মাত্র পড়ে শেষ করলাম জনপ্রিয় থ্রিলার লেখিকা আগাথা ক্রিস্টির “হিকরি ডিকরি ডক” এর বাংলা অনুবাদ। এটা আমি “বেস্ট অফ আগাথা ক্রিস্টি” থেকে পড়েছি। বইটা কলকাতার দে’জ পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত। অনুবাদ করেছেন অর্চন চক্রবর্তী ও উত্তম ঘোষ।
পুরনো আমলের অনেকগুলো ঘরওয়ালা বাড়ি নিয়ে নির্মিত এক ছাত্রাবাসে হঠাৎ করেই চুরি শুরু হয়। একেবারেই অদ্ভুত কিছু চুরি… এক পাটি জুতো, বাল্ব, গোসলের লবণ, ব্রেসলেট, লিপস্টিক, ট্রাউজার, রান্নার বই, কানের দুল সহ আরও অনেক কিছুই। এর মধ্যে একমাত্র দামি জিনিশটি ছিল একটি হীরের আংটি, তাও চুরি যাবার কিছুদিনের মধ্যেই সেটা স্যুপের বাটি থেকে উদ্ধার হয়। বাকি জিনিশগুলোও কম বেশি এদিক সেদিকে পাওয়া যেতে থাকে। কিন্তু এতো কষ্ট করে চুরি করে চোর সেগুলোর কোন সদ্ব্যবহার কেনও করছে না সেটা যতো বড় প্রশ্ন তার থেকেও বড় প্রশ্ন এটা কি শুধুমাত্রই চুরি নাকি শাক দিয়ে মাছ ঢাকা হচ্ছে ? গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারো বিভ্রান্ত হয়ে উঠেন, কিসে গুরুত্ব দিতে হবে সেটা বোঝাটাও বড্ড কঠিন ছিল।
হঠাৎই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন পোয়ারো, তাকে ছাত্রাবাসে যেতে হবে। এবং আচমকাই সেখানে চুরির প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি পুলিশ ডাকার কথা বলে উঠলেন। সাধারণ এই চুরির জন্য পুলিশ ডাকার বিষয়টা তখন অনেকের কাছেও অস্বাভাবিক মনে হলেও যখন একের পর এক খুন হতে শুরু করলো তখন কেউ দম ফেলার ফুসরত পেলো না। রহস্যময় এই আততায়ীর মূল কর্মকাণ্ড কি শুধুমাত্রই চুরি নাকি এর পিছনে আরও বড় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে তা জানতে এরকুল পোয়ারোর যথেষ্টই বেগ পেতে হয়েছে, সাথে ছিলেন ইন্সপেক্টর শার্প।
একথা অনস্বীকার্য যে লেখিকাদের মধ্যে আগাথা ক্রিস্টি রহস্য গল্প রচয়িতা হিসেবে প্রথমেই থাকবেন। প্রায় শতাধিক বই লিখেছেন তিনি। “হিকরি ডিকরি ডক” তন্মধ্যে অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। গল্পটা এক সাধারণ ক্রিপ্টোম্যানিয়াকের মনে হলেও কিছুটা আলাদা ধরণ ধারণ করেছিল।
স্বাসরুদ্ধকর এই থ্রিলারটি আমি অর্ধেক ঘুম কাতর চোখে পড়ে শেষ করেছি, এবং মনে হল এটার রিভিউ না লিখে ঘুমানো একটি অপরাধ হবে। তবে একথা বলা অনস্বীকার্য যে আমি যেই অনুবাদটি পড়েছি তা খুব একটা সহজপাঠ্য বলে মনে হয়নি আমার কাছে। ভাষাশৈলি নিয়ে কোন সমস্যা নেই, তবে শব্দ নির্বাচন আরেকটু সহজ হতে পারতো।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৭