দেবু-কাহিনী
ডাকনাম দেবু। পুরোনাম টা সঙ্গত কারনেই এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না। কেউ কেউ দেবুদা বলে ডেকে থাকে....
পুরো নাম টার মত তার বাল্যকাল সম্পর্কেও কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে তার বাল্যকাল মোটামুটি সুখের এতটুকু আচ করা খুব একটা কষ্টসাধ্য ব্যপার নয়।
যাই হোক, শুরু করা যাক উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা থেকেই।
দেবু ঢাকা শহরের নামকরা কোন এক কলেজে পড়াশোনা করে।
কিন্তু এই কথা টা সে তার সকল বন্ধু থেকেই গোপন রাখে। আর কেউ এটা ধরতেও পারে না কারন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার ব্যাচমেট রা অনেকেই তার এক বছরের জুনিওর।
কলেজে পড়াশোনা করার সময় দেবু খুবই নামকরা ছাত্র হিসেবে বহুল সমাদৃত ছিল। শিক্ষক থেকে শুরু করে ছোট বড় এমনকি কলেজ ষ্টাফ রাও তার বন্ধু ছিল।
অবশেষে দেবু আস্তে আস্তে কোন এক শিক্ষকের লালশার শিকারে পরিনত হতে লাগলো।
তৎকালীন শিক্ষকদের খুবই পরিচিত ব্যবসায় প্রাইভেট টিউশনির মিডিয়া হিসেবে কাজ করতে হতো তাকে। নইলে শীর্ষ স্থান হারানোর ভয় সবসময় তাকে জিগরে ধরে থাকতো।
সব ছাত্রদেরই একই প্রশ্ন দেবুদা তুমি এত অংক পারো কিভাবে??
বাধ্য হয়েই নিজের চেষ্টার ফলকে তুলে দিতে হতো অংক স্যারের হাতে..
দেবুঃ আরে অমুক স্যারের কাছে প্রাইভেট পড় তাহলেই গনিতে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।
ব্যাস স্যার ও খুশি দেবু ও খুশি।
বলতে বলতেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আর রেজাল্ট যাচ্ছে তাই। সবাইকে অবাক করে দিয়ে দেবু Aগ্রেড অর্জন করলো আর পাহাড়সম লজ্জা নিয়ে কলেজ লাইফের ইতি টানলো।
এবার হলো শুরু হলো আসল খেলা..
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি.. এবার নিজেকে সুপার হিউম্যান ভাবার সময় এসে পড়েছে। ভদ্রতা আর অভদ্রতার মাঝের পার্থক্য টুকু ভুলে যেতে লাগলো দেবু...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতাশ করলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতাশ করেনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ এ ৭৭ তম হয়ে যে উচ্চলম্ফ টা সে দিয়েছিল ছাত্র ছাত্রী কোটায় মাত্র ১৭ জন ছাত্রের সুযোগ পাওয়া এমন তথ্যে ততটাই নিষ্প্রভ হয়ে আবার আগের মত বিশ্ববিদ্যালয় প্রান্তরে ঘুরে ফেরে শুরু হলো।
অবশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে Accounting and Information Science বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মিলল।
আহ আজ থেকে দেবু স্বাধীন। কিন্তু বিধি বাম। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দেবুর জন্য নয়।
কাল্পনিক দেবুঃ
দেবু ছেলেটা ভয়ানক কল্পনা বিলাসী। মানুষ বিলাসিতা করে বিভিন্ন বস্তুর উপর কিন্তু না সে বিলাসিতা করবে কল্পনা নিয়ে। কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া তার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে বেশ।
এই যেমন সে কল্পনায় ভেসে চলে যদি সে গরীব ঘরের সন্তান হতো। যারা একবেলা খেয়েদেয়ে কষ্ট করে লেখাপড়া করে। আর বাংলা সিনেমার মত তারাই পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়।
আবার ভাবে যদি তার এমন কোন ক্ষমতা থাকতো যা দ্বারা সে সবকিছু করতে পারতো
লাল রঙ্গের প্রাডো গাড়িটায় করে দেবু নামলো স্কয়ার টাওয়ারের সামনে। গায়ে সুন্দর সাহেবী পোশাক। ম্যানেজিং ডিরেক্টর এসে দেবুর সাথে হ্যান্ডশেক করলো তারপর সাদরে ভিতরে নিয়ে গেল। সেই লেভেলের আপ্যায়ন করলো... চারদিকে স্যার কেমন আছেন তারপর কোথায় যেতে চাচ্ছেন... এই কথা গুলো শুনে দেবু গর্ববোধ করতে লাগলো।
আবার এই কল্পনার রিভার্স কল্পনা কি হতে পারে?
সাদরে ভিতরে নিয়ে গেল। তারপর আচ্ছামত উত্তম মধ্যম দিল। কিছুক্ষন আগের দেবু আর এখনকার দেবু এক নয় সম্পুর্ন আলাদা। মারের ডোজ গুলো খুব বেশি পড়ে গিয়েছিল।
কি হাস্যকর ব্যাপার স্যাপার...
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