DW (বাংলা ভাষা) লিখেছে বাংলাদেশী সমকামীদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই । লেখাটি পড়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হল । ইংরেজি শব্দ Homosexuality হোমোসেক্সুয়ালিটি যার বাংলা হচ্ছে , সমকামী । আমেরিকানরা ছেলে সমকামীদের বলে গে আর মেয়েদের বলে লেসবিয়ান । পৃথিবীর প্রায় সব দেশে সব যুগেই সমকামী কিছু লোক ছিল । যাদেরকে সেই শুরু থেকেই সবাই ঘেন্নার চোখে দেখে এসেছে । বিভিন্ন চার্চের নিদেশে ইউরোপে এক সময় অনেক সমকামীকে হত্যা করা হয়েছে ।
সমকামিতা বলতে মুলতে সম লিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোঝায়। এইরূপ আকর্ষণের কারণে একই লিঙ্গের মানুষের মধ্যে যৌনসম্পর্ক ঘটতে পারে। প্রবৃত্তি হিসেবে সমকামিতা বলতে বোঝায় মূলত সম লিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি প্রণয় ঘটিত এক ধরনের যৌন প্রবণতা"। জিনগত, হরমোনগত এবং পরিবেশগত কারণ একত্রে যৌন অভিমুখীতা নির্ধারণের জন্য একজন মানুষ সমকামী হতে পারে ।
পৃথিবীতে যতোগুলো ধর্ম রয়েছে কোন ধর্মই এই সমকামিতাকে সমর্থন করে না । সেটি করে না এই কারণে যে, এটি যৌন চাহিদা পুরনের একটি ক্ষতিকর মাধ্যম।
কেউ যদি ঠিক করে ফেলে যে, সে আর বেচে থাকবে না আত্মহত্যা করবে বলে স্থির করে ফেলে, তা হলে তাকে কেউ রক্ষা করতে পারে না । একবার দুই'বার বাচাতে পারলেই এক সময় সে ঠিকই মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে যায় । সেই ব্যক্তির ভেতর এই আত্মহত্যা প্রবণতা কিন্তু তার মস্তিষ্ক থেকে জাগ্রত হয় । মস্তিষ্ক থেকেই সে আত্মহত্যার তাগিদ বা প্রবণতা অনুভব করে । যাপিত জীবনের দু:খ,কষ্ট সেই প্রবণতাকে উচকে দেয় মাত্র । আত্মহত্যা প্রবণতা সকল মানুষের ভেতরই কিন্তু কম বেশি দেখা যায় । কেউ এটাকে নিয়ন্ত্রণ করে কেউ করতে পারে না । এটাও এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা । পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না, "যে জীবনে একবারও আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করেনি ।"
মানুষ কেন সমকামী হয় সে ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন । প্রথমেই বলা যায়, তীব্র যৌনাকাঙ্গার সময় বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গীর অভাবে অনেক পুরুষ বা মহিলার ভেতর সমকামিতা দেখা দিতে পারে । এক্ষেত্রে যেটি সবচেয়ে বেশি মারাত্মকে বা ভয়ন্কর সেটি হচ্ছে, এই সময় মানুষ শিশুদের নিরাপদ ভেবে বেছে নেয় । শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন চালায় । প্রচণ্ড যৌন চাহিদার কারণে তারা অনেক সময় পশু, পাখিকেও বেছে নেয় ।
সমকামিতা মূলত একটি মানসিক রোগ ও বটে । মস্তিষ্কের নিউরনে অসুস্থতার কারণেও মানুষ সমকামি হয়ে থাকে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে উভয়কামি থাকলেই এক সময় সমকামী হয়ে উঠে । মানুষ কেন সমকামী হয় সে ব্যাপারে সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেনি ।
সাধারণত প্রাকৃতিক কারণেই মানুষ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে থাকে । কিন্তু দেখা যায় অনেকের ভেতরে হরমনগত ক্রুটি জন্ম থেকেই থেকে যায় । অর্থাৎ যিনি পুরুষ বা মহিলা হয়ে ঘর সংসার করছেন । এমন কি ছেলে মেয়েরও পিতা মাতা হয়েছেন কিন্তু তিনি ভেতরে ভেতরে একজন পূর্ণ পুরুষ নন একজন নারী । মহিলাটিও ভেতরে ভেতরে একজন পূর্ণ নারী নন একজন পুরুষ । এমন হরমোনিক সমস্যাগুলোর কারণে অনেকে সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন । এমনটা ভ্রনগত সমস্যার কারণে হতে পারে । তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন অন্যজনের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করবে ততোক্ষণ পর্যন্ত তাকে সমকামি বলা যাবে না ।
সমকামীরা নিজেদেরকে সমাজের অন্যদের কাছ থেকে আড়াল করে রাখতে পছন্দ করে । ঠিক এমন একটি প্রবণতা দেখা যায় হিজড়াদের ভেতরে । অনেক হিজরা একসাথে বাস করলে তারা মানসিক এবং সামাজিক ভাবে নিরাপদ বোধ করে । ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সমকামীদের অনেক কলোনি গড়ে উঠেছে সেখানে সমকামীরা দল বেধে থাকে ।
এবার আসি আসল প্রসঙ্গে, সম লিঙ্গে কি সেক্স বা কাম হয় ? দু'টো গ্লাস কি বিপরীত দিক থেকে একটা অন্যটার ভেতরে স্থাপন করা যায় ? না, তা পারার কথা নয় । যদিও যায় তা হলে একটার ভেতর কৃত্রিম ছিদ্র করতে হবে । তারপর একটি অন্যটির ভেতর স্থাপন যাবে । এটি পুরোই একটি বিকলাঙ্গ চিন্তাধারা । যা প্রকৃতি,সমাজ এবং ব্যক্তি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ।
বাংলাদেশে দু'জন সমকামী হত্যার ভেতর দিয়ে পুরো বিষয়টি সামনে চলে আসে । বিশ্বের অনেকেই হই হই রই রই করে উঠেন । সমকামিদের নিরাপত্তা জোড়দার করার জন্য তারা সরকারের উপর নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন । কিন্তু এভাবে সমকামিদের নিরাপত্তা পৃথিবীর কোথাও বিধান করা যাবে না । যতোক্ষন না পর্যন্ত সমকামিদের ভেতরের মানসিক সমস্যার দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া না হয় । নিরাপত্তার নামে সমকামীদের আসলে এক ঘরে করে ফেলা হচ্ছে । সেহেতু সমকামীতা একটি হরমোনিক ও মানসিক অসুস্থতা তাই এর চিকিৎসা হওয়া একান্ত প্রয়োজন রয়েছে ।
কারো ক্যান্সার হলে আমরা যেমন তাকে এক ঘরে না করে হাসপাতালে নিয়ে যাই চিকিৎসা করি । ঠিক তেমনি সমকামিদেরও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন । প্রয়োজনে তাদের জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা যেতে পারে । কিন্তু যুগে যুগে এ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে । সবসময় সমকামীদের নিরাপত্তার কথা বলে তাদেরকে আরো সমাজ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিংবা হত্যা করা হয়েছে । সমকামীরা এ সমাজেরই অংশ । তারা এ সমাজেই থাকবে । সমকামিদের ভেতর ব্যাপক ভাবে কাউনসিলিং করে তাদের চিকিৎসা প্রদান করতে হবে । হরমোনের ঘাটতি থাকলে সেটি পুরণের ব্যবস্থা নিতে হবে । তবেই সমাজ থেকে সমকামিতা চিরতরে দূর করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি ।