somewhere in... blog

বাংলাদেশে ২০১০ সালে স্বাভাবিক এর চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবার অন্যতম কারন

০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আবহাওয়া বিজ্ঞান" (Atmospheric Science) এর মতে এই বছর বাংলাদেশ এ কম বৃষ্টিপাত হবার সমূহ সম্ভবনা আছে । কারন টা হচ্ছে ২০০৯ বছরটি ছিল "এল-নিনো" বছর (ক্লাস নাইন -টেন এর ভূগোল বইতে পরে থাকবেন হয়ত )। "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" বছর গুলোর একটা সারনী নিম্নে যোগ করা হল পাঠকদের সুবিধার্থে।



ছবি-১: উল্লেখযোগ্য "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" বছরগুলো।


উপরোক্ত সারনী হতে দেখা যাচ্ছে যে ২০০৯ বছরটি ছিল (লাল দাগ নির্দেশ কারি বছরগুলো) "এল-নিনো" বছর ( নীল দাগ নির্দেশ কারি বছরগুলো হচ্ছে "লা-নিনা" বছর)।


"এল-নিনো সাউর্দান ওছিলেসন " (El-Nino Southern Oscillation) হচ্ছে "মধ্য ও পূর্ব বিষুবীয় প্রশান্ত-মহাসাগর" (Central & Eastern Tropical Pacific) এর সমুদ্র পৃষ্ঠের পর্যায়ক্রমিক উত্তপ্ত ও ঠান্ডা হওয়া" ।
অন্যভাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রর চেয়ে বেড়ে যায় (এল-নিলো) বা কমে যায় (লা-নিনা)।



ছবি-২: যে দুটি স্হানে সমুদ্রের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি হয় (পশ্চিম আস্ট্রেলিয়া এবং পেরু, ইকুয়েডর ও চিলি সংলগ্ন সমুদ্র এলাকা)।


তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে বালা হয় "এল-নিনো" (El-Nino) এবং কমলে বলা হয় "লা-নিনা" (La-Nina). (নিচে কিছু ছবি দেওয়া হলো যেগুলো "এলনিনো" , "সাধারন" এবং "লা-নিনা" অনস্হা নির্দেশ করে)



ছবি-৩: এল-নিনো অবস্হা


ছবি-৪: সাধারন অবস্হা


ছবি-৫: "লা-নিনা" অবস্হা

আবহাওয়া বিজ্ঞানে "এল-নিনো" একটি খুবই গুরুত্বপূর্ন প্রক্রিয়া। এটি পৃথিবী জুড়ে অতি-বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত।

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষনায় এটা প্রমানিত হয়েছে যে এই "এলনিনো" এর সাথে "ইন্ডিয়ান মুনসুন বৃষ্টিপাত" [ Indian Monsoon Rain fall] (আবহাওয়া বিজ্ঞানে ইন্ডিয়ান জলবায়ু বলতে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল তৎসংলগ্ন অন্চল কে বুঝায়) বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ, যে বছর "এলনিনো" খুব সক্রিয় থকবে তার পরের বর্ষা মৌসুমে এতদ: অন্চলে বৃষ্টি কম হবে এবং এই বছরের বৃষ্টি পাতের ধরন সেই রকমই আচরন করতেছে। এখানে উল্লেখ্য যে ঐতিহাসিক ভাবে দেখা গেছে যে "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" সাধারনত ৩/৪ বছর পর পর আবর্তিত হয়। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এই আবর্তন প্রক্রিয়া সাম্প্রতিক কালে অনিয়মিত হয়েগেছে।

"এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" অবস্হা বর্তমানে "Climate Model" "Observation Station" দ্বারা খুব সহজে নির্নয় করা যায়। যেমন আমি আজকের NOAA (National Oceanic & Atmospheric Administration) এর আবহাওয়া পূর্বাভাষ এ দেখলাম "মধ্য ও পূর্ব বিষুবীয় প্রশান্ত-মহাসাগর (Central & Eastern Tropical Pacific) এর সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি কমতে শুরু করেছে। তার অর্থ হচ্ছে এই বছর "লা-নিনা" অবস্হার সৃষ্টি হচ্ছে এবং এটা এখন হতেই পূর্বাভাষ করা যায় যে ২০১১ সালে বাংলাদেশ এ স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে (প্রথম ছবিতে ২০১০ সালে নীল দাগ এর আবির্ভাব )।

উন্নত দেশ বিশেষ করে "আমেরিকা" এবং "অস্ট্রেলিয়া" এর "কৃষি অর্থনিতী" এই "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" অবস্হার পূর্বাভাষ এর উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল।


বি:দ্র: এই লিখাটি যদি ব্লগে উপস্হিত কোনো সাংবাদিক বন্ধু কোন পত্রিকা্য় প্রকাশে ইচ্ছুক হন তবে আমার নিম্নোক্ত ই-মেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন । আমি লিখাটি আর ও বিস্তারিত করতে পারব উপযুক্ত রেফারেন্স সহকারে। (লেখক কানাডার "ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়" এ "জলবায়ু পরিবর্তন" বিষয়ে Ph.D. গবেষনারত)

E-mail: palash_kamal@yahoo.com


কৃতজ্ঞতা: উপরোক্ত ছবিগুলো ইন্টারনেট হতে সংগৃহিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৫২
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রভূ-ভৃত্য নয়, চাই সমতা ও ইনসাফভিত্তিক মৈত্রী

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৫০

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রভূ-ভৃত্য নয়, চাই সমতা ও ইনসাফভিত্তিক মৈত্রী

ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ছবিটি http://www.gettyimages.com থেকে সংগৃহিত।

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক নৈকট্যের গভীর বন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ‘হয় পানি, না হয় তোমাদের রক্ত​এই নদীতেই প্রবাহিত হবে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২০




কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এ ঘটনায় সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি। এমনকি পাকিস্তানকে এক ফোঁটা পানিও দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে বাংলাদেশের কি করণীয় ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:১৬


কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক মুসলিম হওয়ায় এবং ভারত বিদ্বেষী(যৌক্তিক কারণ আছে) হওয়ায় এই ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউসুফ সরকার

লিখেছেন তানভীর রাতুল, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৭

নৈতিকতা এবং নীতিবোধ কখনোই আইনের মুখে পরিবর্তিত হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া উচিত নয়”)।

নৈতিকতা ও নীতিবোধ কখনোই সহিংসতা বা আইনী চাপের মুখে বদল হয় না (দুঃখিত, বলা উচিত “হওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাক-ভারত যুদ্ধ হলে তৃতীয় পক্ষ লাভবান হতে পারে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৭



সাবেক ভারত শাসক মোগলরা না থাকলেও আফগানরা তো আছেই। পাক-ভারত যুদ্ধে উভয়পক্ষ ক্লান্ত হলে আফগানরা তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করতেই পারে।তখন আবার দিল্লির মসনদে তাদেরকে দেখা যেতে পারে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×