আজ আপনাদের সামনে এমন ১৩টি ছবি তুলে ধরব যার রহস্যের কোন সমাধান আজ পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব হয় নাই। তাহলে চলুন এবার রহস্যে ঘেরা এই ১৩টি ছবি দেখে নেওয়া যাক,
ঝুলন্ত দেহঃ
কুপার ফ্যামিলি টেক্সাসে তাদের সদ্য কেনা নতুন বাড়িতে উঠেছে। সব কিছু গুছানো শেষ হলে নতুন বাড়িতে ওঠাকে ফ্রেমে আবদ্ধ করে রাখতে পরিবারের সকলে এক হয়ে ছবি তোলে। কিন্তু ছবি ডেভেলপ হয়ে আসার পরে দেখা যায় তাদের ডান দিকে একটা মানুষের ঝুলন্ত দেহ বা লাশ। কিন্তু ছবি তোলার সময়তো সেখানে তেমন কিছু ছিল না, তাহলে এই ঝুলন্ত দেহ আসল কোথা থেকে? ক্যামেরার ভুল নাকি কোন প্রেতাত্মা?
বাড়তি হাতঃ
গ্রীস্মের ছুটি চলছে, স্কুল বন্ধো, খেলার মাঝেই চার বন্ধুর এক সাথে তোলা ছবি। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে ছবির ডান দিকে যে ছেলেটি রয়েছে তার মাথার কাছে বৃদ্ধা আংগুল উঁচু করে যে হাতটি রয়েছে সেটি এই চার বন্ধুদের মধ্যে কারো হাত না। খেয়াল করে দেখুন ছবিতে মোট হাতের সংখ্যা ৯টি, তাহলে এই বাড়তি হাত কার? আর ছবিটি তুলেছিল এই চার বন্ধুর মধ্যেকার কোন এক জনের পিতা, তাই বলাই যাই এটা বাচ্চাকালের কোন দুষ্টুমি না বরং বাড়তি একটি হাত!!
ভবিষ্যতের মানুষঃ
উপরের যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন, এই ছবিটি তোলা হয়েছিল ১৯৪১ সালে, ক্যানাডার South Forks Bridge এর পুনঃরায় চালু করার অনুষ্ঠানে। ছবিটির ডান পাশে লাল গোল চিহ্ন দেওয়া লোকটিকে দেখুন খেয়াল করে, ১৯৪১ সালে কারো পোষাক এরকম হত না আর তার হাতে যে ক্যামেরা রয়েছে সেটি তৎকালীন ক্যামেরার তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক। এবার ছবিটির বাম দিকে লাল গোল চিহ্নের দিকে দেখুন এটা ১৯৪১ সালের সর্বাধুনিক ক্যামেরা। তাহলে এই ব্যাক্তিটি কে? মানুষকি তাহলে Time Machine বানিয়ে ফেলেছে? এর কোন উত্তর আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
অসংগায়িত হিন্টারকায়েফেকের (Hinterkaifeck) খুনঃ
ঘটনাটি ঘটে জার্মানিতে ১৯২২ সালে, হিন্টারকায়েফেকের একটি ফার্মে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় ৬ জনকে। সারা দেশে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় চললেও কেউ গ্রেফতার হয় নাই। প্রায় ১০০ জনের বেশি লোককে জেরা করা হয়েছে, কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই, এমন কি এই হত্যার কোন উদ্দেশ্য পর্যন্ত খুজে পাওয়া যায় নাই। এই বাড়ির কাজের লোক ৬ মাস আগে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় এই বলে যে বাড়িতে প্রেতাত্মারা আছে। তবে একটা যুক্তি দ্বার করিয়েছিল তৎকালীন তদন্তকারি দল। তাদের মতে, হত্যাকারী অনেক দিন আগের থেকেই বাড়িতে ছিল, সময় বুঝে খুন করেছে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হচ্ছে খুনি খুন করার পর গোয়ালের গরু গুলিকে খাবার দিয়ে গেছে আর রান্নাঘরে খাবার রান্না করে থুয়ে গেছে। কে করেছে এই খুন? আর কেনই বা এই খুন? এটা আজ পর্যন্ত জানা যায় নাই। উপরে যে ছবি দেখছেন সেখানে একজনকে খুন করে খড় দিয়ে শুধু দেহর উপরিভাগ ঢেকে রাখা হয়েছে।
