গুলিস্তান ফার্মগেটে তপ্ত গরমে ড্রেনের পানিতে বানানো বরফে শুধু নামে ফিল্টারের পানি দিয়ে বানানো ঠাণ্ডা শরবত ঝলসে যাওয়া কলিজাটাকে প্রশান্তি দিলেও কখন ভাবার প্রয়োজন মনে করিনি কি খাচ্ছি
ভ্রমণ প্রিয় বা প্রত্তাহিক কর্মব্যস্ত জীবনে পিষ্ট যে কেও সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন কিছু অতি পরিচিত রোগে , , আর অতি সহজে সামান্য অর্থ ব্যয় করে পেতে পারেন আজীবন মুক্তি ।
সিদ্ধান্ত আপনার পরামর্শ আমাদের
ভ্রমণ বাংলাদেশের কল্যাণে টুরিস্টদের জন্য প্রয়োজনীয় তথা সকলের জন্য কিছু পরিচিত রোগের ভ্যাকসিনের একটি কর্মশালায় অংশ নেই ।
নিচে রোগের নাম হালকা বর্ণনা দেয়া হল ।
* ভ্যাকসিনের ডোজ ও মূল্য তালিকার একটি ফটুও নিচে দেয়া আছে সাথে ম্যালেরিয়ার ঔষধের নাম ও ডোজ।
হেপাটাইটিস-বি :
সব গুলোর মধ্যে এটাই সবচেয়ে মারাত্মক। আক্রান্ত হয়ে সাথে সাথে কিছুই বুজতে পারবেন না । সাধারণত ৫-১০ বছর পর ধরা পরে। লিভারকে আক্রমন করে অকেজো করে ফেলে।
সংক্রমিত সূচের মাধ্যমে রক্তদান বা গ্রহন , বাহকের রক্ত লেগে থাকা টুথব্রাশ , রেজার,ইনজেকশন ব্যবহারে। এমনকি সংক্রামিত লোকের রক্ত কোথাও লেগে শুকিয়ে গেলেও সেখানে জীবাণু থেকে যায়।
HBsAg Test এর মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন আপনি আক্রান্ত কিনা। আক্রান্ত হলে মৃত্যু নিশ্চিত আর ভ্যাকসিন দিয়েও কাজে লাগবে না । বিদেশে যেতে এই টিকা দিতেই হবে।
প্রতিরোধ
হেপাটাইটিস-বি এর টিকা ৪টি ডোজ নিতে হয়। ১ম ৩টি ১ মাস পর পর এবং ৪র্থ টি ১ বছর পর বুস্তার ডোজ।
মূল্য প্রতি ডোজ ৬০০ টাকা অর্থাৎ ৪ টি মোট ২৪০০ টাকা।
(সকল চার্জ অন্তর্ভুক্ত) । মেয়াদ আজীবন
** টিকা নেয়ার পূর্বে একটি টেস্ট অবশ্যই করতে হয় তাই ডাক্তারের সাথে কথা বলে টিকা নিবেন।
হেপাটাইটিস-এ:
এককথায় জন্ডিস বলতে আমরা যা বুঝি । চোখ ও প্রস্রাব হলুদ , বমি বমি ভাব, জ্বর, খুদামন্দা । পাড়াপ্রতিবেশি ডাব আনার নিয়ে বেড়াতে আসে
পানি ও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়,অস্বাস্থ্যকর পয়প্রনালি , আক্রান্ত ব্যাক্তির কাছে থাকলে । ঢাকা শহরে আসলে মেস বা রিক্সাওয়ালাদের এটি হবেই । অকালে কিডনি নষ্ট করে আবার গ্রামের বাড়ি ফিরে যাবে। খেতে মানা নেই তবে টিকা দিয়ে নেন।
দেখেন ভাইয়ের চক্ষুর কি অবস্থা--
প্রতিরোধ
দুই ডোজ টিকা নিন আর রাস্তার পাড়ের খাবার ইচ্ছা মতো খান।
১ম ডোজ যে কোন সময় নিয়ে ২য় ডোজ নিতে হবে ১ম ডোজের ৬-১২ মাসের মধ্যে ।
মূল্য-- ১২০০ টাকা প্রতিডোজ (সকল চার্জ অন্তর্ভুক্ত)। মেয়াদ আজীবন।
চিকেন পক্সঃ
পক্সে আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে পারেন নি , , আত্মীয়স্বজনের বিয়ে মিস করেছেন আর মুক্তি পাবার পর শরীরে এখনও ছোট ছোট ক্ষত নিয়ে সেই একাকী বন্দী জীবনের কথা মনে করে নিজের অজান্তেই হেসে উঠেন যারা তারা এর থেকে ৯৯ ভাগ মুক্তি পেলেও যাদের এখনও হয়নি তারা কিন্তু চরম আতঙ্কে আছেন।
চিকেন পক্স বা জলবসন্ত একটি ছোঁয়াচে রোগ যা ছড়ায় ভ্যারিসেলা - জস্তার নামক ভাইরাস দিয়ে। শীতের শেষ ও বসন্তের সময় এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
শরীরে লাল লাল রেষ বেরনোর ২৪-৩৬ ঘণ্টা আগে জ্বর মাথা ব্যাথা , গিট ব্যাথা , খুদামন্দা ইত্যাদি দেখা দেয়।
প্রতিরোধ :
যাদের একবার হয়েছে তাদের আর হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আক্রান্ত ব্যাক্তির কাছে থাকবেন না , , রেষ শুকানো পর্যন্ত সংক্রামিত হয় ।
সময় থাকতে টিকা নিয়ে নেন । টিকার মূল্য জানতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন ।
টাইফয়েডঃ
এটি একটি পানি বাহিত রোগ। খাবারের মাধ্যমেও ছড়ায় । খুবই যন্ত্রণা দায়ক। রাতের বেলা জ্বর ১০৪-১০৫ সপ্তাখানেক থাকে। প্রচণ্ড গরমের কারণে যারা বাইরে কাজ করে তাদের মধ্যে বাইরের পানি, শরবত, কেটে রাখা ঠাণ্ডা জাতীয় ফল ইত্যাদি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এগুলোর মাধ্যমে টাইফয়েড ছড়ায়
প্রতিরোধঃ
টাইফয়েডের টিকা তিন বছরের জন্য টাইফয়েড প্রতিরোধ করে। এটি তিন বছর অন্তর নিতে হয়।মূল্য ৫০০ টাকা । দুই বছর বয়সের নিচে টিকা দেওয়া যায় না। ১৯ বছর বয়সের পর আর টিকার প্রয়োজন নেই ( মনে হয়না এটা ঠিক , ওইদিন দেখলাম ২১ বছরের এক বন্ধুর হইসে)
সূত্র : গুতা মারেন
ইনফ্লুয়েঞ্জাঃ
হাঁচি কাশি জ্বর বলতে যা বোঝায়। ঋতু পরিবর্তন বা পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য হয়ে থাকে । আমরা অনেকেই অবহেলা কিন্তু এটি আমাদের বেশি ক্ষতি না করলেও , এই সময় অন্য রোগ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায় । কারণ এই সময় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ।
ভ্যাকসিন নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন । ট্যুরে যাওয়ার কয়েকদিন আগে নিয়ে নিতে পারেন ।
মূল্য ৫০০ টাকা । মেয়াদ ১ বছর , কারণ প্রতি বছর এর নতুন ভার্সন বের হয় ।
জরায়ু- মুখকান্সারঃ
ভ্রমণের সাথে এই রোগের সম্পর্ক না থাকলেও এটি দেয়া নৈতিক দায়িত্ব মনে করলাম। এটি ধীরে ধীরে ব্যাপক আকার ধারন করছে।
জরায়ু মুখে টিউমার সৃষ্টি হয় হিউম্যান প্যাপিলমা ভাইরাস এর কারনে। এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৭৬৮৬ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০৩৬৪ জন মৃত্যু বরণ করে। প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন মারা যায়।
বর্তমানে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রোগের প্রতিরোধ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চলছে।
বিস্তারিত
প্রতিরোধঃ
এটি এমন একটি ক্যান্সার যা টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ সম্ভব।
৯ বছরের বেশি বয়সী যে কোন নারী ৩ টি ডোজ টিকা নিয়ে আজীবনের জন্য সুরক্ষিত থাকতে পারেন।
ডোজ ০,১,৬ মাস পর নিতে হয়। মূল্য ১৭০০ টাকা প্রতি ডোজ।
ম্যালেরিয়া :
ম্যালেরিয়া হচ্ছে মশাবাহিত একটি সংক্রামক রোগ। স্ত্রী এনোফিলিস দংশনে এই রোগ হয়। কামড়াইলেই শেষ
ম্যালেরিয়া রুগীকে কামড়ানো মশা যাকে কামড় দিবে তারই ম্যালেরিয়া হবে।
বান্দরবানে যারা যাবেন সাবধান
ম্যালেরিয়া হলে তীব্র জ্বর কাঁপুনি দিয়ে , মাথাব্যাথা , বমি , ডায়রিয়া, অত্যধিক ঘাম হওয়া। এগুলো দেখা দিলেই তাড়াতাড়ি প্যাথলজি তে গিয়ে টেস্ট করে ফেলবেন। সবখানেই এই টেস্ট করা হয় এবং খরচও কম। ( আমি যতদূর জানি ১ সপ্তাহের আগে নাকি ধরা পরে না) । বান্দরবান থেকে আসার পর যদি এই লক্ষন গুলো দেখা দেয় তবে ধরেই নিবেন ঘটনা খারাপ , , দয়াল আপনাকে উপহার দিচ্ছে কিছু একটা।
ম্যালেরিয়া হয়ে গেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া ছাড়া উপায় নাই। তবে ম্যালেরিয়া যেন না হয় তার কিছু ঔষধের নাম দেয়া হল।
প্রতিরোধ :
ম্যালেরিয়ার কোন ভ্যাকসিন নেই। এজন্য কি আর ম্যালেরিয়ার কাছে হার মানা যায়।
মশারির ভিতর ঘুমাবেন
ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকায় যাওয়ার আগে ঔষধ খেতে থাকুন আসার পর পর্যন্ত। নিচে একটি চার্ট দেয়া হল , এতে ডোজ অনুসারে যে কোন একটি ঔষধ খান। ডা. মৌরি আপু দিসে স্লাইডটা
*ভ্যাকসিন বা ঔষধ গ্রহনের পূর্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুণ।
*পোস্টের তথ্য গুলান GSK VACCINATION এর লিফলেট হতে সংগৃহীত ।
*বিশেষ ধন্যবাদ ভ্রমণ বাংলাদেশ ও ঢাবি ট্যুরিস্ট সোসাইটিকে
*কোন ভুল তথ্য বা নতুন তথ্য জানা থাকলে মন্তব্যে উল্লেখ করে পোস্টটিকে নির্ভুল ও তথ্যসমৃদ্ধ করতে সহায়তা করুন।
*বানান ভুল ক্ষমা করবেন।