somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৫ম পর্ব : বিকৃতির সয়লাবে আমার মাতৃভাষা

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘ডিয়ার ফ্রেন্ডস এখন প্লে করছি ২১শে ফেব্রুয়ারির স্পেশাল ট্রাক—আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি— তো শুনতে থাকো আর এনজয় করো অ্যান্ড অফ কোর্স একুশের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করো।’

কী চমৎকার মস্করা!

এটা একটা বেসরকারি রেডিও-এর ঘোষণা। বাংলা ভাষার গৌরব যে ভাষা আন্দোলন, সে অনুষ্ঠানেও ভাষার চরম বিকৃতি! আজ বেসরকারি রেডিওগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে বিকৃত বাক্য ও শব্দ ব্যবহার করে চলছে। এসব রেডিওতে 'রেডিও জকি' নামে একটি চরিত্র তৈরি হয়েছে, যারা এই বিকৃতি করছে। এদের বাংলা উচ্চারণ ইংরেজির মতো। আরো একটি উদাহরণ দেই—
‘হ্যালো ফ্রেন্ডস, কেমন আছ তোমরা? হোপ দিস উইকে তোমরা ম্যানি ম্যানি ফান করেছ, উইথ লটস অফ মিউজিক। অ্যনিওয়ে, এখন তোমাদের সাথে আছি কুল ফ্রেন্ড জারা অ্যান্ড আছে জোশ সব মিউজিক ট্রাক অ্যান্ড লটস আড্ডা, সো ফ্রেন্ডস ঝটপট জয়েন করে ফেলো আমাদের আড্ডায় এন্ড ফেবারিট গান শুনতে মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে লিখো ।’

বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে, নাটকে, সিনেমায় অর্থাৎ গণমাধ্যমে এখন ভাষা বিকৃতির যেন উৎসব চলছে।

এখন এমন কিছু বিকৃত শব্দ ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা মৌখিকভাবে ব্যবহার করছে, যে ভাষা না আঞ্চলিক, না প্রমিত। শুদ্ধ-অশুদ্ধের মিশেলে সে এক অন্য ভাষা। কিছু উদাহরণ :
১. প্রমিত বাংলায় ‘এসেছ’, শিক্ষার্থীরা বলছে ‘আসছ’,
২. ‘করেছিস’-কে শিক্ষার্থীরা বলছে ‘করছিস’, এভাবে :
৩. ‘তাহলে’-কে ‘তাইলে’,
৪. ‘পাঁচটা’-কে ‘পাসটা’,
৫. ‘খরচ’-কে ‘খরছ’,
৬. ‘ধরে’-কে ‘ধইরা’,
৭. ‘কেন’-কে ‘ক্যা/ক্যান/কিয়াল্লাই’,
৮. ‘কাকে’-কে ‘কারে’,
৯. ‘কোথায়’-কে ‘কই’,
১০. ‘ওটা’-কে ‘ওইটা’,
১১. ‘ওগুলো’-কে ‘ওইগুলা’ বলছে শিক্ষার্থীরা।

তরুণ প্রজন্ম বিকৃত করে শব্দ উচ্চারণ করছে বেশি। শুধু আধুনিকতার দোহাই দিয়ে তারা এটা করছে। এতে গণমাধ্যমের প্রভাব বেশি। টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন, নাটক ও চলচ্চিত্রে বিশেষ করে বিকৃত ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। বিজ্ঞাপনের কথা যেমন—‘খাইলেই দিল খোশ’, ‘এক্সট্রা খাতির’, ‘আবার জিগায়’ ইত্যাদি এখন তরুণ-তরুণীদের মুখে মুখে। কিছু নাটকের নাম এবং সংলাপে দেখা যাচ্ছে বিদেশি শব্দের ছড়াছড়ি। যেমন—ফার্স্ট ডেট, হাইজফুল, ছাইয়্যা ছাইয়্যা, লাভ ডট কম, সিটি বাস ইত্যাদি। নাটকের সংলাপে বলা হচ্ছে, মাইরের মধ্যে ভাইটামিন আছে, ফাইস্যা গেছি মাইনকার চিপায়, ফিল্মি কথা বাদ দাও, এক্সটা খাতির নাই, ফিল্মি ডায়ালগ মারতাছ।

