অনেকে যাই বলেন না কেন আমি সিনন্স এর বক্তব্যকে সমর্থন করি।
আশরাফুল ফিফটি কেন, ৫০০ করলেও দলে চাই না । এটা একান্তই আমার ব্যাক্তি মতামত। আর সে শূণ্য রানে আউট হবে তা ৯৯ ভাগ নিশ্চিত বলা যায় যা আমি গত রাতেই সিডন্স এর আগে ঘোষনা দিছি। নীচে সংবাদ টি কপি পেষ্ট করলাম।
আশরাফুলের পক্ষে লেখার জন্য বোর্ড টাকা দেয়!
নোমান মোহাম্মদ, সেন্ট লুসিয়া থেকে
কত দিন পর রান করলেন মোহাম্মদ আশরাফুল! তার চেয়ে বড় কথা আশরাফুলের ব্যাটিংয়ে আবারও দেখা গেল সেই স্বতঃস্ফূর্ততা, যা তাঁকে বানিয়েছে ম্যাচ উইনার। নিজের দিনে বিশ্বসেরা। আশরাফুলের খুশির মাত্রাটা তাই সহজেই অনুমেয়। কোচ জেমি সিডন্সও নিশ্চয়ই আনন্দে ডগমগ। কিন্তু এ কী বললেন সিডন্স?
বলার ব্যাপারে বরাবরই অকপট এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ। রেখে-ঢেকে বলার উপমহাদেশীয় কেতা একদমই রপ্ত করতে পারেননি। হয়তো চানওনি। অস্ট্রেলিয়ান কায়দায় নিজের বিশ্বাসের কথা জানান দেন সশব্দে। সেটি তিনি দিতেই পারেন। তাই বলে ঘোষণা দিয়ে দেবেন, পরের ইনিংসে হরিজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শূন্য রানে আউট হবে আশরাফুল! আর এই ব্যাটসম্যানকে গত দুই বছর আগলে রাখার দায় চাপাবেন মিডিয়ার ঘাড়ে! সেটি এমনভাবেই যে আশরাফুলের সমালোচনা না করার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে সাংবাদিকদের টাকা দেওয়া হয় কি না, সেই প্রশ্নও তুললেন!
পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ জিততে জিততেও হার। এই আফসোসের রেণু মাঠ ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সেন্ট লুসিয়ার আকাশে-বাতাসে। ম্যাচ শেষের ঘণ্টা চারেক পর কোকো পাম হোটেলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ক্রিকেটারদের আড্ডায়ও ছিল তার রেশ। সব জটলার মূল সুর হা-পিত্যেশ। মাশরাফির আক্ষেপ, 'আমি যদি আর ১০টা রান কম দিতে পারতাম!' বেদনাভেজা কণ্ঠস্বরে তামিমের উচ্চারণ, 'শেষ পাঁচ ওভারে ৫০ রান (আসলে ৫৩) হলো না!' ডিনার করতে বাইরে গিয়েছিলেন সিডন্স। ফেরার পথে হোটেলের সামনে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন। হারে হতাশ হলেও আশরাফুলের ইনিংস নিয়ে নিশ্চয়ই উচ্ছ্বসিত? সিডন্সের অন্য রকম প্রতিক্রিয়া, 'অ্যাশের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু পরের ম্যাচে তো আবার সে-ই হবে। দেখবেন, শূন্য রানে আউট।'
_কেন এমন হবে?
সিডন্স : বছর দশেক ধরে তো তা-ই হচ্ছে।
_এমন যেন আর না হয়, কোচ হিসেবে সেটি নিশ্চিত করাও তো আপনারই দায়িত্ব?
সিডন্স : কোচের দায়িত্ব বলার। আমি সেটি বলছি। কিন্তু ও যদি আমার কথা না শোনে, তাহলে আমি কী করতে পারি?
_আজ যেমন দুর্দান্ত ইনিংস খেলল, তাতে তো অবস্থা পাল্টেও যেতে পারে। হয়তো দেখা গেল পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে দিল...
