somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

DSU: অনলাইনে রক্ষা পাচ্ছে না কোন নারী

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
জাতীয় কবি নজরুল বলেছিলেন বিশ্বে যা কিছু মহান, কল্যাণকর তার অর্ধেকটা যদি নর করে থাকেন বাকি অর্ধেক করেছেন নারী। তাই নর যদি শ্রদ্ধার পাত্র হয়, নারীকেও আমাদের শ্রদ্ধা করা উচিত। সেই ছোট্টবেলা থেকেই আমরা নারীকে সম্মান করার শিক্ষা পাই পাঠশালা থেকে, কিন্তু আদতে এর কতটা বাস্তবায়ন করছি আমরা ?

একটা সময় মানুষ অবসর সময় কাটাতো খেলার মাঠে। যেহুতু এখন সুউচ্চ ভবনগুলোর বদৌলতে খেলার কোন জায়গা চোখে পড়ে না তাই মানুষজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সময় দেওয়া শুরু করে আগের থেকে অনেক বেশি। সবকিছুই ঠিক ঠাক চলছিল তবে কিছু কুরুচিপূর্ণ মানুষ এখানে যোগ দেবার পর থেকেই শুরু হয় যন্ত্রণার সূত্রপাত। এরা রাস্তা থেকে, বাসে চলতে গিয়ে নারীদের ছবি গোপনে ক্যামেরায় ধারণ করে, ইন্টারনেট থেকে সকল বয়সী নারীদের ছবি সংগ্রহ করে এবং পরিশেষে তাদের পরিচয় সহ সেই ছবিগুলো প্রকাশ করা হয় কিছু কুৎসিত ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেইজ অথবা গ্রুপগুলোতে। শুধুমাত্র ছবি প্রকাশ করেই তারা ক্ষান্ত হয় না, সেই সাথে জুড়ে দেন অশ্লীল সব বক্তব্য। কয়েকজন আরেক দফা সরেস, তারা ছবিগুলো ম্যানিপুলেশন করে অশ্লিল আরো অনেক কিছুই জুড়ে দেন। আর এই সকল পোষ্টের নিচে তখন শুরু হয় অজস্র নোংরা কথোপকথন।

ধীরে ধীরে এরা আরো সাহসী হয়ে উঠে, ফেসবুক ভিডিও লাইভের মাধ্যমে দেখানো শুরু হয় যৌনক্রিয়া। প্রাক্তন স্ত্রী বা প্রেমিকাদের সাথে তাদের গোপন ফটোগ্রাফ বা ভিডিও প্রকাশ করা শুরু হয়। এবং ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেওয়া হয় একেকটা পরিবারকে।



এই ছবিটি আমার সেই বান্ধবীর, যে কিনা এই গ্রুপের নোংরামোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। যেহুতু সেও একজন নারী তাই তাকে ধর্ষণ করতে চাইছে গ্রুপের সদস্যরা।


ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে নিয়েও নোংরামো করতে তাদের বাঁধেনি।

কেউ যদি এর প্রতিবাদ করে তাহলে তাকে নিয়েও শুরু হয় নোংরামো এবং তাকে সরাসরি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে হয়রানী করা শুরু হয়। আর এই নোংরামোগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী প্রতিবাদকারীদের সাথেই করা হচ্ছে। উদাহরণ দেই, আমি সপ্তাহখানেক আগে এরকম একটি গ্রুপের বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রতিবাদমূলক বক্তব্য রাখি এবং এরপর থেকেই শুরু হয় গ্রুপের সদস্যদের আমার উপর এট্যাক। তারা একের পর এক যুক্তি দেখাতে শুরু করে এবং আমি একটার পর একটা যুক্তি তাদের খন্ডন করে দিতে থাকি। কিন্তু এরপর যখন আমার এক বান্ধবী তাদের নিয়ে প্রতিবাদমূলক চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী একটি প্রবন্ধ লিখেন তখন তাকে নিয়ে শুরু হয় নানারকম যৌনহয়রানী। তার ছবি নিয়ে অশ্লীল সব লেখা প্রকাশ হতে শুরু করে। তাকে ধর্ষণ করতেও অনেকেই আগ্রহ দেখানো শুরু করে। তার ফেসবুক একাউন্টে একাধিক রিপোর্ট করে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয় (যা পরবর্তীতে আবার উদ্ধার করা সম্ভব হয়) এবং যেই ব্লগে তিনি সেই প্রবন্ধটি লিখেছিলেন সেখানে DDOS এট্যাকের মাধ্যমে বেশ কিছুটা সময় সাইট ডাউন করে রাখা হয়েছিল। ব্যাক্তিজীবনে তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এরা কারা ?
আপাতত আমি DSU নামক একটি গ্রুপের কথা বলছি, যেখানে ১ লাখ ২৩ হাজার সদস্য রয়েছে যার বেশিরভাগ সদস্যই সক্রিয়ভাবে গ্রুপটির সাথে জড়িত। আবাল বৃদ্ধ বণিতা সবাই এখানেই আছেন। স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সাংবাদিক, আইন বিভাগের লোকজন, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা সহ সমাজের নানা পেশার মানুষজন এই গ্রুপের সদস্য। তারা বিকৃত যৌনতার চর্চা করছেন লোকচক্ষুর সামনেই। এবং তাদের শক্তিশালি একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে যারা এধরণের দলটিকে সবদিক থেকে রক্ষা করে আসছে।


