কলেজ স্ট্রীট ভ্রমন শেষে ট্যাক্সি করে ফিরে আসলাম হাওড়া স্টেশনেই। তবে রাস্তায় ভীষন জ্যাম ছিল। জ্যামের এমনই দশা যে বাস আর ট্রাম একই ট্রাকে দাড়িয়ে ছিল যদিও ট্রামের ট্রাকে বাসের চলার কথা নয়।
স্টেশনে ফিরে ফ্রেশ হলাম, ক্যামেরা ও ট্যাব রিচার্জ করলাম এবং সাবওয়ে ধরে চলে এলাম ফেরী ঘাটে।
হুগলী নদীর ওপারে চোখ পড়তেই মনে হল যেন আধুনিক ও কমার্শিয়াল কলকাতাকে দেখছি। এপারে-ওপারে যেন বিস্তর ফারাক।
ওপারে যাওয়ার ফেরী চলে এল। মন্দ নয় ফেরীটি। উঠে বসবার দুই মিনিট পরই ফেরী রওয়ানা করল ওপারের উদ্দ্যেশে।
ফেরী কিছুটা দূরে যেতেই পুরো ফেরী ঘাট একসাথে দেখতে পেলাম। নানা রুট থেকে ফেরীগুলো আসছে, একটু থেমেই আবার চলছে। সবগুলো একই ধাঁচের হলেও বেসরকারিভাবে চলা ফেরীগুলো তুলনামূলকবাবে নতুন মনে হল।
ফেরী তখন নদীর মাঝে। হাওড়া স্টেশন, হাওড়া ব্রীজ এবং বিদ্যাসাগর সেতু....তিনটি স্থাপত্যই পুরো দেখতে পেলাম মাঝ নদী থেকে।
হাওড়া স্টেশনের নতুন ও পুরাতন ভাগের সুক্ষ্ম পার্থক্য বুঝতে পারলাম। এও বুঝলাম এটা আসলে কত বিশাল জায়গা নিয়ে দাড়িয়ে।
হাওড়া ব্রীজের একাংশ নতুন রং পেয়ে চকচক করছে। রোদেলা বিকেলে হাওড়া ব্রীজের এমন অসাধারন রূপ দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগল। পুরো ব্রীজটাই আমার চোখের সামনে!!
একটু দূরে তবুও স্পষ্ট বিদ্যাসাগর সেতু। হাওড়ার মতই পুরো অবায়ব নিয়ে হাজির আমার সামনে!
স্টেশন এবং ব্রীজ দেখতে দেখতে ফেরী ওপারের ঘাটে ভীড়ল। ভাবলাম একটু ঘুরে দেখি। তাই একটি রেল স্টেশন এবং ব্যস্ত সড়ক পেড়িয়ে চলে এলাম এক অফিস পাড়ায়। ইস্টার্ন রেলওয়ের দপ্তরের পাশ দিয়ে এগিয়ে চললাম হরেক রকম স্ট্রীট ফুডের বাহার দেখতে দেখতে। ডাল-ভাত থেকে বিরিয়নি, নানা রকম মিস্টি, ফল, পানীয়......সে এক এলাহী ব্যাপার। সবাই খুব খাচ্ছে এটা-ওটা। আমিও বা কম কিসে! জিলাপী, লাস্যি এবং তেহারী খেলাম। স্বাদের কথা বলতে গেলে আদি স্ট্রীট ফুড যাকে বলে ঠিক তাই।
অফিস পাড়ায় চক্কর শেষ করে নদীর পারে গড়ে তোলা মিলিনিয়াম পার্কে এসে বসলাম। হুগলী নদীর বয়ে চলাকে উপভোগ করলাম প্রান ভরে।
সন্ধা হয়ে এলে সূর্যের বিদায়বেলা যেন নদীর পানিতে মিশে যেতে শুরু করল। সূর্যাস্তের কিছু ছবি তুললাম। নদীর পারে এমন সুন্দর সূর্যাস্ত খুব কমই দেখেছি আমি।
ফিরে যেতে হবে এবার। ফেরীতে চড়ে বসলাম। হাইরাইজের গ্লাসে প্রতিফলিত অস্তমিত সূর্য যেন আমাকে বিদায় জানাল। ফেরী এপারে ভিড়তেই লকার থেকে লাগেজ নিয়ে ওয়েটিং রুমে চলে এলাম। তৈরি হতে হবে দীর্ঘ ট্রেন যাত্রার জন্য।
কলকাতা ভ্রমনের ইতি এখানেই। দেরাদুন ফিরব আগামী পর্বে। দেখবে ভারতের সবচাইতে দীর্ঘতম রেল ও সড়ক সেতু এবং আরও কিছু শেষ পর্বে।
পর্ব ২.১:
Click This Link
পর্ব ১:
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