সিডন্স : হাহ্ (অবিশ্বাসের হাসি)। সেটি হলে ভালো। কিন্তু তা হওয়ার নয়। আজকের ইনিংসেও ওর অন্তত পাঁচবার আউট হওয়ার কথা ছিল। রিভার্স সুইপ করে; ইম্প্রোভাইজড শট খেলে। পরের দিন দেখবেন এসব করতে গিয়ে শূন্য রানে আউট।
সেটি হতেই পারে। এ-ই তো আশরাফুলের সমস্যা। নইলে তাঁর নাম যুবরাজ সিং, মাইকেল ক্লার্কদের সঙ্গে প্রজন্মসেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় উচ্চারিত হতো। তার পরও সিডন্সের এমন বিবৃতি বিস্ময়কর। এতদিন পর শিষ্য রানে ফিরল; কোথায় গুরু তাঁর পিঠ চাপড়ে দেবেন, তা না। আশরাফুলকে যেন প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছেন। যদিও মুখের কথা, 'আমি ওর ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় ভক্ত। কিন্তু বছর দেড়েক ধরে সে ম্যাচের পর ম্যাচ আমার মাথা নুইয়ে দিয়েছে। তাই আমি প্রেসে তার সমালোচনা করা শুরু করলাম। ওর ওপর চাপ তৈরি করে ওর সেরাটা বের করে আনার এ এক চেষ্টা।' কিন্তু সিডন্স কি জানেন, আশরাফুলের সহজাত খেলাটি যে এর কারণে আরো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? জানেন না। অথচ কোচিংয়ের আদ্দিজ্ঞান বলে, খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটি বের করে আনতে হলে তাদের মনস্তত্ত্ব কোচের বোঝা চাই।
সিডন্স সেটি বোঝেন না। তাই তিনি প্রশ্ন তোলেন আশরাফুলের টেকনিক নিয়ে। অথচ অভিন্ন এই টেকনিক নিয়েই তো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কার্ডিফে সেই সেঞ্চুরি করেছিলেন 'অ্যাশ'। কিংবা ২০০৭-এর ওয়ানডে বিশ্বকাপে গায়ানায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৭। অথবা শ্রীলঙ্কা-ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরিগুলো। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে মণি-মুক্তা খচিত সব ইনিংস। সমস্যা বলতে ছিল ধারাবাহিকতা। দুটি কাব্যিক ইনিংসের মাঝে দীর্ঘস্থায়ী ব্যর্থতা। সেটি থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে আশরাফুলে হাতে-পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিলেন সিডন্স। ব্যাক লিফটে সমস্যা, এই শট খেলা যাবে, ওটি যাবে না, টিম রুল_ইত্যাকার বিধি-নিষেধের যোগফলে আশরাফুল হয়েছেন খাঁচাবন্দি সেই পাখি, যার ওপর নির্দেশ জারি হয়েছে আকাশে ওড়ার!
সিডন্স নিজেকে আশরাফুলের সবচেয়ে বড় ভক্ত দাবি করলেও ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। বিভিন্ন সময় তাঁর প্রতি বিদ্বেষটা ফুটে বেরিয়েছে। গত টোয়েন্টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ই প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন আশরাফুলের অধিনায়কত্ব। তাঁর ফিল্ডিং সাজানো ও নিজের হাতে বোলিং তুলে নেওয়াটা পছন্দ হয়নি সিডন্সের। তারও আগে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বলে এসেছিলেন, অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত আশরাফুলের। আর এখন তো সবাইকেই বলে বেড়ান, আশরাফুল দলে আছে শুধু তাঁর কোনো বিকল্প নেই দেখে। 'আশরাফুল-রোগের' কি এই ওষুধ?
আশরাফুলের প্রতি সিডন্সের বিতৃষ্ণা টের পাওয়া যায় আরেকটি কথায়। বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাঁর জিজ্ঞাসা, 'আপনাদের কি বিসিবি থেকে টাকা দেওয়া হয়, যেন আশরাফুলের বিরুদ্ধে কিছু না লেখেন?' সিডন্সের এই প্রশ্নটি এমনই আচমকা যে উপস্থিত দুই সাংবাদিক বিষয়টি প্রথমে বুঝিইনি। একই প্রশ্ন দ্বিতীয়বার করায় ফিরল সংবিত। প্রবল প্রতিবাদ জানাতেই সিডন্সের ঠোঁটের কোণে ব্যঙ্গের হাসি, 'বাংলাদেশের কোথায় কী হয়, আমি কি আর তা জানি না!'