ফনেক্সের আলোঃ
মার্চ ১৩, ১৯৯৭ সালে আমেরিকার এরিজোনা, নেভাডা এবং পরের দিন মেক্সিকোন সনোরা শহরে সারি বদ্ধ ভাবে আলোর এই গোলক গুলি দেখা যায়। হাজার হাজার মানুষ এর সাক্ষী। এগুলি কি বিমান বাহিনীর কোন প্লেন নাকি UFO তার কোন সঠিক জবাব আজ পর্যন্ত কেউ জানে না।
মহাকাশচারীঃ
বসন্তের এক বিকালে জিম টেম্পলটন খোলা আকাশের নিচে বাচ্চাদের খেলার মাঠে তার ছোট মেয়ের একটা ছবি তোলে। ছবিটি ডেভেলপারের কাছ থেকে আসার পরে দেখা যায়, তার মেয়ের মাথার ঠিক পিছনেই মহাকাশচারীদের পোশাক পরিহিত কেউ, কিন্তু ছবি তোলার সময় সেখানে এমন কেউ ছিল যে এই পোশাক পরা ছিল। এমনকি Kodak এই ছবির নেগেটিভ নিয়ে পরীক্ষা করে বলে যে ছবি ১০০% আসল কোন এডিটিং হয়নি। তাহলে কে এই মহাকাশচারী শুধু মূহুর্তের জন্য ছিল মাত্র?!
Battle of LA:
এই ছবিটি প্রথম প্রকাশ করা হয় ১৯৪২ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি Los Angeles Times দৈনিক পত্রিকায়, আর একই সাথে পত্রিকাটি দাবি করে যে UFO এসেছিল তাদের শহরে আর তৎকালীন সেনাবাহিনীর লোকেরা সেটি লাইট দিয়ে দেখছে, এমনই এক মূহুর্তের ছবি এটি। কিন্তু কেউ এটি বিশ্বাস করে কেউ করে না, আসল সত্য কেউ জানে না। তবে ১৯৪২ সালে এরকম ছবি চাইলেই বানানো সম্ভব না।
হেসেল্ডেনের আলোঃ
নরওয়ের হেসেল্ডেন শহরে সে ১৯৪০ সাল থেকে এরকম আলো দেখা যায়। উপরের ছবিটি ১৯৮১ সালে তোলা, ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত এরকম আলো প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ বার দেখা যেত। এর ফলে অনেক টুরিষ্ট জমায়েত হয়ে থাকে এখানে। অনেকেই রাতভর থাকে এই আলো দেখার জন্য। কিন্তু এই আলো কিভাবে তৈরি হয় আর কেন তৈরি হয় তার কোন ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত কেউ দেয়নি। তবে বেশি লোক সমাগম হতে থাকায় বর্তমানে বছরে ১০ থেকে ২০ বার দেখা যায় মাত্র। এই আলো অনেক উজ্জ্বল এবং সাদা আর হলুদ বর্নের হয়। কেন তৈরি হয় এই আলো? আর কি তৈরি করে তা এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যার বাইরে।
ব্লাক নাইট স্যাটেলাইটঃ
মহাকাশ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত বিশাল এক রহস্যের ভান্ডার, কিন্তু এই ব্লাকনাইট স্যাটেলাইট আরো বড় রহস্য। এটি সম্পূর্ন কালো এক বস্তু দিয়ে তৈরি, যা থেকে প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে সিগনাল আসছে, যা আবার NASA কতৃক পরীক্ষিত এবং স্বীকৃত। ধারনা করা হয় এই স্যাটেলাইট যা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তার বয়স প্রায় ১৩০০০ বছর, আর মানুষ মহাকাশে যাওয়ার টেকনোলজি অর্জন করেছে সবে মাত্র ৬০ বছরের মত। তাহলে কে এই স্যাটেলাইট উতক্ষেপন করল? আর এর সিংগনাল কিসের পাচ্ছে? আর কেন পাঠাচ্ছে? অনেক ক্ষেত্রে এর অস্থিত্য কেউ স্বীকার করে না। আবার অনেকের ধারনা বহু আলোক বর্ষ দূর থেকে কোন এক এলিয়েন গ্রহ থেকে এসেছে এই স্যাটেলাই। যার বর্তমান অবস্থান ঠিক আমাদের পৃথিবীর বাইরে। এর আসল রহস্য এখন পর্যন্ত কেউ জানে না।