অবজ্ঞা ও বিরক্তি প্রকাশে তরুণ-তরুণীরা নতুন নতুন শব্দযুগল ব্যবহার করছে। যেমন—
১. মাঞ্জা মারা,
২. হুদাই প্যাচাল,
৩. তেলবাজ,
৪. চালবাজ,
৫. পল্টিবাজ,
৬. কুফালাগা,
৭. গুষ্ঠি কিলাই,
৮. তারছিড়া,
৯. বেইল নাই,
১০. মাইনকাচিপা,
১১. আরে মামু,
১২. প্যাচগি মারে,
১৩. সুইসাইড খামু,
১৪. আল্টামডান,
১৫. কইছে তরে,
১৬. যাইগা বাদ দে,
১৭. কঠিন চেহারা,
১৮. ঠ্যাক দিছে ইত্যাদি।

প্রসিদ্ধ এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এ প্রজন্মের তরুণ দু'বন্ধুর কথোপথন দেখা যাক। তাদের একজনের বাড়ি কুষ্টিয়ায়, অন্যজনের বাড়ি খুলনায়। কিন্তু তারা আঞ্চলিক বা শুদ্ধ কথার বাইরে ভিন্ন ঢঙে কথা বলে। কুষ্টিয়ার তরুণটি তার খুলনা অঞ্চলের বন্ধুকে চা-দোকানে দেখে বলল, ‘‘আরে মাম্মা কোত্তে আইলি। তোরে তো সারসাইতে সারসাইতে (সার্চ-খোঁজা) আমার অবস্থা খারাপ। ফোনটাও অফ করে রাখছোস। পরে তোর জিএফ’রেও ফোন দিছি। ও তো কইলো তুই ওর সাথেও ছিলি না। কই আছিলি ক’তো?’’

বন্ধু জবাব দেয়, ‘‘আর কস না মামা, এই জিএফটাকে নিয়ে ব্যাপক প্যানার মইধ্যে আছি। এমতে ক্লাস, এক্সাম নিয়ে আছি দৌরের উপ্রে, তার ওপর আবার জিএফ’র প্যানা। মাঝে মইদ্যে মুঞ্চায় ব্রেকআপ কইরা ফালাই।’

এখানে ভাষার সংক্ষিপ্তকরণ ও উচ্চারণের বিকৃতি এবং বিদেশি শব্দের মিশ্রণ ঘটেছে। বিশেষ করে বর্তমানে বন্ধুকে সম্বোধনের একটি ‘জনপ্রিয়’ ডাক হল মাম্মা মানে মামা। এ ছাড়া প্রেমিকাকে সংক্ষেপে বলা হয় জিএফ (গার্লফ্রেন্ড), প্যানা অর্থ বোঝায় বিভিন্নভাবে বিরক্ত করা বা অধৈর্য করা। মুঞ্চায় অর্থ মন চায়, দৌরের উপ্রে অর্থ দৌড়ের উপরে সহজ অর্থ ব্যস্ততা। নতুন প্রজন্মের মধ্যে এমন হাজার হাজার শব্দ সৃষ্টি হচ্ছে যার বিস্তৃতি ঘটছে এক মুখ থেকে অন্য মুখে। আভিধানিকভাবে এ সব ভাষা বা শব্দ স্বীকৃত না হলেও তার প্রভাব দেখা যায় দেশের বর্তমান ধারার নাটক ও টেলিফিল্মগুলোতে। আর সবচেয়ে বেশি প্রয়োগ হচ্ছে গভীর রাতে এফএম রেডিওগুলোর আরজেদের (রেডিও জকি) কথোপকথনে।

সম্প্রতি দেশের একটি এফএম রেডিও’র নৈশ অনুষ্ঠানে আরজে যেভাবে বাংলা উচ্চারণ করছিলেন তা প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের যে কোনো শিক্ষার্থীর ওপর সহজেই প্রভাব ফেলতে পারে। আর তরুণ প্রজন্ম রেডিও জকির এমন উচ্চারণকে ফ্যাশন বা আধুনিকতা মনে করে তার চর্চাও করতে পারে। অনুষ্ঠানটিতে একজন আরজের ভাষ্য ছিল এমন, ‘সুপড়িও লিসনাড়, আজ আমাদেড় অনুষ্ঠানে এক ব্যাপক ব্যাপাড় ঘটতে চলেছে। আজ আমাদেড় মাঝে আছেন, দেশেড় জনপিড়ো... এখানে আরজে ‘র’ উচ্চারণ ‘ড়’ এর মত করে নিজের ভাষ্যতে ভিন্ন আনতে চেয়েছেন। নিজেদের কথাগুলো অতি আধুনিক করতে গিয়ে তারা এভাবে উচ্চারণের বিকৃতি ঘটান।

