সামুর মামুরা
-সাহসী সন্তান
রাষ্ট্রপতি নেই তার গতি ঘাটের মড়া নোটিশ বোর্ড,
ক্যামনে যে সে ব্লগ চালায় শুধুই ভোলে চাবি কোড।
প্রধানমন্ত্রী জানা আপু সামু ব্লগের নেত্রী,
আমরা সবাই তাহার সাথে একই পথের যাত্রী।
সামুর যত দুষ্ট ব্লগার কাঁপছে সবাই থরথর,
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহবুব এই বুঝি দেয় ক্রস ফায়ার।
অর্থের নাকি 'অ' বোঝে না অর্থমন্ত্রী আরিল ভাই,
যার কারনে প্রধানমন্ত্রী আছেন বড় দুশ্চিন্তায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুন আপুকে একটা কথা বলিবে,
এতই যদি বিদেশ থাকেন; দেশের লোকের কি হবে?
ঘুষ খায় না উপহার চায় আইনমন্ত্রী সুমন কর,
এবার ঈদে আশা তাহার তুলবে একটা নতুন ঘর।
ঈদের সময় বাড়ি যাব ঈদ প্রায়তো এসে গেছে,
যোগাযোগ মন্ত্রী আমিনুর ভাই পথ-ঘাট সব ঠিক আছে?
সবার তরে একটি কথা বোকা মানুষ বলতে চায়,
পর্যটন মন্ত্রী আছি বলে দেশের মানুষ সুখে খায়।
খাদ্যাভাবে মরছে মানুষ করছে সবাই হাহাকার,
মন্ত্রী হয়েও শায়মা আপুর প্রিয় জায়গা রান্নাঘর।
রাজাকারের বিচার নিয়ে আছেন বড় যন্ত্রনায়,
মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও এই পদে আছেন নদী ভাই।
সমাজ বলে কিচ্ছুটি নাই বিরোধীদল ঘোল পাকায়,
এসব বলে চাঁদগাজী ভাই ঘুমিয়ে দেখ নাক ডাকায়।
শিশু দেখার সময় নেই তার নারীকে নিয়ে খুব আশা,
এই মন্ত্রনালয়ের পদে আছেন কাল্পনিক_ভালবাসা।
সাংস্কৃতির বেহাল দশা নেই কোন তার খোঁজ খবর,
মেকাপ মেখে চেহারা ঢেকে রিকি চালায় এই দপ্তর।
প্রশ্ন ফাঁস আর নকল করলে ছাড় দেবো না কাউকে আর,
শিক্ষামন্ত্রী শঙ্কু বাবুর টাইটেল কিন্তু প্রফেসর!
নিজের স্বাস্থের খোঁজ খবর নাই অন্যকে দেয় ইঞ্জেকশন,
দমকা হাওয়ায় কে যে দেবে রমিত ভাইয়ের প্রটেকশন!
কদুর (লাউ) দাম নাই ছাগলে সব খায়(!) কৃষকের মাথায় হাত,
কৃষিমন্ত্রী মনিরা আপায় খাচ্ছেন দেখো পোলাও ভাত।
টাকার নেশায় ঘুম আসে না বাংলাদেশের নন্দ,
শিল্পমন্ত্রী পদে আছেন নাম দিপংকর চন্দ।
রেলমন্ত্রী প্রামানিক ভাই একটাই কথা তার মুখএ,
বিয়ে একটা করলেই হলো আজ-কাল বা সত্তরএ।
একটা কথা জানার জন্য খুতখুত করছে আমার মন,
পুরান ইঞ্জিন নতুন বগি একসাথ হয়ে চলছে কেমন?
সমবায়ের ঋনের ঠ্যালায় মানুষ এখন ঘরছাড়া,
কাবিল ভাই যে এই মন্ত্রী তাইতো আমরা দিশেহারা।
যুবমন্ত্রী হয়েও দেখ তাহার কত তজ-খাতির,
অপু তানভির আপনার নামে নালিশ আছে যুবতীর!
