কিছু সমালোচনামূলক পোস্টের অনুকরনে
দুদিন ব্লগিং করে নিজেকে ব্লগার ভাবছো?
ভাবছো তুমি অনেক জানো অনেক বোঝো? তুমি আসলে কচুটি জানো, কচু বোঝো তুমি।
এই যে আমাকে দেখো আমি কত জ্ঞানী! কত শিক্ষিত! শিক্ষা শুধু লেখাপড়া করলে বড় বড় ডিগ্রী থাকলেই হয়? আমাকে দেখো আমি হচ্ছি প্রকৃত শিক্ষিত! সামুর সব থেকে পুরান ব্লগার। আটশত আশি বছর ধরে আমি ব্লগে পড়ে আছি কিন্তু কাউকে কিচ্ছুটি বুঝতে দেইনি।
বুঝতে দেইনি আমি! আমি কতটা মহান। আর তুমি!!
এই দুই দিন ব্লগ করে ফরং ফরং করছো! কি লেখ ছাইপাঁশ ইয়াক! ওসব কোন সুশীল মানুষ লিখতে পারে নাকি!
কবিতা লিখেছো!! ছ্যা ছ্যা ছ্যা ওগুলো কবিতা না বুঝলে ওগুলো হল অকবিতা, কবিতার নামে তুমি আমার মত মহান কবিকে অসন্মান করছ! তুমি রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়েছ কখনো? কাজী নজরুলের কবিতা? পুরান পুরান দুই চারজন ব্লগারের অমুকের কবিতা তমুকের কবিতা? পড়েছো?
আর আমার লেখা সবশেষ মহান কবিতাটা ??
‘মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি'
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি'
ভূলোক দ্যূলোক গোলোক ভেদিয়া
খোদার আসন 'আরশ' ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময়
আমি বিশ্ববিধাতৃর!’
দেখেছ? এই ভাবে লিখতে পারবে? কি ? কবিতা সুন্দর হয়েছে? কাজী নজরুল কে ছারিয়ে গেছে না? অ!! তুমি তো আবার অশিক্ষিত কাজী নজরুল কি তুমি তো তাই বুঝতে পারছনা হাঁদারাম কোথাকার!
এই যে এদিকে তাকাও আমাকে দেখো , শেখো ,কিছু শেখো, ভদ্রতা কি জিনিষ আমাকে দেখে শেখো ! এই যে আমি এত জানি এত বুঝি আমি কখনো মুখ ফুটে বলেছি?
তাহলে তোমরা বল কেন ? যত্তসব বাজে বাজে অকবিতা লিখে বুক ফুলিয়ে বল কেন যে কবিতা লিখেছো!
ওসব বলতে তোমার লজ্জা হউয়া উচিৎ?
ছন্দের মিল নেই লতা নেই গুল্ম নেই লেজ নেই এসেছে কবিতা লিখতে। দেখো আমাকে দেখো শেখো কীভাবে ছন্দ মিলিয়ে মিলিয়ে কবিতা লিখতে হয়।শেখো,
‘’আজ আকাশের মেঘগুলো নীল
তাহার শাড়ির ছাপ খোপ বর্ণীল
পথের বাঁকে দেখে এলাম ঝিল
ওটাকে শুধু ঝিল বলে না অনেকে বলে খাল বিল।‘’
আরেকটা শোন
‘’পায়ের তলায় পড়েছে কলার খোসা,
গালে একটি কামড় দিলো মশা।
রাস্তায় বিক্রি হচ্ছে রাশি রাশি শশা।
তাহার দুকানে চশমার ডাঁট চোখে পড়লো সহসা।‘’
ওহ মাইইই গড! আমাকে এখন কবিতা পেয়ে বসেছে, দেখতেই পাচ্ছো আমি কি ভীষণ দারুন কবি! কিন্তু আমি এই কথা কাউকে বলে বেড়াইনি, দেখো নিরহংকারী কাকে বলে দেখো আমাকে দেখো আমাকে দেখে শেখো, আসছে নিজেকে ব্লগার বলতে,
ইয়ে কবিতায় আসি
‘হঠাৎ
চপেটাঘাত
আক্কেলগুড়ুম হল
বনে বনে ঘোরা হল
তুমি অকবিতা লেখ
আর আমি দিন ভর কবিতাই লিখি।‘’
লাস্ট আরেকটা। কবিতার নাম-
‘’ধরি মাছ’’
‘’ধরি মাছ ধরি মাছ
বেলা যায় বেলা যায় হয়ে এলো সাঁঝ।
বিপদে পড়েছি কাঁচা
এবার আমায় বাঁচা
আমি মন ভুলা
খেত থেকে তুলে আন মুলা
খাইনা আমি পটল খাইনা আমি বেগুন
সারাদিনে বুকে আমার জ্বলে নানান আগুন।
বুঝতে পারিনা মনেপড়ে কারে
হায়রে কপাল আমার আহারে আহারে।‘’
কবিতার কথা অনেক হল আমি ভদ্র মানুষ তাই ভদ্র ভাবে বুঝেয়েছি নতুবা ব্যান করে দিতুম। দিলাম না কারন সেই ক্ষমতা আপাতত আমার নেই।
বিশ্বাস কর তোমরা এই নতুন ব্লগাররা আমার দিল টা কুরে কুরে খাচ্ছো! কি আজে বাজে লিখে কবিতার বই গল্পের বই বের করে ফেলেছ তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ! তোমাদের লজ্জা হয় না কেন কেন!