রেডিও জকি কী
রেডিও জকি (Radio Jockey)-এর বাংলা করা যায় কথাবন্ধু। সংক্ষেপে আরজে (RJ) বলা হয়। বিভিন্ন রেডিও-তে এ নামে একটি চরিত্র তৈরি হয়েছে, যারা রেডিও টক-শো পরিচালনা করে থাকেন। তারা সরাসরি টেলিফোন বা মোবাইল ম্যাসেজ বা ই-মেলের মাধ্যমে শ্রোতাদের অনুরোধে রেকর্ডকৃত গান পরিবেশন বা কোন বিষয়ের আলোচনা করে থাকেন। সর্বপ্রথম ১৯১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এ পরিভাষা চালু হয়।

রেডিও জকি বর্তমানে বেশ আর্কষণীয় পেশা। জকিদের কথাবার্তাকে তরুণ সমাজ তাদের রোল-মডেল মনে করে। তারা বিশেষ স্টাইলে কথা বলার কারণে তরুণ সমাজ তা হিড়িকের মত গ্রহণ করছে। জনপ্রিয়তার কারণে বাংলাদেশে আরো ১৪টি নতুন এফএম রেডিও চালু হচ্ছে। তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রিরাও পর্যন্ত রেডিও জকি হিসেবে শ্রোতাদের সামনে আসছেন। কিছুদিন আগে শাহরুখ খানও এমন রেডিও জকি হন। সম্প্রতি বিবিসি এশিয়ায় ‘দ্য শাহরুখ খান শো’ নামের একটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তিনি।

বর্তমানে এফএম রেডিও-এর জকিরা বাংলা ভাষা বিকৃতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন।

বাংহিংলিশ
বর্তমার তরুণ সমাজ এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া যে ভাষা ব্যবহার করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সে ভাষার নাম দেন বাংহিংলিশ। তারা হিন্দি ও ইংলিশকে বাংলার সাথে এমনভাবে মিশিয়ে কথা বলছে যেন ভাষার নতুন একটি রূপ তৈরি হয়েছে। তিনি লেখেন, ''কিন্তু এভাবেই যদি বাংলা ভাষা এগোয়, নদীর মতো অবধারিতভাবে, তা হলে বাংলা ভাষার আরেকটা নাম আমাদের তৈরি করে নিতে হবে। এর নাম আমরা বাংহিংলিশ বা এ রকম কিছু দিতে পারি, যেহেতু বাংহিংলিশে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দির একটা চমৎকার সহঅবস্থান রয়েছে। এতে সুবিধা হবে, শুধু ফেব্রুয়ারি মাসটা এলে আমরা বাংলা ভাষা নিয়ে ভাবব, বাকি এগার মাস বাংহিংলিশের সেবায় নিয়োজিত থাকব।" (ভাষাদূষণ নদীদূষণের মতোই বিধ্বংসী, প্রথম আলো, ১৫.০২.২০১২)

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এ অভিনব ভাষার ৩টি উদাহরণ পেশ করেন :
১. ঢাকার স্টক মার্কেট-বিপর্যয় এখন অনেকের কাছে উদ্বেগের কারণ। এ রকম এক উদ্বিগ্ন স্টক-মার্কেট বিশেষজ্ঞ একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বললেন ‘স্টক মার্কেট ক্রাইসিসের রিজনগুলো ইনভেস্টিগেট করতে হবে। যেসব বিগ এ্যাক্টর ও প্লেয়ার ব্যাকগ্রাউন্ডে রোল প্লে করছে, যাদের নাম ইব্রাহিম সাহেব তাঁর রিপোর্টে রিভিল করেছেন, তাদের প্রপার পানিশমেন্ট দিতে হবে।’
২. কলাভবনে আমার কক্ষের বাইরের বারান্দায় দাঁড়ানো কিছু ছেলেমেয়ে খুব গণ্ডগোল করছিল। আমি বেরিয়ে তাদের কারণ জিজ্ঞেস করলে একটি মেয়ে বলল, ‘স্যার, আমাদের টিসার হঠাৎ ক্লাস পসপোন করে দিছে। সে তো একটা নোটিশ দিলে পারত।’
আমি আর ভয়ে শিক্ষকের নাম জিজ্ঞেস করলাম না। আমার থেকে বয়সে বড় শিক্ষকও অনেক আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে!
৩. একটি এফএম রেডিও থেকে এক আরজের আপ্লুত আহ্বান শোনা গেল এক দুপুরে, ‘ফ্রেন্ডসরা, এই অফার কিন্তু ভ্যালিড টিল ফর্টিনথ। সো মনে রেখো। লাইক ইটস আ ফাটাফাটি ইভেন্ট। সো সেন্ড করো...’ (ঐ)

উপরোক্ত উদাহরণসমূহে সাম্প্রতিক বাংলা ভাষা ব্যবহারের চিত্র ফুটে ওঠেছে। সমাজের এ তিন শ্রেণির মধ্যেই ভাষার চরম বিকৃতি ঘটেছে, যা ভীষণ আতঙ্কের ব্যাপার।

এ ভাষা আরো যেসব নামে পরিচিত
তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাষার সঙ্গে বিদেশি ভাষার মিশ্রণ, শব্দের উচ্চারণ ও ব্যবহারে বিকৃতি করে নতুন যে ভাষার উদ্ভব ঘটিয়েছে; অনেকেই সে ভাষাকে বলছে এফএম ভাষা, কেউ বলছেন শর্টকাট ভাষা, আবার কেউ বলছেন ভাই-ব্রাদারের ভাষা।

নতুন প্রজন্ম বলে, আমরা বন্ধুদের মধ্যে যে ভাষায় কথা বলি এটা একটা স্টাইল। অনেকে একে এফএম ল্যাঙ্গুয়েজ বলে। আবার ভাই-ব্রাদার ল্যাঙ্গুয়েজও বলে।

ভাই-ব্রাদার ভাষা প্রসঙ্গে বলা হয়, মূলত আজিজ সুপার মার্কেটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নাট্য জগতের একটি উত্থান হয়েছে। এখানে দেশের একজন চলচ্চিত্র ও নাট্যপরিচালক এবং তার জুনিয়র বন্ধুদের বলা হয় ভাই ব্রাদার। তারা সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের জন্য যে সব নাটক বানাচ্ছে সেগুলোতে এ ধরনের ভাষার ব্যবহার হচ্ছে। আর এ সব নাটক বেশ জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে।

ফেসবুক, টুইট, খুদে বার্তার মাধ্যমে বিকৃতি
এত গেল তরুণ প্রজন্মের কথ্য ভাষার বিকৃত রূপ। ফেসবুক, টুইট, মুঠোফোনের খুদে বার্তা ও ব্লগের মত সামাজিক মাধ্যমে ইংরেজি বর্ণ ব্যবহার করে বাংলা ভাষা ও ইংরেজি ভাষার যে বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে তা আশঙ্কাজনক।

দশ-বারো বছর আগে চ্যাটিং খুব জনপ্রিয় ছিল। সে সময় তরুণরা সাইবার ক্যাফে বসে বসে শুধু চ্যাটিং করতো। সেহেতু টাইপ করে উত্তর দিতে হতো, তাই শব্দকে সংক্ষেপে প্রকাশ করতো। যেমন, plz= please, asl= age sex location, b4= before, bc= because, u= you, bf=boy friend, gf= girl friend ইত্যাদি। পরবর্তীতে মোবাইল ম্যাসেজও এভাবে লেখা শুরু হয়। আর সবচেয়ে আপত্তিকর ব্যাপার হলো কথাবার্তায় এমন সংক্ষিপ্ত রূপ দেয়া। যা এখন শুরু হয়ে গিয়েছে। এতে পুরো ভাষাটাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। যেমন, তোর সিসের খবর কি? এখানে সিস মানে সিসটার, তেমন ব্রো মানে ব্রাদার ইত্যাদি।

ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তির ওয়াল লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বিচিত্র রকম মন্তব্য। যেগুলোর ভাষা বুঝে ওঠা খুবই কষ্টকর। যেমন অনেকেই f9, r8, tc, wc, 2me, tnx, এ ধরনের সংক্ষিপ্ত শব্দ ব্যবহার করে। যদি কারো এ সব শব্দ সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে সে কিছুই বোঝবে না। উপরের সংক্ষিপ্ত ইংরেজি শব্দগুলো দিয়ে বোঝানো হয়েছে ফাইন, রাইট, টেক কেয়ার, ওয়েলকাম, তুমি, থ্যাংকস।

যদি কেউ অন্যের ওয়ালে এভাবে লেখেন, 2me amr ballo bondo, onk din tmr sate daka hai na. amk tomi bole gale na. manas ato sattapar hai.

এই ইংরেজি বর্ণ ব্যবহার করে সৃষ্ট বাংলা ভাষাটা অনেকেই পড়বেন এভাবে, ''২মি এএমআর বাল্ল বন্ধু, ওনক দিন টিএমআর স্যাট ডাকা হায় না। এএমকে টমি বোল গেলে না. মানাস অটো সাটাপার হায়।’' আসলে লেখা হয়েছে, ''তুমি আমার বাল্য বন্ধু, অনেক দিন তোমার সাথে দেখা হয় না। আমাকে তুমি বলে গেলে না। মানুষ এত স্বার্থপর হয়।"

নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে এ সব কোড বা সংক্ষিপ্ত ভাষা খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যদি কেউ এ সব ভাষা না বুঝে তাহলে সে অন্যদের কাছে হয় ক্ষ্যাত না হয় আঁতেল।

কেন এ রকম জগাখিচুরি ভাষা প্রচলনের চেষ্টা
এফএম রেডিও পণ্য সংস্কৃতির বাহক ও প্রচারক এবং এদের উদ্দিষ্ট সেই তরুণসমাজ যারা এখনই পণ্য সংস্কৃতির শিকার না হলেও শিকার হওয়ার রাস্তায় আছে। এফএম সংস্কৃতির উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সমাজকে তার ভাষা ভুলিয়ে দিয়ে এমন একটি শূন্যতা সৃষ্টি করা যেখানে পণ্যের চমক প্রতিফলিত হবে ভাষার চমক বা স্মার্টনেসে এবং সে ভাষাটি যে নিজের করে নেবে। এফএম সংস্কৃতির বাইরে যে স্মার্টনেস দেখাচ্ছে তা এর পণ্য বিক্রির প্রয়োজনে। আজ আমরা এই সংস্কৃতি লুফে নিচ্ছি, বাংলাকে বিকৃত করছি এবং বলছি এতে দোষের কী? এটা তো তরুণদেরই ভাষা।

বাংলা ভাষায় যে বিকৃতি এখন চলছে তা এই ভাষাকে পরাধীন ও নির্জীব করবে এবং ভেতরের সৃষ্টিকল্পনা তিরোহিত করবে। ভাষা যখন তার সৌন্দর্য এবং কাঠামোর গতিশীলতা হারায় অন্য ভাষার অভিধান (রাস্তার ভাষার অভিধানসহ) ছাড়া এক পা চলতে পারে না এবং চললেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এই ভাষায় কি দর্শনের গূঢ় চিন্তাগুলো প্রকাশ করা যায়? না আমাদের সমাজ নিরীক্ষা বা বিজ্ঞানের বিষয়গুলো?

কেউ কেউ হয়তো বলবেন, এই মার খাওয়া ভাষা তো মুখের ভাষা, এ তো লিখিত নয়, তাহলে এত ভাবনা কেন? এর উত্তরে বলা যায়, যে জাতির মুখের ভাষা এখন মার খাওয়া, শংকর শ্রেণীর, সে জাতির লেখার ভাষাও দুর্বল হয়ে পড়ে, কারণ এর ব্যবহারকারীদের চিন্তাও তখন অস্বচ্ছ হয়ে পড়ে। এর নমুনা তো ইতোমধ্যেই দেখছি।

সাম্প্রতিক ভাষা দুষণের কারণগুলো
সাম্প্রতিক আশঙ্কাজনকভাবে ভাষা দুষণ হচ্ছে। যা বড়ই আতঙ্কের ব্যাপার। আতঙ্ক এ কারণেই বেশি যে, শিক্ষিত তরুণ সমাজ এ দুষণ কাজে ভীষণভাবে লিপ্ত। যেন দ্রুত এক নতুন মিশ্র ভাষার উদ্ভব ঘটতে যাচ্ছে। তারা এ বিকৃত কাজকে আধুনিকতা মনে করে। অথচ একসময় শুদ্ধ কথা বলতে পারাই ছিল তরুণ সমাজের অহঙ্কার। সুন্দর সুন্দর শব্দ চয়ন, শুদ্ধ উচ্চারণ ছিল স্মার্টনেসের বহি:প্রকাশ। যেসব কারণে সাম্প্রতিক ভাষা দুষণ হচ্ছে, তা নিম্নরূপ-

১. উচ্চারণের কারণে বিকৃতি :
একদিন অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস রোকেয়া হলের সামনে দিয়ে আমি হেঁটে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। পরিচিত কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে দেখা হতেই জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি করছ? চট্ করে একজন বললো, স্যার, আমরা আমরা খাচ্ছি। তিনি বললেন, 'ঠিক আছে, তোমরা তোমাদের খেতে থাক। আমার বরং এখান থেকে চলে যাওয়াই শ্রেয়।'

এ রকমভাবে প্রায়শই আমাদের উচ্চারণ বিভ্রাটের ফলে ভাত হয়ে যায় বাত, খাল হয়ে যায় কাল, ঝাল হয়ে যায় জাল, কথা হয়ে যায় কতা। অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে এর স্থলে যদি বলা হয় অন্দ হলে কি প্রলয় বন্দ থাকে তাহলে অবস্থা কোন পর্যায়ে যায় নিশ্চয় বুঝা যাচ্ছে?

এ ধরনের ভুল হয়তো আঞ্চলিকতার কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে। ভাষা দুষণের জন্য এটা তেমন ভয়ের কারণ নয়। কিন্তু রেডিও জকি ইংলিশ টানে যেভাবে র-কে ড়, ত-কে ট, স-কে শ ইত্যাদি উচ্চারণ ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করে ভিন্ন একটা ধারা তৈরির চেষ্টা করছে, যা তরুণ সমাজ দেদারছে গিলছে— তা বাংলা ভাষার জন্য এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার।

২. শুদ্ধ-অশুদ্ধ ও আঞ্চলিক শব্দের মিশেল :
আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা দুষণীয় নয়। এ ভাষা উপভাষা হিসেবে বিশ্বস্বীকৃত। বর্তমানে উপভাষা সংরক্ষণের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যাপক উদ্যোগ রয়েছে। আঞ্চলিক ও শুদ্ধভাষা মিশ্রণ করে যেসব কথাবার্তা হয় তা ভাষাকে দুষণ করে। তরুণ সমাজে ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের কথা ব্যাপকভাবে চালু রয়েছে।

৩. যত্র-তত্র বিদেশি শব্দ ব্যবহার :
যত্র-তত্র বিদেশি শব্দ ব্যবহার ভাষাকে চরমভাবে বিকৃতি করে। এ ধরনের ব্যবহার বাংলা ভাষাকে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করে দিচ্ছে।

৪. ভাষার সংক্ষিপ্তরূপ:
টেক্সট ম্যাসেজ-এর কারণে শব্দকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হতো। মোবাইলের বহুল ব্যবহরের কারণে এমন সংক্ষিপ্ত শব্দের ব্যবহারও ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তখনই, যখন শব্দের সংক্ষিপ্ত লেখ্যরূপই কথা প্রকাশ হতে থাকে। প্রথমে ঠাট্টাচ্ছলে বা ব্যাঙ্গ করে এসব শব্দ ব্যবহার হলেও এখন ব্যাপকভাবেই তা প্রচলন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষকরে তরুণ সমাজে ভাইরসের মত এসব শব্দ ছড়িয়ে পড়ছে। ওরা এখন কথাবার্তায় সিস, ব্রো, জিএফ, বিএফ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারে আনন্দ পায়।

মানুষের মুখে মুখে নতুন শব্দ
গত দুই বা তিন দশকে অনেক ইংরেজি শব্দ বাংলাভাষী মানুষের মুখে মুখে মিশেছে, যার প্রতিটির প্রচলিত বাংলা রয়েছে। যেমন—
১. প্রফেসর (অধ্যাপক),
২. হাই (সালাম/আদাব/নমস্কার),
৩. সরি (দুঃখিত),
৪. মর্নিং ওয়াক (সকালের ব্যায়াম বা হাঁটা),
৫. দাঁত ব্রাশ (দাঁত মাজা),
৬. বাথরুম (গোসলখানা),
৭. টয়লেট (পায়খানা),
৮. লাঞ্চ (দুপুরের খাবার),
৯. ডিনার (রাতের খাবার),
১০. কিচেন (রান্নাঘর),
১১. ড্রইং রুম (বৈঠকখানা),
১২. বেডরুম (শোবার ঘর),
১৩. ডাইনিং রুম (খাবার ঘর),
১৪. টিচার (শিক্ষক),
১৫. ক্লাস লেকচার (শ্রেণী বক্তৃতা),
১৬. হোম ওয়ার্ক (বাড়ির কাজ),
১৭. ক্লাশ ওয়ার্ক (শ্রেণীর কাজ),
১৮. ক্লাশ রুম (শ্রেণী কক্ষ),
১৯. ড্যাডি (বাবা),
২০. মাম (মা),
২১. আঙ্কেল (চাচা, মামা, খালু, ফুফা),
২২. আন্টি (চাচি, খালা, মামি, ফুফু),
২৩. ফ্রেন্ড (বন্ধু),
২৪. গেস্ট (অতিথি, মেহমান),
২৫. ওকে (ঠিক আছে),
২৬. থ্যাঙ্কস (ধন্যবাদ),
২৭. প্লিজ (দয়া করে),
২৮. ওয়েলকাম (স্বাগতম),
২৯. প্রিন্ট মিডিয়া (সংবাদপত্র) ইত্যাদি।

কথাবার্তায় বা লেখায় কতটুকু বিদেশি শব্দ ব্যবহার করা যায়
বাংলা ভাষায় ইংরেজির উদার অনুপ্রবেশ আজকের নয়, এবং শুধু ইংরেজি নয়, বাংলা ভাষা ১০ হাজারের মতো আরবি-ফার্সি শব্দও নিয়েছে। এ রকম শব্দ নেওয়ার চর্চা সব ভাষাতেই আছে। ইংরেজি নিয়েছে লাতিন, ফরাসি এমনকি হিন্দি-উর্দু থেকে, ফরাসি নিয়েছে ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষা থেকে। এই গ্রহণপ্রক্রিয়া ভাষার হয়ে ওঠার একটি উপাদান। কিন্তু এই গ্রহণ এমন কোনো পর্যায়ে ভাষাকে নিয়ে যায় না, যেখানে ভাষার মৌল চরিত্রই বদলে যায় বা ভাষা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, মিশ্র ভাষায় রূপ নেয়। ক্রিয়াপদ, অব্যয়, বিশেষণ, সর্বনামে যদি বিদেশি শব্দ ব্যবহার করি তাহলে তো সেটা আর বাংলা থাকে না। বাংলা ভাষায় এখন ‘কিন্তু’র জায়গায় ‘বাট’ এসে গেছে। ‘কাজেই’ না বলে আমরা বলি ‘সো’ এবং ‘যেমন’ না বলে বলি ‘লাইক’। অর্থাৎ এখন এমন অপপ্রয়োগ হচ্ছে ক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রায় সব শব্দই ইংরেজি, মাঝে মাঝে কিছু বাংলার মিশেল যেন ফিরনির মধ্যে কিছমিছ, যাতে বাংলা বলা হচ্ছে এটা ধরা যায়।

তবে ভিনদেশি নামপদ বা পরিভাষা ব্যবহার করা যায়। বাংলা ভাষায় টেবিল-চেয়ার হলো পুরোনো ঋণ। আর ফটোকপি, মোবাইল, মডেম হচ্ছে নতুন কর্জ - এগুলো নতুন নতুন পণ্য ও সেবা বিজ্ঞানের নানা উপাদান। সুতরাং প্রযুক্তি বা খাদ্যবস্তু ইত্যাদির ভিনদেশি নাম বা বর্ণনাসূচক যেগুলো আমরা তৈরি করি নি, সেগুলো যেসব দেশ তৈরি করেছে, তাদের নামেই আমরা ডাকতে পারি। পিৎজাকে আমরা পিৎজা, বার্গারকে বার্গার বলেই অভিহিত করব। ফ্যাক্সকে আমরা আর কী বলব ফ্যাক্স ছাড়া? কিন্তু ফ্যাক্সযোগে আমরা যদি কোনো চিঠি পাঠাই, তাহলে সেই প্রক্রিয়া বর্ণনা করার জন্য বাংলায় যে যথেষ্ট শব্দ আছে, বাক্য বানানোর রীতি আছে, সেগুলো কেন ব্যবহার বা অনুসরণ করব না? কেন বলব ফ্যাক্সটা সেন্ট করো? বন্ধুরা না বলে ফ্রেন্ডস কেন বলব? বিপর্যয় না বলে ক্রাইসিস কেন বলব? কোন যুক্তিতে?

ভাষার বিকৃত ব্যবহারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
এফএম রেডিও, টেলিভিশন ও গণমাধ্যমে বাংলা ভাষার এমন অপমানজনক ব্যবহার রুখতে ২০১২ সালের ১৬ ই ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার শুদ্ধতা রক্ষার্থে একটি রিট দায়ের করা হয়। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিত হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন একটি বেঞ্চ একই দিনে সরকারের প্রতি একটি রুল জারি করে। একই সঙ্গে বাংলা ভাষার শুদ্ধতা রক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ দেওয়ারও নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এমন নির্দেশে সরকার বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাবিদ ও অ্যামিরেটস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির মাধ্যমে বাংলা ভাষা কীভাবে বিকৃত হচ্ছে এবং তা রোধের বিষয়ে তদন্ত করে হাইকোর্টে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন ওই বেঞ্চ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলে বেঞ্চটি ভেঙে দেওয়া হয়। আর এতে ওই কমিটির দেওয়া রিপোর্টটি এখনও ঝুলে রয়েছে। নতুন বেঞ্চে রিটটির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় রুলের কার্যকারিতা ও আদেশের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বিশিষ্ট সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের মতামত
ভাষাবিদ অধ্যাপক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষার যে নোংরা চর্চা চলছে তাতে প্রকৃত মৌলিক বাংলা ভাষার অস্তিত্ব ভবিষ্যতে থাকবে কিনা সেটায় প্রশ্ন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি চ্যানেলের দৌরাত্ম্য, দেশের এফএম রেডিওগুলোর উপস্থাপকদের ভাষার ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে এ সব ভাষায় কথা বলতে ও চর্চা করতে উদ্বুদ্ধ করছে। তা ছাড়া স্কুল, কলেজগুলোতে অযোগ্য শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদান করানোর ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা ভাষা জ্ঞানে সমৃদ্ধ হচ্ছে না। প্রমিত বাংলা ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় এ সব প্রজন্ম ইংরেজি, হিন্দি আর বাংলা ভাষার মিশ্রণে সৃষ্ট জগা-খিচুরি ভাষায় অভ্যস্ত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া একটা বিশেষ গোষ্ঠী আমাদের নাটক ও সিনেমাতে প্রমিত বাংলার বদলে এ সব ভাষাকে স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে প্রমিত বাংলাটি নতুন প্রজন্মের কাছে কৃত্রিম বলে মনে হয়।’

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এভাবে যদি বাংলা ভাষার বিকৃতি চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এটা বিশ্বাস করানো কষ্ট হবে যে, বাংলা ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল সাহিত্য চর্চা করেছেন। তখন দেখা যাবে মৌলিক বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশের ভাষা না বলে পশ্চিমবঙ্গের ভাষা বলে বিবেচনা করা হবে।’

বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

(চলবে...)

বিশেষ দ্রষ্টব্য : 'বাংলা ভাষায় নতুন আড়াই হাজার বিদেশি শব্দ' উপশিরোনামের লেখাটি এ পর্ব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, পরবর্তী কোন লেখায় এটি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪-এ ব্লগে প্রকাশিত এ লেখাটি আজ ২৯ শে এপ্রিল ২০১৪-এ ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়।

১ম পর্ব - আমরা বাংলা বানান কতটুকু শুদ্ধ করে লেখি? View this link
২য় পর্ব - বাংলা বানান : আসুন এক ছাতার নিচে View this link
৩য় পর্ব- বাংলা বানানে যত বিভ্রান্তি View this link
৪র্থ পর্ব : বাংলার শব্দভাণ্ডার View this link

তথ্যসূত্র :
[১] অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম; ভাষাদূষণ নদীদূষণের মতোই বিধ্বংসী (প্রথম আলো, ১৫.০২.২০১২)
[২] নিজস্ব সংগ্রহ ও বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্টের আলোকে রচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৫
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×