যেখান যত দখলদাররা সবাই এবার সাবধান হন,
এখন কিন্তু ভূমিমন্ত্রী আহমেদ জি এস ভাই জান।
বানিজ্যমন্ত্রীর ঠিকুজীটা লিখতে বড় মনটা চায়,
ঠিক তখনই কলমের কালি শেষ করছি এখন হায়রে হায়!
বানের ঠেলায় ঘুম ছুটে যায় চারি দিকে পনি থৈ,
এহসান সাবির পানিমন্ত্রী বরশি দিয়ে ধরছে কৈ।
নতুন নাকি পুরান ঢাকা জানি না তার ঘর কোথায়,
তবুও তিনি ঢাকা বাসী বলে গেলাম এই সভায়।
ধর্মের নামে অধর্ম হয় তারপরও নাই তাহার হুশ,
ধর্মমন্ত্রী মঞ্জুর চৌধুরী মারবো নাকি একটা ঢুশ?
প্রবাসিদের পাঠক সেঁজে আছেন তিনি খুব সুখে,
সারা জীবন বিদেশ করে দেশে আসবেন কোন মুখে?
বিজ্ঞান মন্ত্রী বিজ্ঞান নিয়ে আছেন বড় বেকায়দায়,
পোস্ট দিয়েই সে হঠাৎ করে কোথায় যেন উধাও হয়।
বশর সিদ্দিকী ভাইয়ের কাছে একটাই দাবী বলে যাই,
পোস্ট করিলেই হবে না তো কমেন্টেরও উত্তর চাই!
কি জানি নাম (?) খায় শুধু জাম শালবন না প্লাবন,
তথ্য মন্ত্রনালয় কোন দিকে ভাই (?) শুধায় তিনি জনে জন।
দেশের যত আগান বাগান করবো আমি পরিষ্কার,
আমারটা নয় জেন রসি কয় বনমন্ত্রী না সমঝদার?
বউ-শালী আর বান্ধবী নিয়ে আছেন যারা টেনশনে,
লুলমন্ত্রী আনোয়ার ভাইকে বলতে পারেন গোপনে!
এত জনের মাইনকা চিপায় সামু বড় বেকায়দায়,
চিনে রাখো নতুন যারা মামু-খালার পরিচয়!
পরিশেষে একটি কথা বলবো হেথায় সব জনে,
সাহসী সন্তান নামে আমি ব্লগ চালাই এই খানে।
যেদিন আমি হারিয়ে যাবো এই পৃথিবীর মাঝ থেকে,
সেদিন কি কেউ খুঁজবে আমায় ডাকবে কেঁদে ভাই বলে?
ইচ্ছা আছে নিজের কাছে থাকবো বেঁচে যতক্ষন,
আমার প্রিয় ব্লগটাকে রাখবো করে আপনজন।
শেষের কথা বলবো হেথা আমরা যার ব্লগার,
সত্য লেখায় ভয় পাবো না আসুক যত তুফান-ঝড়।
ছোট থাকতে সবাই দেখতে আলিফ লায়লার সিন্দাবাদ,
লেখার জন্য প্রিয় জায়গা সামু ব্লগ জিন্দাবাদ!
