সৈয়দ বোরহান কবির কে আওয়ামী লীগের ১৯৯৬ এর কমেডি আমল থেকে চিনতাম।
কমেডি আমল বলার কারন সেই সময়ে বিটিভি নানা প্রকার আওয়ামী রংগ রসে ভরপুর ছিলো।
জাতির বিবেকের কাছে কয়েকদিন পর পরই প্রশ্ন রাখতেন সেলিম ওমরাও খান নামের এক ভাঁড়। বড়ই বিনোদন পূর্ন ছিলো সেই অনুষ্ঠান।
সেইসব বিনোদনের স্মৃতিময় দিনগুলোতে সৈয়দ বোরহান কবির কিছুটা সমঝদার ছিলেন বলেই মনে হয়েছিলো।
কারন পরিপ্রেক্ষিত নামের অনুষ্ঠান।
তবে শুনেছিলাম সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম সাহেবের ভাগনে বোরহান কবির "পরিপ্রেক্ষিত"র পরিপ্রেক্ষিতে বেশ ভালো টাকা আয় করেছিলেন সমাজের নানা ধরনের ২ নম্বরদের স্ক্যান্ডাল ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে।
কিন্তু কথায় বলে - "আওয়ামী মগজ" , ইহা এক বস্তু বটে জগৎ সংসারে !
সে কারনে আওয়ামী মগজ ধারী বোরহান কবির সাহেবও নয়া কমেডি পয়দা করেছেন সাংবাদিক নামের কমেডিয়ান নাইমুল ই খানের পত্রিকায়।
সেই কমেডি টি হলো ১৯৭১ 'র ২৯ শে মে পাকিস্তান আর্মির কর্ণেল বেগ মেজর জিয়াউর রহমানকে চিঠি লিখেছেন , সেই দুর্লভ চিঠি সৈয়দ সাহেবের হাতে এসে পৌছেছে।
সেই চিঠিতে কি লেখা রয়েছে :
Major Zia Ur Rahman, Pak Army, Dacca
We all happy with your job. We must say good job! You will get new job soon.
DonÕt worrie about your family. Your wife and kids are fine.
You have to be more carefull about major Jalil.
Col. Baig Pak Army
May 29. 1971
আমাদের সময়ের লিংকটি এখানে
কথায় বলে একেতো নাচুনে বুড়ি , তার ওপর ঢোলের বাড়ি !
সেই ঢোলের বাড়িতে ব্লগ ফেসবুকের আওয়ামি নাচুনেরা লুংগিতে কোঁচ মেরে বদন খিঁচে নাচছে।
তা আসুন আওয়ামী মগজের এই অনুর্বর উৎপাদন কেমন গোবরের ন্যায় তথা গরুর মলের ন্যায় গন্ধ ছড়াচ্ছে সেটা দেখি :
[১]
বলদ সবাই কে বলদ ভাবে।
কারন বলদ ভাবে বলদের বুদ্ধিই দুনিয়াতে বুদ্ধির সর্বোচ্চ স্কেল।
আসুন এই আওয়ামী বলদিয়া প্রোডাক্টের সবচেয়ে বড় অসংগতিটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেই।
পৃথিবীর ইতিহাসে যখন শত্রুপক্ষের ভেতরে নিজেদের স্পাই ঢোকানো হয় সেই স্পাই এর সাথে যোগাযোগ করা হয় সাংকেতিক ভাষায়।
আই রিপিট - আমি আবার বলছি - সাংকেতিক ভাষায়
কোন অবস্থাতেই সেটা এমন কোন কোন ভাষাতে লেখা হবে না যেটাতে প্রাপক এবং প্রেরকের পরিচয় , মেসেজের আসল বক্তব্য ৩য় কোন ব্যক্তির বোধগম্য হয়।
মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান যার আছে তাকে এটা বোঝানোর কিছু নাই।
আওয়ামী বলদিয়া মগজের এই জিয়া বিষয়ক ফ্যান্টাসি প্রোডাক্টে পাকিস্তান আর্মির চর জিয়াকে তার বস কর্নেল বেগ এমন ভাবে চিঠি লিখেছে যে জিয়া , বেগ , জলিল সবার পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে !
জিয়া - জলিল - বেগ সবার পরিচয় উদ্দেশ্য ফাঁস করে দেয়া ইতিহাসের অনেক প্রশ্নের জবাব দেয়া (!) এই কাঁচা হাতের আওয়ামী জালিয়াতি প্রোডাক্ট দেখলে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কিংবা দেওয়ানি আদালতের সামনে ঘোরাঘুরি করা টাউট বাটপাড় দালালরাও মুচকি হাসবে ।
[২]
না হয় বুঝলাম সবার নাম পরিচয় ফাঁস করে দিয়েছে।
দিয়েছেই যখন সব ফাঁস করে তখন দেখুন চিঠিটি লেখা হয়েছে কি কাগজে।
একটা চিরকুটে।
পদবী - নাম - সরাসরি বোধগম্য একটি মেসেজ লেখা হয়েছে চিরকুটে যেটা লেখার কথা ছিলো পাকিস্তান আর্মির অফিসিয়াল প্যাডে , যেখানে থাকবে পাকিস্তান আর্মির মনোগ্রাম।
একটি অফিসিয়াল মিলিটারি চিঠি কিভাবে লেখা হয় সেটা দেখুন নীচে :
ছবিটি বড় করে দেখুন
এবার দেখুন ইংরেজী বিষয়ক রসকষ :
" worrie" "carefull"
কর্নেল সাহেবের ইংরেজী বানানের বলিহারি !
নিজের নামের আগে কর্নেল লিখেছে ক্যাপিটাল লেটারে - Col. একই সংগে সংক্ষিপ্ত (অ্যাব্রিভিয়েটেড)
অথচ জলিলের বেলায় স্মল লেটারে মেজর সম্বোধন - major , তাও আবার এলাবোরেটেড বা পূর্ন রূপে।
জিয়ার বেলায় আবার ক্যাপিটাল লেটার- Major
গ্রামারের কথা তো বাদই দিলাম।
একেই বলে আওয়ামী মগজের প্রোডাক্ট !
[৩]
হাসিনা কালকে দাবী করেছে - এই বেগ নাকি কোন এক আসলাম বেগ !
দ্বিতীয়ত এই বেগ নাকি একজন কর্নেল।
তৃতীয়ত এই বেগ তার সারনেম লিখেছে Baig।
এবার দেখুন ১৯৭১ এর লিবারেশন ওয়ারে যে ২০০ জন পাকিস্তানি আর্মি , নেভী এবং এয়ার ফোর্স অফিসার সক্রিয় ছিলো এবং যাদের নাম ওয়ার ক্রাইম তালিকায় ছিলো তাদের কে...
১৯৭১ লিবারেশন ওয়ারে অংশ নেয়া পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন অফিসারের তালিকা যারা ১৯৭১ যুদ্ধাপরাধ কেসের প্রাইম কনভিক্ট
১৯৭১ লিবারেশন ওয়ারে অংশ নেয়া পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন অফিসারের তালিকা যারা ১৯৭১ যুদ্ধাপরাধ কেসের প্রাইম কনভিক্ট
এবার বেগ সারনেমের কাউকে খুজে বের করার জন্য পিডিএফটা ওপেন করে CTRL + F5 চাপুন।
সার্চ ব্ল্যাংক পপড হবে।
Beg কিংবা Baig লিখে সার্চ করুন।
এই তালিকায় একজন মাত্র বেগকে / Beg খুজে পাওয়া যায়।
মেজর পদবীর আনোয়ার বেগ।
তালিকায় তার অবস্থান ১০৪ নং।
493 PA 6554 Major Mirza Anwar Beg 88 ORD COY
আর বেইগ কিংবা Baig সারনেমের পাওয়া গেছে একজনকে।
হাস্যকর যেটা সেটা হোলো -
এই Baig হলেন একজন এয়ারফোর্স অফিসার।
তালিকায় তার অবস্থান ১৯৬।
পদবী গ্রুপ ক্যাপ্টেন।
65484 PAF 1069 Gr.Cpt. M.A.Majid Baig PF Dacca
অন্যদিকে এই ভুয়া আওয়ামী লীগের নিজের জালিয়াতি করে লেখা এই চিঠির বেগ নিজের সারনেম লিখেছে Baig।
তাহলে ফার্স্ট নেম 'আসলাম' নামধারী কর্নেল পদবীর লোকটা আসলো কোথা থেকে ?
