somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" 'নন্দিত নরকে', 'হুমায়ূন আহমেদ' এবং কিছু কথা "

১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আসলে একটি বিশেষ মিস্‌ কলের অপেক্ষা করছি প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে । এই অপেক্ষার সময় কি করব তাই ভাবতে ভাবতে মনে হলো একটা কবিতা টাইপ কিছু লিখি ব্লগে। ২০১০ এর এপ্রিলের শেষ দিকে লিখেছিলাম একজনের জন্য কবিতা টা। কিন্তু আর ব্লগে দেয়া হয়নি। ভাবলাম এখনি দেই যাতে সেই আমার একজন দেখে কিছুটা হলেও অবাক বা খুশি বা রাগ কিছু একটা হন। নাহ্‌ আজ আর লেখা হলোনা বোধয়। কারন ওই ব্লগ । দেখলাম আজ হুমায়ূন আহমেদের ৬৩ তম জন্মদিন। মনেই ছিলোনা।
তাই টুকরো টুকরো কিছু স্মৃতি রোমন্থন করতে ইচ্ছে করছে। যাক কবিতাটা কাল দিবই।
*প্রথমেই হুমায়ূন আহমেদ কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
১। সে বহু বছর আগের কথা। আমি যখন কিন্ডার গার্টেনে পড়ি তখনি 'অয়োময়ের' আবির্ভাব। এই জরে আক্রাণতো হয়নি এমন দর্শক বিরল। আমাদের একজন ইংরেজি স্যার ছিলেন। নাম সেলিম। তখন আমরা তিন জন বান্ধবি এক সাথে স্কুলে চলতাম। পলি ১, পলি ২ আর আমি। স্যার আমাদের নাম অয়োময়ের সাথে মিল রেখে দিয়েছিলো এভাবে- পলি ১-এলাচি , পলি ২-লবঙ্গ , আমি - কমলা সুন্দরি। স্কুলের সবাই এই নামেই ডাকতো। প্রথম প্রথম আমরা খেপে গেলেও পরে অবশ্য মজাই লাগতো। আর এখনতো মনে হলেই নসটালজিক হই। আজ আমরা কত বড় হয়ে গেছি। সবাই আজ প্রতিষঠিত। কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কে জানে? তবে বড় পলির খোঁজ কিছুদিন আগে পেয়েছি। দেখাও করেছি ২০ বছর পর। কী যে এক দৃশ্য ! উফফফ্ ‌! কিন্তু ছোট পলিকে এখনোও খুঁজে পাইনি। তবে পাব আমার বিশশাস। যাহোক, যখন 'কোথাও কেউ নেই' নাটকটি চলছিলো তখনও আমি বেশ ছোটই বলা যায়। 'বাকের' ভাইয়ের ফাঁসি হবে শুনে আমরা কাজিনরাও মিছিল করেছিলাম ছোট মামা আর মেজ মামার দেখাদেখি । আর যেদিন ফাঁসি হবে সেদিনতো রীতিমতো গামছা নিয়ে বসেছিলাম চোখের পানি মোছার জন্য। *উললেখ্য, সেই 'বাকের' ভাইয়ের অটোগ্রাফও আছে আমার কাছে। সে অটোগ্রাফ নেয়ারও এক মজার ঘটনা রয়েছে। সে গল্প না হয় আর একদিন হবে।
২। বেশ কবছর আগের কথা। অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ি তখন। পহেলা ফাল্গুন। আমরা ৮ জন বান্ধবি ঠিক করলাম বসুন্ধরা সিটিতে 'নন্দিত নরকে' সিনেমাটি দেখতে যাব। অনেকেই বাধ সাধল - 'হুমায়ূন আহমেদের সিনেমা দেখবোনা।' আমি এই সিনেমা সম্পরকে জানতাম কিছুটা। মানে আমার 'রানী আন্টি' সিনেমাটি 'চ্যানেল-আই' টিভিতে দেখে আমাকে বলেছিল দেখতে অবশ্যই। ওর কথা যেহেতু শিরোধার্য আর বিফলে যাওয়ার নয় তাই আমাকে দেখতেই হবে। যাইহোক ওদের রাজি করিয়ে গেলাম সিনেমাটি