ইবলিসের আওয়াজ বলতে শুধু গান-বাজনাকে বুঝায় না। আমাদের দেশের তথাকথিত ওয়াজ মাহফিলগুলোকেও বুঝায়।
"আল্লাহ তায়ালা বলেন: “আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে।” [সূরা লুকমান ৩১: ৬ আয়াত]।"
কি বুঝলেন? ওয়াজ মাহফিলে এসব হয় না? হাফিজুর রহমান কুয়াটার একটা উদাহরণ দেইঃ সে বললো, তওবা করলে নাসুহার মতো তওবা করো। নাসুহা কোন নবী, রাসূল, সাহাবী বা এমন কেউ না। একজন বুজুর্গ। ডাহামিথ্যে কথা। নাসুহা কোন ব্যক্তি না, বরং নাসুহার মতো তওবা মানে একনিষ্ঠভাবে তাওবা করা। তাহলে এদের জ্ঞানের সল্পতার কারণে বেহুদা কথা খরিদ করলো না? ওয়াজ মাহফিলে গীবত, অন্য আলেমকে অপবাদ, হাসিঠাট্টা, বাইন মাছ, বাঘের মুরিদ হওয়ার গল্প, বানোয়াট কেরামতি, ভাইরাল গান গেয়ে গানের ইসলামী ভার্সন করা ইত্যাদি এসব ত আজকাল বেশিরভাগ মাহফিল গুলোতে স্বাভাবিক হয়েগেছে।
"তোর আওয়াজ দ্বারা তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস পদস্খলিত কর। -সূরা ইসরা ৩১: ৬৪"
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যে সকল বস্তু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তাই ইবলিসের আওয়াজ। বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. বলেন, ইবলিসের আওয়াজ বলতে এখানে গান ও বাদ্যযন্ত্রকে বোঝানো হয়েছে। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যেসব বস্তু পাপাচারের দিকে আহ্বান করে তার মধ্যে গান-বাদ্যই সেরা। এজন্যই একে ইবলিসের আওয়াজ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। -ইগাছাতুল লাহফান ১/১৯৯
এখনকার বেশিরভাগ ওয়াজ থেকে ত মানুষ হাসি ঠাট্টা করে, বেহুদা কথা খরিদ করে, ওয়াজে বেহুদা আওয়াজ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, উন্মাদনায় মেতে উঠে।
গানের যেমন নেশা হয়ে মানুষকে আল্লাহ বিমুখ করে ধীরে ধীরে তেমনি তথাকথিত ওয়াজ মাহফিলগুলোর আওয়াজ ইসলামকে হাসিঠাট্টায় পরিণত করে, ওয়াজকে ব্যবসা হিসেবে ফায়দা লুটে এবং মানুষ ইলম ও আমল থেকে দুনিয়াবী উন্মাদনায় মেতে উঠতে সাহায্য করে।
ত আমি যদি এই আওয়াজকে গান-বাজনার পাশাপাশি বর্তমান বাংলাদেশের তথাকথিত ওয়াজ বুঝি। সমস্যা আছে? এই দুই আয়াত যথেষ্ট যে, বর্তমান সময়ের তথাকথিত ওয়াজ-ই হলো ওই আওয়াজ।
© সালাউদ্দিন শাহরিয়া
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫১