(সিরিয়াস পাঠক রা এড়িয়ে যেতে পারেন )
গল্প- নীলাকাশের ওই সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে হারিয়ে যায় দূর নীলিমায়!! আমার এই গল্পে খলিল ভাইয়ের কথা বলেছিলাম। তা আজ উনার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাচ্ছি।
খলিল ভাই যত না তার মাস্তানি ক্যারেক্টার বা সমাজ সেবার জন্য এলাকায় প্রশিদ্ধ তার চেয়ে বেশি প্রশিদ্ধ তার বোকামি আচরণের জন্য। এলাকায় আসার পর থেকে শুনতাম খলিল ভাই মাঝে মাঝে গায়েব হয়ে যায় দুই বা তিন দিনের জন্য। দুঃখের ব্যাপার হল গায়েব হলে কেউ উনার খবর নেয়ার জন্য উনাকে ফোন করেনা বা উনার বাসায় যায়না। সবাই যাই তপন ডাক্তারের কাছে। তপন ডাক্তার এলাকায় ছোট খাট একটা ডিসপেনসারির দোকানে বসেন ও ফার্স্ট এইড টাইপ রুগীগুলো দেখেন। তো খলিল ভাই কোথাও মারপিট করে খেয়ে আসলে (কোনদিন শুনিনি উনি মার দিয়ে এসেছেন) তপন ডাক্তারই তার ফার্স্ট এইড দিয়ে থাকেন। তাই তপন ডাক্তারের কাছেই খলিল ভাইয়ের নিউজ পাওয়া যায়।
একবার খলিল ভাই বৃষ্টির খালার থাপ্পর খেয়ে ১ সপ্তাহ কিছু খেতে পারেননি। বৃষ্টির খালা যত না তার বদমেজাজি চেহারার জন্য পরিচিত ছিলেন তার চেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন উনার ভেপু সাইজ শরীরের জন্য। উনার ওজন কত হতে পারে এরকম একটা চ্যালেঞ্জে আমাদের মধ্যে কেউ ১২০কেজির নিচে বলেনি। অ্যান্টি এমনিতেই খলিল ভাইয়ের উপর রেগে ছিলেন। কারন উনি যত বারই বৃষ্টিদের বাসায় আসেন খলিল ভাইকে ওদের বাসার নিচে আবিষ্কার করেন। একদিন অ্যান্টি বাসা থেকে নামতেই খলিল ভাই সালাম দিয়ে কুশল জিজ্ঞেস করার পর হঠাৎ বোকার মত খ্যাক খ্যাক করে হেঁসে জিজ্ঞেস করলেন-
-অ্যান্টি আপনি খান কি?
এরপর ঠঠাঠাসসসসসসসস করে যে থাপ্পর টা পড়েছিল ভাইয়ের গালে সিস্মগ্রাপ যন্ত্রে মাপলে হয়তো রিখটার স্কেলে পাঁচ বা ছয় উঠত। অবশ্য অ্যান্টি কে খান কি জিজ্ঞেস না করে ঠিকভাবে কি খান জিজ্ঞেস করলেও উনি খলিল ভাইকে থাপ্পর দিতেন।
এতসবের পর খলিল ভাই রিয়ালাইজ করলেন, না এসব করে আর কত দিন। এবার কিছু একটা করতে হয়। তার উপর ফ্যামিলি থেকে চাপ দিচ্ছিল পার্মানেন্ট কিছু করার। বয়স হয়ে যাচ্ছে বিয়ে শাদীও করতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই এদিক অদিক দৌড়ে দালাল টালাল ধরে একদিন হুট করে কাতার চলে গেলেন। কাতার থেকে ফোন করে একদিন আমাকে বলেছিলেন উনি একটা কোম্পানির ‘ফোরম্যান’ হিসেবে চাকরী পেয়েছেন। তবে পরে অনেকের কাছে শুনেছি উনি আসলে আমাকে বলার সময় ভুল করে ‘ওয়াচ’ এর জায়গায় ‘ফোর’ বসিয়ে দিয়েছিলেন।
কিন্তু আজ এভাবেই আবার উনার খবর পাব বুঝতে পারিনি। এলাকার এক ছোট ভাই দৌড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল-
-কাজী ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে। বিমান বন্দর থেকে খলিল ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করছে।
-কি বলিস? খলিল ভাই এই কিছুদিন আগে না কাতার গেল, এত তাত্তারি কিভাবে আসছিলেন? আর পুলিশই বা কেন গ্রেফতার করল??
-খলিল ভাইয়ের প্যান্টের বেল্টের নিচে নাকি সোনা পাওয়া গেছে তাই গ্রেফতার করছে।
-পুলিশের মাথা মুতা কি সব গেছে? প্যান্টের বেল্টের নিচে যেটা থাকার কথা সেটা থাকলেও কি গ্রেফতার করতে হইব?? আইন বিচার কি সব উইঠা গেছে দেশ থেকে?
-ভাই সোনা মানে গোল্ড, গোল্ড পাইছে।
বুঝলাম খলিল ভাই স্বল্প সময় অধিক লাভের লোভে পড়ে ফেঁসে গেছেন। কি আর করা কিছুদিন পুলিশের ডলা খাক। আপনি একজনকে পছন্দ করেন। তাকে ভাল লাগার কথা আরেকজন যদি আপনাকে রেগুলার বলে আপনার শুনতে ভাল লাগবেনা। তাই খলিল ভাইয়ের ডলা খাওয়ার খবরে আমার তেমন খারাপ লাগছিলনা কিন্তু এলাকার ভাই বলে কথা। ছোট ভাই বলে কাঁধে বেশ কয়েকবার হাতও রেখেছিলেন। তাই ভাবছি দায়িত্ব থেকে একদিন উপরের মহলের অনুমতি সাপেক্ষে খলিল ভাইকে একবার দেখে আসব।
ততদিন ডলায় উপ্রে থাকুক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১৮