ভূত! শুনেই গান ছমছম করা শিউরে ওঠা এক অনুভব, তাই না? ভূতে বিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক, ভূতের কল্পনা করে ভয় আমরা সবাই কম-বেশি পাই। গল্পের বইতে ভূতের বাড়ির কথা পড়ে শিহরিত হই। ভূতের বাড়ি কি কেবল কল্পনাতেই আছে? একদম নয়! পৃথিবী জুড়ে আছে সত্যিকারের ভয়ংকর সব ভূতের বাড়ি আর সেগুলোর অন্তরালে আছে ভয়ানক গা ছমছমে সব কাহিনী। আসুন, আজ শোনা যাক সেরকমই কিছু ভূতের বাড়ির সত্য গল্প।
দি স্কিরিড ইনঃ
কুখ্যাত ভৌতিক স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইংল্যান্ডের ওয়ালেস স্টেটের Llanfihangel Crucorney তে অবস্থিত Skirrid Mountain Inn. লোক গল্প মতে- ৯০০ বছর আগে এখানে ১৮০ জনেরও বেশি লোককে সিঁড়ির বীমের সাথে ফাঁসি দেওয়া হয়। তখন ভবনের প্রথম তলা কোর্ট রুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই ঘটনার পরে হঠাৎ একদিন দেখতে পায় একটা গ্লাস উড়ছে! লোকজন দেখতে পেত জানালায় তারা তাদের ঘাড়ে ফাঁস বানাচ্ছে! ঠান্ডা কক্ষগুলো হঠাৎ করে গরম হয়ে উঠতো! এভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকতো ক্রমশ। এসব এর পর ফেনি প্রাইস(দালানটির মালিক) চিন্তা করলেন এখানে অনেক সক্রিয় আত্মা রয়েছে, পরে অন্যান্য লোকজন এটাকে বিপদজনক স্থান হিসেবে উল্লেখ করেন।
ভানগারঃ
ভারতের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ভৌতিক স্থান ভানগার দূর্গ। স্থানীয় লোকজনই এই জায়গার নামকরণ করেন। এলাকাটি এবং শহরকে নিয়ে কিছু জনপ্রিয় ভূতুড়ে গল্প রয়েছে। কথিত আছে এক রাজকুমারী একজন জাদুকরকে অপমান করেছিল বলে জাদুকর এই এলাকাটা ধ্বংস করে দেন।
১৭০০ শতাব্দীতে এটি আবার ধ্বংস হয় আর্মিদের মাধ্যমে। জাদুকর মারা যাওয়ার পর এই এলাকায় জাদুকরের আত্মা এখনো থাকে বলে রাতে কোন পাখি বা কোন পশু ডাকেনা, সবাই চুপচাপ থাকে বলে কথিত আছে। আজ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি ওখানে রাত কাটানোর সাহস দেখায়নি।
উডচেস্টার ম্যানশনঃ
ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারে অবস্থিত উডচেস্টার ম্যানশনের ভৌতিক বাড়ি হিসেবে খ্যাতি আছে। দালানটির নির্মান কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। গত ২০০ বছর আগে এটার কাজ করা হয়েছিল শেষ বারেব মত।
গুজব আছে এখানে যারা কাজ করতে আসে তারা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মারা যায়। নির্মান কাজের শব্দের মত শব্দ পাওয়া যায় এখনও, রোমান সৈন্য এবং যুবতী মেয়েদের দেখতে পাওয়া যায় বলে কথিত আছে।
বোরলে রেকটরি :
বোরলে রেকটরি পৃথিবীর সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা হিসেবে পরিচিত। এটি যুক্তরাজ্যের বোরলে গ্রামে অবস্থিত, ১৮৬৩ সালে নির্মান করা হয়। এখানে ‘নুন’ নামের এক ব্যাক্তিকে হাঁটতে দেখা যায় যাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
পুরোনো একটি গল্প প্রচলিত আছে যে নুন লোকটি ‘বোরলে’ সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসীনীর প্রেমে পড়েন। দুজনে চেয়েছিলেন পালিয়ে যেতে কিন্তু যেতে পারলেন না। ধরা পড়ার পর সন্ন্যাসীনীকে খুন করা হয় আর নুনকে পুড়িয়ে মারা হয় এই ভবনে। এর পর থেকে এই বাড়ি ভৌতিক বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
প্যারিসের কাটাকম্ব:
প্যারিসের কাটাকম্ব ফ্রান্সের প্যারিসের একটি আণ্ডারগ্রাউন্ড অসারি (যেখানে মরা মানুষের মাথার খুলি, কঙ্কাল রাখা হয় )।১৭০০ সালের মাঝা মাঝি এটি নির্মান করা হয়।
যারা কমপক্ষে ৩০ বছর আগে মারা গেছে এবং তাদের খুলি এখানে সংরক্ষণ করা হয়। এখানকার খুলি, হাড়গুলো রাতের বেলা নিজে নিজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার যাতায়ার করে বলে কথিত আছে।
স্ট্যানলি হোটেলঃ
স্টিফেন কিং এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত নামকরা ‘The Shining’ হরর মুভিটি নির্মাণ করা হয়েছে স্ট্যানলি হোটেল কে কেন্দ্র করে। মুভির নির্মাতা নিজেও এর সাক্ষী। তিনি যখন এই হোটেলের ২১৭ নাম্বার রুমে অবস্থান করেন তখন তিনি নিজেই অনেক ভৌতিক ঘটনা দেখেন। তিনি শুনতে পেতেন আত্মারা পাশের রুমে খেলা করছে! অনেক আত্মা নাকি এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াতো। যখন গেস্ট আসতো তখন তারাও দেখতে পেত পিয়ানোর কী গুলো নিজে নিজে মুভ হচ্ছে,নিজে নিজে মিউজিক বাজছে।
টাওয়ার অব লন্ডন:
১৫৩৬ সালে হেনরি VIII এর একজন স্ত্রীকে এই টাওয়ারে শিরচ্ছেদ করা হয়।
ঐ স্ত্রীলোকের আত্মাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যেত, মাঝে মাঝে তিনি তার খণ্ডিত মাথা হাতে নিয়ে ‘টাওয়ার গ্রীন’ এবং ‘টাওয়ার চাপেল রয়েলে’ হাঁটতেন। পৃথিবীর অন্যতম ভয়ংকর ভৌতিক বাড়ির মধ্যে এটি একটি।
বেল ফার্ম:
১৮১৭ থেকে ১৮২১ সালের মধ্যে একজন মহিলা বেল পরিবারে প্রবেশ করে। তার নাম হচ্ছে কেট। কিছুদিন পর সে ‘জন বেল’ এবং তার পরিবারের উপর খুব অত্যাচার চালায়। এক পর্যায়ে বেল স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,এবং মারা যায়।
তার মৃত্যু শয্যার পাশে একটি কালো তরলের শিশি পাওয়া যায়। শিশিটা পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি ছিল বিষের শিশি। অর্থাৎ বেলকে হত্যা করা হয়েছিল। এখনো সেই ভবনের আশে পাশে বেলের আত্মা আছে বলে মনে করেন অনেকে, কেননা অনেকেই চাক্ষুস দেখেছে।
(সংগ্রহীত)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৭