কবিতাটি আমার নিজেরই রচনা করা। তবে এই কবিতাটি রচনা করা হয়েছে সামু ব্লগেরই সিনিয়র ব্লগার জনাব 'সুমন কর' ভাইয়ের করা 'সামুর পরিবর্তিত ও সংশোধিত মন্ত্রী পরিষদ এবং ঈদ ফান পোস্ট ' নামক পোস্টের উদ্ধৃতি থেকে। এবং ছবিটাও ঐ পোস্ট থেকে সংগ্রহ করা। পোস্টটার লিংকঃ-http://www.somewhereinblog.net/blog/S_Kar/30055483#nogo
এখানে সেই বিখ্যাত পোস্টের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হলোঃ-
সম্মানিত ব্লগারগণ,
আপনারা সকলে অবগত আছেন, গত ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ ইং তারিখে সন্ধ্যা ৭:২৫ মিনিটে সামহোয়্যারইন ব্লগের গোপন নির্বাচন পদ্ধতিতে ব্লগীয় মন্ত্রীপরিষদ গঠন করা হয়েছিল।
পোস্টটা পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুনঃ- Click This Link আজ প্রায় আট মাস পর, এ মন্ত্রীপরিষদে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। যার মূল কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে তার মধ্যে পারিবারিক ব্যস্ততা, ব্যক্তিগত ব্যস্ততা, অসুস্থতা, মন্ত্রণালয়ে গরহাজির, নিজ নিজ এলাকার উন্নতি না করা এবং অতি মাত্রায় বিদেশ সফর - এগুলোকে বিবেচনা করা হয়েছে। [ দুর্নীতি, ঘুষ, টাকা আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদা-বাজি - এগুলোকে নগণ্য বিষয় হিসেবে বাদ দেয়া হয়েছে। কারণ এসব কুকীর্তি উপর থেকে নীচ মহল পর্যন্ত সবাই কম-বেশী করে থাকেন। ]
এক নজরে সামুর মন্ত্রী পরিষদঃ- ০১. রাষ্ট্রপতিঃ নোটিশবোর্ড; ০২. প্রধানমন্ত্রীঃ জানা; ০৩. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীঃ হাসান মাহবুব; ০৪. অর্থ মন্ত্রীঃ আরিল; ০৫. পররাষ্ট্র মন্ত্রীঃ জুন; ০৬. আইন মন্ত্রীঃ সুমন কর; ০৭. যোগাযোগ মন্ত্রীঃ আমিনুর রহমান; ০৮. পর্যটন মন্ত্রীঃ বোকা মানুষ বলতে চায়; ০৯. খাদ্য মন্ত্রীঃ শায়মা; ১০. মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীঃ শতদ্রু একটি নদী...; ১১. সমাজকল্যাণ মন্ত্রীঃ চাঁদগাজী; ১২. নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রীঃ কাল্পনিক_ভালোবাসা; ১৩. সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীঃ রিকি; ১৪. শিক্ষা মন্ত্রীঃ প্রোফেসর শঙ্কু; ১৫. স্বাস্থ্য মন্ত্রীঃ রমিত; ১৬. কৃষি মন্ত্রীঃ মনিরা সুলতানা; ১৭. শিল্প মন্ত্রীঃ দীপংকর চন্দ; ১৮. রেল মন্ত্রীঃ প্রামািনক; ১৯. পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীঃ কাবিল; ২০. যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীঃ অপু তানভীর; ২১. ভূমি মন্ত্রীঃ আহমেদ জী এস; ২২. বাণিজ্য মন্ত্রীঃ কলমের কালি শেষ; ২৩. পানি সম্পদ মন্ত্রীঃ এহসান সাবির; ২৪. প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ মন্ত্রীঃ ইমতিয়াজ ১৩; ২৫. গৃহায়ন মন্ত্রীঃ ঢাকাবাসী; ২৬. ধর্ম মন্ত্রীঃ মঞ্জুর চৌধুরী; ২৭. প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীঃ প্রবাসী পাঠক; ২৮. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীঃ বশর সিদ্দিকী; ২৯. তথ্য মন্ত্রীঃ প্লাবন২০০৩; ৩০. পরিবেশ ও বন মন্ত্রীঃ জেন রসি এবং ৩১. লুল মন্ত্রীঃ সেলিম আনোয়ার
আমার কবি হয়ে ওঠার পিছনের ইতিহাসঃ- আমার এই কবি হয়ে ওঠার পিছনে খুবই ইন্টারেস্টিং একটা ঘটনা জড়িত আছে। খুব সংক্ষেপে আমি সেই ঘটনাটা এখন বর্ননা করছি। তখন আমার বয়স কত হবে, ঐ ২০ কি ২২ বছর। পরপর পাঁচবার পরীক্ষা দিয়েও যখন প্রবেশিকা (বর্তমানে ম্যাট্রিক) পাশ করতে পারলাম না তখন মনে মনে একটা সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি আর এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবো না। যে পৃথিবী আমার একটা সামান্য সার্টিফিকেট দিতে পারলো না কি হবে সেই পৃথিবীতে বেঁচে থেকে? সুতরাং আত্মহত্যা করবো। যে ভাবেই হোক আত্মহত্যা আমাকে করতেই হবে! সব পরিকল্পনা চুড়ান্ত করে আমি আত্মহত্যার অন্যতম মহৌষধ 'বিষ' কেনার জন্য একটা দোকানে গিয়ে ১০০ গ্রাম বিষ কিনে নিয়ে বাড়িতে আসলাম। পথে কেউ যাতে বুঝতে না পারে যে আমার হাতে কি আছে, তাই আমি একটা কাগজের মোড়কে বোতলটা পেচিয়ে নিলাম। বাড়িতে এসে খুব ভাল দেখে একটা পজিশন মত জায়গা খুঁজে বিষ খাওযার জন্য যেইনা বোতলের গা থেকে কাগজের মোড়কটি খুলেছি! অমনি সেই কাগজের মোড়কের গায়ের একটা লেখায় আমার চোখ আটকে গেল। কাগজটি ছিল একটা সংবাদ পত্রের কাটিং। আর তাতে লেখা আছে, "বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার অনবদ্য কাব্য গ্রন্থ 'গিতাঞ্জলী' রচনার জন্য এবছর উপমহাদেশ থেকে প্রথম নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। অথচ তিনি শিক্ষা জীবনে ছয় ছয় বার প্রবেশিকা (ম্যাট্রিক) পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারেন নি!"
খবরটি পড়েই আমি খুশিতে ছাগলের পাঁচ নম্বর বাচ্চার মত লাফাতে শুরু করলাম। আর লাফাবই না কেন? আমি পাঁচবার পরীক্ষা দিয়ে একটা সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারলাম না বলে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি; অথচ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছয়বার পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারেন নি! কিন্তু উনার মনে তো এ নিয়ে কোন ভাবনা নেই! বরং আপন মনে কি সুন্দর সুন্দর কবিতা, গান,উপন্যাস আরও কত কি রচনা করে চলেছেন। এর চাইতে খুশির খবর আমার কাছে আর কিইবা হতে পারে? সাথে সাথে আমি আমার সিদ্ধান্ত বদল করে ফেললাম। আর মনে মনে ভাবলাম, 'আসলেই আমি একটা অপদার্থ! পরীক্ষায় পাস করতে না পারলে কি এমন হয়? গুরু তো ছয়বারেও পাস করতে পারেননি অথচ উনার মনে কি কোন অনুতাপ আছে? বরং কত সুন্দর সুন্দর শৈল্পিক লেখার মাধ্যমে উনি এখন বিশ্ব কবির মর্যাদা লাভ করতে পেরেছেন। এমন কি সেই সব রচনার জন্য তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ট পুরষ্কার নোবেলও পেয়ে গেছেন। ইনি তো আমার জন্ম জন্মান্তরের গুরু!' আমার অবশ্য নো বেল-টোবেলের দরকার নেই, তবে অন্তত একটা কদবেল হলেই যথেষ্ট!
যেই ভাবা সেই কাজ। চলে গেলাম কবি গুরুর কুঠিরে। গুরুকে আদোপান্ত সব কিছুই খুলে বললাম। আমার কথা শুনে গুরু আমার পিঠে একটা চাপড় মেরে বললেনঃ-
-বৎস কোন চিন্তা করিস না। যে ভাবেই হোক তোকে আমি কবি বানিয়ে তোর হাতে কদবেল ধরিয়ে দেবোই দেবো! তবে যতদিন না তুই ঠিক ঠাক মত কবি হয়ে উঠছিস ততদিন তুই আমার এখানেই থাকবি, আমার এখানেই খাবি।
আহঃ গুরুর কথাটা শুনতে যেন অমৃত্বের মত লাগলো। মনে মনে একটু উর্দূ আওড়ালাম (তখন দেশ স্বাধীন হয়নিতো তাই দোষ ছিল না);
-'ও হো হো, বহুত খুব, বহুত খুব! হাম দিলকো বহুত খুশ হুয়া!'
সেই দিন থেকেই আমি কবি গুরুর সাথে কবিতা রচনার ধ্যানে নিমগ্ন হলাম। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও আমি একবারের জন্যেও কিছুতেই কবিতার 'ক' লিখতে পারলাম না। মনে মনে তো এক প্রকার কবি হওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়ে ছিলাম। ভাবলাম, এই জিনিস আমার জন্য না! ঠিক এমন সময় কবি গুরুর কুঠিরে আমার কিছু দেশি কবির আগমন ঘটলো। এই যেমন ধরেনঃ- আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বনলতা সেনের রচয়িতা জীবনানন্দ দাশ, ক্ষনজন্মা কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য, কবি নির্মলেন্দু গুন ইত্যাদী আরো অনেকেই। উনাদের আগমন উপলক্ষে গুরু আমাকে ভিতর থেকে খুব সুন্দর করে চা বানিয়ে আনতে বললেন। যথারীতি আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই চা নিয়ে হাজির হলাম। আগেই বলে রাখি গুরু কিন্তু আমার চায়ের ভীষন ভক্ত। কোথাও বের হতে গেলে তো আমার চা না খেয়ে গেলে ওনার নাকি সে দিনটাই মাটি হয়ে যায়! কিন্তু আজ যে গুরুর কি হলো? চায়ে একটু মুখ লাগিয়েই তিনি চিৎকার করে উঠলেন। প্রথমে তো ভাবলাম কি জানি আমার চা খেয়ে উনি না জানি পাগল হয়ে গেলেন! কিন্তু পরে দেখলাম আসলেই তা নয়! উনি আমার চায়ে একটু মুখ লাগিয়েই গোঙানীর মত করে বলে উঠলেনঃ-
"আমারও পরাণও যাহা চায়; তার কিছু নাই, কিছু নাই এই চায়ে গো.....!!"
হায় হায় খাইছে আমারে! এইটা উনি কি কন? ঠিক তখনই দেখলাম পাশ থেকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার স্বভাব সুলভ বিদ্রোহী কন্ঠে বলে উঠলেনঃ-
"আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেই দিন হবো শান্ত!
যদি ভাল করে কেউ একটু চা বানিয়ে আনতো!!"
কথায় আছে 'এক জনের জন্য দশজন নষ্ট।' এখানে ঘটলোও ঠিক তাই। কবি নজরুলের বিদ্রোহী উক্তি শুনে কবি জীবনানন্দ দাশ উদাশ মুখে বলে উঠলেনঃ-
"আর আসিবো না ফিরে, রবি ঠাকুরের এই নিড়ে!
গরম চায়েতে চুমুক দিয়া ঠোঁট গিয়াছে পুড়ে!!"
আরে ভাই চা তো একটু গরম থাকতেই পারে? তাতে আবার কি সমস্যা হলো? জীবনে বহুত কোল্ড কফির নাম শুনছি, তাইলে কি চা ও কোল্ড হয়? কি জানি হবে হয়তো! এসব কথা ভাবছি ঠিক এমন সময় একটা ১৯-২০ বছরের বাচ্চার গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম। দেখলাম তিনি আর কেউ নন আমারই দেশি ভাই কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য। উনি একটু চিকন কন্ঠে বলে উঠলেনঃ-
"কবিতা, তোমাকে দিলাম বিদায়!
এক কাপ চা যেন ঝলসানো ছাই!!"
নাহঃ দেশি হইয়া কেউ এমন কাম করে। ভবলাম চায়ে সত্যি সত্যি ছাই পড়ছে কিনা কে জানে? হয়তো পানি গরম করতে যেয়ে পড়তেও পারে! কিন্তু সেটা এত জোর গলায় বলার কি আছে সেটাই তো বুঝতে পারলাম না! আমি উনার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে দেখলাম না; চায়ে কোন ছাই-টাই নেই। তবে চিনির পরিবর্তে সম্ভবত লবন দিয়ে ফেলছি! তাই এত শোরগোল। আরে ভাই চায়ে না হয় একটু চিনি দিতে ভুল হয়া গেছে। ভুল হয়না মানুষের? লবন আর চিনির মধ্যে কি কোন পার্থক্য আছে? দুইটাই তো সেম টু সেম; তাইলে ক্যামনে বুঝুম? কিন্তু তাই বলে একজন দেশি ভাইরে সবার সামনে কি এমন ভাবে কেউ অপমান করে? মনে মনে রাগে ফুঁসতে লাগলাম। ঠিক এমন সময় ছড়াকার হেলাল হাফিজ আমার সেই ছাই চাপা আগুনে বারুদ ঢেলে দিল। তিনি হৈহৈ করতে করতে বলে উঠলেনঃ-
"নষ্ট পাতির সস্তা চায়ে মুখ হয়েছে তিতা,
কষ্ট চেপে নষ্ট চায়ে মুখ দিয়েছি কিতা!"
