এক দেশে এক ধনবান দয়ালু লোক বাস করত কিন্ত তার স্ত্রী ছিল ধারী শয়তান। দয়ালু লোকটির কাছ থেকে কেহ কোন কালে খালি হাতে ফিরেছে এমন নজির ছিল না ঐ তল্লাটে। ওদিকে তার খান্নাস বৌ এই দান দক্ষিনায় বড় নাখোশ। দান খয়রাতে তার স্ত্রীর মহা কৃপণাতার আড়ালে মূলত: সব বাপের বাড়ী পাঠানোর ফন্দি!!
অতএব যা হওয়ার তাই হয়! দয়ালু লোকটি বাড়ী থাকলে কেউ খালি হাতে ফিরেনা আর বাড়ী না থাকলেই রাজত্ব চলে যায় হাড় কিপটে ধান্ধাবাজ খান্নাস বউয়ের হাতে! এভাবেই চলছিল দয়ালু আর ধান্ধাবাজ খান্নাসের দিন কাল।
এক দিন হল কি, ভিন গাঁয়ের এক ভিখারী এসেছে এ বাড়ীতে। কিছু চাইতেই খান্নাস বউয়ের সোজা সাপ্টা কথা, শোন বাপু, তাড়াতারি পালাও নয়তো আমার স্বামী টের পেলে সোজা উল্টো করে পুতা ঢুকিয়ে দেবে সরিষার তেল মেখে তখন বুঝবে এ বাড়ীতে ভিখ চাওয়ার মজা!!
ভিখারী এবার প্রমাদ গুনল! সে পরি কি মরি করে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াচ্ছে রাস্তার দিকে! এ দিকে দয়ালু লোকটিও বাড়ীর দিকে ফিরছিল সে পথেই। বাড়ী থেকে এভাবে উর্ধ্বশ্বাষে দৌড়াতে দেখে ভিখারীকে অনেক ডাকাডাকি করল দয়ালু লোকটি কিন্ত কে শোনে কার কথা!
অগত্যা সে বাড়ী ফিরে স্ত্রীকে বলল:
—আহা! ঐ দরিদ্র লোকটি আমার বাড়ী থেকে বেড় হয়ে ওভাবে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াচ্ছে কেন বউ?
—তা আর বল না! তোমার আষ্কারা পেয়ে না এই সব গরীব ইতরগুলো দিনকে দিন মাথায় উঠছে! এভাবে চললে বেশী দিন লাগবে না ফতুর হতে বুঝলে!
—ফালতু কথা বাদ দাওতো! কি হয়েছে, খুলে বল।
—কি আর বলব হ্যাঁ, ঐ হাদারামের খুপড়ীতে নাকি পুতা নাই, এ নাই, সে নাই এমনকি সরিষার তেলও নাই! শুনো হাভাতে পাজির কথা
—আরে ধ্যুত্তারি! শিঘ্র আসল কথা বল।
—তার একটা পুতা চাই আরো কত কি! সংগে সরিষার তেল। এখন আমাদেরকে এই সব নাদানদের জন্য ঘরে পুতাও রাখতে হবে দেখছি!!
—আহা! সামান্য একটা পুতা তা দিতেও তোমার এত কার্পণ্য! তুমি আর মানুষ হলে না গো!
—তাইলে ধর বাপু, এই নাও পুতা আর তেল! দিয়ে এসো!!
দয়াবান তো দয়াবান! এবার পুতা আর তেল নিয়ে সে ভিখারীর পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছে আর বলছে:
হে ভাই ভিখারী, এই নাও তোমার পুতা....
ভিখারী পিছন ফিরে দেখে, সত্যি গৃহস্বামীর এক হাতে পুতা আর এক হাতে সরিষার তেল
ওহে ...মাবুদ......, আমার ভিক্ষার দরকার নাই তুমি পুতা সামলাও
পদ্মা সাঁতরিয়ে পার হবগো মা! তবু পুতার দরকার নাই
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৩৭