নিজের টাকা দিয়ে বই বের করে ভাব নাও! শোন ওসব অখাদ্য লিখে বই বের করলে কেন! হাত দাও দুই ঘা বসিয়ে না দিয়ে আমি শান্তি পাচ্ছিনা।
ওসব আসলে কিছু হয়না, গল্প লেখা আমাদের অমুকের কাছ থেকে শেখো সে ও আমার মতন আটশত আশি বছর ধরে ব্লগে আছে, তুমি তার লেখা কখনো পড়েছ? মারগারেট এর লেখা পড়েছ? হেমিঙয়ের লেখা পড়েছ? লিও টলস্টইয় পড়নিতো? তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে বলে দিতে পারি তুমি আসলে একটা অযোগ্য অপ্রয়োজনীয় অথর্ব কুলাঙ্গার।
তুমি সেদিন আমাদের অমুকের গল্প পড়েছ!?
সেখানে সে লিখেছে এক পাগল রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে তার হাতের একটি ৫ টাকার কয়েন ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে ভেতরে ফেলে দিয়ে নিজেই কয়েন তুলতে নেমে
এবং
কয়েন তুলতে তুলতে সে আবিষ্কার করলো সে ময়লার দুর্গন্ধ যুক্ত পানিতে দাঁড়িয়ে।
শুরু হল সেখান থেকে বেঁচে ফেরার টুইস্ট !! শেখো এই ভাবে লেখো।
তবেই গল্প হবে তার আগে তুমি একটা পোস্ট ও করোনা, করলে আঙ্গুল কেটে দেবো।
কমেন্ট ও করোনা, ওসব তোমার একদম হয়না বাছা! তুমি কমেন্ট করতে গিয়ে লেখ অসাধারণ! ওটা কোন সৃজনশীল কমেন্ট না, ধর তুমি একটি গাছের ছবিতে কমেন্ট করেছ সেখানে তুমি অবশ্যই লিখবে কত সালে এই গাছের প্রজাতি পৃথিবীতে এসেছে, এর ফলের নাম কি মানুষের কি কাজে লাগে , কাজে না লাগলে কেন এই গাছের ছবি তোলা হল! অকারনে কেন এই ছবি পোস্ট দিলো! এ ভারী অন্যায় , মোট কথা তুমি পোষ্টের ভুল ত্রুটি সর্বজনীন ভাবে বিশ্লেষণ করবে।
তবে,
আমার পোষ্টে তোমাকে অসাধারণ লিখতেই হবে তা না হলে চাচা খালা চুলকানি সহ নানান সব গালি দিয়া তোমার মান ইজ্জত মাটিতে মিশাইয়া দিয়া ক্ষান্ত হব বুঝলে।
যাকগে অনেক কথা হল আমার কথা শোন ব্লগে নতুন এসেছ পোস্ট করার দরকার নেই, শুধু আমাকে দেখো? এতেই তোমার লাখ লাখ পুণ্য হবে, কাছে আসো দূরে দাঁড়িয়ে কি কর?
একটু পা টা টিপে দাও।
আহা ওভাবে না
কোকোনাট ওয়েলটা হাতে নাও, একটু হাল্কা গরম করে আমায় পায়ের তলাটা মালিশ করে দাও
এইতো হচ্ছে,
হ্যাঁ ঠিক এইভাবে।
আহা কি আরাম কি আরাম
গাছে গাছে কাঁচা পাকা আম।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:১৪