কিরে........? সবাই এমন করে ক্যারে? মনে হয় সব পাগল হইয়া গেছে! তরকারিতে লবন দিয়ে খাইতে পারেন যখন, তখন চায়ে একটু লবন হইলে দোষ কি? মনে মনে কান্দন জোড়নের মওকা করছি ঠিক এমন সময় কবি নির্মলেন্দু গুনের কন্ঠস্বর শুনতে পেলামঃ-
"আমি হয়তো মানুষ না, মানুষ অন্যরা!
মানুষ হইলে এমন চায়ে চুমুক দিতাম না।"
ধ্যাত্তেরি! এত জনের ঠ্যালা না সামলাতে পেরে গুরু আবারও অসহায়ের মত চেচিয়ে উঠলেনঃ-
"ওরে অধম, ওরে আমার কাঁচা!
ভাল করে চা বানিয়ে এবার আমায় বাঁচা!"
উনাদের এই অপমান আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। আরে ভাই এত অপমানেও যদি রাগ না হয়, তাইলে রাগটা আছে কিসের জন্য। আর গুরু ও যেমন! আজ না হয় চা একটু খারাপই হইছে, তাই বলে একেবারে চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে হবে? সুতরাং আর রাগ স্বংবরন করতে না পেরে হঠাৎই আমি তিব্রো অথচ ঝাঝালো কন্ঠে বলে উঠলামঃ-
"ধ্যাত্তেরীকা ভাল্লাগেনা কি বানামু চা,
এবার আনবো লবন দিয়ে মরন খাবা খা।
এতই যদি চা খাওয়ার শখ, সাথে আনলেই পারেন;
যা পারিস তাই করিস আমি এবার খেয়ে মরেন!!"
এটাই আমার জীবনের প্রথম রচিত কোন কবিতার ছন্দ। সেই শুরু.........!!!! আর তারপর থেকে আজ অবধি চলে আসছে.........!!!!
পুনশ্চঃ- লেখার ছন্দ এবং চরন ঠিক রাখার জন্য কবিতাটির মধ্যে বেশ কিছু যায়গায় অনিচ্ছাসত্ত্বেও ব্যাঙ্গাত্ত্বক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। সেটাকে নিজের ব্যক্তিগত আক্রমন কিংবা সিরিয়াসলি না নিয়ে শুধুমাত্র মজা হিসাবে নিলেই খুশি হবো। আমি কাওকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমন করার জন্য এই কবিতাটি রচনা করিনি। তাছাড়া উল্লেখিত অধিকাংশ ব্লগারদের সম্পর্কে আমি খুব কমই জানি। আমি একজন নতুন ব্লগার, আর ভীষন ভাবে মজা করতে ভালবাসি। নিজে সব সময় হাসি-খুশি থাকি এবং অন্য কেউ আমার সাধ্যমত হাসি-খুশি রাখার চেষ্টা করি। তাই শুধুমাত্র একটু মজা, একটু হাসি এবং একটু ভাল লাগার জন্যই কবিতাটি রচনা করা। সুতরাং আমার বিশ্বাস আমার সহ ব্লগার ভাই এবং বোনেরা এটাকে সেভাবেই নেবেন!
বিঃদ্রঃ- আমি কোন বড় মাপের সাহিত্যিক কিংবা কবি নই। সুতরাং আমার লেখার মধ্যে ভুল ভ্রান্তি থাকতেই পারে। তাছাড়া টাইপিংয়ের ভুলের কারনে হয়তো অনেক জায়গায় বানানে ভুল হতে পারে। সেটাকে বিবেচ্য বিষয় হিসাবে না ধরে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে কৃতার্থ হবো।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরনঃ- "বিনা অনুমতিতে লেখাটি কপি কিংবা শেয়ার করা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে!"
"সবাইকেই অগ্রিম ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা"
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