আপনাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে, গত বছর ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ হতে মুন্সীগঞ্জ আসার পথে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চ ডুবিতে ত্রিশজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেই লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছিল। আজ ঘটলো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবি। মানুষের জীবন টিস্যু পেপারের চেয়েও ঠুনকো? একবার পানিতে ডুবলেই শেষ! যেকোনো দূর্ঘটনায় আমাদের দায়বদ্ধতার চেয়ে দায় এড়ানোর প্রবণতা বেশি। অপরাধের পরে দায় স্বীকার করে অনুতপ্ত হওয়া বা অনুশোচনা করার জাতি আমরা নই। দোষ স্বীকার করে সাজা ভোগ সেটা তো অনেক দূরের কথা। প্রতি নিয়ত মানুষের অমানুষিকতা ও হিংস্রতার কারণে মানুষকে মানুষ নয় দু পদী জন্তু বলে পরিচয় দেওয়ার দিন এসে গিয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদরবাসী বিভিন্ন প্রয়োজনে নিত্য যাওয়া আসা করে নারায়ণগঞ্জ। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরে কর্মস্থল এমন প্রায় সকলেই ঢাকা থেকে অফিস করে। তারা নারায়ণগঞ্জ হয়ে মুন্সীগঞ্জ আসে যায়।
নারায়ণগঞ্জ হতে সড়ক পথে সিএনজি চালিত থ্রীহুইলার ও হিউম্যান হলার চলে। চরম দুর্বিসহ যানজট এড়াতে অনেকেই সড়ক পথ পরিহার করে নদী পথে মুন্সীগঞ্জ যায়। নারায়ণগঞ্জ ঘাট হতে মুন্সীগঞ্জ ঘাট যেতে সময় লাগে এক ঘন্টা। পাড়ি দিতে হয় শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী দুইটা নদী। শীতলক্ষ্যা যেখানে গিয়ে ধলেশ্বরীর সাথে মিলিত হয়েছে সেই মিলনস্থলে মুন্সীগঞ্জ ঘাট। লম্বালম্বিভাবে শীতলক্ষ্যা পাড়ি দিয়ে ধলেশ্বরী গিয়ে আড়াআড়ি পাড়ি দিয়ে মুন্সীগঞ্জ ঘাটে যেতে হয়। শীতলক্ষ্যার দু ধারে সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় মালামাল নদী পথে পরিবহন হয়ে থাকে। অপর দিকে সদর ঘাট হতে দক্ষিণবঙ্গের সকল নৌযান বুড়িগঙ্গা অতিক্রম করে ধলেশ্বরী হয়ে মেঘনায় প্রবেশ করে।
এ কারণে ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা উভয় নৌ রুটই খুবই ব্যস্ততম।
মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ যাওয়া আসা করতে প্রায়ই এই নৌরুট ব্যবহার করি। এখানে ফিটনেস বিহীন নৌযান চলার পাশাপাশি চালকেরাও খুবই বেপরোয়া। প্রতি দিন শত শত যাত্রী চলাচলের এই নৌরুট নিরাপদ করা সময়ের দাবী।
আজকের এই ঘটনার জন্য হয়তো তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। কিন্তু অপরাধী ধরা ছোয়ার বাহিরেই থেকে যাবে। রং ও নাম পাল্টিয়ে অভিযুক্ত জাহাজ ঠিকই চলবে। শুধু চলবে না দূর্ঘটনার কবলে পড়া কিছু মানুষের জীবন!
-সোহাগ তানভীর
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৮:২১