দেখতে। আশ্চর্যের বিষয় যেই বান্ধবি গুলো বাধ সেধেছিলো ওরাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি গোগ্রাসে দেখলো আর আমিতো বটেই। সিনেমা শেষ হবার পর হল থেকে যখন ৮ জন বেরুচ্ছিলাম তখন ৮ জনই কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়েছিলাম। বেরিয়ে দেখি শুধু আমরা নই। প্রায় প্রত্যেকেই কাঁদছিলো। জীবনের প্রথম একটি সিনেমা , যা দেখে হাপুশ নয়নে কেঁদেছিলাম। ওরাও আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছিলো।
৩। সম্ভবত হুমায়ূন আহমেদের ৬০ তম জন্মদিনেরই একটি ঘটনা এই ১৩ই নভেম্বর সন্ধ্যায়। আমার ছোট ভাইকে নিয়ে গিয়েছিলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে শওকত ওসমান মিলনায়তনে। সকালে পেপারে পড়েছিলাম সন্ধ্যায় তাঁর জন্মদিন পালিত হবে মহা সমারোহে। সকলে আমন্ত্রিত । কিছুটা কৌতুহল নিয়েই গেলাম। দেখিনা কি মজা হয়! যাইহোক গিয়ে দেখি কথা সত্য। এক চুলও নড়চড় হয়নি। বরং যা পড়েছিলাম তাঁর চেয়েও বেশিইই। সবচেয়ে লাভ যা হলো তা হলো হুমায়ূন আহমেদের অটোগ্রাফ পেলাম । আর মজার মজার গান, কৌতুক ভরা বক্তব্য তো ছিলোই। এক কথায় চমৎকার আয়োজন। মনে থাকবে আজীবন।

পাদটীকাঃ অনেকেই অনেক কুরুচিপূর্ণ কথা বলে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ সমপর্কে । ব্যক্তি হুমায়ূন কী তা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে ব্যাপারে বোধ করি কারো নাক না গলালেও চলবে। আমরা দেখবো তিনি কতটা দিয়েছেন আমাদের। যাঁর নাটক দেখে সারাদেশ ব্যাপী মিটিং মিছিল হবার পরও নিজ সীদ্ধান্তে অটুট থেকে যিনি 'বাকের' ভাইয়ের ফাঁসি দিয়ে দেশবাসির নাকের পানি, চোখের পানি এক করিয়েছেন, যিনি জীবনের প্রথম উপন্যাস 'নন্দিত নরকের' মতো বাস্তবিক কাহিনী লিখে সিনেমা বানিয়ে হাজারো দর্শক কে কাঁদিয়ে ছেড়েছেন, যিনি নুহাশ পল্লি নামে অদ্ভুত সুন্দর এক সর্গ বানিয়েছেন যা না দেখলে বিশশাস হবেনা, যাঁর লেখা ও সুর করা প্রতিটি গানই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে সেই তিনি যে কতটা সফল লেখক আর তিনি যে কিইই-না পারেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আবার অনেকেই বলেন উনি নাকি লিখতেই জানেন না। আমি শুধু এটুকুই বলবো যে, উনি আসলে চাইলে সব কিছুই লেখার ক্ষমতা রাখেন। কী গান, কী নাটক, কী উপন্যাস, কী কবিতা, কী সিনেমা...............। তাই তাঁর লেখার তকমা উনি সব সময় দিতে চান না। কিছু রেখে দিতে চান আর সেটাই উনার চমক আর বিশেষত্ত। উনি আড়ালে থেকে জনগনের কান্ড দেখেন আর অভিভুত হন। নইলে আর কেন উনি ডক্টর হুমায়ূন আহমেদ?
তাঁকে আরো একবার শুভেচ্ছা। উনি সুস্থ হয়ে এই সবুজ বাংলায় ফিরে আসুন এই কামনা !!!!!!!
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×