রাত ৮ টায় অবশেষে , প্রায় ১৪ ঘণ্টার জার্নি শেষে নামলাম , কুয়াকাটা । , , হোটেল খোজার পালা , কয়েকটা দেখলাম , ভাড়া ৭০০-৮০০ , ডবল বেড নন এসি। কিন্তু এগুলান বীচ থেকে দূরে তাই সামনের দিকে আগালাম । সমুদ্রের কাছে হোটেল হলে রাতের বেলা বারান্দায় বাতাস পাবেন আর সমুদ্রের আওয়াজ ও পাবেন । পর্যটনের সুন্দর একটা হোটেল আছে তবে দাম বেশি । প্রায় ভালো সব গুলো ঘুরে , শেষে গেলাম হোটেল গ্রেভার ইন , , , অনেক ক্যাঁচাক্যাচি , তেল মাখন মারার পর ৮০০ টাকা করে ঠিক করলাম । নতুন হোটেল , রুম ও অস্থির ।
শান্তিতে বিছানায় লাফ দিলাম , , ক্লান্তিতে ঘুম আসছে । নতুন জায়গায় এলাম বাঁদরামি না করলে হয় , , তাড়াতাড়ি গসুল করে বেড়িয়ে পড়লাম ।
খিদা ও লেগেছিল সেই রকম । খাবারের বেশি ভালো হোটেল দেখলাম না । বসলাম একটাতে । কোরাল মাছ দিয়ে ভাত , খেলাম তো মজা করেই , কিন্তু আরও মজা পেলুম বিল দিতে গিয়ে ১২০ টাকা করে কোরাল , , বিল প্রায় ৩৬০ , ২ জনে । দাম না জিজ্ঞাসা করে খেলে জা হয় আর কি
খাওয়া শেষ , পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি । এবার চলো , সমুদ্র আর কি কি আছে দেখি
রাত ১০ টার দিক , বাইক ভাড়া করতে গেলাম , , রাস্তা ঘাটে অনেক বাইক ওয়ালা , ফুচকা খেতে খেতে একটার সাথে কথা হল , , , সে আমাদের সাথে কাল থাকবে , , দর্শনীয় স্পট গুলান দেখাবে । ৫০০ টাকা প্রতি বাইক , ১ টি বাইকে চালক ছাড়া ২ জন বসতে পারবেন ।
আমি তো মাসাল্লাহ , আর আনুপ তো দানব । এক বাইকে ২ জন
রাত ১১ টা , , আপন মনে , ছন্দে আনন্দে হোটেল ফিরছি , , রাস্তায় মানুষ একটু কম । ২ মাতালের পাল্লায় পড়লাম । প্রথমেই ডাক দিল আমাকে , আমি দিল খোলা মানুষ , কুলাঙ্গার টাকে চিনতে পারি নাই , , হাবিজাবি প্যাঁচাল , ছিনতাই এর উদ্দেশ্য , এর পর দানবীয় অনুপের আগমন , , এবং রক্ষা পেলাম । মাতাল ভাইয়েদের একজন নাকি গোলাম মাওলানা রনির শালা
ভোর ৪:৩০ - সূর্যোদয় দেখা
এত ভোরে বাইক হাজির , বের হয়ে গেলাম বাইকে করে । ভাবছিলাম এত সকাল , ভুল রাত এখনও । কোন বিপদে যে পড়ি । কিন্তু বীচের কাছে যেতেই বুজলাম , এইখানে সবাই ই এই সময়েই উঠে যায় । বাইক নিয়ে অনেকেই রেডি , গন্তব্য বীচের পূর্ব প্রান্ত ।
এই হালকা আলোর মধ্যে দিয়েই বাইকে আমরা ৩ জন । বালি বেশ ভালই শক্ত । বালি দেবে যাচ্ছে না । সূর্যের কোন খবর নাই । সূর্যের মোবাইল ও নাই ফোন দিতাম ।
একবারে পূর্বে চলে এসেছি । এখানেই গঙ্গা মতির চর । খালি জঙ্গল , কাজের কিছুই নাই । এই ভোর বেলাতেই জেলেরা বেড়িয়ে গেছে মাছ ধরতে ।
ধীরে ধীরে ফর্সা হচ্ছে , কিন্তু সূর্য দেখা যাচ্ছে না।
মাঝে একটা ছোট খালের মতো , নৌকা দিয়ে বাইক পার করলাম ।
জেলের সাময়িক বাড়ি
পূর্ব প্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আছি। সূর্যের খবর নাই , মেঘে আকাশ ঢাকা । মাঝে একবার বৃষ্টি ও নামলো , কিন্তু হায় য় য় য় য়
সমুদ্রের পারে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে , সূর্যের অপেক্ষায় ।
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এবার বিরক্ত লাগছে । খুবই বিরক্ত । সূর্য তুই মুড়ি খা , , ।
জি হ্যাঁ ----- ইহা বাস্তব , দেশি টাইটানিকের উপর আনুপ
রউনা দিলাম মিশ্রী পাড়ার উদ্দেশে , , পথে দেখেন এইটা কি
