somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাওন আহমাদ
স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।তাই বলে স্বপ্নকে ত্যাগ করে নয়,তাকে সঙ্গে নিয়ে চলি।ভালো লাগে ভাবতে, আকাশ দেখে মেঘেদের সাথে গল্প পাততে, বৃষ্টি ছুঁয়ে হৃদয় ভেজাতে, কলমের খোঁচায় মনের অব্যক্ত কথাগুলোকে প্রকাশ করতে...

না অন্তর্মুখী না বহির্মুখী

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ নানা রহস্যে বেষ্টিত প্রাণি; যার আদল দেখে অন্তরমহলের অবস্থা আঁচ করা মুশকিল। শব্দটিকে মুশকিল না বলে, অসাধ্য বললেই এর প্রতি সুবিচার করা হবে। পৃথিবীতে মানুষের আদলগত যেমন ভিন্নতা আছে, ঠিক তেমনি প্রতিটি মানুষের ভেতরে বাস করা মানুষটির মধ্যেও রয়েছে নানা পার্থক্য। মানুষের মস্তিষ্ক যেনো এলমেল সূক্ষ্ম সুতোর বুনন। যার জট খোলা; জড়িয়ে-পেঁচিয়ে কুন্ডুলি পাকিয়ে যাওয়া সুতোর জট খোলার চেয়েও কঠিন।


পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, যারা খুব মিশুক আর আমুদে। সারাক্ষণ হৈহুল্লোড় ও আনন্দে মেতে থাকে। এই মানুষগুলোর বন্ধুর সংখ্যা আকশের নক্ষত্ররাজির মতো। সেই মহলে বেশ দাপিয়েই বেড়ায় এরা। খুব সহজে মিশে গিয়ে, সবাইকে নিজের করে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা থাকে এদের। বিজ্ঞানের ভাষায় এই স্বভাবের মানুষদের (এক্সট্রোভার্ট) বলে। পৃথিবীতে এই মানুষগুলোর একেবারেই উল্টো কিছু মানুষ আছে, যারা নিজের মতো একা থাকতে ভালোবাসে। কারো সাথে ঠিক মিশে উঠতে পারে না। সারাক্ষণ নিজের জগৎ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। এদের বলা হয় (ইন্ট্রোভার্ট)।


এই দুই শ্রেণির মাঝামাঝি কিছু মানুষ আছে, যারা কখনো খুব মিশুক আবার কখনো গম্ভীর। এই মানুষগুলো একই সাথে হৈহুল্লোড় করে, আড্ডা দেয়, মজা করে আবার সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে একা করেও রাখে। এদের বলা হয় এম্বিভার্ট। সমাজে চলতে গিয়ে এই মানুষগুলোকে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এদের চারপাশের মানুষজনও বুঝতে পারে না এদের।


কিছুক্ষণ আগে হৈহুল্লোড় করে বেড়ানো মানুষটি যদি আচানক সেখান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে—চুপ করে যায় বা একা থাকতে চায়, তাহলে কেউ এই বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ এটাও বুঝতে চায় না, এখানে এই মানুষগুলোর কোনো হাত নেই। খুব সহজে এরা সাবার সাথে মিশে গেলেও এই সমস্যার কারণে; এদের খুব বেশি বন্ধু থাকে না। গুটি কয়েক বন্ধু নিয়েই জীবনের অধ্যায় শেষ হয়।


‘এম্বিভার্টরা’ প্রচন্ড রকমের অভিমানি আর আবেগপ্রবণ হয়। এদের বাহিরের আচরণ দেখে ভেতরের অবস্থা আন্দাজ করা যায় না। ভেতরে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বয়ে গেলেও বাইরে থেকে মনে হয়, ঝলমলে রোদ্দুরময় দিন। এরা খারাপ সময়েও ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে বলতে পারে, “ভালো আছি”। নিজের বিষাদ চাপা দিয়ে, অন্যের মনের চিকিৎসা দিতে ব্যতিব্যস্ত থাকে এরা। এই মানুষগুলো খুব চাপা স্বভাবের; দাঁত কামড়ে সব সহ্য করে। নিজ থেকে না বলা পর্যন্ত আপনি এদের ভেতরের খবর জানতে পারবেন না।এরা খুব একটা নিজের ভেতরের খবর বলে না। বলে না বললে ভুল হবে। আসলে বলার মতো কাউকে খুঁজেই পায় না। কারণ এদের বন্ধুর সংখ্যা খুব সীমিত।জীবনে চলার পথের বাঁকে বাঁকে কত মানুষের সাথে এদের পরিচয় হয় কিন্তু কেউ ঠিক ভেতর ঘরের মানুষ হয়ে উঠতে পারে না


এই মানুষগুলোর নিজেদের একান্ত জগৎ থাকে, যার চারপাশে অদৃশ্য এক পাঁচিল তুলে রাখে এরা। কেউ চাইলেই পাঁচিল টপকে সেই জগতে প্রবেশ করতে পারে না। ভালোবাসা আর বিশ্বাস হচ্ছে সেই জগতে প্রবেশের অনুমতিপত্র। যদি কেউ একবার প্রবেশ করার অনুমতি পায়, তাহলে অবাধে বিচরণ করতে পারে সেখানে। এরা মানুষকে বারবার বিশ্বাস করে, বারবার ঠকে। এদের ঠকানো খুব সহজ। একটু মায়া জড়িয়ে কথা বললেই পেছনের ঝুম বর্ষা ভুলে গিয়ে, পা বাড়ায় নতুন ভুলেরে দিকে।


এতোকিছুর পরেও এদের কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই। এরা এদের মতোই থাকে। তবে, মাঝেমধ্যে এই মানুষগুলো খুব একাকীত্ব অনুভব করে। দু দন্ড কথা বলার জন্য অসহায় চোখ কাউকে খুঁজে বেড়ায়। খুব করে চায় অদৃশ্য পাঁচিল টপকে এদের জগতে কেউ ঢুকে পড়ুক, একটানে খুলে ফেলুক একাকীত্বের চাদর…

ছবিঃ গুগল

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ফুলকপি পাকোড়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২০



ফুলকপি নিয়ে চারিদিক বেশ হৈচৈ চলছে । ক্রেতা হিসাবে আমাদের কিছুই করার নেই দুঃখ প্রকাশ ছাড়া । তো ফুলকপির পাকোড়া খুব স্বাদের জিনিস । ঝটপট বানিয়ে ফেলুন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাইরে নাইরে না!!!!!!!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২২



বেশ কিছুদিন আগে দ্য সানডে টাইমসে একটা আর্টিকেল পড়ছিলাম। লেখক হিপোক্রেসির ধরন বোঝাতে গিয়ে একটা কৌতুকের অবতারনা করেছিল। কৌতুকটা এমন..........ছয় বছরের ছোট্ট জো তার বাবাকে গিয়ে বললো, ড্যাড, আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈশ্বর!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯







নিটশের ঈশ্বর মৃত হয়েছে বহুদিন আগে, জড়াথস্ট্রুবাদের ঈশ্বর বদলে যায়নি, একটাই থেকেছে ; আব্রাহামিক ঈশ্বর অনেক ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছে মানুষকে ;বুদ্ধের ঈশ্বর অভিমান করে কথাই বলতে চায়নি ; মিথলজীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×