..."১৪ ফেব্রুয়ারি ।
ইভেন্ট- 'ভালোবাসা দিবসে পুলিশি পাহারায় প্রকাশ্যে চুমু খাব ।'
শাম্মী হক আর অনন্য আজাদ ইভেন্টে আহ্বান করেছেন- স্ব স্ব প্রেমিক প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে চুমু খাবার ।
যারা ইভেন্ট হোস্ট করেছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন -
-'চুমু টা কি আপনাকে প্রকাশ্যেই খেতে হবে, নাইলে আপনার ভালোবাসা একেবারে গঙ্গায় ভেসে যাবে - তাই না ?'
-'প্রকাশ্যে চুমু খেলেই ভালোবাসা টং করে মিটারে পারদ ০ থেকে ১০০ তে উঠে যাবে ,তাই না ? তাও আবার ভালোবাসা দিবসে শুধু প্রকাশ্যে খেলে, তাই না ? '
(এতদিন প্রেম করেছেন,চুমুও করেছেন,চিপাচিপিও করেছেন,সেক্স ও করেছেন- সবই আড়ালে । ভালোবাসা ও বাড়ে নাই । সাধও মিটে নাই । কত বড় বেহায়া আপনি - সেটাও কেউ জানে নাই এখনও- তাই তো ? তার জন্যে এখন 'প্রকাশ্যে' চুমু খেতে হবে আপনাকে ? নাইলে আর ভালোবাসা টা আর টিকল না, তাই না ?)
এবার যারা এর বিরোধীতা করছেন তাদের উদ্দেশ্যে -
আপনাদের ঝামেলা যেটুকু সেটা "প্রকাশ্যে" ।
ভালোবাসা ও থাকবে, প্রেমিক প্রেমিকা ও হবে, চুমুও খাবে - এতক্ষন পর্যন্ত কারো কোনো ঝামেলা নেই । কিন্তু প্রকাশ্যে খাবে কেন ? - এতেই ঝামেলা ।
চুমু 'প্রকাশ্যে' খাবে কেন ? - এতেই একেবারে সংস্কৃতি আর টিকল না, ধর্ম আর থাকল না । সবকিছু শেষ হয়ে গেল - এমন একটা ভাব ।
বাঙালির যে সংস্কৃতি তাতে ১৪ ফেব্রুয়ারির ভালোবাসা দিবসের ব্যাপারটা নেই । আপনারা সেটাকে মেনে নিয়েছেন । বাঙালিপনা প্রেমের,ভালবাসার যে বহিঃপ্রকাশ ছিল, সেটা অনেক আগেই কবরে চলে গেছে । চুমুপ্রেম- আপনারা মেনে নিয়েছেন, মডার্ণ কিংবা আধুনিকতার দোহাই দিয়ে ।
তাইলে শুধু শুধু সংস্কৃতি কোমা তে চলে গেল - হা হুতাশ করে অন্যকে দুইটা গালি দিয়ে সংস্কৃতি উদ্ধার হয়ে যাবে, এও তো এখন আশা করা যায় না ।
আর ধর্ম ?
সে ভিন্ন ব্যাপার । কিছু মানবেন, আর কিছু মানবেন না । তারপর যখন ই কিছু দেখবেন, ধর্ম কে নিয়ে একেবারে সামনে চলে আসবেন । এ হয় না । ধর্ম যদি পুরোটা মানতে পারেন, তাইলে ধর্ম কে নিয়ে হাজির হওয়া ভালো । নাইলে ধর্মকে টেনে আনার দুঃসাহস না দেখানোই ভালো ।
এবার গঠনমূলক কথায় আসি । শুধু একে অপরের টা নিয়ে ফালাফালি করার কোনো মানে হয় না । আমার কথায় বলি - আমিও শুধু এই হাবিজাবি লিখেই শেষ করে দিচ্ছি । আমিও আর কিছু করছি না । সবার কথা আর কি বলব, নিজেই আকাম্মার ঢেঁকি ।
অনন্য আজাদের লাস্ট স্ট্যাটাসে ক্ষোভ এরকম -
'পর্ণোমুভি, হিন্দি-ইংরেজি মুভি দেখা , বাংলিশ ভাষায় কথা বলা , ধর্ষণ , আরবীয় পন্থায় মানুষ জবাই-সবকিছুতেই সংস্কৃতি ধ্বংস হয় না, শুধু প্রকাশ্য চুম্বনেই সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে গেল ?'
আপনার দেয়া উদাহরণের কোনটাকেই বাঙালি আদর করে ডাকে নাই । আবার যখন অনিচ্ছাতেই চলেও এসেছে, কিছু মানুষ এখনও বাঙালি সংস্কৃতি কে সেসব থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে । কিন্তু আপনারা বাঙালির সংস্কৃতি র সাথে যায় না, এমন একটা অপসংস্কৃতি কে আনার চেষ্টা করছেন- সমস্যা সেখানেই ।
যাই হোক ইভেন্টগুলো হতে পারত -
- পর্ণোসাইটের বিরুদ্ধে ।
- হিন্দি- ইংরেজি চ্যানেলের অত্যধিক প্রচারণার বিরুদ্ধে ।
- বাংলিশ ভাষাভাষীদের বিরুদ্ধে ।
- ধর্ষণ এর বিরুদ্ধে ।
ইভেন্ট হতে পারত -
- অসুস্থ ভালোবাসাকে সুস্থ হওয়ার পথ দেখিয়ে ।
- অবৈধ প্রেমকে বৈধ প্রেম এ পরিণত করে ।
- প্রকাশ্যে প্রেমিক- প্রেমিকাকে একবার চুমু খাওয়ার বদলে,স্বামী-স্ত্রীর আজীবন গোপনে হাজারবার চুমু খাওয়ার উপায় করে দিয়ে ।
যাই হোক, আমরা বাঙালি । একটু টাল না থাকলে মানসম্মান আর থাকে না, তাই এত উদ্ভট চিন্তা নিয়া আমরা দিব্যি ঘুমায় আর যখন জেগে উঠি তখন আজাইরা কাজ করি ।"
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৭