সূর্য উইঠে গেছে , ,কিন্তু অনেক উপরে । সূর্যোদয় দেখায় মূল সৌন্দর্য হল , সমুদ্রর বুক থেকে আসতে আসতে উঠার দৃশ্য । কিন্তু ইহা আর দেখা হইল না ।
মিশ্রী পাড়া বৌদ্ধ মন্দির:
সমুদ্র সৈকত থেকে ৮ কিমি পূর্বে , মিশ্রী পাড়া - রাখাইনদের আবাসস্থল। বাইক নিয়ে রউনা দিলাম । ৬ :৩০ এ আমরা মিশ্রী পাড়া বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে । কিন্তু মন্দির বন্ধ। কি করা যায় , , , আসে পাশে কেও নেই , , কিছু দূরে দেখলাম বৌদ্ধ ছোট পোলাপান । মাথা চান্দি , এত টুকুন পোলা সেই কি ভাব , , , এখন নাকি খোলা যাবে না । অনেক আকুতি মিনুতি করলাম , , কিন্তু বদ গুলান
এখানেই রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি
কি আর করার , নাসতা করা দরকার ,
এই যে আমাদের পাইলট - - পোলা খুবভালো যদিও প্রথমে সন্দেহ করসিলাম ।
নাস্তা শেরে ডাব ও খেলুম । ইতিমধ্যে আরও ২ জন ভিজিটর আসলো। বাপ আর পোলা । ২ জন ২ টা বাইকে
এবার চান্দি গেট খুলতে বাধ্য । অতিমাত্রায় ভদ্র হয়ে ভিতরে গেলাম , , কারন স্বর্ণ মন্দিরে এই বৌদ্ধ ভিক্ষু দের দাবড়ানির কথা মনে ছিল আর এবার ফুল প্যান্ট পরেই আসছি।
এই হইল সেই মূর্তি
বহুত উঁচা কই জানি পড়ছিলাম ৩৬ ফুট মনে হয় ।
মন্দির দেখিয়া ১০ টাকা সাহায্য দিলাম । আরও বেশি দিতে গেসিলাম , , কিন্তু হামরার পাইলট সাব মানা করিল , , ঐ চান্দি নাকি একটা বেয়াদব , , তাই বেশি যেন না দেই ।
রাখাইন পল্লী
পাশেই রাখাইনদের বাড়ি , পাইলট লইয়া গেল । হাঁটিয়া হাঁটিয়া দেখলুম । বাড়ি গুলান , মাটি থেকে উপরে ।
আরাকান রাজ্য থেকে বিতারিত হয়ে আসা রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের রাজা মং এর নেতৃত্বে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে চট্রগ্রাম এবং পরে পটুয়াখালীর এ জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় তাদের বসতি স্থাপন করে। নিজস্ব ঐতিহ্য ও কৃষ্টে গড়ে তোলে নিজেদের আবাসস্থল। তৎকালীন সরকার রাখাইন সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওই সময় ৩ একর এবং তাদের নিজস্ব পল্লীব জন্যে ১২ একর করে সম্পত্তি প্রদান করেন। এখনও তাদের ঐতিহ্যবাহী কলাপাড়ায় বিদ্যমান আছে।
ডিজিটাল বাড়ি , আগে বাড়ি মাচার উপর হইত , , অহন এগুলান পাক্কা । মানে দেখলে মনে হয় মাটির নিচের পাইলিং উপরে উইঠা আসছে
তাঁতে কাপড়বুনা হচ্ছে , , বহুত দাম । দাম শুইনা মনে হইল চামড়ার ব্যাগ ও এর থেকে দাম কম । মনে মনে কইলাম , আমি খালি পারি না দেইখা কাপড় বুনতে
এই সব আজাইরা কাজ কাম করতে করতে এবার বাইকে , , এবার যাব ঝাপাঝাপি করতে , , নন্দন পার্ক , সমুদ্রে
সৈকতে কিছু পোলাপান ছবি তোলার জন্য পাগল কইরা ফেলল । সেমি ডেসলার কামরা , , , , ২০ টাকা কইরা প্রিন্ট ।
আর ৫ টাকা কইরা যদি পেনড্রাইভে নেন ।
এবার কিছু সেমি ডেসলার এ তোলা ফটু
জেলেরা এভাবে গুরা চিংড়ি খুঁজে , , আমরাও হাত লাগালাম। দেইখা যত সস্তা মনে হইতেসে , করতে গেলে ঠেলা আছে। ঢেউ এর বাড়িতে এক জায়গায় থাকা যায় না।
এই যে আমাদের কেমরা ম্যান , , অনুপ পোজ দিসে , আর আমি ডিজিটাল দিয়া মজা লইলাম ।
মাত্র সকাল ৯ টা , , , বাকি আছে আরও অনেক দর্শনীয় জায়গা- - সেই বিখ্যাত কুয়া , সিমা মন্দির , ক্রাব আইল্যান্ড , শুটকি পল্লী , সাবের হোসেন চৌধুরীর অস্থির রিসোর্ট।
সাথে থাকুন
* বানান ভুল ও গুরুচণ্ডালী দোষ ক্ষমা করবেন।