_জানলে আমাদের জানান। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করি।
সিডন্স : বিষয়টি আপনারাও জানেন। এখন শুধু শুধু 'না' বলছেন।
_আপনি শুধু সাংবাদিকদের না, বোর্ডকেও দাঁড় করালেন কাঠগড়ায়...
সিডন্স : আমার যা মনে হয়েছে, তা-ই বলেছি। আর আমি তো বলিনি যে এমনটাই হয়েছে। শুধু জানতে চাইছি, হয় কি না?
_প্রশ্ন তুলেই তো প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাংবাদিকদের। বোর্ডকেও। বিসিবির কোন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের টাকা দিয়েছে, জানলে তাঁদের নাম অন্তত বলুন!
সিডন্স : সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব আপনাদের।
_সাংবাদিকদের কেন এমন মনে হলো?
সিডন্স : কারণ, আশরাফুলের বিরুদ্ধে আপনারা কখনো একটি কথাও লেখেননি।
_ভুল জানেন। আশরাফুলের যত সমালোচনা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো ক্রিকেটারের এমনটি হয়নি।
সিডন্স : সেটি আপনাদের মনে হতে পারে। আমারটা আমি বললাম।
নির্বিকার মুখে বলে গেলেন সিডন্স। শুধু বলার জন্য বলা নয়, বলার ধরনেই স্পষ্ট যে বিশ্বাস থেকেই বলছেন তিনি। কথাটি হয় আশরাফুল-বিদ্বেষ, নয় সাংবাদিক বিদ্বেষ থেকে। সাংবাদিকদের প্রতি রাগের কারণ, কেন তাঁর ক্রিকেটারকে সমালোচনা করা হয় না। পৃথিবীর আর কোনো খেলার আর কোনো কোচ নিজের খেলোয়াড়ের সমালোচনা না করায় গণমাধ্যমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন? কোনো ঝুঁকি না নিয়েই বলা যায়, এ ক্ষেত্রে সিডন্সই প্রথম ব্যক্তি! হয়তো শেষও।
সিডন্সের বিস্ময়কর অভিযোগ
'আপনাদের কি বিসিবি থেকে টাকা দেওয়া হয়, যেন আশরাফুলের বিরুদ্ধে কিছু না লেখেন?' সিডন্সের এই প্রশ্নটি এমনই আচমকা যে উপস্থিত দুই সাংবাদিক বিষয়টি প্রথমে বুঝিইনি। একই প্রশ্ন দ্বিতীয়বার করায় ফিরল সংবিৎ। প্রবল প্রতিবাদ জানাতেই সিডন্সের ঠোঁটের কোণে ব্যঙ্গের হাসি, 'বাংলাদেশের কোথায় কী হয়, আমি কি আর তা জানি না!'
_জানলে আমাদের জানান। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করি।
সিডন্স : বিষয়টি আপনারাও জানেন। এখন শুধু শুধু 'না' বলছেন।
_আপনি শুধু সাংবাদিকদের না, বোর্ডকেও দাঁড় করালেন কাঠগড়ায়...
সিডন্স : আমার যা মনে হয়েছে, তা-ই বলেছি। আর আমি তো বলিনি যে এমনটাই হয়েছে। শুধু জানতে চাইছি, হয় কি না?
_প্রশ্ন তুলেই তো প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাংবাদিকদের। বোর্ডকেও। বিসিবির কোন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের টাকা দিয়েছে, জানলে তাঁদের নাম অন্তত বলুন!
সিডন্স : সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব আপনাদের।
_সাংবাদিকদের কেন এমন মনে হলো?
সিডন্স : কারণ, আশরাফুলের বিরুদ্ধে আপনারা কখনো একটি কথাও লেখেননি।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১০ বিকাল ৩:১৪