কোন নারীর ব্যক্তিগত ভিডিও খুঁজে পেলে গ্রুপের সদস্য তার নাম ঠিকানা জানার জন্য সবার আগে ব্যস্ত হয়ে উঠে। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো বটেই সরাসরিও তাকে হয়রানি করার জন্য তারা ব্যস্ত।


কেউ একজন তাদের পরিচয়ও জানিয়ে দিচ্ছে।

কিছুদিন আগে এক কাপলের অত্যন্ত ব্যাক্তিগত একটি ভিডিও ক্লিপ তারা আপলোড করে গ্রুপে শেয়ার করতে শুরু করে এবং তাদের ফেসবুক আইডি, কোথায় পড়ছে, কি করছে, বাবা মায়ের পরিচয় সহ ঠিকানাও প্রকাশ করা হয় সেখানে। নারী পুরুষ নির্বিশেষে তারা এদেরকে নিয়ে একাধিক পোষ্ট করেন এবং তাদের ব্যক্তি জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়। এব্যাপারে তাদের বক্তব্য ছিল, তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী এবং তারা নাকি প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত ছিল। সুতরাং তাদের ব্যাক্তিগত ভিডিও প্রকাশ করা জায়েজ। যদিও তারা কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত তা কেউ ব্যাখ্যা করতে পারে নাই। শুধু এটাই নয়, এর আগেও অসংখ্য ব্যাক্তিগত ভিডিও এই গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছে এবং এর প্রত্যেকটার পিছনেই তাদের কিছু হাস্যকর যুক্তি থাকে। অবশ্য সবসময় যুক্তি দেখানোরও প্রয়োজন মনে করে না তারা। শুধু আপলোড করে দিলেই হয় বাকি বক্তব্য ঐ ১ লাখ২৩ হাজার সদস্য বুঝে নিবেন।


খুব সম্ভবত এটা পুলিশের হাতে গ্রেফতার স্কুল শিক্ষক পান্নার সেই ধর্ষণের ভিডিও। তারা কিভাবে এটা হাতে পেয়েছে সেটাও একটা রহস্য।

তারা ভিডিওগুলোর জন্য একধরণের কোডনেম ব্যবহার করে। যেমন কোন ভিডিও যদি ১০ মিনিট ১২ সেকেন্ডের হয় সেক্ষেত্রে তারা সেটাকে “১০ মিনিট ১২ সেকেন্ড” নাম দিয়ে থাকে। এছাড়াও আরো অনেক গোপন পন্থা রয়েছে যা গ্রুপের সদস্যরা ভালো ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

গ্রুপের সদস্যদের এই নোংরামোর ব্যাপারে প্রশ্ন করলে কিছু সাধারণ পালটা প্রশ্ন পাওয়া যায়। যেমন,


# এই DSU এর ১ লাখ ২৩ হাজার মেম্বার তনু হত্যার বিচার দাবী করেছে। তারা এব্যাপারে রাজপথেও প্রতিবাদ করেছিল।

সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার কিন্তু নিজেরা যে ধর্ষণগুলো করছেন সেগুলোর বিচার কে করবে ? তার শাস্তি কে দাবি করবে ?


নারীদের নিয়ে এই গ্রুপের সদস্যদের বক্তব্য অশ্লীল এবং ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

# DSU গ্রুপ রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকা মানুষদের শীতবস্ত্র প্রদান করেছিল

সেটা অবশ্যই মানবিকতা কিন্তু রাস্তায় হাটতে থাকা মা বোনদের ছবি তুলে গ্রুপে শেয়ার করাটা কি সেই মানবিকতারই অংশ ?


