গত বৈশাখে একদিন হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে বাসার দারুয়ান উপরের পানির ট্যাঙ্ক এ পানি তুলতে পারেনি। বিদ্যুৎ আসার পরও পানি তোলার নাম নেই। ঠিক অই সময় নামলো বৃষ্টি। সারা বাড়ী কাঁপিয়ে। আহা দুনিয়া ঠাণ্ডা করে দেয়া বৃষ্টি। সাথে সাথেই ট্যাঙ্ক এ পানি, গোসল আরও কত কি।
বৃষ্টিদের বাসা ৩ তলায়। আর আমরা থাকি ২ তলায়। বাড়ী ওয়ালার একমাত্র মেয়ে হওয়াতে আলাদা আদরের কারনে বাসার সবাই তো ভয় পাইই, এমনকি ৩ এলাকা মিলে গুণ্ডা মত পোলারা পর্যন্ত তাকে ভয় পায়। আর দারুয়ান তো কোন ছার। আর পানি উঠানোর দায়িত্ব যেহেতু তার, তাই পানি না উঠানোতে ঝড়টা টা উপর দিয়ে গেসে।
এই বৃষ্টিকে আমিও ভয় পাই। কেন জানি সুন্দরী মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারিনা আমি। ইদানিং ভয়ের পরিমাণটা জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে। তাকে দেখলেই আমার ধুকপুকানির পরিমাণটা বেড়ে যায়, বুকের ভেতর ছ্যাঁত করে উঠে। তার রেশমি চুল গুলো যখন কাঁধের একপাশে বাম হাতে টেনে নিয়ে ফেলে দেয় দৃশ্যটা কয়েকবার কল্পনা করে আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম ফি'বার। উহু প্রেমে পরলাম না তো? না দস্যুরানী ফুলন দেবীর প্রেমে পড়া যায়, কিন্তু এই মেয়ের প্রেমে নয়!!!! সাক্ষাত রাক্ষস একটা মেয়ে!!!! উপরওয়ালা মনে হয় সুন্দরী মেয়েদের আলাদা মেজাজ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান। তবে সুন্দরী মেয়েদের লুকিয়ে যে ছেলেরা দেখে সেই আদি কাল থেকেই সেই ইচ্ছা থেকেই বেশ কবার আমি বৃষ্টিকে লুকিয়ে দেখেছি।
আজকাল তাকে নিয়ে খুব বেশিই ভাবছি। সকাল দুপুর রাত্রি। মাঝে মাঝে ভাবি একবার যদি বিকেলের সোনা রোদে দাঁড়িয়ে তার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারতাম!!
ঃ এভাবে লুকিয়ে মেয়ে দেখা কি আপনার অভ্যাস?
ঃ জি না।
ঃ তাহলে দেখেন কেন?
ঃ কই দেখি না তো।
ঃ একদম মিথ্যে বলবেন না (ধমকের সুরে )
সন্ধ্যে বেলা আমার লাগানো ফুল গাছের টবে পানি দেয়া আমার অনেক পুরনো কাজ। তবে বিকেল বেলা ছাদে দেখে শুনে বুঝে উঠতে হয়। কারন বিকেলে ছাদে উঠাটাও বৃষ্টির অনেক পুরনো অভ্যেস। তাই সে যখন ছাদ থেকে চলে যায় সেই সময় আমি উঠি। কিন্তু আজ টাইমিং ব্যর্থতার কারনে আমাকে সে ছাদেই পেয়ে যায়।
ঃ কাল আমি দেখিনি আপনাকে আমি ভার্সিটি যাবার সময় হ্যাংলোর মত তাকিয়ে ছিলেন??
ঃ জি না তো।
ঃ আবার মিথ্যে কথা?? (চোখ রাঙিয়ে)
ঃ জি হ্যা।
ঃ কেন দেখেন?
ঃ জানি না।
ঃ কেন জানেন না?
ঃ তাও জানিনা।
ঃ ভাল লাগে আমাকে?
ঃ তাও জানিনা!
ঃ মেয়েদের মত কথা বলেন কেন? মানুষের মানুষকে কি ভাল লাগতে পারেনা? লাগতেই পারে। জানেন না প্রতিটি মেয়েই মনে মনে একটা রাজপুত্রের স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে কোন এক সুপুরুষ এসে হাত ধরে বলবে ভালবাসি!!
আর তখনি আকাশ ভেঙে নামলো বৃষ্টি। না এই বৃষ্টি প্রকৃতির বৃষ্টি। দুজনেই ঠাই দাঁড়িয়ে ভিজতে লাগলাম। এক অদ্ভুত ভাল লাগা কাজ করে চলেছে আমার মাঝে। হয়তো তার ও মাঝে। দূর অজানা থেকে ভেসে আসতে লাগলো " ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁয়ো না।
জানলা ছুঁয়ে বৃষ্টির পানি এসে পড়ল পায়ে। ঘুমটা ভেঙেই গেল। ঘুম থেকে উঠে শম্ভিত ফিরে পেয়ে বুঝলাম আজকাল রেডিও মুন্নার ফেসবুক পেইজে ঘুরাঘুরির পরিমাণটা বেশি হচ্ছে। না ওটা কমিয়ে দিতে হবে।