somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক দেবু-কাহিনী পর্ব ০৩

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেবু-কাহিনীঃ ০৩

আজ দেবুর মন খারাপ। কারন মারিয়া তাকে ফেসবুক থেকে আনফ্রেন্ড করেছে..
কি করবে ভেবে পাচ্ছে না দেবু, খাস বন্ধু হডম কে ফোন দিল সে..

ঃহ্যালো
= কই তুই লুল??
ঃআচ্ছা মারিয়া আমাকে আনফ্রেন্ড করার মাঝে কি যুক্তি থাকতে পারে?
= ক্যামনে কইতাম। আচ্ছা এক কাজ কর তুই আমার বাসায় আয় তারপর দেখতেছি..
ঃআচ্ছা।


ক্রিং ক্রিং ক্রিং...
ঃহ্যালো সাগর বল
# কিরে কি অবস্থা?
ঃ ভালো না
# ডাক্তার কি বলছে রে?
ঃ কিচ্ছু না। আচ্ছা মারিয়া আমাকে আনফ্রেন্ড করার কোন যুক্তি থাকতে পারে?
# দোস্ত আমার তো ফোন খারাপ হয়ে গেসে তাই কয়েকদিন ফেবুতে আসতে পারছিনা..
আচ্ছা রাখি তাহলে.

ক্রিং ক্রিং....
হডমের ফোন
অই কই তুই কত মিনিট লাগবে ষ্টেশন রোড আসতে?
ঃ এই যে বিশ মিনিট।


বিশ মিনিট পর...

= সোজা গাজীপুরা আয়..
ঃ আসতেছি।

গাজিপুরা আসার পর... দেবু হতভম্ব বনে যায়।
কারন হডম তার নিজ কাজ নিয়া অধিক ব্যস্ত।
মারিয়ার কথা টা একবার বললেও হডম তা কানেই নিল না
উত্তরে হডম বলল আচ্ছা দেখতেছি আগে মালপত্র গুলো নিয়ে চল আমাকে সাহায্য কর বাসে উঠলে এ বিষয়ে কথা হবে, বিপদে আছি।

আচ্ছা খিলক্ষেত যেতে হবে তো? আচ্ছা চল যাচ্ছি, দেবু উত্তর দেয়।

যদিও মারিয়ার ব্যাপারটা হডম এখানেই কবর দিয়ে দেয়.

খিলক্ষেত যাওয়ার পর হডমের গার্লফ্রেন্ড আসে। আচ্ছা হডমের গার্লফ্রেন্ড এর একটা নাম দেয়া যাক।
হ্যা ওর নাম মায়াবতী, আরেকটু ছোট করে মায়া বলে ডাকা যায়।

মায়ার ব্যাপারে একটু বলে নেই, মেয়েটা অসম্ভব জেদী তবে অনেক কিউট। তবে পান থেকে চুন খসলেই বিপত্তি। সে কাউকে ছেড়ে কথা বলে না এটাই দেবুর খুব ভাল লাগে.. তবে কেউই দোষের উর্ধে নয়।

যাইহোক কিছুক্ষন ঘোরা ফেরা করার পর হডম, দেবু আর মায়াবতী একটা রেষ্টুরেন্ট এ যায়। খাওয়া দাওয়া শেষে বেরিয়ে আসে দুজন। কোন এক কারনে দেবু বসে থাকে..
আচ্ছা আর মারপ্যাচ নয়... বলেই ফেলা যাক ঘটনা টা...

খাওয়া দাওয়ার এক ফাকে দেবু মায়াকে একটা উপদেশ দেয়। যদিও সেটা মায়ার পার্সোনালিটিতে আঘাত হানে সে দিকে দেবুর খেয়াল ছিল না.. দেবু বলেছিল কথার ছলে কিন্তু মায়া মারাত্মক বিপ্রতীপ অনুভুতি দেখায়।

মায়া, হডম পরপর বেরিয়ে যায় কিন্তু হডম আর মায়া কে খুজে পায় না। একটু পর হডম ফিরে আসে একা,... দেবু কে ডাক দেয়।
দেবু ও বেরিয়ে আসে।

ঃ কিরে পেলি মায়াকে?
= না। ও চলে গেছে মনে হয়।
জানিস আমি কত সেক্রিফাইস করে মায়ার সাথে আছি? কি হতো কথা গুলো না বললে?