কোন এক অভিনেত্রীকে নিয়ে গ্রুপের সদস্যদের নোংরামো চলছিল।

# ঐ কাপল নিজেদের ভিডিও করতে পারলে আমরাও শেয়ার করতেই পারি।

প্রাপ্তবয়স্ক এই কাপল নিজেদের ফ্যান্টাসী থেকে হয়তো ভিডিও করেছেন এবং অবশ্যই দুইপক্ষের সম্মতিতে এটা হতেই পারে। তারা নিজেরা নিজেদের দেখবার জন্য সেটা ভিডিও করেছেন। চার দেয়ালের মাঝে যেটা তারা করেছেন এটা নিশ্চই আপনার মনোরঞ্জনের জন্য নয় ? এবং সাইবার ক্রাইমে এইটা অপরাধ।
[http://s10.postimg.org/lnbay33tl/image.png]
সদ্য বিবাহিতা এক চিত্রনায়িকাকে নিয়ে গ্রুপের যৌনসুড়সুড়িমূলক কর্মকান্ড।

# নিজেদের ভিডিও নিজেরাই করছে তাহলে এইটা সাইবার ক্রাইম হলো কিভাবে ?

কারণ নিজেদের ভিডিও তারা নিজেরা প্রকাশ করেনি। মোবাইল বা অন্য ডিভাইস থেকে কেউ সেটা চুরি করে গ্রুপে প্রকাশ করেছে। আর তারা কয়জন নিজেদের ভিডিও নিজেরা করেছে ? পান্না মাস্টারের ধর্ষনের ভিডিও তো আপনারাই শেয়ার করেছেন (উপরে স্ক্রিনশটে প্রমাণ), আর বাস রাস্তা থেকে তোলা ছবিগুলো কিভাবে আসতেছে ? পাবলিক টয়লেটের উপর ক্যামেরা কি তারাই রেখেছিল ? অন্য নারীদের সাধারণ ছবি শেয়ার করে সেখানে গালাগালি, নোংরা কথা কি তারাই দিতে বলেছিল ? এইগুলা কি সাইবার ক্রাইম নয় ?

# পর্ণ ওয়েবসাইট থাকতে পারলে এগুলো থাকবে না কেন?

এই উত্তরটা হচ্ছে, পর্ণগ্রাফি শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরী চলচ্চিত্র যা সকল পক্ষের সম্মতিতে নির্মিত হয় বিক্রি বা অনলাইনে প্রকাশ করার নিমিত্তে। পর্ণোগ্রাফিক ওয়েবসাইটগুলোতেও কারো স্ক্যান্ডাল প্রকাশের ব্যাপারে বিধি নিষেধ রয়েছে। আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন এবং আপনার দেশের আইন যদি আপনাকে পর্ণোগ্রাফি দেখার অনুমতি প্রদান করে তাহলে আপনি নিশ্চই সেটা দেখতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, পর্ণোগ্রাফিতে অভিনেতা অভিনেত্রীরা কাজ করেন। অনেক দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এইধরণের ভিডিওচিত্র দেখার অনুমতি রয়েছে তবে পৃথিবীর কোন দেশে কারোও ব্যাক্তিগত ভিডিও প্রকাশ করাকে ভালোচোখে দেখা হয় নাই। এটা সাইবার ক্রাইমের অন্তর্ভুক্ত।
পর্ণগ্রাফি এবং ব্যাক্তিগত ভিডিও এক জিনিশ নয়।


এই নারীর একটি ব্যাক্তিগত ভিডিও তারা অনলাইনে প্রকাশ করেছিল।

# DSU মানে বিকৃত মানুষ না।

কিন্তু বিকৃত মানুষদের নীরবে সমর্থন দেওয়াটাও এক ধরণের বিকৃত চিন্তাধারারই প্রকাশ পায়। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে , তব গৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।

# ছেলে মেয়ের মধ্যে যৌনতা বিষয়ক আলোচনা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।

অবশ্যই সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজন আছে, তবে সেটার অর্থ অন্য নারীদের গোপন ফটোগ্রাফ বা ভিডিও দিয়ে নয়। এবং আপনাদের গ্রুপে এডুকেশন বলতে গালাগালি এবং বিকৃত যৌনচর্চার পাশাপাশি হয়রানিমূলক পোষ্টই শুধু দেখছি, শিক্ষামূলক কার্যক্রম কি তাহলে এইটাই ?