[৪]
বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তান আর্মির হাতে বন্দি হন ২ রা জুলাই , ১৯৭১।
তার আগে জিয়ার স্ত্রী সন্তান কোথায় আছে সেটা পাকিস্তান আর্মি লোকেট করতে পারে নাই।
সত্য মিথ্যা যাচাই করতে চান ?
অলরাইট !
স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র
খন্ড ১৫
সম্পাদনায় হাসান হাফিজুর রহমান
২৯ শে মে তেই খালেদা জিয়ার খবর এই (গায়েবী) বেগ ব্যাটা জানলো কিভাবে ?
[৫]
সবচেয়ে বড় ভুয়ামিটা হলো জলিলের সাথে জিয়াকে মিশিয়ে ফেলা।
আমরা জানি আওয়ামী রাজনীতিতে জিয়া , জলিল , মীর শওকত , কাদের সিদ্দিকি এরা সবাই চক্ষুশুল , কারন এদের মুক্তিযুদ্ধে ভ্যালায়ান্ট রোল, আবার একই সংগে প্রো রাইট।
সেকারনে জিয়া কে শুধু জলিল কেন , মীর শওকত আর কাদের সিদ্দিকীর খেয়াল রাখতে বলাও সম্ভব ছিলো এই ভুয়া চিঠিতে।
মেজর জলিল যুদ্ধ করেছেন সাউথ বেঙ্গলে। অন্যদিকে জিয়া যুদ্ধ করেছেন মূলত ইষ্টার্ণ ফ্রন্টে। তাছাড়া জলিলকে ৯ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয় জুলাই ১৭, ১৯৭১ সালে। এর আগ পর্যন্ত জলিল কোন সেক্টরের দায়িত্বে ছিলো না। জিয়ার সাথে তার কোন যোগাযোগ - পূর্ব পরিচয়ের বিষয় বাদ ই দিলাম।
ফেসবুকের এই নোটটা পড়তে পারেন চাইলে - Click This Link
[৬] নীচের ছবিটি দেখুন :
মনে পড়ছে ?
আওয়ামী মগজের দুর্গন্ধময় একটি উৎপাদন ছিলো এটি।
৬ নং মইনুল রোডের বাসভবন ছেড়ে খালেদা জিয়া চলে যাবার পর সেই বাসার মাস্টার বেড রুমে [যেখানে খালেদা জিয়া ঘুমাতেন] বেড কর্নার টেবিলের ড্রয়ারে নাকি পর্ন ম্যাগাজিন পাওয়া গিয়েছিলো।
সেসময় তা রাত ৮ টার বাংলা সংবাদে ভিডিও রিপোর্ট সহ প্রচার করা হয়েছিলো।
সেই ড্রয়ারে পর্ন ম্যাগাজিন কিভাবে পাওয়া গেলো সেটা রফিকুন্নবির টোকাইও জানে।
মেজর জিয়ার কাছে প্রেরিত কর্নেল বেগের এই গায়েবী মারফতে প্রাপ্ত চিঠিটি কিভাবে পাওয়া গেলো সেটাও ভেবে দেখুন।