দেবু এবার বুঝতে পেরেছে সে কত বড় ভুলই না করে বসেছে।

হডমের চোখ চিক চিক করে উঠে।
দেবু লজ্জাকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়..
কি বলবে সে বুঝতে পারে না। কিভাবে সান্তনা দিবে সে ভাষাও দেবুর নেই।
কারন আজকের উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দ্বায়ী সে নিজে।
নিজেকে সে বড় অপরাধী মনে করতে থাকে আজকে হডমের যা কিছু হবে সবই তার উপর বর্তাবে।

হডমের পিছু পিছু হাটতে থাকে দেবু... মাঝে মাঝে দু একটা কথা বলতে গেলেও হ ডম সেটা কানে নেয় না। এখন তার চুপ থাকাটাই ভালো এই ভেবে দেবু হাটতে থাকে পিছু পিছু....

বাসে উঠবে হডম আর দেবু। ঠিক এই মুহুর্তে মায়া আসে পিছন থেকে। হডম এর এরকম হাসিমুখ টা দেখার মত ভাগ্য সম্ভবত দেবুর হয়েছিল সেদিনই।

সে কি হাসি। এ যে ভালোবাসার হাসি। যাইহোক এবার নিজেকে একটু হালকা মনে করে দেবু।

@ আমি তোমার পিছন পিছন ই আসতে ছিলাম। মায়ার এই কথাটা শোনার পর দেবু বুঝতে পারে পুরো ঘটনা টা মায়ার সাজানো...

ও এরকম একটা মজা করলো ভাবতেই ঘিনঘিন করে উঠলো মাথাটা। না সম্ভবত মায়ার ইচ্ছা টা ছিল অন্য।
হডম দেবুকে বাসায় যাওয়ার জন্য বলবে দেবু চলে যাবে আর হডম থেকে যাবে মায়াকে খোজার জন্য, ঠিক সেই মুহুর্তে মায়া আসবে এবং তারা একান্তে কিছু সময় কাটাবে।
যাইহোক তা আর হলো না।
আধঘণ্টা পর তাদের কথোপকথন শেষে দেবু আর হডম বাসে উঠলো..

এবার হডম সাহেব কে রিফ্রেশড দেখাচ্ছিল। বাসে উঠার পর দেবু ভাবে মারিয়ার কথা আর উঠাবে কিনা। নিজের প্রবলেম নিজের কাছেই রেখে দিল সে।
বললে যদি হডম উলটো রিয়েক্ট করে তাই চেপে যায় মারিয়া প্রসঙ্গ।

বাসার দিকে আসতে আসতে মনে হলো মারিয়া কে একটা ফোন দেয়া যাক।
নাম্বারটা ব্লাকলিষ্টে।
কাকে ফোন দেয়া যায় কাকে ফোন দেয়া যায়। আচ্ছা হাসিব কে ফোন দেয়া যাক হাসিবের কথা মারিয়া ফেলতে পারবেনা। পরক্ষনেই ভাবে, না ছেলেটা অফিসে ওকে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না। শুভ, মিসকো, সোহাগ, সাব্বির, না তপু কেই ফোন দেই।
হ্যালো তপু, কেমন আছিস?? আচ্ছা মারিয়া কেমন আছে জানিস,?? ও আমাকে আনফ্রেন্ড করেছে। আচ্ছা তুই ওকে এক মিনিট ফোন দিয়ে বল যে আমার নাম্বার টা জাস্ট দুই মিনিটের জন্য ব্লাক লিষ্ট থেকে সরাতে।
এক নিশ্বাসেই কথা গুলো বলল দেবু...

তপুঃ আচ্ছা দোস্ত বলতেছি ওয়েট।

রিং হচ্ছে আর হার্টবিট বাড়ছে দেবুর। কখন যেন কলটা রিসিভ হবে আর অনেক দিনের সেই পুরনো কণ্ঠ টা শুনতে পাবে। আর সাথে এই কথাটি ও

"কি সমস্যা"

হ্যা হ্যা একদম তাই ওপার থেকে আওয়াজ এলো কি সমস্যা?

দেবুঃ একটা প্রশ্ন ছিল। অবশ্য উত্তরটা পাওয়ার জন্য কোন জোর জবরদস্তি নেই।
মারিয়াঃ কি?
দেবুঃ আমাকে কেন আনফ্রেন্ড করা হলো?
মারিয়াঃ আমার ইচ্ছা হইছে তাই। আর যাদেরকে আমার কোন প্রয়োজন নাই তাদেরকে আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে রাখিনা।
দেবুঃ আজকে আমাকে আর তোমার প্রয়োজন নেই?
মারিয়াঃ ফালতু প্যাচাল পাড়ার এনার্জি আমার নাই। ফোনটা রাখলেই খুশি হবো।

টুত টুত টুত..........

বাসায় এলো দেবু টলতে টলতে....

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×