হামহাম এর খোঁজ পাই সামু থেকেই , , কাওসার রুশো ও সৌম্য ভাইয়ের ব্লগ থেকে , , এরপর মস্তিস্ক এবং শরীরে যেন পোকা ঢুকে গেল , , দিনরাত খালি কিলবিল করে , , ,
টিংকু ভাইয়ের এই ভিডিওটা দেখার পর ভ্রমণপিয়াসী বা নন পিয়াসী , সাহসী বা ভীতু , পুরুষ বা মহিলা মোট কথা রক্তমাংসের মানুষ যে আনন্দে হাসে দুঃখে কাঁদে , যার খাবার খাওয়া পূর্বে এনজাইম নিঃসৃত হয় এবং নিয়মিত প্রকৃতির ডাকে সারা দেয় , তার প্রথম এক্সপ্রেসন হবে আমিও যাব
শিরোনামেই বলেছি সৌন্দর্য এবার জয় করব , , টিকেট কেটে দেখার সুযোগ নেই , ,
এবার আসি আমাদের হামহাম ভ্রমণ , , ,
প্রথমে চলে গেলাম শ্রীমঙ্গল , হোটেল টি টাউন উঠলাম , থাকা খাওয়া নিয়ে বিস্তারিত জানতে বিস্তারিত
আগের দিন সন্ধ্যায় একটা জিপ ঠিক করে রেখেছিলাম ১৮০০ টাকা যাওয়া আসা সারাদিন থাকবে + গাইড ও ঠিক করে দিবে। ৬ জন ছিলাম আমরা তাই খরচটা অনেক কমই হল। জিপে ৬-৮ জন বসতে পারবেন। এই দেখুন জিপটা
সকাল ৬ টায় রউনা দিলাম , সাথে স্যালাইন , পানি , বিস্কুট,
পাউরুটি , একসেট কাপড় , ফাস্টএইড, সাবান সহ যা যা লাগে তবে ব্যাগ বেশি ভারি করবেন না । কারন এই ব্যাগ নিয়ে বনের ভিতর ৮ ঘণ্টায় প্রায় ১৬-১৮ কিমি হাঁটতে হবে , ,
এই ৮ ঘণ্টায় খাওয়ার কোন দোকান পাবেন না,স্যালাইন খাবেন খালি , ভারি খাবার খেয়ে পথে ঘাটে বড় টয়লেট করার বিরম্বনা এড়িয়ে চলুন । ,
জিপে করে প্রথমে যেতে হবে চাম্পারা চা বাগানের কলাবন গ্রামে। শ্রীমঙ্গল থেকে যেতে এক দেড় ঘণ্টা লাগবে। কলাবন গ্রামের পাশেই রাজকান্দিবন , বনের ভিতর যাওয়া আশা প্রায় ১৬-১৮ কিমি হাঁটতে হবে যদি আপনি হামহাম দেখতে চান
যাওয়ার পথে
পৌঁছে গেছি কলাবন গ্রাম এইখান থেকে এইখান থেকে পাবেন গাইড , থাকার ব্যাবস্থা ও আছে , আর জীবনরক্ষাকারী বাঁশ কিনতে ভুলবেন না , মাত্র ৫ টাকা দিয়ে সারাজীবন বাঁশকে খালি গালি দিলাম, কিন্তু এই বাঁশের যে কি উপকারিতা টা হামহাম না গেলে বুজতে পারবেন না
কলাবন
বাঁশ নিয়ে আমরা রেডি
হামহাম যাওরা জন্য বনের ভেতর ২ টা পথ আছে। বনের শুরুতেই দেখবেন ২ টা পথ , ডানে আর বামে , , একটা দিয়ে যেতে হবে আরেকটা দিয়ে আসবেন । ডানের পথ দিয়ে ঢুকে বাম দিয়ে বের হবেন এটাই ভালো , কারন ডানের পথটা দীর্ঘ এবং অনেক গুলো উঁচু টিলা বাইতে হয় , , যা ফেরার পথে পরলে খুব কষ্ট হবে , তাই প্রথমে কষ্ট করেন আসার সময় একটু আরাম করে আসবেন , ফেরার পথ কম না তবে সমতল বেশি , টিলা কম বাইতে হবে
বনে ঢোকার পথে
লড়বরে সাঁকো , একজন একজন করে পারহন
সরকারি পোস্টার
গহিন বন
নির্বিচারে বনের সেগুন গাছ কেটে সাবাড় , দেখার কেও নেই
এরকম অনেক গুলান টিলা বাইতে হবে
যাওয়ার পথে কেবল অর্ধেক পথ আসলাম ২ ঘণ্টায়
বিশাল বাঁশ ঝাড় , এই পথ গুলো বাগানের লেবাররাই তৈরি করেছে , ,
এবার শুরু পানির পথ , , জোঁক আর সাপ দেখে ভয় পাবেন না, , জোঁক রক্ত খাওয়ার পর আপনাআপনি আপনাকে ছেড়ে দিবে , , দিলেন না হয় একটু রক্ত খেতে জোঁকও তো মানুষ , , আর সাপ দেখলে চুপচাপ থাকুন , আপনি কিছু না করলে সাপ ও কিছু করবে না।
শীতকাল তাই পানি কম, ,
আমার মতে পুরো পথের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা , দুপাশে বাঁশঝাড় মাঝখানে পানিপথ , ,
অনেক গুলো টিলা বাওয়ার পর আমরা কিন্তু এখন অনেক উপরে , , এত উপরে এত বড়বড় পাথর , , সত্যি বিশ্বয়
সবচেয়ে আশ্চর্য লাগলো , এই পানি পথের প্রায় পুরো রাস্তা তাই পাথরের অর্থাৎ পানির নিচে যেন পাথর গলে রাস্তা হয়ে গেছে , , তাই কাদা কম । তবে কিছু কিছু জায়গায় মাটি ও কাদা আছে
সামনে কাদা ও গভীর তাই এবার উপরে
৪ ঘণ্টার বেশি হাঁটার পর আমরা হামহাম এর কাছে , , শীতকাল তাই পানি কম , , বলতে গেলে ন্যাড়া ঝর্ণা , , আমরা আগেই জানতাম তাই বেশি একটা নিরাশ হই নাই, ,
হামহামের বর্ষা ও শীত , , দুই রূপই দেখেন , , আপনারা যেন নিরাশ না হন তাই এডিট করলাম
আজ এখানেই খ্যামা দিলাম , , পরের পোষ্টে হামহাম এর চূড়ার ছবিসহ ফেরার পথ
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ , , ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমাকে অবহিত করলে কৃতজ্ঞ থাকব।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:২২