশটিকে সামান্য নিম্ন মধ্যবিত্তদের দেশ বলে মেনে নিতে না চাওয়া যে কত বড় অন্যায় তা ক্ষমতাতে কোন স্বৈরশাসক থাকলে হারে হারে টের পেত এই সকল নিন্দুকেরা। মধ্যম আয়ের দেশ তো ঘোষণা হয়েই যেত বাধ সাদল ঐ সাগরে ভাসমান মানসিক ভারসাম্যহীন লোক গুলো। চারদিক থেকে যখন বাহবা পাওয়ার ব্যাবস্থা করা হল তখন দেশ বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই মানুষ গুলোকে মিডিয়া বের করে আনল। ভালো থাকার জন্য কেউ যদি জীবন বাজি রেখে সাগর পাড়ি দিতে চায় দিক না এ নিয়ে এত চিল্লাচিল্লির কি আছে? এই সহজ কথাটি এই অবুঝ মানুষদের বুঝানো যায় না। কোন এক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিলেন মানুষের বেডরুম পাহার দেয়া অসম্ভব অথচ এই বেকুব গুলো বলে কিনা কে অভাবের টানে ভিটা মাটি বিক্রয় করে সমুদ্রের বুকে ভাসল এর খোঁজ ও নাকি রাষ্ট্রের রাখতে হবে? যেন মামা বাড়ির আবদার। বিরোধী চক্রান্ত বানচাল, বিসমিল্লাহ্ বা শেয়ার কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেয়া, বহির্বিশ্বের পার্লামেন্ট এ দেশের ডি এন এ বহন করে এমন ঐ দেশের নাগরিকদের বিজয়ের খবরে আনন্দ প্রকাশ সহ কত কাজ করতে হয় সেই সবের খবর কি আর এই দু-আনার মানুষ গুলোর আছে?
ভাতের অভাবে মানুষ সাগরে ভাসে শুনে তড়িঘড়ি করে গম আনল সেখানেও এই মানুষ গুলো বিপত্তি ঘটাল, দুই-চারটি পোকা না হয় গমে ছিল ই তাই বলে এতো চিৎকার চেচামেচির কি আছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ভাতের প্লেটে কত পোকা সরিয়ে এরা ভাত খেয়েছে এর পরেও পোকা দেখে আঁতকে উঠার অভ্যাস যায় নি। পোকা বেছে নিলেই তো ৫ কেজি গম হতে ২/৩ কেজি ভালো গম বের হত, বুঝেনা জানেও না শুধু চিৎকার চেচামেচি করে। কোন পরীক্ষাই তো প্রমান করতে পারলো না এগুলো খাওয়ার অযোগ্য নয়। এবার বুঝ কেমন লাগে।
সব ঠ্যালা ভালো করেই পার করে দিয়েছিল বাধ সাদল আবার ঐ জর্দার কোম্পানির মালিক গুলো। কত কষ্ট করে সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী ম্যানেজ করে ভালো এবং উন্নয়নের খবর দিয়ে পত্রিকার পাতা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এর নিউজ ফেড পূর্ণ করে দেয়া হল কিন্তু এই কোম্পানির যাকাত নামক বিজ্ঞাপনের কারনে আবার সব অর্জন মাটি হওয়ার উপক্রম। ২০০/২৫০ টাকা দামের এক খানা কাপড় বা এক খানা লুঙ্গির জন্য নিজেদের জীবন দিয়ে দিতে পারে এই শ্রেণীর দরিদ্র গুলোকে কত কষ্টে ও কত কৌশলে মানুষের দৃষ্টি হতে সরিয়ে রাখা হয়েছিল সেই লোক গুলোকে এই ভাবে খুঁজে খুঁজে বের করে আনবে তা কল্পনার অযোগ্য। ভাগ্যিস প্রসাসন হাতে আছে আর এমন কোন ঘটনা ঘটবে না বলে তারা আশ্বাস দিয়েছে। একটা দুইটা মরলে কিছু আসে যায় না ২৭ টা লাশ চাট্টিখানি কথা? যদিও অনেকে এর মধ্যে সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র এর খুঁজে পাচ্ছেন কিন্তু এর পরেও যে প্রমান হয়ে গেল দেশে এই মধ্যবিত্তের সংখ্যা বাড়াতে গিয়ে জ্যামিতিক হারের ও অধিক হারে হত দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে। ব্যাংকের তহবিল, শেয়ার বাজার এর টাকা, কাবিখার গম, চাকুরির প্রশ্ন ফাসের ব্যবসা, টেণ্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি আরও কত কিছু করে কত গুলো লোক কে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ করে দেয়া হল এই সব নিয়ে কেউ সংবাদ করে না। সংবাদ করে এই গুলো বন্ধ করার, আরে এই কাজ গুলো করে যে কত সহজে ধনী হওয়া যায় তা কি একজন ছাত্রের চাকুরি না করেই এম এস শেষ করার দুই বছরের মধ্যে ঢাকাতে ফ্ল্যাট কিনা দেখে বুঝা যায় না? কত হত দরিদ্র পরিবার চাঁদাবাজির টাকাতে আজ সচ্ছল এটা কেউ দেখবে না, আড়ং এ এক বিকালে কোটি টাকার লেনদেন কারা করল? কত দিকের সংবাদ আছে এগুলো না দেখে কোথায় ২৭ জন মানুষ মারা গেল এই নিয়ে দেশ কে মধ্যম আয়ের দেশের অবস্থান হতে নামানো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে যাওয়া কত অমানবিক তা কি এরা বুঝে?
