somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়ান ডিশ পার্টি...!!!

০৫ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খুব অবাক হচ্ছেন নাম দেখে তাইনা?

কেননা, প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা ভ্রমণের সাথে এই অতি আধুনিক কালের “ওয়ান ডিশ পার্টির!” কি সম্পর্ক? আসলেই তো, কি সম্পর্ক? চলুন শুনি, একটি সাধারণ ও তথাকথিত ভ্রমণ গ্রুপের একটি অদ্ভুত এবং বিলাসী ভ্রমণের সাথে “ওয়ান ডিশ পার্টির!” আরও অদ্ভুত গল্পটি!

শীতল, বিরাগ-তিল এবং আরও কয়েকজনের সাথে একটি অদ্ভুত বিলাসী ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেছিল একদা, যে একটি ভালো মানের ট্রেনেরে এসি বাথ রিজার্ভ করে ঢাকা থেকে অনেক দূরের একটা ভ্রমণ করবে। যেখানে থাকবেনা অন্যান্য ভ্রমণের মত বাইরের কোলাহল-ধুলো-কাঁদা-বালু বা কোন রকম ফালতু গ্যাঞ্জাম। যেখানে থাকবে শুধু নিজেদের ভ্রমণ সঙ্গীরা, তাদের অব্যাক্ত গল্পগুলো আর থাকবে সীমাহীন আড্ডা।

কিন্তু কোন ভাবেই এই রকম একটা ভ্রমনে সবাইকে রাজি করানো যাচ্ছিলোনা। এক-একজন, এক এক জায়গায় যাবে, আর এক এক বাহন তাদের পছন্দ। ট্রেন আর লম্বা জার্নি কারোই তেমন মনে ধরছেনা। তবুও অনেক অনেক কলা কৌশল করে সবাইকে রাজি করানো হল, দেখিয়ে “নীল সাগর ট্রেনের” এসি বাথের রিজার্ভ কামরা আর তেতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাবে এই প্রলোভন!

নিয়মিত অন্যান্য ভ্রমণ সদস্যদের সাথে এবার শীতলদের সাথে যোগ হয়েছিল বিলাস। ওর বাড়ি ওদিকেই। বিলাস মুলত বাড়িতেই যাবে কিন্তু সাথে বন্ধুদের একটু সঙ্গ দেবে আর দেবে সীমাহীন আড্ডা, সেই কারণে ওদের সঙ্গী হল। এবং আলোচনা ও অনুমোদন সাপেক্ষে “নীল সাগর” ট্রেনের বাথের টিকেটও কাটা হল। টিকেট কাঁটার শেষে বিলাস একদম অদ্ভুত একটা প্রস্তাব দিল, যেটা অন্য কেউই এর আগে কখনো কল্পনাই করেনি ওদের দলের!

কি সেটা? সেটা হল... যেহেতু এসি বাথের রিজার্ভ কামরা। অন্য কেউ থাকবেনা সেখানে, অনেক অনেক লম্বা জার্নি, অনেক অনেক খাওয়া-দাওয়া করতে হবে বিভিন্ন সময়, তাই বাইরের খাবার কিনে না খেয়ে সবাই যে যার বাসা থেকে তার সাধ আর সাধ্য অনুযায়ী কিছু একটি রান্না করে বা বানিয়ে নিয়ে আসুক!

বেশ অদ্ভুত প্রস্তাব তো! এর আগে তো এই ভ্রমণ গ্রুপের কেউ এভাবে ভাবেনি, সেই সুযোগও অবশ্য ছিলোনা। সবাই যে যার দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে, প্রস্তাব মন্দ নয় ভেবে রাজি হয়ে গেল! তবে শর্ত হল কারো কোন খাবার যেন অন্য কারো সাথে কমন না পরে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বেশ ভালো, তাই হবে!

এরপর বিভিন্ন আলাপ আলোচনা শেষে কার কি মেন্যু ঠিক হল এবং সেই অনুযায়ী ভ্রমণের দিন সকালে সবাই হাজির রেল স্টেশনে। সবার কাঁধে একটি ব্যাগ আর হাতে একটি সাধারণ থলে! অন্যান্য যাত্রীরা তাদের দিকে একটু অন্য রকম ভাবে তাকাচ্ছে! কেন? কারণ সবার পিঠের ব্যাগ ছাড়াও একটি বেশ বড়সড় ব্যাগ বা থলে আছে, যেটা একটু অস্বাভাবিক! হলে হোক। ওতে ওদের কিছুই যায়-আসে না।

ট্রেন এলে সবাই উঠে পড়লো ওদের নির্ধারিত বগির নির্ধারিত কামরায়। ট্রেন ছাড়ল বেশ দ্রুতই। এবার সবাই বের কর কে কি এনেছো? বাহ দারুণ দারুণ সব খাবার এনেছে এক একজন। দিনভর গল্প-আড্ডা-গান আর ইচ্ছেমত খাওয়া-দাওয়া! কেউ ভুনা খিচুড়ি, কেউ মুরগীর মাংস, একজন চিকেন ফ্রাই, একজন কাবাব! কেউ আবার এনেছে পুডিং! একজন সেদ্ধ ডিম আর কলা! আর যে কিছুই আনেনি বা আনতে পারেনি তার জন্য বরাদ্দ হল ইচ্ছেমত কোমল পানীয়!

ব্যাস। এমন বিলাসী ভ্রমনে আর কি লাগে বলুন। এরপর ট্রেনের দুলুনির সাথে সাথে চলেছে উত্তাল আনন্দ আর দারুণ দারুণ খাবারের উচ্ছ্বাসে উদ্বেলিত হওয়া! সময় যায়, স্টেশন যায় কিন্তু খাবার শেষ হয়না!

অন্যান্য ভ্রমনে যেখানে সকালে নাস্তা খাবার পরে দুপুরে কেউ খেতে চায়না এক বেলার টাকা বাচাবে বলে, না খেয়ে প্রায় শুকিয়ে থাকে! রাতে একবারে খেয়ে-দেয়ে দেবে ঘুম! সেই তাদেরই এবার খাওয়া খাওয়া আর খাওয়ার তোরে ক্ষুধা লাগার সময়ই বা সুযোগই পেলনা কারো!

আর এই “ওয়ান ডিশ পার্টি” ভ্রমণের জন্য সবাই মিলে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিল ভ্রমণে নতুন যোগ দেয়া সদস্যকে।

তাই এই অদ্ভুত বিলাসী ট্রেন ভ্রমণের নাম দেয়া হয়েছিল “ওয়ান ডিশ পার্টি ভ্রমণ!”

করবেন নাকি আপনারাও এমন একটি “ওয়ান ডিশ পার্টির” বিলাস বহুল ভ্রমণ?

নেবেন নাকি ভ্রমণের ভিন্ন আমেজ......?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×