# মেয়েদের ছবি নিয়ে এইধরণের পোষ্টকে পাত্তা দেবার কিছু নাই, গ্রুপের ভালো কাজগুলো দেখা উচিত।

আজকে অন্য কারো মা বোনের সাথে এমনটা হচ্ছে, গ্রুপের ভালো কাজ গুলো দেখতে গিয়ে কখনো আপনার মা বোনের সাথে এমনটা ঘটবে না তা কি নিশ্চিত করে বলতে পারেন ?

# আমাকে কে যেন এড করেছে, এরপর আর রিমুভ হই নাই।
আমি আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করেছি গ্রুপের কিছু নিশ্চুপ সদস্য রয়েছে। যারা সাধারণত কমেন্ট করে না, লাইক দিয়েই খালাশ অথবা শুধুই উপভোগ করতে আসে। এরকম কয়েকজনকে আমি ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করলে তারা জানিয়েছিল কেউ হুট করে তাদের গ্রুপে এড করে এবং তারা সেখানেই থেকে যায়। সাধারণত ফেসবুকে কেউ একজনকে এরকম গ্রুপে এড করলে তার জন্য একটা নটিফিকেশন আসে। মোবাইলে থাকার কারণে অথবা অনেকেই অতিরিক্ত নটিফিকেশনের কারণে গ্রুপটির কথা খেয়াল করেনি। কিন্তু তাদের বুঝিয়ে বলার পরেও কেনো এই গ্রুপেই থাকতে হবে তাদের ? নীরব দর্শক হয়ে থাকলেও তারা যে নীরব সম্মতি দিয়ে যাচ্ছে এইসব নোংরামোর, তা কি তারা বুঝতে পারছে না ?

# DSU তে কেও কোন হেল্প পোস্ট দিয়ে সে আনেক হেল্প পাই।

ফেসবুকে এধরণের সাহায্য করার জন্য সুস্থধারার অনেকগুলো গ্রুপ আছে, আপনি শুধুমাত্র সার্চবারটা ব্যবহার করেই একাধিক গ্রুপ খুঁজে পাবেন। ধর্ষণে উৎসাহিত করে এমন কোন গ্রুপের মানুষদের সহায়তা নিতে চাওয়াটাও লজ্জাকর।

# VAT বিরোধী আন্দোলনে DSU সক্রিয় ছিল।
দুঃখিত, এই আন্দোলন ফেসবুকের আরো অনেকগুলো গ্রুপ করেছিল এবং DSU তার একটা অংশ মাত্র, এমনকি শুরুটাও তারা করেনি, তারা অন্যদের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল কেবল।

# জুনায়েদকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে DSU কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে।

আর এখন নিজেরা যে অপরাধ করছেন তা কোন পুলিশকে জানানো হবে ? জুনায়েদ তার বন্ধুর গায়ে হাত তুলেছিল আর আপনারা পরিচিত অপরিচিত নারীদের ধর্ষণ করছেন চোখ দিয়ে, লেখা দিয়ে এবং হুমকিও দিচ্ছেন।

#


তবে এই কথা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি যে বোরকা পড়া কোনো মেয়ের ছবি দিয়ে ঐরকম কোনো ক্যাপশনওয়ালা পোস্ট আমি দেখিনাই।

বোরখা পড়া কোন নারীকে নিয়ে কোন স্ক্রিনশট দিলে এরপর তাদের উত্তর আসবে মেয়েটার বোরখা অনেক টাইট ছিল, শরীর বোঝা যাচ্ছিল। এদেরকে যতোই বুঝাই তাদের বক্তব্য “তালগাছ আমার”।


কোন এক নারীকে নিয়ে গ্রুপের সদস্যদের প্রতিদিনকার নোংরামোর একটা অংশ।


অশ্লীলতার অংশবিশেষ।


ফেসবুকের নিয়ম ভঙ্গ করে পর্ণগ্রাফিক লিঙ্ক শেয়ার করা হলেও রহস্যজনক কারণে ফেসবুক এব্যাপারে নিশ্চুপ।


উনি নিজেই একজন সাংবাদিক যে গ্রুপে একটি পর্ণগ্রাফিক সাইট নিয়ে লিখেছেন। গ্রুপে এরকম আরো অনেক সাংবাদিক আছেন, লেখক আছেন, অভিনেতা-অভিনেত্রি আছেন, পুলিশ সদস্য রয়েছেন, সমাজসেবী অনেক সংঘঠনের সদস্যরাও রয়েছেন। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। পর্ণগ্রাফিক সাইট নিয়ে আমাদের বক্তব্য নয়, বক্তব্য এই সদস্যদের অন নারীদেরকে নিয়ে যৌন হয়রানির সময় নিশ্চুপ থাকা নিয়ে।




উনি এই DSU গ্রুপের একজন প্রাক্তন এডমিন। তিনি গ্রুপ সম্পর্কে বলেছেন,

এতো কিছু ম্যানশন করলো, প্রত্যেকদিন স্ক্যান্ডাল এর ভিডিওস আসছে এটা বললো না ? এডাল্টারিতে আসক্ত কিছু মেম্বারস এবং এডমিন প্যানেল। পদে পদে মানুষ, স্পেশালি মেয়েদেরকে হ্যারাস এবং হিউমিলিয়েট করা, গালাগালি করা, মানুষের পারসোনাল পিকচার নিয়ে হিউমিলিয়েশন, রাস্তা ঘাটে মেয়েদের আপত্তিকর ছবি তুলে গ্রুপে পোস্ট করা, লাইভ এসে পর্ণ দেখানো, এক্স মেম্বারসদের ভার্চুয়ালি এট্যাক, সেলিব্রেটিদেরকে এট্যাক, নোংরা, বিকৃত মস্তিষ্কের কিছু নিম্ন শ্রেনীর মানুষদের রাতারাতি সেলিব্রেটি বানানো, আইডি রিপোর্ট এবং আরো কতো আজে বাজে ইন্টার্নাল কাজ… এগুলো কেনো মেনশন করা হলোনা…?
ব্যাপারটা পুরোই শাক দিয়ে হাঙ্গর মাছ ঢাকার অপচেষ্টা…! জ্বী আমি DSU এর একজন এক্স মেম্বার, আমি একজন এক্স এডমিন। তাই অনেক ইন্টার্নাল অশ্লীলতার এবং অনেক অফেন্সিভ এবং ইল্যাগেল কাজকর্মের কথাও জানি। আগে এটা শুধুই ছিল একটা গ্রুপ। আমাদের DSU, আ ফান প্লেস টু চিল। কিন্তু এখন… বলা চলে এটি একটি অনলাইন পতিতালয়। যেখানে ছেলে- মেয়ে উভয় লিঙ্গ জড়িত হচ্ছে বিশ্রি ক্লাসেস কাজকর্মে।

এই গ্রুপের সদস্যদের প্রকাশ্যে এবং গোপনে আরেকটি চক্র রক্ষা করে আসছে। গোপন চক্রটির ব্যাপারে তেমন জানা না গেলেও সক্রিয় বর্তমান এডমিনদের ব্যাপারে আমরা জানতে পেরেছি।

দুইদিন আগের এডমিন প্যানেল


আজকে দায়িত্বে থাকা এডমিন প্যানেল



আপাতত প্রকাশ্যে এরাই আছে। এরা সবাই বয়সে তরুণ এবং কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই আছে দায়িত্বে। সম্ভবত তারা শিফট আকারে দায়িত্ব পরিবর্তনও করে থাকে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার অনেক বন্ধুর সাথে এব্যাপারে কথা বলেছি, তাদের বুঝিয়েছি তারা যেন আমার সাথে প্রতিবাদ করে। দুঃখজনক হলেও সত্যি বেশিরভাগই গ্রুপের সমর্থন করেছে। যেহুতু সাধারণত গ্রুপে মেয়েদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি নোংরামো করা হয় সেহুতু আমার ধারণা ছিল মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হবে। উপরন্তু আমার এক মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড গ্রুপের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে ব্লক করে দিয়েছে। আর গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই আমার ফেসবুক বন্ধুদের সংখ্যা কমছে অটোমেটিকভাবে।

গত এক সপ্তাহ ধরে গ্রুপের সদস্যদের উত্তর দিতে দিতে আমি ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। আমার এবং অন্যদের পোষ্টে, ইনবক্সে এমনকি সামনা সামনি এদের সবার মোলাকাত করতে করতে আমি সত্যিই বিস্মিত। এই আমাদের তরুণ জেনারেশন ! এদের উপরেই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ? এরা যারা ধর্ষণ করে, ধর্ষণকে সমর্থন করে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাইবার ক্রাইম আইন ভঙ্গ করেছেন আশা করব দ্রুত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

স্ক্রিনশটগুলোর কিছু আমাদের এক শুভাকাঙ্ক্ষী যে কিনা গ্রুপে আছেন তার আইডি ব্যবহার করে আমরা সংগ্রহ করেছি। বাকিগুলো আলাদা আলাদা অনেকেই ইনবক্সে পাঠিয়েছে আমাদের।

http://womenchapter.com/views/16204
এবং আরো অনেকের ফেসবুক স্ট্যাটাস।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×