মুক্তিযোদ্ধাদের জেলা ইউনিট কম্যান্ড ঘোষণার জন্য সচিব সাহেব না হয় কিছু নিয়েই ছিলেন তাই বলে এমন আত্মহত্যা করে রাজাকার দের মত সরকারকে বেকায়দাতে ফেলার চেষ্টা করবে? রাজাকার সর্বদাই রাজাকার কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সর্বদা মুক্তিযোদ্ধা নাও থাকতে পারে কে যেন বলেছিল খুব সহি কথা বলেছিল বলে যখন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলার চেষ্টা করা হল তখনই আবার মেজর জেনারেল (অব আমজাদ খান চৌধুরী মারা গেল কত কসরত করে মিডিয়া বিরোধী দল সহ সকলে মিলে তাঁকে একজন নিষ্ঠাবান দায়িত্বশীল অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কাম একজন মহান ব্যবসায়ী হিসেবে দ্বারা করানো হল, সেখানে কিছু সংখ্যক বিপথগামী লোক তাঁর ১৯৭১ সালের পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হয়ে কর্তব্য নিষ্ঠার দলিল গুলো সামনে নিয়ে আসল। এতে করে ঐ মহৎ ব্যাক্তির কথা যে একজন রাজাকার সাড়া জীবনই রাজাকার তা ধুলিস্মাত হয়ে গেল।
কত হাজার হাজার কোটি টাকার চুরি মাফ করে দিল এই দিকে কারো খেয়াল নাই সিলেটে দুষ্ট ছেলে পেলে সামান্য চুরির অভিযোগে ১৩ বছরের এক বালক কে হত্যা করল কেন এ নিয়ে মিডিয়া বাড়াবাড়ি শুরু করল। কেউ কেউ আবার শাহাবাগে জড়ো হওয়ার ইভেন্ট ও খুলে ফেলল। অথচ কত বদন্যতা করে কত হাজার কোটি টাকার চুরি মাফ করে দেয়া হল এ থেকে জাতি কিছুই শিখল না! এই জাতীকে কীভাবে শিখাব বলেন? অবশ্য এর চেয়ে কত নিকৃষ্ট অত্যাচার করে কত মানুষের জীবন কেড়ে নিল বাংলার দামাল ছেলেরা যার ফলে দেশে আজও এত শান্তি বিরাজমান। প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে একই রকম নিষ্ঠুরতাতে কত মানুষ কে হত্যা করা হচ্ছে। কেউ মারে বৈঠা দিয়ে আর কেউ মারে পুড়াইয়া। যে যেভাবেই মারুক না কেন দেশের ক্রমবর্ধমান মানুষের চাপ কমাতে যে এরা কত তৎপর তা এই সকল কার্যক্রম হতেই বুঝা যায়। কত মহৎ এদের উদ্দেশ্য!! ১৬ কোটি মানুষের ১৫ কোটিই নিমক হারাম। আর ৫০ লাখ শত্রু মাত্র ৫০ লাখ লোক শুধু বুঝদার ও মনের মত এবং এরা সব বুঝে। এই বুঝদারদের জন্যই দেশ সেই দেশে দয়া করে আমজনতা রূপী এই মানুষ গুলোকে বসবাস যে করতে দিতেছে এর জন্য কোন ধন্যবাদ তো দেয়ই না বরং পারার চ্যালা গুলো দু-চার টাকা চাইলে এটাকে চাঁদাবাজি চাঁদাবাজি বলে শোরগোল করে। কত খারাপ এই দেশের মানুষগুলো!! এর পরেও দেশকে তো এগিয়ে নিতেই হবে শত হলেও দেশ না থাকলে বৈদেশিক ঋণ আসবে না আর ঋণ না আসলে ক্যানাডার বেগম পাড়ার বাড়ি বা সিঙ্গাপুরের ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনের সুইমিং পুল কিংবা মালোয়শিয়ার খামার বাড়ির বকেয়া বিল গুলো তো দিতে হবে। যদিও সুইস ব্যাংকের টাকা তুলে দিয়ে দেয়া যায় কিন্তু জমানো টাকা নষ্ট না করাই ভালো ছেলেটার যা মতিগতি এদিক সেদিক করে দুচার পয়সা কামাই করতে পারবে বলে মনে হয় না। তাই পরবর্তী চোদ্দ পুরুষের ভাগ্য গড়ে দিয়ে যাওয়া তো দেশেরই উন্নয়ন। কে বুঝবে এই সকল সুদূরপ্রসারী চিন্তার কথা এই সকল ছাপোষা লোক তো এতদূর চিন্তা করতেই পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:৫৩