৯/১১ আক্রমনের দক্ষিন টাওয়ারের মহিলাঃ
৯/১১ টুইন টাওয়ারে বিমান হামলার কথা মনে আছে নিশ্চই, এখানে আপনারা যে ছবি দেখছেন সেটি দক্ষিন দিকের টাওয়ারের ছিদ্র যেখানে বিমান সরাসরি আঘাত করেছিল। এবার ছবির ডান দিকে একটু খেয়াল করে দেখুন এক জন মহিলা সেখানে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছে! এনার নাম Edna Clinton, অবাক করার বিষয় হচ্ছে সরাসরি বিমান হামলা, বিস্ফোরন আর আগুনের পরে সে কিভাবে বেঁচে ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর কারো কোন দিন জানা হবে না, কেননা তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, কেননা সম্পূর্ন বিল্ডিং ধ্বসে পরেছিল।
বিগ ফুটঃ
ছবিটি ২০০০ সালে নামহীন একজন মহিলা ফ্লোরিডার পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাছে এই ছবিটি পাঠান এবং একটা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, কয়েক সপ্তাহ ধরে একটা বানরের মত প্রানী তার বাড়ির পিছনের আপেল গাছ থেকে রাতের বেলা আপেল ছিড়ে নিয়ে যায় আর এই ছবিটি সেই প্রানীর। এই ছবিটি প্রকাশ পাবার পরে ফ্লোরিডায় বিগ ফুটের অবস্থান নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হলেও এই প্রানীর দেখা আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি।
The Madonna with Saint Giovannino and a UFO:
এই ছবির নাম দেওয়া হয় "The Madonna with Saint Giovannino", ১৫ শতকের দিকে চিত্রকর Domenico Ghirlandaio (১৪৪৯-১৪৯৪) আঁকেন। এই ছবিটি এখন পর্যন্ত ইতালির ফ্লোরেন্স শহরের টাউন হলে ঝুলানো আছে। ছবি খেয়াল করলে দেখবেন, ছবিটে আঁকা ঈসা (আঃ) এর মা মরিয়ম (আঃ) বা কাঁধের উপরে বাইরে একটি উড়ন্ত চর্কি যার নিচ থেকে আগুন জ্বলছে আর মাটিতে ধারানো এক লোক আর তার কুকুর দৃশ্যটি দেখছে। এই ছবির মানে কি তা আজ পর্যন্ত কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
ফ্যালকন লেকের ঘটনাঃ
১৯৬৭ সালের ২০শে মে, Stefan Michalak ছুটির দিন কাটাতে যান Whiteshell Provincial Park এ, এখানে থাকাকালিন সময়ে একদিন তিনি দেখতে পান আকাশ থেকে সিগারেটের আকৃতির দু'টি যান নেমে আসে, আর তা অবতরন করে তার কাছেই, আর দরজা খুলে যায়। এর পর তিনি ইংরেজি ভাষায় ঐ যানের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে কথা বলার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন সাড়া পাননি। এর পরে তার চারপাশ ঘিরে ফেলে রঙ্গিন এক কুয়াশা যার ঝাঝালো ভাব তার কাপড় পুড়িয়ে ফেলে আর তার হাত পুরে যায় তাতে। এরপরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তিতে তার তিনি উলঙ্গ অবস্থায় নিজেকে আবিস্কার করেন। তার দেহে বিভিন্ন আকৃতির কালো কালো দাগ দেখতে পান। উপরের ছবিতে তার পেটের কালো দাগ গুলি দেখা যাচ্ছে। তাহলে কি তিনি এলিয়েন দ্বারা পরিক্ষিত হয়েছেন নাকি অন্য কিছু?! এর কোন সঠিক উত্তর আজো কারো জানা নেই।