ভার্সিটির যাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার ফাঁকে ফাঁকে বেশ কিছুদিন ধরেই উড়াল দিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার ইচ্ছা হচ্ছিলো । রুটিন ভঙ্গের কোন অবকাশ না থাকলেও অবশেষে সেই ধৃষ্টতা দেখালাম , তাও ল্যাব এর ক্লাস কামাই দিয়ে । যাওয়ার পূর্বমুহূর্তও পর্যন্ত একা যাওয়ার প্লান থাকলেও অন্তিম মুহূর্তে একজন সফরসঙ্গী পেলাম সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। তার সঙ্গ পেয়ে ঘুচেছে একাকীত্ব , কমেছে পথের ক্লান্তি আর ভ্রমণ হয়েছে আনন্দময় - ধন্যবাদ তাকে।
কিভাবে যাবেন ও ভাড়া :
গুলিস্থান থেকে অনেক বাস রয়েছে - আসিয়ান , বন্ধন , উৎসব , সেতু , একতা এগুলোতে করে সোজা চলে যান চাষারা । ভাড়া ৩০ টাকা । বিআরটিসি ও আসিয়ানের এসি বাস আছে ভাড়া ডবল।
এবার রিক্সা - চাষারা থেকে হাজীগঞ্জ দুর্গ ২০ টাকা , হাজীগঞ্জ দুর্গ থেকে লঞ্চ টার্মিনাল ৩০ টাকা ।নদী পারাপার জনপ্রতি ২ টাকা আর কম মানুষ যেতে যাইলে রিজার্ভ ১০ টাকা করে। নদীর ওপার থেকে সোনাকান্দা দুর্গ হয়ে কদম রসুল দরগা ঘুরে আবার ঘাটে ফিরে আসবেন ১৫০ -২০০ টাকা ।
পুরো রুটটি : গুলিস্থান > চাষারা > রিক্সাতে হাজীগঞ্জ > রিক্সাতে লঞ্চ টার্মিনাল > নদী পার > সোনাকান্দা দুর্গ > কদম রসুল দরগা > নদী পার হয়ে টার্মিনাল > টার্মিনাল থেকেই ঢাকার বাস ।
ভ্রমণ বৃত্তান্ত :
সকাল ৮ টার দিকে বেড়িয়ে পড়লাম সেই পুরনো কয়েকবার রিপু করা ধুসর রঙের বিলাইয়ের চক্ষু ব্রান্ডের শার্টটি পড়ে । গন্তব্য স্থান নারায়ণগঞ্জের চাষারা , গুলিস্থান থেকে যেতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় না লাগে না । সায়দাবাদের পর থেকে রাস্তায় বেশ ভালোই জ্যাম , তাই সায়দাবাদ থেকে ছোট্ট করে রিক্সা নিয়ে কিছুদূর গেলাম চিপাচাপা দিয়ে এরপর বাসে সাইনবোর্ড , সাইনবোর্ড থেকে চাষারা । একটু অগোছালো ভাবেই আজ বেড়িয়ে পরেছিলাম , রোদের তীব্রতা মোটামুটি । চাষারা নেমে টেম্পু রিক্সা দুটোই পেলাম, টেম্পুতে ৫ টাকা আর রিক্সা ২০ টাকা । ২ জন আমরা তাই রিক্সা নিয়ে আরামে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল । কিন্তু আরাম বেশীক্ষণ সইলো না , রিক্সা ওয়ালা ১ নম্বরের বদ , কেল্লার আগেই নামিয়ে দিলো < বিবি মরিয়মের> মাজারের কাছে । হইলো না কাজ , আশে পাশে দুএক জন কে জিজ্ঞাসা করলাম কেও তেমন উত্তর দিতে পারল না যেন পাত্তাই দিলো না । কেল্লাটা কিন্তু পাশেই , মেইন রোড থেকে একটু ভিতরে । হাঁটা দিলাম দুজনে । তেমন আহামরি কিছু না , তবে বিরাট কেল্লা । ঐতিহাসিক জিনিস বইলা কথা ।
হাজীগঞ্জ দুর্গ :
এটি একটি জল দুর্গ । তখনকার ঢাকাকে আক্রমন থেকে রক্ষা করতে ১৬৫০ সালের কিছু আগে বা পরে শীতলক্ষ্যা নদীর ধারে মূলত ৩ টি দুর্গ তৈরি করে বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈঁসা খাঁ । নারায়ণগঞ্জের কিল্লারপুরে হাজীগঞ্জ , সোনাকান্দা দুর্গ ও মুন্সিগঞ্জ এ ইদ্রাকপুর দুর্গ ।
এবার কিছু ফটুক :
যাওয়ার পথে হাজীগঞ্জ ফায়ার ষ্টেশন
নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল
প্রবেশের পথে
প্রবেশ তোরণ
ভিতরের দিক
ওয়াচ টাওয়ার
ভিতর থেকে ঐ দেখা যায় প্রবেশ তোরণ
এবার শীতলক্ষ্যা নদী - -
লঞ্চ টার্মিনাল
>> আগামী পর্বে সোনাকান্দা দুর্গ ও কদম রসুল দরগা ।
পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন , , রেখে আসবেন পদচিহ্ন আর নিয়ে আসবেন শুধুই ফটোগ্রাফ
==================================
সাজিদ ঢাকা'র ভ্রমণ পোস্ট সংকলন
==================================
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১০